Ajker Patrika

বিষণ্নতা সারাবে ব্যাঙের বিষ: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
বিষণ্নতা সারাবে ব্যাঙের বিষ: গবেষণা

ভয় পেলে কলোরাডো রিভার টোড (Incilius alvarius) ত্বকের গ্রন্থি থেকে ডিএমটি (ডাই মিথাইল ট্রিপ্টামিন) জাতীয় সাইকেডেলিক উপাদান নিঃসরণ করে। এটি হ্যালুসিনোজেনিক বা মতিভ্রম সৃষ্টিকারী উপাদান। ডিএমটি উপাদানের গঠন ও প্রভাব সাইলোসাইবিনের অনুরূপ। সাইলোসাইবিনে ‘ম্যাজিক মাশরুমে’ পাওয়া যায়। এই উপাদানও মানুষের মধ্যে হ্যালুসিনেশন বা মতিভ্রম তৈরি করতে পারে। মূলত আত্মরক্ষার জন্য এই বিষ নিঃসরণ করে। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্যাঙের এই বিষে একধরনের উপাদান পাওয়া গেছে যা মানুষের বিষণ্নতা ও উদ্বেগ সারাতে সাহায্য করতে পারে। নতুন এক গবেষণায় ইঁদুরের ওপর উপাদানটি ব্যবহার করে এমন চমকপ্রদ ফলাফল পাওয়া গেছে। 

কলোরাডো রিভার টোড অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া ও মেক্সিকোর কিছু অংশে বিস্তৃত সোনোরান মরুভূমি এবং এর আশপাশে পাওয়া যায়। এসব ব্যাঙ থেকে নিঃসৃত ডিএমটি উপাদানের সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের গবেষকেরা। 

সাইলোসাইবিনের মতো সাইকেডেলিক উপাদান কিছু মানুষের বিষণ্নতা সারাতে সাহায্য করে। তবে এই উপাদান কীভাবে কাজ করে তা স্পষ্ট নয়। এগুলো মস্তিষ্কের সেরোটোনিন রিসেপ্টরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে ও মস্তিষ্কের স্নায়বীয় বা নিউরাল সার্কিটের কার্যকলাপের পুনসমাবেশ ঘটায়। 

বেশির ভাগ সাইকেডেলিক্স গবেষণায় ৫–এইচটি২এ নামক একটি বিশেষ ধরনের সেরোটোনিন রিসেপ্টরের ওপর ওষুধের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে নতুন গবেষণাটিতে ৫–এইচটি১এ নামক অজ্ঞাত সেরোটোনিন রিসেপ্টর নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। এই রিসেপ্টর ব্যাঙের বিষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে বলে আগের বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়। 

গবেষকেরা ব্যাঙের বিষ থেকে প্রাপ্ত উপাদানটিতে রাসায়নিকভাবে বিশেষ পরিবর্তন করেন যেন এটি শুধু ৫–এইচটি১এ রিসেপ্টরে সংকেত পাঠায়। ফলে এর মধ্যে হ্যালুসিনোজেনিক প্রভাবটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। এরপর উপাদানটি বিষণ্ন ও উদ্বিগ্ন ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করা হয়। 

গবেষকেরা দেখেন যে, যেসব ইঁদুরকে এসব উপাদান দেওয়া হয় সেগুলো বেশি চিনি মিশ্রিত পানি পান করছিল ও সমবয়সীদের ইঁদুরদের সঙ্গে বেশি সময় কাটায়। দুটিই উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমার লক্ষণ। এলএসডি বা সাইলোসাইবিন গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে একই রকম প্রভাব দেখা যায়। 

মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের অড্রে ওয়ারেন বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, আমরা উপাদানটির কার্যকারিতা দেখতে চাই। যেহেতু মানুষের মস্তিষ্কে অনুরূপ রিসেপ্টর রয়েছে, সেহেতু উপাদানটি মানুষের বিষণ্নতা ও উদ্বেগ সারাতে পারে। গবেষণার ফলাফলগুলো মানুষের জন্য অভিনব অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ তৈরিতে কাজে আসবে বলে আমরা আশা করি। তবে এ জন্য অবশ্যই একটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।’ 

তবে তিনি অতিরিক্ত পরিমাণ হ্যালুসিনেশন ড্রাগ গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। কারণ এর ফলে উল্টো উদ্বেগ বাড়তে পারে, বমি, খিঁচুনি এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত