আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশীয় সিনেমার অংশগ্রহণ। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে লড়বে মুহাম্মদ কাইউম পরিচালিত ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। দেশের হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের জীবনসংগ্রামের গল্প নিয়ে সিনেমাটির প্রেক্ষাপট। হাওরাঞ্চলের বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে বৈষম্য ও বঞ্চনার মাঝে কীভাবে টিকে থাকে প্রান্তিক মানুষ, সে গল্পই লোকজ ঐতিহ্যের আবহে দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। এ ছাড়া ভূ-প্রাকৃতিক পরিবর্তন, ঋতুর বৈচিত্র্য ইত্যাদি বিষয়ও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম।

৪ নভেম্বর সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল রাজধানীর বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে। এরপর চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে প্রদর্শিত হয়েছে। মুক্তির সময় হলের সংকটে ভুগলেও ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ সিনেমাটি যাঁরাই দেখেছেন, প্রশংসা করেছেন সবাই। এ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়িতা মহলানবিশ, উজ্জ্বল কবির হিমু, সুমি ইসলাম, সামিয়া আকতার বৃষ্টি, বাদল শহীদ, মাহমুদ আলম, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। সিনেমাটির প্রযোজকও মুহাম্মদ কাইউম।

‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ছাড়াও কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে লড়বে সারা বিশ্বের ১৪টি সিনেমা। উৎসবে ৫২টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন, ৫৭টি দেশ থেকে জমা হওয়া ১ হাজার ৭৮টি চলচ্চিত্রের মধ্যে বাছাই করে ১৮০টি চলচ্চিত্র দেখানো হবে।

১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে, শহরের ১০টি হলে সিনেমা প্রদর্শনী হবে বলে জানা গেছে। ৮ দিনব্যাপী এই উৎসব শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর।

‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’র গল্পের কেন্দ্রে আছে সুলতান নামের এক যুবক। ধান কাটার শ্রমিকদের সঙ্গে হাওরে আসে সে। কাজ নেয় এক বৃদ্ধের বাড়িতে। ধীরে ধীরে হাওরের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে সুলতান, পরিবারের সবার সঙ্গে মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে যেতে থাকে। একসময় সেখানে বিয়েও করে সে। নতুন করে ঘর বাঁধে। স্বপ্ন দেখে নতুন জীবনের। অনেক খেটেখুটে সেখানে ধান লাগায়। তার বিস্তীর্ণ জমিতে ফলে রাশি রাশি সোনালি ধান। তবে সফল তোলার আগেই তার সুখের সংসার একদিন ভেসে যায় পাহাড়ি ঢলে।