‘জলদস্যুদের কবল থেকে ছেলের মুক্তির খবরেই অর্ধেক সুস্থ হয়ে গেছি’

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২: ০৭
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ১২

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার নন্দনকানন এলাকা। ৩৩ দিন জিম্মি থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খানের বাসা এখানে। কলিংবেল চাপতেই দরজা খুললেন তাঁর মা শাহেনুর বেগম। এক হাতে দরজা খুলে আরেক হাতে ফোনে ছেলে আতিকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সাংবাদিক পরিচয় দিতেই মুখে চওড়া হাসি। এই হাসি জানিয়ে দিল ছেলের মুক্তির খবরে কতটা খুশি এই মা। 

বসার অনুরোধ করে জানালেন, কয়েক দিন ধরে ছেলে আতিক উল্লাহ খান সকালেই ফোন দেন। সে জন্য ভোর ৬টায় উঠে যান। এদিনও ঠিক সাড়ে ৬টায় ফোন দিয়েছে ছেলে। কথা শেষ করে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন শাহেনুর। স্বাভাবিকভাবেই পুরো আলাপেই থাকলেন আতিক উল্লাহ খান। 

শাহেনুর বেগম বলেন, ‘ছেলে যেদিন জানাল জলদস্যুরা তাদের মুক্তি দিয়েছে, ওই দিনই যেন অর্ধেক সুস্থ হয়ে গেছি।’ 

দীর্ঘ ৩৩ দিন জিম্মি থাকার পর গত শনিবার মুক্তি পায় জাহাজ ও এর ২৩ নাবিক। এদের একজন ওই জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান। জাহাজটি গত ১৪ এপ্রিল সোমালিয়া থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। ২২ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছার কথা। 

শাহেনুর জানলেন, নিজে নানা রোগে আক্রান্ত। সঙ্গে ছেলের জিম্মির খবর। স্বাভাবিকভাবেই তিনি খুব ভেঙে পড়েন। এই ৩৩ দিন ছেলের চিন্তায় আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। যেদিন ছেলের মুক্তির খবর শোনেন, ওই দিনই তিনি যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেলেন। 

শাহেনুর বেগম বলেন, ‘ঈদে ঘর থেকেও কোথাও বের হইনি। কেনাকাটাও তেমন করিনি। ছেলে জিম্মি আছে, কোনো মায়েরই আনন্দে থাকার কথা না। আমারও তাই নানা দুশ্চিন্তা আসত। যেদিন মুক্তির খবর শুনি, ওই দিন তো খুশিতে কেঁদে ফেলি। ওই দিন থেকেই আমাদের সত্যিকারের ঈদ মনে হয়েছে। ছেলের মুক্তির খবরে দুর্বল শরীরও যেন হঠাৎ সবল হয়ে গেছে। দুষ্টুমি করে পরিবারের লোকজন বলে, ছেলের মুক্তিতে আমার শরীর নাকি পরিবর্তন হয়ে গেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমার অনেক আদরের ছেলে আতিক। জাহাজে যাওয়ার আগে বলেছিল, মা এবার একটু বেশি কষ্ট করতে হবে। কারণ এটির ওপর নির্ভর করছে আমার প্রমোশন। ছেলে তাই প্রমোশনের জন্য বিমানে করে বাড়িতে আসছে না। জাহাজে করে চুক্তি শেষ করেই আসবে।’ 

ছেলে আতিক এই ৩৩ দিনে অনেকবার ভয়েস মেসেজ দিয়েছেন মাকে। সব সময় বলতেন, ভালো আছেন। পরিবার যেন চিন্তা না করে। কিন্তু আসলে সব মা-ই জানতে পারেন ছেলে আদতে কেমন আছেন। 

শাহেনুর বেগম বলেন, ‘ছেলে যতই বলুক ভালো আছে। আমি বিশ্বাস করতাম না। রাতে ছেলেকে নিয়ে নানান দুঃস্বপ্ন দেখতাম। ছেলে মুক্তি পাওয়ার পর আমাকে বলে, ভয়েস মেসেজে যা বলেছে তা নাকি মিথ্যা বলেছে। জলদস্যুরা নাকি অনেক মানসিক টর্চার করেছে। আমি তো জানতাম। ছেলে আসলেই কষ্টে আছে।’

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত