সত্যজিৎ রায়

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৭: ৩৫

সত্যজিৎ রায় একাধারে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক, সম্পাদক ও লেখক। চলচ্চিত্র পরিচালনায় তাঁর অসাধারণ নৈপুণ্য এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বাংলা চলচ্চিত্রে একটি নতুন মাত্রা তৈরি করেছিল।

তাঁর বাবা ছিলেন অন্যতম সেরা শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় এবং ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন সুপরিচিত লেখক ও চিত্রকর। কলকাতায় জন্ম হলেও সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া গ্রামে।

প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেন অর্থনীতি ও চারুকলা বিষয়ে। কিন্তু জীবনের অন্বেষা হয়ে যায় চলচ্চিত্র। তাঁর চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহ ও উৎসাহ সৃষ্টি হয় ১৯৪৯ সালে ফ্রান্সের সিনেমা পরিচালক জঁ রনোয়ার সঙ্গে পরিচয়ের পর। আর এর পরের বছরই চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন।

সিনেমাজগতে আসার আগে সিগনেট প্রেসে বইয়ের কভার ইলাস্ট্রেশনের কাজ করেছেন। সেখানে দুটি অসামান্য বই—জিম করবেটের ‘ম্যান-ইটারস অব কুমায়ুন’ এবং জওহরলাল নেহরুর ‘দ্য ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া’র প্রচ্ছদ করেছেন তিনি।

১৯৬১ সালে তিনি কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথভাবে ছোটদের পত্রিকা ‘সন্দেশ’ সম্পাদনা শুরু করেন। বাবার মৃত্যুর কিছুদিন পর পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। আর লেখক হিসেবে সৃষ্ট তাঁর বিখ্যাত চরিত্র—গোয়েন্দা ফেলুদা, বৈজ্ঞানিক প্রফেসর শঙ্কু ও তারিনীখুড়ো। তিনি এই তিনটি চরিত্র ছাড়াও অনেক ছোট উপন্যাস ও ছোটগল্প রচনা করেছেন। ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ সিনেমাটি তিনি নিজের গল্প থেকে তৈরি করেন। এটিই তাঁর প্রথম রঙিন সিনেমা।

পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র মিলিয়ে সত্যজিৎ রায় পরিচালনা করেছেন ৩৭টি সিনেমা। স্বীকৃতি হিসেবে অস্কারের পাশাপাশি পেয়েছেন নানা সম্মাননা। তবে তাঁর চলচ্চিত্র সমালোচকদের কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করলেও ‘পথের পাঁচালী’ ও ‘অশনিসংকেত’ সিনেমা দুটির বিরুদ্ধে দারিদ্র্য রপ্তানি এবং বিদেশে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছিল।

সত্যজিৎ রায়ের ডাকনাম ছিল মানিক। ‘মানিকদা’ নামেই বাংলা চলচ্চিত্রজগতে পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল না-ফেরার দেশে চলে যান মানিকদা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত