Ajker Patrika

মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণের আশা দেখাচ্ছে স্টারশিপ

নাসিম আহমেদ
আপডেট : ১৬ মে ২০২১, ২২: ০৯
মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণের আশা দেখাচ্ছে স্টারশিপ

মানুষের চন্দ্রাভিযান নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আবারও চাঁদে মানুষ পাঠাতে চায়। এ জন্য তারা পরিচালনা করছে বিশেষ মিশন আর্টেমিস। এতে সহযোগী হিসেবে রয়েছে ইলোন মাস্কের স্পেসএক্স। আর এই স্পেসএক্স নাসার চন্দ্রাভিযান সফল করার জন্য বানাচ্ছে স্টারশিপ লঞ্চ সিস্টেম, যা সংক্ষেপে স্টারশিপ নামে পরিচিত।

এদিকে নাসার পারসেভারেন্সের পাশাপাশি সম্প্রতি চীনের ঝুরং রোভার রোবোটও মঙ্গলে অবতরণ করেছে। এই মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রেও আশার আলো দেখাচ্ছে স্টারশিপ সিস্টেম।

স্টারশিপ কী?
স্পেসএক্সের স্টারশিপ হচ্ছে পুরোপুরি পুনর্ব্যবহার ক্ষমতাসম্পন্ন মহাকাশযান উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। সম্প্রতি এই ব্যবস্থা নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এতে রয়েছে এক ধরনের রকেট ও স্পেসক্রাফটের সমন্বয়, যা প্রায় এক শ জন মানুষ নিয়ে মঙ্গল পর্যন্ত যেতে পারে। এই রকেট ও স্পেসক্রাফট মিলিয়ে পুরো স্টারশিপ সিস্টেমের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১২০ মিটার মতো, যা আগের যেকোনো অনুরূপ ব্যবস্থার চেয়ে বেশি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই স্টারশিপের রয়েছে দুটি ধাপ। এর নিচের অংশটিকে বলা হচ্ছে বুস্টার স্টেজ। এই বুস্টার স্টেজেই থাকে রকেট। এই রকেটকে বলা হচ্ছে সুপার হেভি। আর অন্য অংশ বা ধাপটি হচ্ছে আপার স্টেজ। এটি মহাকাশযান বা স্পেসক্রাফট ধারণ করে।

নিচের রকেটটি বুস্ট করে মহাকাশযানকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সেটি মহাকাশযান থেকে আলাদা হয়ে যায়। স্টারশিপের রকেটটি ৭০ মিটারের মতো লম্বা। এটি ২৮টি র‍্যাপচার ইঞ্জিন ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় ১০০–১৫০ টন ভারী বস্তুকে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের কক্ষপথে উড়িয়ে নিতে পারে। এত সক্ষমতা এর আগের কোনো রকেটের ছিল না।

বিভিন্ন ধরনের নভোযান উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার মধ্যে স্টারশিপের উচ্চতাই সবচেয়ে বেশি। ছবি: বিবিসির সৌজন্যেপুনর্ব্যবহারযোগ্য লঞ্চ সিস্টেম
স্টারশিপ হচ্ছে পুরোপুরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। আগে এ ধরনের উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা একবারই ব্যবহার করা যেত। কালণ রকেট উৎক্ষেপণের পর পুরো ব্যবস্থাটি পুড়ে ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু স্টারশিপ এ ক্ষেত্রে একেবারেই আলাদা। এর মূল হার্ডওয়্যার ধ্বংস হয় না। ফলে এর মাধ্যমে এ ধরনের মিশনের বাণিজ্যিক খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

স্পেসএক্সের পরিকল্পনা
স্পেসএক্স নিয়ে ইলোন মাস্কের স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। টেসলা প্রধানের স্বপ্ন—এই স্টারশিপের মাধ্যমে ১০০ জন নভোচারীকে একবারে মঙ্গলে পাঠাবেন। এ ছাড়া ২০২৪ সালে তিনি স্টারশিপের মাধ্যমে মঙ্গলে নভোচারীবিহীন ভ্রমণ পরিচালনারও পরিকল্পনা করেছেন। এরই মধ্যে সম্প্রতি প্রোটোটাইপ স্টারশিপ রকেটের সফল উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে স্পেসএক্স, যা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে টুইট করেছেন ইলোন মাস্ক।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলোন মাস্ক তাঁর এই প্রাইভেট রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স নির্মিত স্টারশিপের মাধ্যমে দ্রুতই সহজে মহাকাশ ভ্রমণ চালু করতে চান। ২০২৩ সালে তিনি স্টারশিপে করে জাপানি ধনকুবের ইউসাকু মাজাওয়াকে চাঁদের চারপাশে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবেন। ২০১২ সাল থেকে স্টারশিপ সিস্টেম তৈরি শুরু করে স্পেসএক্স, যা এখন স্বপ্ন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রক্সাসের বোকাচিকা এলাকায় স্টারশিপের মূল স্থাপনা থেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রোটোটাইপ স্টারশিপ রকেট উৎক্ষেপণ করেছে স্পেসএক্স।

কথা হলো এই প্রোটোটাইপ স্টারশিপ রকেট আদতে কী? বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পলীক্ষা খুব বড় ব্যাপার। আর কোনো একটি মডেল বা কনসেপ্টের পরীক্ষামূলক টেস্ট চালানো হয় এই প্রোটোটাইপ বানানোর মাধ্যমে। স্টারশিপ এখন পর্যন্ত যেসব প্রোটোটাইপ রকেট উৎক্ষেপণ করেছে, সেগুলোর সাফল্য–ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করেই স্পেসএক্স তাদের মূল মিশনের কার্যক্রম নির্ধারণ করবে। এখন পর্যন্ত নির্মিত প্রোটোটাইপ স্টারশিপ ব্যবস্থার মধ্যে স্টারহুপার, এমকে, এমকে২, এমকে৩ (এসএন১), এমকে৪ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

এরই মধ্যে চারবার ব্যর্থ হওয়ার পর প্রোটোটাইপ স্টারশিপ রকেট উৎক্ষেপণে সাফল্য পেয়েছে স্পেসএক্স। গত ৫ মে প্রথমএ ইসাফল্য আসে, যা মানুষকে মহাকাশ ভ্রমণ, মঙ্গলে বসতি স্থাপনসহ নানা রকম স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ দেখাচ্ছে।

আগেই বলা হয়েছে আন্তঃগ্রহ ভ্রমণ, মঙ্গলে বসতি স্থাপন প্রভৃতি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই স্টারশিপ রকেটগুলো বানিয়েছে স্পেসএক্স। এ ক্ষেত্রে প্রথম সাফল্য আসে গত ৫ মে। এ দিন স্টারশিপ এসএন১৫ মাটি থেকে পরিকল্পনামাফিক ১০ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে আবার সঠিকভাবে ফিরে আসে। এই সাফল্যকে অনেক বড় করে দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও ইলোন মাস্ক। বিবিসিকে তিনি বলেন, স্টারশিপ রকেটের মাধ্যমে চাঁদ ও মঙ্গলে মানুষের ভ্রমণের যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সেখানে এই ঘটনা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

স্পেসফ্লাইট ইনসাইডার লিখেছে, প্রোটোটাইপ রকেট এসএন১৫–এর সাফল্য অনেক বড়। বাস্তবিক অর্থে কবে নাগাদ স্টারশিপের মাধ্যমে মহাকাশে ভ্রমণ করা যাবে, তা নির্ধঅরণে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যাবে।

স্টারশিপের মাধ্যমে পুরো সৌরজগত ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ইলন মাস্কের। ছবি: বিবিসির সৌজন্যেহিউম্যান ল্যান্ডিং সিস্টেম
চাঁদের জন্য নাসার পরবর্তী মিশন হচ্ছে আর্টেমিস মিশন। বিবিসি জানায়, এই মিশনের জন্য স্টারশিপে একটি বিশেষ সংযোজন করতে যাচ্ছে স্পেসএক্স। তারা স্টারশিপে হিউম্যান ল্যান্ডিং সিস্টেম সংযুক্ত করতে যাচ্ছে। ফলে চাঁদের পৃষ্ঠে বা যেকোনো গ্রহে সুন্দরভাবে অবতরণ করতে পারবে স্টারশিপ। এর পর মানুষ সহজেই স্টারশিপ থেকে চাঁদে বা গ্রহে নামতে পারবে।

স্টারশিপে রয়েছে বিশেষ ধরনের ইঞ্জিন। একে বলা হয় র‍্যাপচার ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন মিথেন ও অক্সিজেন দিয়ে চলে। প্রোপেলার ট্যাংক থেকে র‍্যাপচার ইঞ্জিনে মিথেন ও অক্সিজেন পাঠানো হয়। মিথেন জ্বালানি হিসেবে এবং অক্সিজেন দহনকারী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ বিষয়ক এক সেমিনারে ইলোন মাস্ক জানিয়েছিলেন, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে থাকা পানি ও বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে মিথেন সংশ্লেষ করা হবে। এভাবে মঙ্গলে গেলে জ্বালানি নিয়ে স্পেসক্রাফটটি আবার সক্রিয় হতে পারবে।

নিজেদের মিশনে নাসা যেমন স্পেসএক্সের সহায়তা পাচ্ছে, তেমনি নাসাও স্পেসএক্সকে অর্থ সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। শুরুতে নিজস্ব অর্থ দিয়েই স্টারশিপ সিস্টেম চালু করেছিল। এখন সাফল্য ধরা দেওয়ায় নাসাকেও পাশে পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে স্পেসএক্সের মহাকাশবিষয়ক কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়েছে।

চাঁদ বা অন্য কোনো গ্রহ–উপগ্রহে মানুষসহ নিরাপদে অবতরণের জন্য স্টারশিপে যুক্ত করা হচ্ছে হিউম্যান ল্যান্ডিং সিস্টেম। ছবি: নাসার সৌজন্যেশেষ কথা
সৃষ্টির সেই শুরু থেকেই মানুষ মহাকাশে রেখেছে চোখ। তারার রাজ্য তাকে হাতছানি দিয়ে ডেকেছে। কত শত কল্পনা এসে ভিড় করেছে তার মনে। সেই কল্পনার রাজ্যে হাজির হওয়ার একটা সুযোগ যদি নাসা বা স্পেসএক্সের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এনে দেয়, তবে তো দারুণ ব্যাপার ঘটবে। কিন্তু এই অভিযানগুলোর গল্প শুনতে যতটা সহজ মনে হয়, তত সহজ এগুলো নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু বিজ্ঞানীর শ্রম, অর্থ। এমনকি এ নিয়ে রাজনীতিও হচ্ছে বিস্তর। মহাকাশেও আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে এখন নেমেছে বিশ্ব শক্তিগুলো। পৃথিবীর বুকে যে ক্ষমতার লড়াই, তার ঝাঁঝ সম্পর্কে আমরা সবাই কম–বেশি অবহিত। মহাকাশে এর সম্প্রসারণ হলে তা মানুষের অস্তিত্বের জন্যও এমনকি নেতিবাচক হতে পারে। প্রত্যাশা শুধু এই যে, মানুষ শুভ কাজেই নিজেদের প্রাযুক্তিক এই দক্ষতাকে কাজে লাগাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

চর্চা ‘লার্নিং থ্রো প্র্যাকটিস’ধারণাকে প্রাধান্য দেয়

রায়হান উল ইসলাম সানজিদ।

অনলাইন ক্লাস, গাইডবুক আর মক টেস্টের পরেও বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে পিছিয়ে পড়েন। পড়া থাকলেও কোথায় দুর্বলতা, কীভাবে নিজের অগ্রগতি যাচাই করবেন—সে প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় মেলে না। এই প্রেক্ষাপটে ‘চর্চা’ নিজেকে উপস্থাপন করছে একটি অনুশীলনকেন্দ্রিক লার্নিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। দেশের এডটেক খাতে এই উদ্যোগের ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথা বলেছেন চর্চার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান উল ইসলাম সানজিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আশিকুর রহমান

আশিকুর রহমান

চর্চার শুরুটা কীভাবে?

চর্চার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন আমি নিজেই ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। প্রতিদিন ক্লাস, লেকচার, গাইডবুক আর প্রশ্নব্যাংকের চাপ—সব মিলিয়ে নিজের মতো করে প্র্যাকটিস করার সময় খুব কম পাওয়া যেত। এই জায়গায় সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। ভাবলাম, যদি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম থাকে, যেখানে গৎবাঁধা নিয়মে আটকে না থেকে নিয়মিত ও সহজভাবে প্র্যাকটিস করা যায়, তাহলে শেখাটা অনেক বেশি আনন্দের হতে পারে। সেই ভাবনা থেকে চর্চার জন্ম। রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির পর কাজটি আরও গতি পায়। ক্লাসরুম থেকেই আমার কো-ফাউন্ডার ও সিএমও নাফিসের সঙ্গে পরিচয়। পরে গালিব কো-ফাউন্ডার ও সিওও হিসেবে যুক্ত হন। শুরু থেকেই মার্কেটিং ও অপারেশনের দায়িত্ব মূলত তাঁরা দুজনই সামলাচ্ছেন।

চর্চা অ্যাপ তৈরির পেছনে মূল অনুপ্রেরণা কী ছিল?

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াশোনা আর পরীক্ষাকে প্রায় সব সময় ভয়ের বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অথচ শেখার প্রক্রিয়াটা হওয়া উচিত আনন্দদায়ক, যেখানে একজন শিক্ষার্থী সমস্যা সমাধান করতে করতেই শিখবেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, পড়ার উপকরণ অনেক থাকলেও নিয়মিত প্র্যাকটিসের সুযোগ খুব সীমিত। এই বাস্তবতা থেকে চর্চার ভাবনা। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাকে ভয় না পেয়ে প্র্যাকটিসের মাধ্যমে শেখার আনন্দ খুঁজে পাক। শেখার প্রতিটি ধাপ যেন চাপ না হয়ে আগ্রহ তৈরি করে—এটিই ছিল চর্চার মূল অনুপ্রেরণা।

শুরুতে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল?

নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা ‘চর্চা’র বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যেটি একসঙ্গে হাজার হাজার ব্যবহারকারী সামলাতে পারবে এবং সবার জন্য অভিজ্ঞতাটি হবে নিরবচ্ছিন্ন। এর পাশাপাশি বাস্তব চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত ও উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করা। অষ্টম শ্রেণি থেকে বিসিএস—প্রতিটি স্তরের জন্য আলাদা চাহিদা রয়েছে। সেই কনটেন্ট যেন একদিকে নির্ভুল হয়, অন্যদিকে আকর্ষণীয় ও গেমিফাইড হয়। এই ভারসাম্য বজায় রাখাটা ছিল কঠিন। তবে ধাপে ধাপে এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে আজ চর্চা একটি গ্রহণযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।

‘চর্চা এআই’-এর ধারণা কীভাবে এল?

এটি মূলত এআই এজেন্ট, যা এনসিটিবি পাঠ্যবই এবং আমাদের ১০ লক্ষাধিক প্রশ্নের ডেটাবেইসের ওপর প্রশিক্ষিত। শিক্ষার্থীরা টেক্সট বা ছবি আকারে যেকোনো প্রশ্ন দিতে পারেন, আর চর্চা এআই বইভিত্তিক রেফারেন্সসহ উত্তর দেয়। এটি শুধু ডাউট সলভিং নয়, বরং একটি পার্সোনালাইজড লার্নিং সলিউশন। শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন—কোন টপিকে তিনি দুর্বল, কোথায় আরও প্র্যাকটিস দরকার। মাত্র তিন মাসে চর্চা এআই-এ ৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি চ্যাটরুম তৈরি হয়েছে।

প্রশ্নভান্ডারের মান কীভাবে নিশ্চিত করেন?

চর্চার কনটেন্ট মান নিশ্চিত করতে আমাদের একটি আলাদা কনটেন্ট টিম রয়েছে। অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসি ও বিসিএস—প্রতিটি সেগমেন্টে আলাদা টিম কাজ করে। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিন ধারার জন্য রয়েছে বিষয়ভিত্তিক এক্সপার্টরা। নিয়মিত আপডেট, রিভিউ এবং গবেষণার মাধ্যমে কনটেন্টের মান ধরে রাখাই আমাদের মূল অগ্রাধিকার।

স্ট্রিক, লিডার বোর্ড ও রিপোর্ট কতটা কার্যকর?

চর্চা ‘লার্নিং থ্রো প্র্যাকটিস’ ধারণাটিকে প্রাধান্য দেয়। স্ট্রিক শিক্ষার্থীদের দৈনিক অভ্যাস গড়তে সাহায্য করে। আমাদের এমন ব্যবহারকারীও আছেন, যাঁদের স্ট্রিক এক বছরের বেশি। লিডার বোর্ড শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি করে। আর মাসিক রিপোর্ট শিক্ষার্থীকে নিজের অগ্রগতি বুঝতে সাহায্য করে। কোথায় উন্নতি হচ্ছে বা কোথায় আরও মনোযোগ দরকার, সেসব বোঝা যায় এ থেকে।

ডেটা প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করছেন?

ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহারকারীরা যেকোনো সময় নিজেদের তথ্য বা অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে পারেন। কোনো তথ্য ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়া সংগ্রহ করা হয় না। সব ডেটা এনক্রিপটেড থাকে এবং অ্যাপ সার্ভার যোগাযোগ এইচটিটিপিএস সিকিউরিটির মাধ্যমে সুরক্ষিত। এই ব্যবস্থাগুলো ব্যবহারকারীদের নিশ্চিন্ত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আগামী পাঁচ বছরে আমরা চর্চাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত লার্নিং অ্যাপে পরিণত করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ১০ কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা দেওয়া। একই সঙ্গে আমরা বিশ্বাস করি, শেখার কোনো সীমানা নেই। তাই চর্চাকে একটি গ্লোবাল লার্নিং অ্যান্ড প্র্যাকটিস ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাও আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ থেকে জন্ম নেওয়া একটি প্ল্যাটফর্ম যেন বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের শেখার সঙ্গী হয়ে ওঠে, এই স্বপ্ন নিয়েই আমরা এগোচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিরর ব্যাকটেরিয়া কি আধুনিক পৃথিবীর নতুন মারণাস্ত্র

মইনুল হাসান, ফ্রান্স  
মিরর ব্যাকটেরিয়া কি আধুনিক পৃথিবীর নতুন মারণাস্ত্র

মানুষ কি পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে? এ কথা কেন বলছি, তার কারণ আছে।গত বছর ডিসেম্বরে বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সায়েন্স’-এ ৯টি দেশের মোট ৩৮ জন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী একত্রে বিবৃতি দিয়ে মানুষকে সতর্ক করেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন আছেন নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী। তাঁরা বিবৃতির সঙ্গে যুক্ত করেছেন ৩০০ পাতার এক বিশাল সচিত্র প্রতিবেদন। তাঁরা সে প্রতিবেদনে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, জীবন নিয়ে খেলা চলবে না। সে বিজ্ঞানীরা আয়নার মধ্যে পুরো পৃথিবী ধ্বংসের অতি মারাত্মক অশনিসংকেত পাচ্ছেন। কারণ, পৃথিবীর দেশে দেশে বিভিন্ন গবেষণাগারে ‘মিরর লাইফ’ বা ‘আয়না জীবন’ উদ্ভাবনে একই সঙ্গে বহু বিজ্ঞানী নিরলসভাবে কাজ করছেন এবং সফলতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছেন। বিশেষ করে চীনের ওয়েস্ট লেক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব লাইফ সায়েন্সের গবেষক বিজ্ঞানী টিং ঝু জীববিজ্ঞানীদের বিস্মিত করে আয়না জীবন উদ্ভাবনে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন।

‘আয়না জীবন’ একধরনের কৃত্রিম জীবন। প্রকৃতিতে জীবনের প্রধান আণবিক উপাদান, অনুঘটক প্রোটিন, ডিএনএ, আরএনএ ইত্যাদির অণুগুলো অসমমিতিক অর্থাৎ মাঝখান থেকে বিভাজন করলে দুটি অসমান অংশে বিভক্ত হবে। এ ছাড়া এই অণুগুলো একটি বিশেষ নকশার আকারে সাজানো। কোনোটি ডান দিকে ঘোরানো আবার কোনোটি বাঁ দিকে। সাধারণভাবে পৃথিবীর সব জীবের ডিএনএ ডান দিকে আর প্রোটিন পাক খায় বাঁ দিকে। কিন্তু ‘মিরর লাইফ’-এ বিষয়টা একদম উল্টো, এখানে ডিএনএ বাঁ দিকে আর প্রোটিন পাক খায় ডান দিকে। ডান ও বাঁ হাতের মতো। দেখতে ঠিক এক রকম, একে অন্যের প্রতিবিম্ব, তবে ভিন্ন। কেন এমন হয়? এ প্রশ্নের উত্তর মানুষ আজও জানে না। প্রকৃতির এ এক অভেদ্য রহস্য।

বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন, জীবনের এই ডান দিককে বাঁ দিকে আর বাঁ দিককে ডান দিকে করে নতুন ধরনের জীবন উদ্ভাবনের। প্রকৃতির এই ‘ডান’ ও ‘বাঁ’-এর বিপরীতে গিয়ে গবেষণাগারে জীবনের সরল মডেল এককোষী ব্যাকটেরিয়ার কোষে ডিএনএ পরিবর্তন করে বাঁ দিকে ঘুরিয়ে দিলে অর্থাৎ আয়নার প্রতিবিম্ব অনুসারে অণুগুলো গঠন করলে সৃষ্টি হবে ‘আয়না ব্যাকটেরিয়া’। বাইরে থেকে সেগুলোর কোনো পার্থক্য করা যাবে না। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, বিভিন্ন জটিল রোগ নিরাময়ে তা হবে এক অব্যর্থ মহৌষধ।

তবে বহু বিজ্ঞানীর মতে, এর প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে। তাঁরা উদ্বিগ্ন হচ্ছেন এই ভেবে যে এমন গঠনের অণুজীব যদি একবার তৈরি হয়, তবে তা পৃথিবীর বিদ্যমান বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্যের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। প্রতিটি জীবের দেহে প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে এক চমৎকার রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা। শরীরের অভ্যন্তরে প্রাণঘাতী অণুজীব বা ভাইরাস ঢুকে পড়লে, জীবদেহের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিজে থেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং অনুপ্রবেশকারী কোষকে পর্যুদস্ত করতে শুরু করে। ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্ট এই আয়না ব্যাকটেরিয়াকে জীবদেহের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শনাক্ত করতে মোটেই সক্ষম নয়।

বিজ্ঞানী টিং ঝু
বিজ্ঞানী টিং ঝু

ডান হাতের দস্তানা যেমন বাঁ হাতে ঢোকানো সহজসাধ্য নয়, তেমনই জীবদেহের প্রকৃতিপ্রদত্ত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা আয়না ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে মোটেও কার্যকর নয়। প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক এবং ব্যাকটেরিয়া খাদক ভাইরাস দিয়েও একে নির্মূল করা যাবে না। কোনো রকম অসতর্কতা বা ভুলের কারণে গবেষণাগার থেকে এই মারাত্মক সংক্রামক রোগের আয়না ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে পড়লে দ্রুত সংক্রমিত করবে পুরো জীবজগৎ। শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধব্যবস্থা কাজ করবে না এবং উপযুক্ত প্রতিষেধক না থাকায় পশুপাখি, উদ্ভিদ, জলজ জীব এমনকি মানুষও এই অভিশপ্ত অণুজীবের মরণ কামড় থেকে রেহাই পাবে না। বিশ্বব্যাপী উজাড় হবে প্রাণ, সমাপ্তি ঘটবে মাটির পৃথিবীতে দৃশ্যমান জীবনের, এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিবৃতিদাতা বিজ্ঞানীরাসহ অনেকেই। হতে পারে কোনো এক অশুভ শক্তির হাতে পৌঁছে গেছে এই প্রাণঘাতী এবং অপ্রতিরোধ্য, অতি ক্ষুদ্র আয়না অণুজীব। তাহলে তা হবে এক অতি ভয়ংকর মারণাস্ত্র।

সূত্র: ‘সিয়োন্স এ আভেনির’, ফ্রান্স।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনলাইনে কেনাকাটার নিরাপদ উপায়

ফিচার ডেস্ক
অনলাইনে কেনাকাটার নিরাপদ উপায়

অনলাইনে কেনাকাটার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ঘরে বসেই পছন্দের পণ্য অর্ডার করার সুবিধা থাকলেও এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতারণার ঝুঁকি। তবে কেনাকাটার আগে কয়েকটি বিষয়ে সচেতন থাকলে এসব প্রতারণা এড়িয়ে চলা সম্ভব।

পরিচিত ও বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম

চেষ্টা করুন পরিচিত ও পরীক্ষিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পণ্য কিনতে। নতুন কোনো ওয়েবসাইটে কেনাকাটার আগে সেটি আসল কি না, প্রতিষ্ঠানটি কত দিন ধরে ব্যবসা করছে—এসব বিষয় সম্পর্কে খোঁজ নিন।

ব্র্যান্ড ও প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জানুন

কেনার আগে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বা ব্র্যান্ড সম্পর্কে অনলাইনে খোঁজ নিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিজ্ঞাপন বা গ্রাহক রিভিউ থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা যায়।

অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না

অনলাইনে কেনাকাটার সময় যেসব ওয়েবসাইট অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য চায়, যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা অতিরিক্ত গোপন তথ্য, সেসব প্ল্যাটফর্ম এড়িয়ে চলুন। সাধারণ কেনাকাটার জন্য এসব তথ্যের প্রয়োজন হয় না।

নিরাপদ পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করুন

ব্যাংক কার্ড দিয়ে অনলাইনে কেনাকাটা এখন স্বাভাবিক হলেও হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি থাকে। সম্ভব হলে ক্যাশ অন ডেলিভারি বা বিশ্বস্ত পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করুন।

পাবলিক ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলুন

ফ্রি বা পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে যেকোনো আর্থিক লেনদেন করা ঝুঁকিপূর্ণ। অনলাইনে পেমেন্টের সময় ব্যক্তিগত বা নিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সূত্র: গ্লোবাল সাইবার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুগলের নতুন ফিচার: সাধারণ হেডফোনই হবে রিয়েল–টাইম অনুবাদক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত
এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।

গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।

গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।

এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’

এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।

গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।

গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।

এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত