Ajker Patrika

আড়াই মাস ধরে নিখোঁজ, একমাত্র ছেলের সন্ধান চান মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আড়াই মাস ধরে নিখোঁজ, একমাত্র ছেলের সন্ধান চান মা

রাজধানীর মিরপুর থেকে নিখোঁজ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইফাজ আহমেদ চৌধুরীর সন্ধান চায় পরিবার। গত ১১ এপ্রিল দুপুরে নামাজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি ইফাজ। তাঁকে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন পরিবারের সদস্যরা। 

আজ সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান নিখোঁজ তরুণের মা জান্নাতুল ফেরদৌস। 

লিখিত বক্তব্যে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তাঁরা মিরপুর-২ নম্বরের বড়বাগ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর ছেলে ইফাজ আহমেদ চৌধুরী গত আড়াই মাস ধরে নিখোঁজ। তাঁর সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরনা দিয়েও কোনো হদিস পাননি। এই ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পাশাপাশি র‍্যাব-৪ এ অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। 

ঘটনার দিনের কথা উল্লেখ করে ইফাজের মা বলেন, ‘গত ১১ এপ্রিল দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে জোহরের নামাজ পড়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয় ইফাজ। দুপুর ২টা ২৬ মিনিটে ইফাজের স্ত্রী তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করে না। এরপর থেকে তাঁকে ফোন দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ কোনো সন্ধান না পেয়ে রাত ৮টার দিকে মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। পরবর্তীতে স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হলে আমরা দেখতে পাই, আমার ছেলে মিরপুর ১ নম্বরের পাও লাইফ কেয়ার নামের প্রাণী হাসপাতালে যায়। যেখানে আমার ছেলে ৩৮ মিনিট অবস্থান করে। ইফাজ যে পথ দিয়ে যায় ওই পথ দিয়েই বাসায় ফিরছিল। সেখানে আমরা একটা কালো মাইক্রোবাস দেখতে পাই। আমাদের সন্দেহ ওই কালো মাইক্রোবাস আমার ছেলেকে উঠিয়ে নিয়েছে।’ 

ইফাজের মা বলেন, ‘পরিবার থেকে করা জিডির তদন্ত শেষে থানা থেকে জানানো হয়েছে গত ২ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ইফাজের মোবাইলের কল লিস্ট পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে পরিবারের সদস্য, বন্ধুদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছে ইফাজ, যার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। ঘটনার দিন রাতেই জিডির কপি নিয়ে র‍্যাব-৪ এ যোগাযোগ করা হয়। র‍্যাব থেকে আশ্বস্ত করা হয় এক দিনের মধ্যে সন্ধান দেওয়ার। কিন্তু তারা এ পর্যন্ত কোনো সন্ধান দেয়নি। গত ১৩ এপ্রিল সকালে নিখোঁজ ইফাজের নানা কাজী মোমিন উদ্দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় গিয়ে দেখা করলে তিনি পুলিশ ও র‍্যাবকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্তের জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন। র‍্যাব, থানা-পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা দেড় মাস তদন্ত শেষে কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।’ 

নিখোঁজের দুই মাসে সন্ধান কিংবা কেউ অর্থ দাবি করেনি জানিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘ইফাজ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অর্থ দাবি করেনি। আমার ছেলের সঙ্গে কারও কোনো প্রকার শত্রুতাও ছিল না। আমাদের জানা মতে, ইফাজ কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। তারপরও আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে তাঁকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। কিন্তু গত দুই মাসের অধিক সময় ধরে আমার একমাত্র ছেলে নিখোঁজ রয়েছে। রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তার কোনো সন্ধান দিতে পারছে না।’ এ সময় ছেলেকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করেন নিখোঁজ ইফাজের মা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত