শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ (রংপুর)
‘সেদিনকায় ত্যালের দাম সাত ট্যাকা বাড়াইল, ফের বলে ত্যালের দাম বাড়াওচে। সরকার যদি এক ট্যাকা বাড়ায়, তা দোকানদার হামারটে তিন ট্যাকা বেশি নেয়। খালি ত্যালে নোয়্যায়, সবজির দাম, মাংসোরও দাম বাড়চে। হাটোত ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার পতিযোগিতাত নামচে। ক্যামবা করি হামরা সংসার চালামো চিন্তা করি পাওঁছি না। এমন করি দাম বাললে (বাড়লে) চুরি করিবার নাগিবে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের যখন নাভিশ্বাস, সেই পরিস্থিতিতে নিজের অসহায়ত্বের কথা এভাবেই বলছিলেন দিনমজুর সাদেকুল ইসলাম।
রংপুর জেলার তারাগঞ্জ হাটে মাংস শেডের পাশে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন সাদেকুল। তিনি জানান, এক সপ্তাহের বাজার তিনি তারাগঞ্জ হাট থেকে এক দিনে করে নিয়ে যান। এতে কিছুটা সাশ্রয় হয়। কিন্তু আজ হাটে এসে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে আত্মীয় আসায় ১ হাজার টাকা নিয়ে হাটে এসেছিলেন। ৬০০ টাকা দিয়ে এক কেজি গরুর মাংস কিনেছেন। যেখানে এক মাস আগেও কিনেছেন ৫০০ টাকা দরে। বাকি টাকায় কীভাবে অন্য খরচ করবেন তার হিসাব মেলাতে পারছেন না।
৩৫০ টাকা দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করেন নদীরপাড় গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম। এ টাকায় স্ত্রী, সন্তান আর বাবা-মাসহ সাত সদস্যের সংসার চলে তাঁর। তারাগঞ্জ হাটে খালি থলে নিয়ে মাংস শেডে ঘুরছিলেন তিনি।
আলাপকালে আনোয়ারুল বলেন, ‘ভাই, হিসাব করো তো—এক দিনে কামাই মোর ৩৫০ ট্যাকা। দুই বেলা খাবার গেইলে পাঁচ সের (৩ কেজি ৫০০ গ্রাম) চাল নাগে, তার দাম ১৬০ ট্যাকা, এক সের বাগুন নেয় ৫০ ট্যাকা, এক কেজি কপি নেয় ৩৫ ট্যাকা, তেল, নুন, আকালি (কাঁচা মরিচ), পিঁয়াজ, রসুন, হলুদ আর মসলা নাগে ৫০ ট্যাকা। দৈনিক বাড়ির লোকজনের ওষুধ নাগে ৩০ থাকি ৪০ ট্যাকার। তার উপর ছাওয়াগুলার লেখাপড়ার খরচ। আরও খরচ তো আচে। শখ করি কোনো দিন পছন্দের তরকারি নিগারপাওঁ না। চার দিন থাকি ছাওয়াগুলা বায়না ধরছে গরুর গোস্ত খাইবে। হাওলাত করি ৫০০ ট্যাকা ধরি আসচুং। তাক ফির ৬০০ ট্যাকা চাওচে। ২০ দিন আগোতে ৫০০ ট্যাকাত বেচা দেখছুন গরুর গোস্ত। ত্যালের মতোন গোস্তরও দাম বাড়ছে, কবারে পাওঁ না। সউগ জিনিসের দাম বাড়ায় সংসার চালা খুব কষ্ট হয়্যা গেইচে।’
সাদেকুল ইসলাম আর আনোয়ারুল ইসলামের মতো তারাগঞ্জের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের এখন অসহায় অবস্থা। ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসার খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা।
আজ তারাগঞ্জ হাট ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৬০০ টাকা, সোনালি মুরগির মাংস ২২০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির মাংস ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১৮০-১৮৫ টাকা, বোতলজাত তেল ১৭০-১৭৫ টাকা, বেগুন প্রতিকেজি ৫০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, ফুলকপি ৩৫ টাকা, শিম ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৫৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জয়বাংলা গ্রামের ইয়াকুব আলী বলেন, ‘হাটোত ত্যাল, সবজি, মসল্লা, মাংসের যে দাম, তাতে মনে হয় নুন দিয়া সাদা ভাত খায়া বাঁচির নাগবে। শোনোচি, খোলা ত্যাল নাকি বন্ধ হইবে। তাহলে সরকারোক হামার জন্যে ২০ ট্যাকার বোতল বানার কন। না হইলে তো হামরা বড় ত্যালের বোতল কিনবার পাবার নাই।’
কুঠিয়ালপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক মণ আলু বেচে এক কেজি মাংস কিনার পাওঁচি না। আবাদের খরচ, সংসার খরচ নিয়া খুব টানা-হাছড়ার মধ্যে আচি। দুইটারে জিনিসপাতির খুব দাম। সরকার কয়, দ্যাশ বাঁচলে কৃষক বাঁচপে। কিন্তুক কৃষক তো মরি যাওছে। হামার আবাদি জিনিস বাজারোত বেচার গেইলে দাম নাই। সেই জিনিস ফের বেশি দামে কিনি খাবার নাগোচে।’
‘সেদিনকায় ত্যালের দাম সাত ট্যাকা বাড়াইল, ফের বলে ত্যালের দাম বাড়াওচে। সরকার যদি এক ট্যাকা বাড়ায়, তা দোকানদার হামারটে তিন ট্যাকা বেশি নেয়। খালি ত্যালে নোয়্যায়, সবজির দাম, মাংসোরও দাম বাড়চে। হাটোত ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার পতিযোগিতাত নামচে। ক্যামবা করি হামরা সংসার চালামো চিন্তা করি পাওঁছি না। এমন করি দাম বাললে (বাড়লে) চুরি করিবার নাগিবে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের যখন নাভিশ্বাস, সেই পরিস্থিতিতে নিজের অসহায়ত্বের কথা এভাবেই বলছিলেন দিনমজুর সাদেকুল ইসলাম।
রংপুর জেলার তারাগঞ্জ হাটে মাংস শেডের পাশে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন সাদেকুল। তিনি জানান, এক সপ্তাহের বাজার তিনি তারাগঞ্জ হাট থেকে এক দিনে করে নিয়ে যান। এতে কিছুটা সাশ্রয় হয়। কিন্তু আজ হাটে এসে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে আত্মীয় আসায় ১ হাজার টাকা নিয়ে হাটে এসেছিলেন। ৬০০ টাকা দিয়ে এক কেজি গরুর মাংস কিনেছেন। যেখানে এক মাস আগেও কিনেছেন ৫০০ টাকা দরে। বাকি টাকায় কীভাবে অন্য খরচ করবেন তার হিসাব মেলাতে পারছেন না।
৩৫০ টাকা দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করেন নদীরপাড় গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম। এ টাকায় স্ত্রী, সন্তান আর বাবা-মাসহ সাত সদস্যের সংসার চলে তাঁর। তারাগঞ্জ হাটে খালি থলে নিয়ে মাংস শেডে ঘুরছিলেন তিনি।
আলাপকালে আনোয়ারুল বলেন, ‘ভাই, হিসাব করো তো—এক দিনে কামাই মোর ৩৫০ ট্যাকা। দুই বেলা খাবার গেইলে পাঁচ সের (৩ কেজি ৫০০ গ্রাম) চাল নাগে, তার দাম ১৬০ ট্যাকা, এক সের বাগুন নেয় ৫০ ট্যাকা, এক কেজি কপি নেয় ৩৫ ট্যাকা, তেল, নুন, আকালি (কাঁচা মরিচ), পিঁয়াজ, রসুন, হলুদ আর মসলা নাগে ৫০ ট্যাকা। দৈনিক বাড়ির লোকজনের ওষুধ নাগে ৩০ থাকি ৪০ ট্যাকার। তার উপর ছাওয়াগুলার লেখাপড়ার খরচ। আরও খরচ তো আচে। শখ করি কোনো দিন পছন্দের তরকারি নিগারপাওঁ না। চার দিন থাকি ছাওয়াগুলা বায়না ধরছে গরুর গোস্ত খাইবে। হাওলাত করি ৫০০ ট্যাকা ধরি আসচুং। তাক ফির ৬০০ ট্যাকা চাওচে। ২০ দিন আগোতে ৫০০ ট্যাকাত বেচা দেখছুন গরুর গোস্ত। ত্যালের মতোন গোস্তরও দাম বাড়ছে, কবারে পাওঁ না। সউগ জিনিসের দাম বাড়ায় সংসার চালা খুব কষ্ট হয়্যা গেইচে।’
সাদেকুল ইসলাম আর আনোয়ারুল ইসলামের মতো তারাগঞ্জের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের এখন অসহায় অবস্থা। ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসার খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা।
আজ তারাগঞ্জ হাট ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৬০০ টাকা, সোনালি মুরগির মাংস ২২০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির মাংস ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১৮০-১৮৫ টাকা, বোতলজাত তেল ১৭০-১৭৫ টাকা, বেগুন প্রতিকেজি ৫০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, ফুলকপি ৩৫ টাকা, শিম ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৫৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জয়বাংলা গ্রামের ইয়াকুব আলী বলেন, ‘হাটোত ত্যাল, সবজি, মসল্লা, মাংসের যে দাম, তাতে মনে হয় নুন দিয়া সাদা ভাত খায়া বাঁচির নাগবে। শোনোচি, খোলা ত্যাল নাকি বন্ধ হইবে। তাহলে সরকারোক হামার জন্যে ২০ ট্যাকার বোতল বানার কন। না হইলে তো হামরা বড় ত্যালের বোতল কিনবার পাবার নাই।’
কুঠিয়ালপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক মণ আলু বেচে এক কেজি মাংস কিনার পাওঁচি না। আবাদের খরচ, সংসার খরচ নিয়া খুব টানা-হাছড়ার মধ্যে আচি। দুইটারে জিনিসপাতির খুব দাম। সরকার কয়, দ্যাশ বাঁচলে কৃষক বাঁচপে। কিন্তুক কৃষক তো মরি যাওছে। হামার আবাদি জিনিস বাজারোত বেচার গেইলে দাম নাই। সেই জিনিস ফের বেশি দামে কিনি খাবার নাগোচে।’
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার বিটাক মোড়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের শমরিতা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজ
৩২ মিনিট আগেরাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার বিটাক মোড়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত ১০টা থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রাত ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘট
২ ঘণ্টা আগেব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে আটক করেছে বিজিবি। আজ রোববার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দর বিজিবি চেকপোস্ট থেকে তাঁকে আটক করে বিজিবি আইসিপি ক্যাম্পের টহলরত জওয়ানরা।
৩ ঘণ্টা আগেপুরান ঢাকায় সেন্ট গ্রেগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার রাজধানীর ৩৫ এর অধিক কলেজের শিক্ষার্থীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজে ভাঙচুর ও লুটপাট করার পর ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা ৫টার দিকে এ হামলা চালায়।
৩ ঘণ্টা আগে