Ajker Patrika

পাকা রাস্তায় মাটি ঢালল পাউবো

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পাকা রাস্তায় মাটি ঢালল পাউবো

পটুয়াখালীর সদর উপজেলার পায়রা নদীরতীর ঘেঁষে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ। উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের কালিচান্না ও ধনখালী গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে এক যুগ আগে বেড়িবাঁধের ওপর প্রায় ৯ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

দফায় দফায় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওই বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ক্ষতি হওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ নেয় পাউবো। পাকা রাস্তা করার অনুমতি ছিল না দাবি করে এক্সকাভেটরের মাধ্যমে ওই রাস্তার ওপর এখন মাটি ফেলছে পাউবো। এতে এলজিইডির ১ কিলোমিটার পাকা রাস্তা মাটিতে ঢাকা পড়ে গেছে।

এদিকে, পাকা রাস্তা মাটিতে ঢাকা পড়ার সুযোগে এলাকার কিছু লোক তা খুঁড়ে ইট, কার্পেটিং, খোয়া ও সুরকি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তার দুই পাশের মূল্যবান গাছও কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের ধনখালী বাজার থেকে হাইস্কুল পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রাস্তার মালপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এই লুটপাট চালানো চলছে। কোদাল-খোন্তা দিয়ে রাস্তা খুঁড়ে ইট, সুরকি, খোয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার কেউ রাস্তার দুই পাশের মেহগনি, ঝাউসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নেন। এসব কাজে কাউকে বাধা দিতেও দেখা যায়নি। বরং ইটবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. মিলন খানের বিরুদ্ধে সরকারি মালপত্র লুটপাটে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে দেখা গেছে, পাকা রাস্তার ওপর মাটি ফেলে রেখেছে পাউবো। সেই মাটি খুঁড়ে ইট, খোয়া, সুরকি তুলে বস্তায় ভরে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। রাস্তার পাশেই গাছ কাটতে দেখা যায় কয়েকজনকে।

গাছ ব্যবসায়ী মো. কালাম হোসেন আকন বলেন, ‘পাউবো রাস্তা বড় করছে। ফলে যার যার বাড়ির সামনের রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো বিক্রি করে দেয়। আমি সাড়ে ৬ হাজার টাকা দিয়ে কিছু গাছ কিনেছি। আমি গাছের ব্যবসা করি। টাকা দিয়েছি, গাছ কিনেছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’

সড়কের মালপত্র নিতে স্থানীয়দের ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ইটবাড়িয়া ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিলন খান বলেন, ‘সরকারি রাস্তার মালপত্র আমি পাবলিককে (স্থানীয় লোকজন) নিতে বলব কেন? আর এটা বলার কি এখতিয়ার আমার আছে? বরং এ ধরনের কাজ দণ্ডনীয় অপরাধ, তাই তাঁদের নিষেধ করেছি। রাস্তা মাটির নিচে চলে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন আমার কথা শোনেননি।’

পটুয়াখালী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন বলেন, ‘অনুমতি ছাড়াই পাউবোর বেড়িবাঁধের ওপর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ প্রায় ৯ কিলোমিটার পাকা রাস্তা করে। এর মধ্যে ২৫০ মিটার ছিল নিচু এবং ওই নিচু বেড়িবাঁধের মধ্যে আবার ৮০ মিটার ছিল একেবারেই বিধ্বস্ত। ওই বেড়িবাঁধ সংস্কার শুরু করলে এলজিইডি আপত্তি দেয়। আসলে শুরুতেই যদি এলজিইডি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করত, তাহলে এ সমস্যা হতো না। রাস্তারও এ ধরনের ক্ষতি হতো না।’

পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর বলেন, কিছু লোক রাস্তার মালপত্র নিয়ে গেছে। তবে এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। রাস্তার মালপত্র সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাউবোর মাটি ফেলার কাছ শেষ হওয়ার পর কার্পেটিং করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত