‘প্রার্থী হয়েও নিজের মা-বোনদের ভোট পাই না’

চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৬: ৪১
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৫৩

‘নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। সবার কাছে ভোট চাইছি। অথচ আমরা প্রার্থী হয়েও আমাদের মা-বোন ও স্ত্রী-মেয়েদের ভোট পাই না। তবে ভোট দেওয়ার জন্য তাদের জোরাজুরিও করি না।’ অকপটে কথাগুলো বললেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার এক সদস্য প্রার্থী। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬ নম্বর রূপসা দক্ষিণ ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর মত আরও অনেক সদস্য প্রার্থীের একই মন্তব্য।

গতকাল নির্বাচন চলাকালে সকাল ৯টার দিকে কেন্দ্রের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তাঁরা ভোটারদের কাছে ভোট চাইছিলেন। এ সময় নারী ভোটার না থাকার কারণ জানতে চাইলে প্রায় অভিন্ন সুরে কথা বলেন প্রার্থীরা।

সদস্য প্রার্থী আহসান উল্লাহ (প্রতীক মোরগ) বলেন, ‘আমি প্রার্থী হয়েছি। অথচ আমার পরিবারের নারীরাও আমাকে ভোট দিবে না। আমার তাতে আক্ষেপও নেই। পিরের কথা ও প্রথা মানতে আমাদের এলাকার নারীরা বহু বছর ধরে ভোট দেয় না। আমরা চেষ্টা করলেও নারীরা তাতে সাড়া দেয় না।’

আরেক প্রার্থী মোরশেদ আলম পাটওয়ারী (প্রতীক আপেল) বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আমাদের মা-বোন-স্ত্রী-মেয়েরা ভোট দেয় না। জৈনপুরের পিরের নির্দেশ মানতেই তারা এমনটি করে আসছে। এই দুই প্রার্থীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে তাদের বক্তব্যে সায় দিয়ে গেছেন অন্য ৩ প্রার্থী।’

তবে ১,২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য প্রার্থী সুমাইয়া আক্তার সাথী (প্রতীক বই) বলেন, ‘আমি যেহেতু প্রার্থী হয়েছি তাই নিজের ভোট দিব। তবে অন্য মহিলাদের কেন্দ্রে আনার চেষ্টা করি নাই। কারণ, এই প্রথা দীর্ঘদিনের।’

সকাল ৯টায় কাওনিয়া শহীদ হাবিব উল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের নারী বুথে (৫ নং বুথ) যেয়ে দেখা যায়, কোনো ভোটার উপস্থিতি নেই। বুথের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আ. জব্বার বলেন, তখন পর্যন্ত কোনো নারী ভোটার ভোট দিতে আসেননি।

স্থানীয় বাসিন্দা লিটন পাটওয়ারী (৪৫) বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির এমপি প্রার্থী লায়ন হারুনুর রশিদের পরিবারের প্রায় ২০ জন নারী ভোট দিয়েছিলেন। এটি এখন পর্যন্ত এই এলাকায় একযোগে সবচেয়ে বেশি নারীর ভোট দেওয়ার ঘটনা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত