Ajker Patrika

মহাকাশে আটকে পড়া নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব মাস্ককে দিলেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৫৭
Thumbnail image
প্রায় আট মাস ধরে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামস। ছবি:নাসা

মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়া নভোচারী বাচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামসকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে ইলন মাস্ককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ তথ্য জানান মাস্ক। তবে এই ঘোষণার ফলে নাসার সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।

এক্সের এক পোস্টে মাস্ক বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুই বোয়িং স্টারলাইনার এর নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে ফিরিয়ে আনতে বলেছেন। তাঁরা ২০২৪ সালের জুন থেকে মহাকাশ স্টেশনে রয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন দুই নভোচারীকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এত দিন সেখানে রেখেছে তা দুর্ভাগ্যজনক।

এটা একটি জোরালো মন্তব্য হলেও বিষয়টি নিয়ে মাস্ক কেবল ব্যঙ্গ করেছেন বলে অনেকেই মনে করেন। তবে, এই মন্তব্য নাসার জন্য বেশ কিছু জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কারণ নাসা অনেক আগেই বলেছে যে বাচ উইলমোর এবং সুনি উইলিয়ামস মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়েননি। তাদের জন্য একটি সুরক্ষিত ফেরার ব্যবস্থা রয়েছে।

নতুন ঘোষণাটি ট্রাম্প ও মাস্কের রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। কারণ, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনকে ব্যর্থ প্রমাণিত করতে চান ট্রাম্প।

তবে, নাসা এবং স্পেসএক্স এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

নভোচারীদের কিছুটা দেরিতে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছে না নাসা। কারণ উইলমোর এবং উইলিয়ামস সুস্থ আছেন এবং তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার এবং কাপড় রয়েছে।

নাসার নভোচারীদের দ্রুত ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলে ক্রু–৯ মিশনে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে। উল্লেখ্য, ক্রু-৯ হলো স্পেসএক্সের একটি মিশন যা নাসার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটি স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেট এবং ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আইএসএস) নভোচারীদের পাঠায়।

তবে এই দুই নভোচারী দ্রুত ফিরে এলে মহাকাশ স্টেশনটি পরিচালনায় বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেখানে শুধু ডন পেটিট নামের একজন মহাকাশচারী থাকবেন। তিনি বেশ অভিজ্ঞ হলেও তার ওপর এত দায়িত্ব চাপানো ঠিক হবে না। এই মিশনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে মহাকাশে একটি স্পেসওয়াক (মহাকাশে বাইরে কাজ) এবং কিছু জরুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা ছিল।

ক্রু-৯ নভোচারীদের ফেরার তারিখ এখন ক্রু-১০ মিশনের ওপর নির্ভর করছে। এই মিশনে নতুন একটি ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার হবে। আরও প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২৫ মার্চ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে স্পেসএক্স। যদি ২৫ মার্চে উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা মেনে চলে, তবে স্পেসএক্সকে একটি পুরোনো ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার করতে হতে পারে। এই মহাকাশযানটি মূলত অন্য একটি মিশন ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’—এর জন্য তৈরি হয়েছিল। এই মিশনে স্পেসএক্স একটি নতুন ড্রাগন স্পেসক্রাফট ব্যবহার করতে চায়। তবে স্পেসএক্স আরও কিছু সময় চেয়েছে যাতে তারা এই নতুন স্পেসক্রাফটটি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে পারে।’

আবার মার্চের শেষের ক্রু-১০ মিশনটি উৎক্ষেপণের তারিখ থেকে পিছিয়ে গেলে আরও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, পেটিট রাশিয়ার সয়ুজ যান দিয়ে মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন এবং তার ফেরার তারিখ ২০ এপ্রিল। সয়ুজ স্পেসক্রাফটটি ২১০ দিন পর্যন্ত মহাকাশে থাকতে পারবে, কিন্তু ২০ এপ্রিল তাদের যাত্রার ২২১ দিন পূর্ণ হবে। তাই, ২০ এপ্রিল সম্ভবত সয়ুজ মিশনের শেষ সময়সীমা এবং তারপর ওই মিশন আর চালানো সম্ভব না–ও হতে পারে।

এভাবে উইলমোর এবং উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নাসার জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

গত বছরের ৫ জুন মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। মাত্র আট দিন মহাকাশ স্টেশনে থাকার কথা থাকলেও নিজেদের মহাকাশযান ফুটো হয়ে হিলিয়াম গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেওয়ায় প্রায় আট মাস ধরে পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।

তথ্যসূত্র: ওয়্যারড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত