Ajker Patrika

পাটের দামে বেজার চাষি, কদর বেড়েছে পাটকাঠির

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১৫: ২২
পাটের দামে বেজার চাষি, কদর বেড়েছে পাটকাঠির

চলতি বছর অনাবৃষ্টিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে পাটচাষিদের। একদিকে সার ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে লোডশেডিং। বাজরে পাটের দাম আশানুরূপ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন চাষিরা। তবে পাটের ক্ষতি পোষাতে কিছুটা জোগান দিচ্ছে পাটকাঠি। পাটের দাম ভালো না পেলেও কদর বেড়েছে পাটকাঠির।

মেহেরপুরের গাংনীতে পাটকাঠি শুকাতে ব্যস্ত চাষিদের পরিবার। তবে পাটকাঠি শুকাতে বেশি পরিশ্রম করেন বাড়ির গৃহিণীরা। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছে পাটকাঠি নিয়ে। পাটের দাম না থাকায় আলাদা নজর পড়েছে পাটকাঠির ওপর।

দেবীপুর গ্রামের পাটচাষি মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘এ বছর অনাবৃষ্টি, তার ওপর সার ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি—সব মিলিয়ে ভাবিয়ে তুলেছিল পাটচাষিদের। তবে পাটের দাম ভালো পেলে আর কষ্ট থাকত না। পাট আর পাটকাঠির হিসাব করলেও খরচ উঠছে না। মনে করেছিলাম পাটের লাভের সঙ্গে জোগান দেবে পাটকাঠির লভ্যাংশ, কিন্তু তা আর হচ্ছে না। পাটের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে চাষিরা পাটকাঠি নিয়ে ব্যস্ত থাকছেন।’

উপজেলার অলিনগর গ্রামের পাটচাষি মারফত আলী বলেন, ‘খাল, বিল ও পুকুরে পানি না থাকায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত সেচ পাম্প দিয়ে পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছিল। এতে বাড়তি খরচ গুনতে হয়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ লেগেছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে আবার সার ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি ছিল। পাট আর পাটকাঠিতেও মূল খরচ উঠছে না। বিঘাপ্রতি প্রায় ৫ হাজার টাকা হবে পাটকাঠিতে।’

তেরাইল গ্রামের পাটকাঠি ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘পাটকাঠির দাম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে পাটকাঠির ধরনের ওপর নির্ভর করে এর দাম। বাজারে পাটকাঠির চাহিদা রয়েছে। আমরা সাধারণত পাটকাঠির গাদাসহ কিনে থাকি। এগুলো পরিষ্কার করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করি। পাটকাঠি নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। আর পাটকাঠি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পানের বরজে।’

মো. নাজির হোসেন বলেন, ‘পাটের আবাদ করিনি। তাই পাটকাঠি নেওয়ার জন্য মজুরি দিয়ে পাট ছাড়িয়ে নিয়েছি। একজন মজুরকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত খরচ দিতে হয়েছে। পাটকাঠি জ্বালানি, বেড়া-ঘেরা, গোবরের লাঠি দেওয়া, পানের বরজসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলায় সাড়ে ১২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল চাষিদের।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, পাট জাগ বা পচন দেওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন এবার পাটচাষিরা। অনাবৃষ্টির কারণে এই ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছিল। এ বছর পাট চাষ করতে গিয়ে চাষিদের বাড়তি খরচ গুনতে হয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। পাটে যে বাড়তি খরচ হয়েছে, তা কিছুটা পুষিয়ে দিচ্ছে পাটকাঠি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত