শখের উপহারে আয়ের স্বপ্ন! 

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৫২
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ১৬

রংপুরের পীরগাছায় বন্ধুর দেওয়া বিদেশি জাতের কবুতর পালনে আয়ের স্বপ্ন দেখছেন মোবাইল মেকানিক সোহান মিয়া। শখের উপহার এখন সংসারে অর্থের জোগান দিচ্ছে। এক জোড়া কবুতর থেকে শুরু করে সোহান মিয়ার খামারে এখন রয়েছে ৫০ জোড়া বিভিন্ন জাতের কবুতর। প্রতি মাসে বিক্রি করলেও দিনদিন বাড়ছে খামারে পরিধি। 

সোহান মিয়া (৩২) পীরগাছা উপজেলার অনন্তরাম উচাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। 

জানা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আর্থিক অনটন ও নানা সমস্যায় জর্জরিত সোহান মিয়া। টাকার জন্য ছুটছিলেন এদিক-ওদিক। এ সময় টাকা ধারের জন্য এক বন্ধুর কাছে যান তিনি। কিন্তু টাকা ধারের বদলে ওই বন্ধু তাঁকে বিদেশি জাতের এক জোড়া কবুতর উপহার দেন। এরপর থেকে সোহান মিয়া মেকানিক পেশার পাশাপাশি যত্নসহকারে কবুতর লালন-পালন করতে থাকেন। তখন থেকেই অনলাইনে ঘাঁটাঘাঁটি করে কিনে আনেন আরও দুই জোড়া কবুতর। এভাবেই বাড়তে থাকে সোহান মিয়ার কবুতরের খামারের পরিধি। 

বর্তমানে তাঁর খামারে শোকিং, পটার, বিউটি হোমার, ইংলিশ টেলমার্কসহ ১০ প্রজাতির ৫০ জোড়া কবুতর রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় দুই ২ লাখ টাকার কবুতর বিক্রি করেন তিনি। একেকটি কবুতর দুটি করে ডিম ও বাচ্চা দেয়। প্রতি মাসেই কবুতরগুলো ডিম ও বাচ্চা দেয়। এসব কবুতর হাটবাজারে পাওয়া দুষ্কর। তবে বেচাবিক্রি বলতে অনলাইনই একমাত্র ভরসা। অনলাইনে দেখাশোনা আর দরদাম করে দেশের যেকোনো প্রান্তে কুরিয়ারে কবুতর পাঠানো হয়। 

সোহান মিয়ার খামারে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দামের কবুতর রয়েছে। চলতি বছর উপজেলা প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন তিনি। তাঁকে দেখে অনেকেই বিদেশি জাতের কবুতর পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন। 

সোহান মিয়া বলেন, ‘উপহারের কবুতর আমাকে আয়ের পথ দেখিয়েছে। আমার এক ভাই ফারুক আহম্মেদের অনুপ্রেরণাই আমাকে কবুতর পালনে উৎসাহ দিয়েছে। আমি যখন বাসায় থাকি না, তখন আমার স্ত্রী দেখাশোনা করে। বেচাবিক্রিও হয় অনলাইনে। আমাদের ফেসবুক গ্রুপ আছে। সেখানেই দেখা ও কেনা হয়। আমিও নতুন কোনো জাত পেলে কিনে আনি। কিছু কবুতর আমার কাছের মানুষ হয়ে গেছে। আমাকে দেখলেই চেঁচামেচি করে। আমি ডাকলে সাড়া দেয়। আমার দুই ঘাড়ে উঠে বসে থাকে। এরা আমার সন্তানের মতো।’ 

এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, বিদেশি জাতের কবুতর পালন লাভজনক। অনেকেই শখের বসে পালতে গিয়ে খামার দিয়েছেন। লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে অনেক খামারও গড়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত