মহিউদ্দিন খান মোহন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘নিঃশর্ত’ মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিল বিএনপি গত ২৪ সেপ্টেম্বর। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়। জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অন্যথায় তাঁর কিছু হলে সব দায়দায়িত্ব এ সরকারকেই নিতে হবে।’ মির্জা আলমগীরের এ বক্তব্য পরদিন দেশের সব দৈনিকেই প্রকাশিত হয়েছে।
এখানে লক্ষণীয় হলো, বিএনপির মহাসচিব খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে কঠোর কোনো কর্মসূচির হুমকি দেননি; বরং তাঁর কোনো ক্ষতি হলে তার দায়দায়িত্ব সরকারের কাঁধে চাপিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছেন।
বিএনপির দেওয়া আলটিমেটামের পর পেরিয়ে গেছে এক সপ্তাহ। কিন্তু দলটি এরপর আর নেত্রীর মুক্তির দাবিতে কোনো কর্মসূচি দেয়নি। কারাবন্দী হওয়ার পাঁচ বছর পর হঠাৎ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির এই বিশেষ কর্মসূচি জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি করেছিল সংগত কারণেই; বিশেষ করে যে কঠোর ভাষায় সেদিন বিএনপির নেতারা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন, তাতে মনে হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টা পরে তাঁরা অধিকতর কঠোর কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। কেন হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। বিএনপির নেতারা কি সত্যি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্তরিক, নাকি এটাও সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করার একটা উপলক্ষ হিসেবেই নিয়েছেন? আমার এ কথায় বিএনপির কেউ কেউ রুষ্ট হতে পারেন। তাতে আমার কিছু যায়-আসে না।
এটা তো অস্বীকার করা যাবে না, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দীর্ঘ পাঁচ বছরেও বিএনপি কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, যা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সবারই স্মরণ থাকার কথা, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির নেতারা বলেছিলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও আইনি প্রক্রিয়ায় নেত্রীকে মুক্ত করে আনবেন। তখন বিএনপির মহাসচিব এ-ও বলেছিলেন, নেত্রী তাঁর মুক্তির দাবিতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। কিন্তু আন্দোলন মানেই তো বিশৃঙ্খলা নয়।
খালেদা জিয়ার কোটি কোটি ভক্ত-অনুরাগী আশা করেছিলেন, তিনি জেলবন্দী হওয়ার পরপরই হয়তো বড় ধরনের কোনো মিছিল-সমাবেশের কর্মসূচি দেবে বিএনপি। কিন্তু তারা সেটা দেননি বা দিতে পারেননি; বরং দৃশ্যমান হয়েছে, নেত্রীকে কারান্তরালে রেখে দলটির নেতারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তায় মশগুল রয়েছেন। এমনকি ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করেছিলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে খালেদা জিয়ার মুক্তি তাঁরা আদায় করে নেবেন।
কিন্তু তাঁদের হতাশ করে দলটির নীতিনির্ধারকেরা বিনা শর্তেই নির্বাচনে নেমে পড়েছিলেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিএনপি যদি তখন সরকারকে এই বলে ‘আলটিমেটাম’ দিত, খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে নির্বাচনে যাব না, তাহলে সরকার সেই দাবি মানতে বাধ্য হতো। কেননা, ২০১৪-এর বিতর্কিত নির্বাচনের পরে আরও একটি একতরফা নির্বাচনের ঝুঁকি সরকার হয়তো নিত না। কিন্তু বিএনপি সেই দৃঢ়তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ওই নির্বাচনকালীন কতিপয় নেতার আস্ফালন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তাঁরা বলেছিলেন, নির্বাচনের পরদিন জেলখানার তালা ভেঙে খালেদা জিয়াকে বের করে আনবেন। বলা বাহুল্য, এর সবই ছিল বায়বীয় আস্ফালন।
যে যত সমালোচনাই করুক, নিন্দাবাদ দিক, এটা স্বীকার করতেই হবে যে এ দেশে এখনো কোটি কোটি মানুষ খালেদা জিয়ার ভক্ত-অনুরাগী। একসময় তিনি তুমুল জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। এই জনপ্রিয়তা তিনি পান তাঁর মরহুম স্বামী আরেক জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পত্নী হিসেবে এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নয় বছর রাজপথে নিরবচ্ছিন্ন নেতৃত্ব দিয়ে। নেতৃত্বের দৃঢ়তায় তিনি উঠে যান অনন্য উচ্চতায়। অর্জন করেন ‘আপসহীন নেত্রী’র অভিধা। এই অভিধা নিরর্থক ছিল না। ১৯৮২ সালে চেপে বসা স্বৈরশাসন হটাতে তিনি যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন, তা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। একদা ‘আপসহীন নেত্রী’র উপাধিতে ভূষিত খালেদা জিয়াকেও শেষ পর্যন্ত আপস করতে হয়েছে।
নিজের মুক্তির ব্যাপারে দলের নিদারুণ ব্যর্থতায় ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের শর্ত মেনেই তিনি বেরিয়ে আসেন কারাগার থেকে। সরকার তাঁকে জেলখানার পরিবর্তে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেয়। সেই থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর সরকার তাঁর বাসায় থাকার মেয়াদ বাড়াচ্ছে।নেত্রীকে মুক্ত করতে বিএনপির সীমাহীন এই ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। শুধু বিএনপির নেতা-কর্মী নন, যাঁরা দল করেন না, অথচ খালেদা জিয়াকে পছন্দ করেন, তাঁরাও হতাশ। কারণ, গত পাঁচ বছরে বিএনপি অসংখ্য কর্মসূচি দিলেও নেত্রীর মুক্তির দাবিতে দোয়া মাহফিল ছাড়া একক কোনো কর্মসূচি দেয়নি।
বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও বলতে দ্বিধা নেই, আমি এখনো খালেদা জিয়ার অনুরক্ত ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দীর্ঘদিন বিএনপির কর্মী হিসেবে এবং পাঁচ বছর তাঁর সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালনকালে তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলি আমি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রশ্নে তাঁর আন্তরিকতার ঘাটতি কখনো আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। হয়তো তাঁর নিজের ভুলে কিংবা বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি আজ চরম দুর্দশাগ্রস্ত। একজন সাবেক কর্মী হিসেবে তাই খালেদা জিয়ার আজকের অবস্থা আমাকে বিচলিত না করে পারে না। মনে পড়ে তিনি কারাবন্দী হওয়ার পর মহাসচিব মির্জা আলমগীরসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বলেছিলাম, ম্যাডামের মুক্তির দাবিতে আপনারা স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি দেন।
এমনিতেই তো সরকার আপনাদের ধরে ধরে জেলে ভরে। ম্যাডামের জন্য না হয় আরেকবার ভরবে। তাঁদের বলেছিলাম, এই কর্মসূচি সরকারকে চাপে ফেলবে। কিন্তু বিএনপির ‘রাজপথের সাহসী’ নেতারা সেই কর্মসূচি দিতে সাহস পাননি। ফলে আজ যখন তাঁরা নেত্রীর মুক্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন, তখন মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কি তাঁদের অন্তরের কথা, নাকি মুখের বুলি? পত্রিকায় দেখলাম, হাসপাতালে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা বলতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব কেঁদে ফেলেছেন। অনেকে তাঁর এই কান্নায় ভারাক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার কাছে এর কানাকড়ি মূল্যও নেই। কারণ, কর্মীরা নেতার চোখে ব্যর্থতার অশ্রু দেখতে চায় না। তারা নেতার চোখে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখতে চায়। কিন্তু ভেজা ম্যাচ-কাঠিতে যে আগুন জ্বলে না!
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘নিঃশর্ত’ মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিল বিএনপি গত ২৪ সেপ্টেম্বর। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়। জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অন্যথায় তাঁর কিছু হলে সব দায়দায়িত্ব এ সরকারকেই নিতে হবে।’ মির্জা আলমগীরের এ বক্তব্য পরদিন দেশের সব দৈনিকেই প্রকাশিত হয়েছে।
এখানে লক্ষণীয় হলো, বিএনপির মহাসচিব খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে কঠোর কোনো কর্মসূচির হুমকি দেননি; বরং তাঁর কোনো ক্ষতি হলে তার দায়দায়িত্ব সরকারের কাঁধে চাপিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছেন।
বিএনপির দেওয়া আলটিমেটামের পর পেরিয়ে গেছে এক সপ্তাহ। কিন্তু দলটি এরপর আর নেত্রীর মুক্তির দাবিতে কোনো কর্মসূচি দেয়নি। কারাবন্দী হওয়ার পাঁচ বছর পর হঠাৎ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির এই বিশেষ কর্মসূচি জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি করেছিল সংগত কারণেই; বিশেষ করে যে কঠোর ভাষায় সেদিন বিএনপির নেতারা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন, তাতে মনে হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টা পরে তাঁরা অধিকতর কঠোর কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। কেন হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। বিএনপির নেতারা কি সত্যি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্তরিক, নাকি এটাও সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করার একটা উপলক্ষ হিসেবেই নিয়েছেন? আমার এ কথায় বিএনপির কেউ কেউ রুষ্ট হতে পারেন। তাতে আমার কিছু যায়-আসে না।
এটা তো অস্বীকার করা যাবে না, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দীর্ঘ পাঁচ বছরেও বিএনপি কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, যা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সবারই স্মরণ থাকার কথা, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির নেতারা বলেছিলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও আইনি প্রক্রিয়ায় নেত্রীকে মুক্ত করে আনবেন। তখন বিএনপির মহাসচিব এ-ও বলেছিলেন, নেত্রী তাঁর মুক্তির দাবিতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। কিন্তু আন্দোলন মানেই তো বিশৃঙ্খলা নয়।
খালেদা জিয়ার কোটি কোটি ভক্ত-অনুরাগী আশা করেছিলেন, তিনি জেলবন্দী হওয়ার পরপরই হয়তো বড় ধরনের কোনো মিছিল-সমাবেশের কর্মসূচি দেবে বিএনপি। কিন্তু তারা সেটা দেননি বা দিতে পারেননি; বরং দৃশ্যমান হয়েছে, নেত্রীকে কারান্তরালে রেখে দলটির নেতারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তায় মশগুল রয়েছেন। এমনকি ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করেছিলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে খালেদা জিয়ার মুক্তি তাঁরা আদায় করে নেবেন।
কিন্তু তাঁদের হতাশ করে দলটির নীতিনির্ধারকেরা বিনা শর্তেই নির্বাচনে নেমে পড়েছিলেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিএনপি যদি তখন সরকারকে এই বলে ‘আলটিমেটাম’ দিত, খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে নির্বাচনে যাব না, তাহলে সরকার সেই দাবি মানতে বাধ্য হতো। কেননা, ২০১৪-এর বিতর্কিত নির্বাচনের পরে আরও একটি একতরফা নির্বাচনের ঝুঁকি সরকার হয়তো নিত না। কিন্তু বিএনপি সেই দৃঢ়তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ওই নির্বাচনকালীন কতিপয় নেতার আস্ফালন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তাঁরা বলেছিলেন, নির্বাচনের পরদিন জেলখানার তালা ভেঙে খালেদা জিয়াকে বের করে আনবেন। বলা বাহুল্য, এর সবই ছিল বায়বীয় আস্ফালন।
যে যত সমালোচনাই করুক, নিন্দাবাদ দিক, এটা স্বীকার করতেই হবে যে এ দেশে এখনো কোটি কোটি মানুষ খালেদা জিয়ার ভক্ত-অনুরাগী। একসময় তিনি তুমুল জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। এই জনপ্রিয়তা তিনি পান তাঁর মরহুম স্বামী আরেক জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পত্নী হিসেবে এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নয় বছর রাজপথে নিরবচ্ছিন্ন নেতৃত্ব দিয়ে। নেতৃত্বের দৃঢ়তায় তিনি উঠে যান অনন্য উচ্চতায়। অর্জন করেন ‘আপসহীন নেত্রী’র অভিধা। এই অভিধা নিরর্থক ছিল না। ১৯৮২ সালে চেপে বসা স্বৈরশাসন হটাতে তিনি যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন, তা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। একদা ‘আপসহীন নেত্রী’র উপাধিতে ভূষিত খালেদা জিয়াকেও শেষ পর্যন্ত আপস করতে হয়েছে।
নিজের মুক্তির ব্যাপারে দলের নিদারুণ ব্যর্থতায় ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের শর্ত মেনেই তিনি বেরিয়ে আসেন কারাগার থেকে। সরকার তাঁকে জেলখানার পরিবর্তে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেয়। সেই থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর সরকার তাঁর বাসায় থাকার মেয়াদ বাড়াচ্ছে।নেত্রীকে মুক্ত করতে বিএনপির সীমাহীন এই ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। শুধু বিএনপির নেতা-কর্মী নন, যাঁরা দল করেন না, অথচ খালেদা জিয়াকে পছন্দ করেন, তাঁরাও হতাশ। কারণ, গত পাঁচ বছরে বিএনপি অসংখ্য কর্মসূচি দিলেও নেত্রীর মুক্তির দাবিতে দোয়া মাহফিল ছাড়া একক কোনো কর্মসূচি দেয়নি।
বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও বলতে দ্বিধা নেই, আমি এখনো খালেদা জিয়ার অনুরক্ত ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দীর্ঘদিন বিএনপির কর্মী হিসেবে এবং পাঁচ বছর তাঁর সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালনকালে তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলি আমি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রশ্নে তাঁর আন্তরিকতার ঘাটতি কখনো আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। হয়তো তাঁর নিজের ভুলে কিংবা বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি আজ চরম দুর্দশাগ্রস্ত। একজন সাবেক কর্মী হিসেবে তাই খালেদা জিয়ার আজকের অবস্থা আমাকে বিচলিত না করে পারে না। মনে পড়ে তিনি কারাবন্দী হওয়ার পর মহাসচিব মির্জা আলমগীরসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বলেছিলাম, ম্যাডামের মুক্তির দাবিতে আপনারা স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি দেন।
এমনিতেই তো সরকার আপনাদের ধরে ধরে জেলে ভরে। ম্যাডামের জন্য না হয় আরেকবার ভরবে। তাঁদের বলেছিলাম, এই কর্মসূচি সরকারকে চাপে ফেলবে। কিন্তু বিএনপির ‘রাজপথের সাহসী’ নেতারা সেই কর্মসূচি দিতে সাহস পাননি। ফলে আজ যখন তাঁরা নেত্রীর মুক্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন, তখন মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কি তাঁদের অন্তরের কথা, নাকি মুখের বুলি? পত্রিকায় দেখলাম, হাসপাতালে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা বলতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব কেঁদে ফেলেছেন। অনেকে তাঁর এই কান্নায় ভারাক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার কাছে এর কানাকড়ি মূল্যও নেই। কারণ, কর্মীরা নেতার চোখে ব্যর্থতার অশ্রু দেখতে চায় না। তারা নেতার চোখে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখতে চায়। কিন্তু ভেজা ম্যাচ-কাঠিতে যে আগুন জ্বলে না!
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৯ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে