Ajker Patrika

সহশিক্ষা কার্যক্রমে সফল লাবণ্য

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
সহশিক্ষা কার্যক্রমে সফল লাবণ্য

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট গ্রামে লাবণ্যর বেড়ে ওঠা। পীরগঞ্জ বণিক সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর ভর্তি হন পীরগঞ্জ সরকারি কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোম ইকোনমিকস ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সে, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিষয়ে।

পড়াশোনার বাইরে ছোটবেলা থেকে লাবণ্য এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটির সঙ্গে যুক্ত হন। এসব কাজে মা-বাবা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াননি; বরং পাশে থেকে সাহস ও ভরসা জুগিয়েছেন। ফলে আর দশটা মেয়ের চেয়ে লাবণ্যর সাফল্যের হার বেশি। 

টার্নিং পয়েন্ট
সফল মানুষদের জীবনে কোথাও না কোথাও একটা টার্নিং পয়েন্ট থাকে। যেটা জীবনের বাঁক বদল করে দেয়। লাবণ্যর টার্নিং পয়েন্ট করোনাকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হওয়া এবং সেই সূত্রে নানান পেশা ও সংগঠনের হাজার মানুষের সঙ্গে পরিচয়। তাঁদের সঙ্গে কাজের সুযোগ। সেই সুবাদে লাবণ্য মল্লিক এখন বেশ পরিচিত। কাজ করতে গিয়ে শুরুর দিকে সবাই বলত, অযথা সময় নষ্ট হচ্ছে। কেউ কেউ লাবণ্যর এই সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া মানতে পারছিলেন না। এর মধ্যে বন্ধুবান্ধবও বাদ যাননি। 

লাবণ্যর বহুমুখী প্রতিভা
আবৃত্তি, বিতর্ক, উপস্থাপনা, স্ক্রিপ্ট রাইটিংয়ে সফল লাবণ্য। অল্প কিছুদিনে তিনি সংবাদ, অডিও বুক, বিজ্ঞাপন, কলার টিউন, কার্টুন, ডকুমেন্টারিসহ আরও অনেক কনটেন্টে ভয়েস ওভার দিয়ে খ্যাতি পেয়েছেন। ফেসবুকে লাবণ্য মল্লিক নামের পেজে তিনি জীবনের উত্থান-পতন এবং ব্যর্থতা, হতাশা থেকে পরিত্রাণের নানান গল্প, কবিতা এবং লেখা পাঠ করেন। খুব ছোটবেলা থেকে লাবণ্য কবিতা পড়েন। কবিতা তাঁকে খুব টানে। স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে এসে নিয়মিত আবৃত্তি করছেন। কবিতা লেখায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত শাপলা উৎসবে ঠাকুরগাঁও জেলা পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আবৃত্তির জন্য ডাক পান লাবণ্য।  

 

শখের জায়গা থেকে সবকিছু করলেও এসব থেকে যা আয় হয়, তা মন্দ নয়। এই আয়ে লাবণ্যর প্রতি মাসের পকেট খরচ চলে যায়। 

২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন লাবণ্য। বিতর্কে সেরা হওয়ার জন্য পেয়েছেন একাধিক আঞ্চলিক ও জাতীয় পুরস্কার। পাশাপাশি ফেসবুক এবং ইউটিউবের শিক্ষা ও তথ্যমূলক কনটেন্টের জন্য কিছু চ্যানেলে কনটেন্ট রাইটিং করেন। উপস্থাপনার পাশাপাশি ভয়েস আর্টিস্ট বাংলাদেশের অনলাইন রেডিও ভিএবিতে কাজ করছেন তিনি। প্রশ্ন করতে পারেন, লেখাপড়া করে এত সময় পাওয়া যায়? লাবণ্য জানান, সময়ের কাজ সময়ে করলে সব সহজ হয়ে যায়।

শখের জায়গা থেকে সবকিছু করলেও এসব থেকে যা আয় হয়, তা মন্দ নয়। এই আয়ে লাবণ্যর প্রতি মাসের পকেট খরচ চলে যায়। 

সংগঠনের গল্প
অনেকগুলো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত লাবণ্য। তিনি ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন, বাংলাদেশের যুগ্ম সাংস্কৃতিক সম্পাদক, সোসাইটি ফর ক্রিয়েটিভ কালচার বাংলাদেশের শিক্ষা ও সাহিত্যবিষয়ক পরিচালক, গ্লোরি ফিউচার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা, ভয়েস আর্টিস্ট বাংলাদেশের ট্রেজারার, এডুকেশন অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট কমরেডস বাংলাদেশের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।

এত পুরস্কার
এ পর্যন্ত ২০টির বেশি প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন লাবণ্য। এগুলোর মধ্যে সেকেন্ড রানারসআপ বিআইসি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ২০২২, বারোয়ারি বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন, ঢাকা ডিভিশন বিতর্কে প্রথম রানারসআপ এবং ইএসডিও ডিবেট ফেস্টিভ্যাল ২০২১-এর বেস্ট স্পিকার, কেজেড এসডিসি ন্যাশনাল ডিবেট ফেস্টিভ্যাল ২০২১-এ চ্যাম্পিয়ন। 

আগামীর ভাবনা
এখন যে কাজগুলোর সঙ্গে যুক্ত, সেগুলো চলমান থাকবে বলে জানান লাবণ্য মল্লিক। পাশাপাশি খাদ্য ও পুষ্টি নিয়ে গবেষণা করবেন ভবিষ্যতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত