মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। করোনার অতিমারি সত্ত্বেও ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়েছে। পৃথিবীর সব রাষ্ট্রই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিশেষ দিন ও বছরে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বেশির ভাগ রাষ্ট্রই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের প্রতি সম্মান জানিয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে রাজনীতির চড়াই-উতরাই পার হয়ে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক এবং উন্নয়নের নানা সূচকে যেসব বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে, তারও প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যেমন ছিল এক কঠিন, সামরিক ও কূটনৈতিক যুদ্ধ অতিক্রম করে বিজয় লাভ করার ইতিহাস, একই সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে শূন্য হাতে গড়ে তোলার এক কঠিন চ্যালেঞ্জ, যা ৫০ বছরের পথচলায় আরেক কঠিন অর্জনের ইতিহাস। এরই মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয় এবং উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করার স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ যদি মুক্তিযুদ্ধকালের ধ্বংসযজ্ঞের শিকার না হতো, রাজনৈতিক শাসন ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন হতো, হত্যা, ক্যু ও সামরিক শাসন না ঘটত, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাধাবিপত্তি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সৃষ্টি করা না হতো, তাহলে উন্নয়নের এই পথচলা আরও ত্বরান্বিত হতো। ৫০ বছরের পথচলার অর্ধেকের কম সময় বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দ্বারা। সুতরাং, বাংলাদেশের ৫০ বছর এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর সব সময় যেমন নিরবচ্ছিন্ন থাকেনি, তেমনি আবার প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার সুযোগও সব সময় সবার কাছ থেকে পায়নি। তারপরও আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ইতিহাসকে এখন উন্নয়ন-সহযোগী এবং বিশ্বের উন্নত সব রাষ্ট্রই প্রশংসার দৃষ্টিতে দেখছে। এটি একটি প্রেরণার বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর প্রধান শক্তিধর রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের সরকারপ্রধান বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের কাছে যে দীর্ঘ বার্তা প্রেরণ করেছেন, সেটি দৃষ্টি কাড়ার মতো। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে অনেকগুলো বিষয়ের অবতারণা করেছেন, যা পড়ে বোঝা যায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গৌরবময় দিকগুলোকে সবার দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করছে। তবে একই সঙ্গে সম্পর্কের কোনো কোনো পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের নেতিবাচক অবস্থানকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাও তাতে আমাদের দৃষ্টি এড়ায়নি। জো বাইডেন যেমন তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘১৯৫৮ সাল থেকেই এই দুই দেশ শিক্ষা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ওই সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ৩০ দিনের এক মতবিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নেন।’ প্রেসিডেন্ট বাইডেন আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তিকে স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী পাকিস্তান আমলের মাঝামাঝি তথা ১৯৫৮ সাল থেকে দেখছেন, যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে টানা এক মাস যুক্তরাষ্ট্রের একটি মতবিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে আখ্যায়িত করে সেই অবস্থানকেই সম্পর্কের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবার তাঁর লেখা চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনে এবং বর্তমানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে বাংলাদেশিদের কর্মশক্তি, উর্বর মস্তিষ্ক ও উদ্ভাবন গোটা বিশ্বের কাছে একটি মডেল হিসেবে কাজ করে।’
যুক্তরাষ্ট্র সরকার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করলেও জনগণ এবং কংগ্রেসম্যানসহ প্রভাবশালী অনেকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্রের সেরা দাবিদার রাষ্ট্রটির সরকার তখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যকে বুঝতে পারেনি। এখানেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও আদর্শের বৈপরীত্য বিশ্বে গণতন্ত্রের প্রসারে অনেক সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র কখনো বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় আবার কখনো সে হাত গুটিয়ে নেয়। এটি অবশ্য নির্ভর করে কখন কোন সরকার ওই রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকে তার ওপর। একাত্তরে নিক্সন-কিসিঞ্জার সরকার পাকিস্তানের মতো কসাই রাষ্ট্রের ‘বন্ধুত্বকে’ গুরুত্ব দিতে গিয়ে বাংলাদেশকে দমন করতে সপ্তম নৌবহরও ভারত মহাসাগরে পাঠিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সে সময় পাকিস্তানের জেনোসাইডকে এভাবে অন্ধের মতো সমর্থন না দিলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে এত মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারত না। যুদ্ধ শেষে পূর্ব বাংলার ক্ষয়ক্ষতি উপেক্ষা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বিদ্রূপ করে এই দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ নামে আখ্যায়িত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন বিদ্রূপ এবং অবস্থান মানবতা, স্বাধীনতা ও উদার গণতন্ত্রের প্রতি ওই রাষ্ট্রের শাসকশ্রেণির সংকীর্ণতার পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্র হিসেবে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিলে পৃথিবীর চেহারা অনেক আগেই বদলে যেত। তারপরও মার্কিন জনগণের মনোভাবকে বুঝতে পেরে ১৯৭২ সালে নিক্সন সরকারই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের উদ্বোধন ঘটে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে। ওই বছরের ১ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে বঙ্গবন্ধু উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আলোচনা করেন। এরপর ৩০ অক্টোবর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯ ঘণ্টার জন্য ঢাকা সফরে আসেন। তিনি দুই ঘণ্টা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে গণভবনে অবস্থান এবং উভয় দেশের সম্পর্কোন্নয়নে আলোচনা করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র সদ্য স্বাধীন দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে দ্বৈত নীতি বজায় রাখায় স্বাধীন যেকোনো রাষ্ট্রের জন্য খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে। কিউবায় বাংলাদেশের পাট রপ্তানির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সুনজরে দেখেনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাল আমদানির জাহাজ সময়মতো চট্টগ্রামে ভেড়েনি। এর ফলে বঙ্গবন্ধু সরকার সময়মতো খাদ্যসংকট মোকাবিলা করতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নানা বাধা এবং শর্ত আগাগোড়াই ছিল এবং আছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভূমিকা সামরিক সরকারের প্রতি যতটা সহজ বলে পরিলক্ষিত হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি মার্কিন নীতির সাংঘর্ষিকতারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশকে যে কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হয়েছিল, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও সহযোগিতা সেই রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে যতখানি সাজুয্যপূর্ণ হয়েছে, ততখানি কেবল লাভ করা সম্ভব হয়েছে। নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশ রাজনৈতিক শাসন প্রতিষ্ঠায় ফিরে আসে। দেশের অর্থনৈতিক নীতি-কৌশলের অনেক পরিবর্তন ঘটে। মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসৃত হতে থাকে। বাংলাদেশ পোশাক তৈরি ও রপ্তানিতে দ্রুত উন্নতি লাভ করতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে। যদিও ট্যারিফ প্রদানের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সুবিধা বাংলাদেশকে দেওয়া হয়নি। তারপরও বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অবস্থান সংহত করতে পেরেছে। এর ফলে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৯ বিলিয়ন ডলার আয় করে। বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের পর যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস একটি পত্রিকায় এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর ৮০ শতাংশই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। করোনার টিকা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৬ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা বিনা মূল্যে দিয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে অংশীদারত্বের সহযোগিতা প্রদানে আশ্বাস দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক বাঙালি কর্মসূত্রে অবস্থান করছেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রে দুই দেশের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সে দেশে সফর করছে। মন্ত্রী মার্কিন নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। তাতে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ধারণাও ব্যক্ত করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ মার্কিন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সঙ্গে আগামী ৫০ বছরও সম্পর্কের উচ্চতা নির্মাণে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, অংশীদারত্বমূলক নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তবে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ এবং নানা অপশক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হচ্ছে, তা মার্কিন দৃষ্টিতে যেভাবে দেখা হয়, সেটি বাংলাদেশের বাস্তবতায় বেশ ভিন্নতা রয়েছে। সে কারণেই মাঝেমধ্যে সম্পর্কের ওঠানামা, ভুল-বোঝাবুঝি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের ধারায় বিকশিত করার ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির ভূমিকা যেমন রয়েছে একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক দেশগুলোরও সহযোগিতা ও সমর্থন আরও নিবিড় হওয়া প্রয়োজন। নানা শর্ত জুড়ে দিয়ে মাঝেমধ্যে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের অভ্যন্তরে উদীয়মান লড়াইরত গণতান্ত্রিক শক্তি; উল্লসিত হয় প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক অগণতান্ত্রিক অপশক্তি। র্যাবের কতিপয় সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দেশের অভ্যন্তরে যারা মার্কিন-বাংলাদেশ সম্পর্ক ধ্বংস হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল, তারাই আবার জো বাইডেনের চিঠির বক্তব্য দেখে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক তখনই উচ্চতায় উঠতে সক্ষম হবে, যখন উদারবাদী গণতান্ত্রিক শক্তি, মৌলবাদী শক্তি, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে রাষ্ট্র পরিচালনার সমর্থন ও সুযোগ পাবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসনের ধারণা কেতাবে থাকবে, বাস্তবে দূরে সরে যাবে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। করোনার অতিমারি সত্ত্বেও ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়েছে। পৃথিবীর সব রাষ্ট্রই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিশেষ দিন ও বছরে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বেশির ভাগ রাষ্ট্রই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের প্রতি সম্মান জানিয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে রাজনীতির চড়াই-উতরাই পার হয়ে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক এবং উন্নয়নের নানা সূচকে যেসব বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে, তারও প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যেমন ছিল এক কঠিন, সামরিক ও কূটনৈতিক যুদ্ধ অতিক্রম করে বিজয় লাভ করার ইতিহাস, একই সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে শূন্য হাতে গড়ে তোলার এক কঠিন চ্যালেঞ্জ, যা ৫০ বছরের পথচলায় আরেক কঠিন অর্জনের ইতিহাস। এরই মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয় এবং উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করার স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ যদি মুক্তিযুদ্ধকালের ধ্বংসযজ্ঞের শিকার না হতো, রাজনৈতিক শাসন ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন হতো, হত্যা, ক্যু ও সামরিক শাসন না ঘটত, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাধাবিপত্তি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সৃষ্টি করা না হতো, তাহলে উন্নয়নের এই পথচলা আরও ত্বরান্বিত হতো। ৫০ বছরের পথচলার অর্ধেকের কম সময় বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দ্বারা। সুতরাং, বাংলাদেশের ৫০ বছর এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর সব সময় যেমন নিরবচ্ছিন্ন থাকেনি, তেমনি আবার প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার সুযোগও সব সময় সবার কাছ থেকে পায়নি। তারপরও আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ইতিহাসকে এখন উন্নয়ন-সহযোগী এবং বিশ্বের উন্নত সব রাষ্ট্রই প্রশংসার দৃষ্টিতে দেখছে। এটি একটি প্রেরণার বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর প্রধান শক্তিধর রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের সরকারপ্রধান বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের কাছে যে দীর্ঘ বার্তা প্রেরণ করেছেন, সেটি দৃষ্টি কাড়ার মতো। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে অনেকগুলো বিষয়ের অবতারণা করেছেন, যা পড়ে বোঝা যায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গৌরবময় দিকগুলোকে সবার দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করছে। তবে একই সঙ্গে সম্পর্কের কোনো কোনো পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের নেতিবাচক অবস্থানকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাও তাতে আমাদের দৃষ্টি এড়ায়নি। জো বাইডেন যেমন তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘১৯৫৮ সাল থেকেই এই দুই দেশ শিক্ষা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ওই সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ৩০ দিনের এক মতবিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নেন।’ প্রেসিডেন্ট বাইডেন আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তিকে স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী পাকিস্তান আমলের মাঝামাঝি তথা ১৯৫৮ সাল থেকে দেখছেন, যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে টানা এক মাস যুক্তরাষ্ট্রের একটি মতবিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে আখ্যায়িত করে সেই অবস্থানকেই সম্পর্কের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবার তাঁর লেখা চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনে এবং বর্তমানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে বাংলাদেশিদের কর্মশক্তি, উর্বর মস্তিষ্ক ও উদ্ভাবন গোটা বিশ্বের কাছে একটি মডেল হিসেবে কাজ করে।’
যুক্তরাষ্ট্র সরকার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করলেও জনগণ এবং কংগ্রেসম্যানসহ প্রভাবশালী অনেকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্রের সেরা দাবিদার রাষ্ট্রটির সরকার তখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যকে বুঝতে পারেনি। এখানেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও আদর্শের বৈপরীত্য বিশ্বে গণতন্ত্রের প্রসারে অনেক সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র কখনো বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় আবার কখনো সে হাত গুটিয়ে নেয়। এটি অবশ্য নির্ভর করে কখন কোন সরকার ওই রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকে তার ওপর। একাত্তরে নিক্সন-কিসিঞ্জার সরকার পাকিস্তানের মতো কসাই রাষ্ট্রের ‘বন্ধুত্বকে’ গুরুত্ব দিতে গিয়ে বাংলাদেশকে দমন করতে সপ্তম নৌবহরও ভারত মহাসাগরে পাঠিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সে সময় পাকিস্তানের জেনোসাইডকে এভাবে অন্ধের মতো সমর্থন না দিলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে এত মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারত না। যুদ্ধ শেষে পূর্ব বাংলার ক্ষয়ক্ষতি উপেক্ষা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বিদ্রূপ করে এই দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ নামে আখ্যায়িত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন বিদ্রূপ এবং অবস্থান মানবতা, স্বাধীনতা ও উদার গণতন্ত্রের প্রতি ওই রাষ্ট্রের শাসকশ্রেণির সংকীর্ণতার পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্র হিসেবে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিলে পৃথিবীর চেহারা অনেক আগেই বদলে যেত। তারপরও মার্কিন জনগণের মনোভাবকে বুঝতে পেরে ১৯৭২ সালে নিক্সন সরকারই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের উদ্বোধন ঘটে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে। ওই বছরের ১ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে বঙ্গবন্ধু উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আলোচনা করেন। এরপর ৩০ অক্টোবর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯ ঘণ্টার জন্য ঢাকা সফরে আসেন। তিনি দুই ঘণ্টা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে গণভবনে অবস্থান এবং উভয় দেশের সম্পর্কোন্নয়নে আলোচনা করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র সদ্য স্বাধীন দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে দ্বৈত নীতি বজায় রাখায় স্বাধীন যেকোনো রাষ্ট্রের জন্য খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে। কিউবায় বাংলাদেশের পাট রপ্তানির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সুনজরে দেখেনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাল আমদানির জাহাজ সময়মতো চট্টগ্রামে ভেড়েনি। এর ফলে বঙ্গবন্ধু সরকার সময়মতো খাদ্যসংকট মোকাবিলা করতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নানা বাধা এবং শর্ত আগাগোড়াই ছিল এবং আছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভূমিকা সামরিক সরকারের প্রতি যতটা সহজ বলে পরিলক্ষিত হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি মার্কিন নীতির সাংঘর্ষিকতারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশকে যে কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হয়েছিল, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও সহযোগিতা সেই রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে যতখানি সাজুয্যপূর্ণ হয়েছে, ততখানি কেবল লাভ করা সম্ভব হয়েছে। নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশ রাজনৈতিক শাসন প্রতিষ্ঠায় ফিরে আসে। দেশের অর্থনৈতিক নীতি-কৌশলের অনেক পরিবর্তন ঘটে। মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসৃত হতে থাকে। বাংলাদেশ পোশাক তৈরি ও রপ্তানিতে দ্রুত উন্নতি লাভ করতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে। যদিও ট্যারিফ প্রদানের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সুবিধা বাংলাদেশকে দেওয়া হয়নি। তারপরও বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অবস্থান সংহত করতে পেরেছে। এর ফলে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৯ বিলিয়ন ডলার আয় করে। বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের পর যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস একটি পত্রিকায় এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর ৮০ শতাংশই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। করোনার টিকা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৬ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা বিনা মূল্যে দিয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে অংশীদারত্বের সহযোগিতা প্রদানে আশ্বাস দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক বাঙালি কর্মসূত্রে অবস্থান করছেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রে দুই দেশের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সে দেশে সফর করছে। মন্ত্রী মার্কিন নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। তাতে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ধারণাও ব্যক্ত করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ মার্কিন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সঙ্গে আগামী ৫০ বছরও সম্পর্কের উচ্চতা নির্মাণে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, অংশীদারত্বমূলক নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তবে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ এবং নানা অপশক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হচ্ছে, তা মার্কিন দৃষ্টিতে যেভাবে দেখা হয়, সেটি বাংলাদেশের বাস্তবতায় বেশ ভিন্নতা রয়েছে। সে কারণেই মাঝেমধ্যে সম্পর্কের ওঠানামা, ভুল-বোঝাবুঝি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের ধারায় বিকশিত করার ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির ভূমিকা যেমন রয়েছে একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক দেশগুলোরও সহযোগিতা ও সমর্থন আরও নিবিড় হওয়া প্রয়োজন। নানা শর্ত জুড়ে দিয়ে মাঝেমধ্যে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের অভ্যন্তরে উদীয়মান লড়াইরত গণতান্ত্রিক শক্তি; উল্লসিত হয় প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক অগণতান্ত্রিক অপশক্তি। র্যাবের কতিপয় সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দেশের অভ্যন্তরে যারা মার্কিন-বাংলাদেশ সম্পর্ক ধ্বংস হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল, তারাই আবার জো বাইডেনের চিঠির বক্তব্য দেখে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক তখনই উচ্চতায় উঠতে সক্ষম হবে, যখন উদারবাদী গণতান্ত্রিক শক্তি, মৌলবাদী শক্তি, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে রাষ্ট্র পরিচালনার সমর্থন ও সুযোগ পাবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসনের ধারণা কেতাবে থাকবে, বাস্তবে দূরে সরে যাবে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে