১০০ পাউন্ড থেকে যে গল্প পৌঁছেছে হাজার কোটিতে

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৫৮
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ২২

ইউরোপিয়ান ফুটবলে সবচেয়ে দামি ফুটবলারের নামটা আমরা জানি। ২০১৭ সালে নেইমারকে বার্সেলোনা থেকে ১৯৮ মিলিয়ন পাউন্ডে কিনে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। এখন পর্যন্ত আর কোনো ফুটবলার সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেননি।

শুরুর দিকে দলবদল এতটা রমরমা আর আকর্ষণীয় ছিল না। ১৮৯৩ সাল ছিল টেলিফোন আবিষ্কারের ১৭তম বছর। টেলিভিশন আবিষ্কার আরও পরের ঘটনা। তখনই প্রথমবারের মতো তিন অঙ্কের মূল্য দিয়ে খেলোয়াড় কিনে নেয় অ্যাস্টন ভিলা। ওয়েস্ট ব্রম থেকে ১০০ পাউন্ডে স্কটিশ ফরোয়ার্ড উইলি গ্রোভসকে নেয় ভিলা।

১৮৯২ সালে এফএ কাপে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ওয়েস্ট ব্রমের ৩-০ গোলে জেতা ম্যাচে দারুণ খেলেন গ্রোভস। পরের বছরই ১০০ পাউন্ড দিয়ে ওয়েস্ট ব্রম থেকে ভিলা পার্কে গ্রোভসকে নিয়ে আসে ভিলা। এমনকি তখন অবৈধভাবে খেলোয়াড় নিয়ে আসার অভিযোগে ২৫ পাউন্ড জরিমানা করা হয় তাদের।

ইংল্যান্ডে খেলোয়াড় কেনা-বেচার ধারণা প্রথম সামনে আসে ১৮৮৫ সালে। সে সময় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) খেলোয়াড়দের নিবন্ধন শুরু করে। এর আগে একজন খেলোয়াড় যেকোনো ক্লাবের সঙ্গে এক বা দুই ম্যাচ খেলার জন্য চুক্তি করতে পারতেন। খেলোয়াড়দের নিবন্ধনের আওতায় আনার মধ্য দিয়ে তাঁদের বাধ্য করা হয় অন্তত এক মৌসুমে একটি নির্দিষ্ট ক্লাবের হয়ে খেলতে। চুক্তিবদ্ধ না হলে কোনো খেলোয়াড় খেলার অনুমতি পেতেন না। এমনকি এক ক্লাবের হয়ে চুক্তি করে অন্য ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ ছিল না।

১৮৮৮ সালে ফুটবল লিগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর খেলোয়াড় ধরে রাখা ও ছেড়ে দেওয়ার নিয়ম চালু হয়। তবে একজন খেলোয়াড় চুক্তিবদ্ধ ক্লাবের অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো ক্লাবের হয়ে খেলতে পারতেন না। এমনকি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চুক্তি নবায়ন না হলেও এটি প্রযোজ্য থাকত। চুক্তিবদ্ধ ক্লাবটি সেই খেলোয়াড়কে খেলাতে বাধ্য ছিল না। পাশাপাশি চুক্তি বহাল না থাকায় তিনি কোনো বেতনও পেতেন না। এরপর আসে খেলোয়াড় বিক্রি করে ক্লাবগুলোর মূল্য পাওয়ার বিষয়টি।

১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এই নিয়ম কমবেশি অপরিবর্তিত থেকে যায়। ঐতিহাসিক ‘বসম্যান রুলিং’য়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই নিয়মের রাজত্ব। বেলজিয়ান খেলোয়াড় জ্য মার্ক-বসম্যানকে স্ট্যান্ডার্ড লিয়েজ থেকে কিনে নেয় আরএফসি লিয়েজ। কিন্তু তাঁকে কোনো ম্যাচ খেলায়নি তারা। এরপর তাঁকে কিনে নিতে চায় ডানকেরেকে। বসম্যানের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ দাবি করে বসে লিয়েজ। কিন্তু তা দিতে রাজি ছিল না ডানকেরেক। এভাবে আটকে যায় তাঁর দলবদল। না খেলার কারণে তাঁর বেতনও কমে যায় ৭৫ শতাংশ।

আরএফসি, বেলজিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ও উয়েফার বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসে মামলা করেন ক্ষুব্ধ বসম্যান। ১৯৯৫ সালে মামলার রায় আসে বসম্যানের পক্ষে, যা তাঁকে তো বটেই, অন্য খেলোয়াড়দেরও শৃঙ্খল মুক্ত করে। সেসব বাধা পেরিয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবল এখন প্রবেশ করেছে হাজার কোটি টাকার চুক্তির জগতে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত