Ajker Patrika

শ্রীলঙ্কায় স্কুলে অজ্ঞান হয়ে পড়ছে ক্ষুধার্ত শিশুরা, সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলা নিষেধ

আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ৩৮
শ্রীলঙ্কায় স্কুলে অজ্ঞান হয়ে পড়ছে ক্ষুধার্ত শিশুরা, সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলা নিষেধ

শ্রীলঙ্কায় বিদ্যালয়ে ক্ষুধার্ত শিশুদের অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ার পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষক ও একাধিক সরকারি কর্মকর্তারা এ নিয়ে বক্তব্যও দিয়েছেন। খাবারের অভাবেই যে শিশুদের এই করুণ দশা, সেটিই বলেছেন তাঁরা। 

কর্মকর্তাদের সেসব বক্তব্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর শ্রীলঙ্কা সরকারি কর্মকর্তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত প্রকাশ নিষিদ্ধ করে নির্দেশনা জারি করেছে। গত বুধবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনা না মানলে সেটি সরকারি চাকরিবিধির লঙ্ঘন বলে ধরে নিয়ে অভিযুক্তকে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শিক্ষার্থীরা না খেয়ে বিদ্যালয়ে আসছে। শ্রেণিকক্ষেই অজ্ঞান হয়ে পড়ছে এসব ক্ষুধার্ত শিশু—শিক্ষক ও একাধিক সরকারি কর্মকর্তা এমন দাবি করার পরে শ্রীলঙ্কা সরকার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। 

দেড় লাখ সরকারি কর্মকর্তার উদ্দেশে দেওয়া সরকারি আদেশে জনপ্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় বলেছে, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার ওপর দীর্ঘস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। একজন সরকারি কর্মকর্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের মতামত প্রকাশ করলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া পোস্টে দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং শিক্ষকেরা দাবি করেছেন, খাবারের অভাবে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছে। 

 ২০২১ সালের শেষের দিক থেকে শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ওই সময় থেকেই অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করার মতো ডলার ফুরিয়ে গেছে। বেসরকারি হিসাবে, শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতির হার জিম্বাবুয়ের পরেই। এ পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভে গত বছরের জুলাই মাসে ক্ষমতাচ্যুত হোন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। 

এদিকে খাবারের অভাবে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ছে—এ ধরনের প্রচারকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অপপ্রচার বলে অভিযোগ করেছেন শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেহেলিয়া রামবাকভেলা। তাঁর দাবি, জনস্বাস্থ্যকর্মীরা পরিস্থিতি অতিরঞ্জিত করে বলছেন। 

যদিও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (এফএও) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, ৬০ লাখ বা শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। এ দেশে মানবিক সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে। 

ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে দুটির মধ্যে একটি শিশুই নিয়মিত ক্ষধার্ত থাকে।

রাজাপক্ষের উত্তরসূরি রনিল বিক্রমাসিংহে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের কঠোর হস্তে দমন করেছেন। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় তিনি বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছেন। ফলে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন বোঝা কঠিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত