আলো–আঁধারের খেলায় কতটা ঝুঁকিপূর্ণ রিজার্ভ

  • অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ২.৩৯ বিলিয়ন
  • সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আকু বিল শোধযোগ্য ১.৫ বিলিয়ন
  • ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়নের ঘরে
  • ডিসেম্বরে আইএমএফের রিজার্ভের লক্ষ্য ১৫.৩২ বিলিয়ন
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৩১
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

রিজার্ভ ঘিরে চলছে আলো-আঁধারের খেলা। এই বাড়ে তো আবার কমে। শঙ্কার কারণ হলো, কখনো কখনো রিজার্ভের এই স্তর নেমে আসে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে। পরিস্থিতির উন্নয়নে তখন চাতক পাখির মতো বাংলাদেশ ব্যাংককে তাকিয়ে থাকতে হয় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানিকারকদের আয় প্রত্যাবাসনের দিকে। এর গতি যত বাড়ে, রিজার্ভ ঘিরে শঙ্কাও তত প্রশমিত হয়। কিন্তু অভাগার মতোই সেটি স্থিতিশীল ও ঝুঁকিমুক্ত হতে পারছে না। কারণ, সরকারি ও বেসরকারিভাবে সম্পন্ন হওয়া বৈদেশিক লেনদেনে ব্যয় হওয়া অর্থ পরিশোধে আবার রিজার্ভ নেমে আসছে অস্বস্তির জায়গায়। বছর তিনেক ধরে রিজার্ভ পরিস্থিতি এমন অস্থিতিশীলতার চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এতে গতকাল পর্যন্ত দেশে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলারে। সেখান থেকে গত দুই মাসের আকু বিল ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে মোট রিজার্ভ নেমে আসবে সাড়ে ২৩ বিলিয়নের ঘরে। অথচ গত জুলাইতেও রিজার্ভ ছিল ২৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ের জন্য আকুভুক্ত ৯টি দেশের আমদানি বিল বাবদ মোট ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার চলতি সপ্তাহে পরিশোধ করতে হবে; যা মোট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ২ বিলিয়ন থেকে পরিশোধ করলে দাঁড়াবে ২৩ দশমিক ৭ বিলিয়নে।

অন্যদিকে গতকাল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নির্দেশিত বিপিএম-৬ মানদণ্ড অনুযায়ী রিজার্ভ রয়েছে ১৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ থাকবে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার; যা আইএমএফের বেঁধে দেওয়া সীমা ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম।

এভাবে প্রায় প্রতি মাসে সংকটে আবর্তিত হচ্ছে রিজার্ভ; যার নেপথ্যে রয়েছে ডলারের পর্যাপ্ত সংকট। পরিস্থিতি উন্নয়নে আমদানিতে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ, বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবে (এফসিএ) সুদের সীমা প্রত্যাহার, বৈদেশিক বিনিয়োগ সহজীকরণ, ইডিএফ তহবিল কমানো এবং অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ডলার সংগ্রহের বাড়তি উদ্যোগ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

পাশাপাশি রেমিট্যান্স পাঠানোর শর্ত শিথিল এবং বাড়তি ডলার পেতে কয়েক ধাপে প্রণোদনাও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের পণ্যমূল্য মনিটরিংয়ে মাধ্যমে ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের আড়ালে ডলার সাশ্রয় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এতে আমদানি ব্যয়ও অনেকটা কমেছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ স্বস্তি আনতে পারছে না রিজার্ভে।

যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা আজকের পত্রিকাকে জানান, রিজার্ভ তার আদর্শ পর্যায়েই রয়েছে; যা দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। অর্থাৎ রিজার্ভ তুলনামূলক কম হলেও তা কোনো ঝুঁকিতে ফেলছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত