‘হামার পোড়া কপাল, বর্ষার দিনেও পানি কিনি ধান নাগাই’

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর) 
Thumbnail image

‘কী করমো, হামার পোড়া কপাল। বর্ষার দিনে আকাশে মেঘ করলেও বৃষ্টি নাই। পানি কিনি ধান নাগাই, সকালে পানি দিলে বিকেলে থাকে না। বৃষ্টি না হইলে হামরা মাঠে মারা পড়মো।’ 

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৃষক জহুরুল ইসলাম আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন।

আষাঢ় শেষে মধ্য শ্রাবণ মাস চলছে। আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টির দেখা নেই। মাঠঘাট পানিশূন্য। বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ করছেন পীরগাছা উপজেলার কৃষকেরা। তাতে একরপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ২৭টি ব্লকে চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১ হাজার ৬শ ৭৩ মেট্রিক টন। 

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক এলাকার উঁচু জমিগুলো খালি পড়ে আছে। পানির অভাবে কৃষকেরা চারা রোপণ করতে পারছেন না। আবার অনেকে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছেন। অনেক জমিতে লাগানো চারা পানির অভাবে শুকিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে।

পীরগাছায় শ্যালো মেশিনে সেচ দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকাউপজেলা কৃষি দপ্তরের মতে, গোটা উপজেলায় ২০ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমির মধ্যে ১৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। বাকি জমিতে ১৫-২০ দিনের মধ্যে রোপণ হয়ে যাবে।

উপজেলার অনন্তরাম গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ সরকার, আতাউর রহমান, হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘আষাঢ় শেষে শ্রাবণ মাসও যায় যায় অবস্থা। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ করেছি। তাতে একরপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।’

উপজেলার জগজীবন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হক বলেন, বৃষ্টি না থাকায় কৃষকেরা সমস্যায় পড়েছে। আর অনেক আমনের জমিতে পানি যাওয়ার ড্রেন ব্যবস্থা নেই। তাতে কৃষকের আমন চাষে সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৃষ্টির কারণে আমন চাষে কৃষকের খরচ একটু বেশি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬৫ ভাগ জমিতে আমন রোপণ করা হয়ে গেছে। বাকি ৩৫ ভাগও কয়েক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত