ফজলুল কবির
এই বঙ্গমুলুকে একেক সময় একেক ধারা তৈরি হয়, একটা প্রবণতা গণ হয়ে হাজির হয়। এটা এ মাটির রোগ শুধু, নাকি সব দেশে সব কালেই ছিল বা আছে, কে জানে। কেউ কিছু একটা করে বা লিখে বা বলে আলোচনায় এলে দেখা যায় অন্য অনেকেই সে পথে হাঁটছে। শব্দ ব্যবহারের সময়ও অনেককে দেখা যায় এই প্রবণতার ফেরে পড়তে। জনপরিসরে চালু শব্দ-রাজনীতির ফাঁদে পড়ে যেতে দেখা যায় অনেক বিদগ্ধ লেখককেও। অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে এমন অতিশয়োক্তি করতে দেখা যায় অনেককে, যা সাধারণ্যে মানালেও বুদ্ধিজীবিতার সঙ্গে যায় না।
এ প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। আগে প্রবণতার কিছু নমুনা দেখা যাক। মোবাইল ডিভাইসে যেদিন থেকে ফ্রন্ট ক্যামেরা যুক্ত হলো, সেদিন থেকেই সেলফি এক ভীষণ ট্রেন্ডি বিষয় হয়ে দাঁড়াল। হবে না কেন? কে না জানে, আত্মপ্রেমই বড় প্রেম। না, সেলফি এর আগেও মানুষ তুলেছে, কিন্তু ছবি তোলার ডিভাইসের ক্যামেরা ‘ফ্রন্টাল’ ছিল না বলে, এত বাড়বাড়ন্তি ছিল না। মুশকিল হলো, মোবাইল ডিভাইসে ফ্রন্ট ক্যামেরা আসার পর।
কতটা মুশকিল? মানুষ ভাইরাল সেলফি তুলতে অসম্ভব সাধনে নেমে পড়ছে। এই তো গত মে মাসে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে এক কিশোর গুরুতর আহত হলো। শেষ পর্যন্ত মারাও গেল সে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এটিই প্রথম নয়। এর আগেও রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে এই বঙ্গেই বহুজন মরেছে। বয়সের বিচারও নেই। মৃতের তালিকায় আছে শিশু-কিশোর থেকে মাঝবয়সীও। ফলে একে ঠিক কৈশোরিক উচ্ছ্বাস বা অ্যাডভেঞ্চারপ্রবণতা দিয়ে ব্র্যাকেটবন্দী করা চলে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এমন হাজারটা প্রবণতার উদাহরণ দেওয়া যাবে। সেদিকে আর না যাওয়াই ভালো। লেখালেখি বা কথা বলার ক্ষেত্রেও দেখা মেলে এমন কিছু শব্দ ও প্রবণতার। গত কয়েক বছরে এমনই এক শব্দ ও তা ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিয়েছে—বিকল্পহীন। কথায় কথায় এটা, ওটা, সেটাকে ‘অবিকল্প’ ঘোষণার এক মারি দেখা দিয়েছে যেন। এতেও কৈশোরিক কোনো ব্যাপার নেই। বয়সনির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানা উদ্দেশ্যে শব্দটি প্রয়োগ করছে। এই দেখে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে জগতে বিকল্পহীন বস্তু আসলে কী? আদৌ এমন কিছুর অস্তিত্ব আছে কী?
একটু খুলে বলা যাক। এই যে হঠাৎ লোডশেডিং চলছে গোটা দেশে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন অক্ষমতাই হোক বা সঞ্চালনজনিত সংকটই হোক, কিংবা আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজারের ফেরেই হোক, বিদ্যুৎহীনতার কিন্তু নাভিশ্বাস ঠিকই উঠছে। এতে মেজাজ চড়ছে, ক্ষোভ হচ্ছে, নানা গুলতানি হচ্ছে শহর বা গ্রামেও। তাই বলে আলোহীন অন্ধকারে নিশ্চয় বসে থাকছেন না আপনি। একটা চার্জার লাইট, ব্যাটারি লাইট, জেনারেটর, আইপিএস, মোমবাতি, হারিকেন বা কুপিবাতি হলেও খুঁজে নিয়ে অন্ধকারের ভূতটাকে ঠিকই তাড়াচ্ছে মানুষ; যার যেমন সামর্থ্য আরকি। প্রতিপক্ষ যখন অন্ধকার, তখন কিন্তু সে আলোর বিবিধ উৎস ঠিকই খুঁজে নিচ্ছে। হতোদ্যম হয়ে কেউ বসে নেই।
আসা যাক যোগাযোগের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন বিশ্ব শাসন করা চিঠি এখন স্মৃতিগদ্য হয়ে গেছে। এ নিয়ে রোমান্টিক অতীতচারণ চলে, কিন্তু একে নিয়ে বসে থাকলে চলে না। তার বিকল্প হিসেবে এখন আছে হাজারটা মাধ্যম—মোবাইল, ল্যান্ডফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, আরও কত-কী! চিঠিপ্রেমী লোক এখন তার চিঠিপ্রেম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়, চিঠি লেখে না। লাঙল গেছে, ট্রাক্টর এসেছে; জমি কিন্তু অনাবাদি নেই। সিনেমা হল বা টেলিভিশনের জায়গা ক্রমেই নিয়ে নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো। প্রমত্তা পদ্মা পাড়ে বইঠার নৌকার বিকল্প হিসেবে এসেছে ইঞ্জিনের নৌকা, তাকে হটিয়ে লঞ্চ, ফেরি ইত্যাদি; আর সবশেষে পদ্মা সেতু তো চোখের সামনেই হলো। এখন তো জলে না ভেসেই পদ্মা পার হচ্ছে মানুষ। মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে বিকল্প কাকে বলে।
শ্রীলঙ্কার দিকেই তাকানো যাক। বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি। সেখানে যে মাহিন্দা রাজাপক্ষে ‘উন্নয়নের গালগল্পে’ নিজেকে প্রায় ‘অবিকল্প’ ঘোষণা করেছিলেন, সেই তিনি এখন বিক্ষোভের মুখে সাবেক বনে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী। যে রাজাপক্ষে পরিবার দেশটির ভাগ্যবিধাতা হয়ে বসে ছিল দীর্ঘদিন, তার শেষ সদস্য হিসেবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে বিক্ষোভের মুখেই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছাড়তে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মাহিন্দা রাজাপক্ষকে প্রতিস্থাপন করা রনিল বিক্রমাসিংহেও পদত্যাগের পথে। সুতরাং দেখাই যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় ‘বিকল্পহীন’ শব্দটি ছিল এক মিথ কেবল।
একই খেলা চলছে এখন আর্জেন্টিনায়। পরিস্থিতি বিচারে তা শ্রীলঙ্কার মতোই। মূল্যস্ফীতি, বিদ্যুৎ নেই, জ্বালানি নেই, চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ নেই, কারণ রিজার্ভ ঘাটতির কারণে আমদানি বাধাগ্রস্ত। সেখানেও বিক্ষোভ চলছে। তাদের লক্ষ্য শ্রীলঙ্কার মতোই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ। আগে বলা প্রবণতার কথা ধরে এই আশঙ্কা জাগা তাই খুব স্বাভাবিক যে—দেশে দেশে হালের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে রাষ্ট্রের শীর্ষ ক্ষমতাধর ব্যক্তির আবাসস্থল ঘেরাও কি তবে গণপ্রবণতায় রূপ নিচ্ছে! এ ধরনের প্রবণতা এর আগে দেখা দিয়েছিল ২০১০-এর পর আরব বসন্তের হাত ধরে। সে-ও ছিল মন্দাকাল। সে সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে নিজ নিজ দেশের চালু চত্বরগুলোয় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করত। এই প্রবণতার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী রাষ্ট্র এখন সিরিয়া।
সে যাক, প্রবণতার গল্পে ঢুকে লাভ নেই; বরং ‘বিকল্পহীন’ বিষয়টিতে ফেরা যাক আবার। কথায় কথায় ‘বিকল্পহীন’ ঘোষণা করাটা শুধু আমাদের আবেগময় জাতির মধ্যেই নেই। আরও অনেক জাতির মধ্যেই আছে। এটা মূলত ওপর থেকে নিচের দিকে গড়িয়ে পড়া এক ধারণা। কীভাবে? সে ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে ‘বিকল্প’ শব্দটি একটু বোঝা দরকার।
বাংলা শব্দ বুঝতে হলে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে না গিয়ে উপায় কী? ফলে তাঁরই শরণ নেওয়া যাক। তাঁর লেখা বঙ্গীয় শব্দকোষে বিকল্প শব্দের অর্থ হিসেবে লেখা হচ্ছে—সংশয়, দ্বৈধ, বিতর্ক, শঙ্কা, ভেদ, নানাত্ব, ভ্রান্তি, কল্পনা, বিবিধ সৃষ্টি, সংকল্পবিশেষ, বৈষম্য ইত্যাদি। এবার এই শব্দগুলোর শেষে ‘হীন’ জুড়ে দিলে কী দাঁড়ায় ভেবে দেখুন। একটু কি গা-শিউরে উঠছে না? বুঝিয়ে বলা যাক। কোনো কিছুকে ‘বিকল্পহীন’ বলা মানে তাকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে, ভ্রান্তিহীন, সংশয়হীন ঘোষণা করা। এমনকি যে বহুত্বের কথা বলা হয় আধুনিক উদার মতবাদে, সেই বহুত্বকেও অস্বীকার করা হয় একচেটিয়া ‘বিকল্পহীন’ শব্দের প্রয়োগে। কিন্তু দুনিয়ায় আদৌ কি এমন কিছু আছে, যা ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে? নিঃসংশয় হয়ে যাওয়া তো মূর্খতারই নামান্তর। ভেদ বাস্তব বলেই তো সাম্য সৃষ্টির জন্য এত প্রাণপাত।
বিকল্প শব্দ তো ‘কল্প’ থেকে আগত। ‘কল্প’ শব্দের সঙ্গে ‘বি’ উপসর্গ যুক্ত হয়ে একে বহুত্ব দিয়েছে, একে বিস্তৃত করেছে। এই কল্প শব্দের অর্থের দিকে তাকালে এই বিস্তার ও বহুত্বকে কিছুটা বোঝা যাবে। কল্প শব্দের অর্থ হিসেবে হরিচরণ বলছেন—যোগ্য, দক্ষ, সমর্থ, শক্ত, বিধি, ন্যায় ইত্যাদি। তাই কল্প থেকে বিকল্প হয়ে ওঠার পথ আসলে উত্তরণের পথই। যোগ্যতা যখন বিবিধ দিকে বিস্তার হয়, দক্ষতা যখন বহুমুখী হয়, কোনো ব্যক্তি বা জাতি যখন বহু কিছুতে সমর্থ হয়ে ওঠে, তখন তার সামনে বিকল্প থাকে। বিকল্প নেই, মানে সে একই পাকে ঘুরে মরছে। এমনকি তার সামনে আর কল্পনাও নেই। এ তো মৃতের বৈশিষ্ট্য।
তবু তাহলে দেশে দেশে এই ‘বিকল্পহীন’ শব্দটি কীভাবে ছড়ায়, কেন ছড়ায়, কে ছড়ায়? যেকোনো তর্কের টেবিলে ‘বিকল্প দেখাও’ বলে কে চেঁচিয়ে ওঠে তবে? প্রশ্নগুলো সহজ। এই ‘বিকল্পহীন’ তকমাটা আদতে তারাই সামনে আনে, যাদের হাড়ে-মজ্জায় ক্ষমতার তেলঝোল, যাদের মনে ও মগজে সামন্তের বাস। তাদের কাছ থেকেই এটা উঠে আসে। প্রশ্ন উঠতে পারে অনেক সংগীতশিল্পী কিংবা লেখক সম্পর্কেও এমন কথা বলা হয়। সেখানে ক্ষমতার সম্বন্ধটি কোথায়? আগে বলুন, ক্ষমতা কোথায় নেই? বড় লেখক বা শিল্পীর অনুসারীরা, অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের সম্মতি বা অসম্মতিতেই তাঁদের ‘বিকল্পহীন’ ঘোষণা করে বসেন। এ নিয়ে চলে মাঠ দখলের লড়াই। আর দখল যেখানে আছে, ক্ষমতা সেখানে না থেকে করবেটা কী? আর ক্ষমতা যখন রাষ্ট্রের হয়, তখন তো এই শব্দ গুটি গুটি পায়ে মসনদের তলা থেকেই বের হয়।
আধুনিক রাষ্ট্রক্ষমতাকে ‘রাজত্ব’ মনে করা ব্যক্তিরা এই ধারণাকে সৃষ্টি করেন এবং অতি অবশ্যই স্পনসরও করেন। তাঁরা মানুষের মনে একটা ভয় জাগিয়ে রাখতে চান যে তাঁরাই একমাত্র ত্রাতা এবং এ বিষয়ে সবাইকে নিঃসংশয় হতে বলেন। তাঁরা রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে লোক নিয়োগ করেন, অনুসারীদের ওপর বিনিয়োগ করেন, যাতে বহুত্বকে গলা টিপে হত্যা করে ‘একার কেত্তন’ চালানো যায়। কোনো রাজা তাঁর আশপাশে যোগ্যতায়, দক্ষতায় তাঁকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো কাউকে বা নিদেনপক্ষে সম্ভাবনাময় কাউকে সহ্য করেছেন? করেননি। এ যুগের রাজারাও তা সহ্য করেন না। তাঁরা তাই এক ‘বিকল্পহীন’ বাস্তবতার গল্প চাউর করেন। সাধারণ্যে তা ছড়িয়ে যায়। মানুষ বুঝে, না বুঝে সেই গল্প বলে যেতে থাকে। একজন একজন করে লোক এই দলে গা ভাসায়, আর রাজারা আয়েশে মুচকি হেসে বলেন, ‘বাহ, পাওয়া গেল, আরেকটি চমৎকার দাস।’ তাঁরা খুশি হন। তাঁরা বেশ বক্তৃতা করেই তখন হীরকরাজার মতো বলতে পারেন, ‘তোমরা যাদের আমি পুষি, তোমাদের কাজে আমি বেজায় খুশি।’ এতে পোষ্যরাও হয়তো খুশি হয়; যদিও তা তাদের শুধু মৃত হিসেবেই প্রমাণ করে। রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে বসে থাকা লোকেরা এই মৃতের দঙ্গলকে খুব ভালোবাসেন।
শ্রীলঙ্কার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে কোনো দূর-ভাবনা ছাড়াই রাষ্ট্রের কর্তাদের উৎখাত করে ভালো না মন্দ করল, সে প্রশ্নের উত্তর পরে মিলবে হয়তো। কিন্তু তারা যে জ্যান্ত এখনো, তার মীমাংসা তো হয়ে গেছে। শাসকদের দুর্নীতি, একচেটিয়া মনোভাব, স্বজনপ্রীতি, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের নামে চুরি ইত্যাদির বিরুদ্ধে তারা তো একটি শক্তিশালী ‘না’ বলতে পেরেছে। এত দিনের ‘বিকল্পহীন’ সরকারকে উৎখাত করে, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে চড়ুইভাতি করতে করতে তারা গোটা দুনিয়াকে জানিয়ে দিয়েছে, এমন ধারণা ভাঁওতা কেবল। জগতে ‘বিকল্পহীন’ বলতে কিছু নেই।
এই বঙ্গমুলুকে একেক সময় একেক ধারা তৈরি হয়, একটা প্রবণতা গণ হয়ে হাজির হয়। এটা এ মাটির রোগ শুধু, নাকি সব দেশে সব কালেই ছিল বা আছে, কে জানে। কেউ কিছু একটা করে বা লিখে বা বলে আলোচনায় এলে দেখা যায় অন্য অনেকেই সে পথে হাঁটছে। শব্দ ব্যবহারের সময়ও অনেককে দেখা যায় এই প্রবণতার ফেরে পড়তে। জনপরিসরে চালু শব্দ-রাজনীতির ফাঁদে পড়ে যেতে দেখা যায় অনেক বিদগ্ধ লেখককেও। অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে এমন অতিশয়োক্তি করতে দেখা যায় অনেককে, যা সাধারণ্যে মানালেও বুদ্ধিজীবিতার সঙ্গে যায় না।
এ প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। আগে প্রবণতার কিছু নমুনা দেখা যাক। মোবাইল ডিভাইসে যেদিন থেকে ফ্রন্ট ক্যামেরা যুক্ত হলো, সেদিন থেকেই সেলফি এক ভীষণ ট্রেন্ডি বিষয় হয়ে দাঁড়াল। হবে না কেন? কে না জানে, আত্মপ্রেমই বড় প্রেম। না, সেলফি এর আগেও মানুষ তুলেছে, কিন্তু ছবি তোলার ডিভাইসের ক্যামেরা ‘ফ্রন্টাল’ ছিল না বলে, এত বাড়বাড়ন্তি ছিল না। মুশকিল হলো, মোবাইল ডিভাইসে ফ্রন্ট ক্যামেরা আসার পর।
কতটা মুশকিল? মানুষ ভাইরাল সেলফি তুলতে অসম্ভব সাধনে নেমে পড়ছে। এই তো গত মে মাসে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে এক কিশোর গুরুতর আহত হলো। শেষ পর্যন্ত মারাও গেল সে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এটিই প্রথম নয়। এর আগেও রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে এই বঙ্গেই বহুজন মরেছে। বয়সের বিচারও নেই। মৃতের তালিকায় আছে শিশু-কিশোর থেকে মাঝবয়সীও। ফলে একে ঠিক কৈশোরিক উচ্ছ্বাস বা অ্যাডভেঞ্চারপ্রবণতা দিয়ে ব্র্যাকেটবন্দী করা চলে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এমন হাজারটা প্রবণতার উদাহরণ দেওয়া যাবে। সেদিকে আর না যাওয়াই ভালো। লেখালেখি বা কথা বলার ক্ষেত্রেও দেখা মেলে এমন কিছু শব্দ ও প্রবণতার। গত কয়েক বছরে এমনই এক শব্দ ও তা ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিয়েছে—বিকল্পহীন। কথায় কথায় এটা, ওটা, সেটাকে ‘অবিকল্প’ ঘোষণার এক মারি দেখা দিয়েছে যেন। এতেও কৈশোরিক কোনো ব্যাপার নেই। বয়সনির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানা উদ্দেশ্যে শব্দটি প্রয়োগ করছে। এই দেখে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে জগতে বিকল্পহীন বস্তু আসলে কী? আদৌ এমন কিছুর অস্তিত্ব আছে কী?
একটু খুলে বলা যাক। এই যে হঠাৎ লোডশেডিং চলছে গোটা দেশে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন অক্ষমতাই হোক বা সঞ্চালনজনিত সংকটই হোক, কিংবা আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজারের ফেরেই হোক, বিদ্যুৎহীনতার কিন্তু নাভিশ্বাস ঠিকই উঠছে। এতে মেজাজ চড়ছে, ক্ষোভ হচ্ছে, নানা গুলতানি হচ্ছে শহর বা গ্রামেও। তাই বলে আলোহীন অন্ধকারে নিশ্চয় বসে থাকছেন না আপনি। একটা চার্জার লাইট, ব্যাটারি লাইট, জেনারেটর, আইপিএস, মোমবাতি, হারিকেন বা কুপিবাতি হলেও খুঁজে নিয়ে অন্ধকারের ভূতটাকে ঠিকই তাড়াচ্ছে মানুষ; যার যেমন সামর্থ্য আরকি। প্রতিপক্ষ যখন অন্ধকার, তখন কিন্তু সে আলোর বিবিধ উৎস ঠিকই খুঁজে নিচ্ছে। হতোদ্যম হয়ে কেউ বসে নেই।
আসা যাক যোগাযোগের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন বিশ্ব শাসন করা চিঠি এখন স্মৃতিগদ্য হয়ে গেছে। এ নিয়ে রোমান্টিক অতীতচারণ চলে, কিন্তু একে নিয়ে বসে থাকলে চলে না। তার বিকল্প হিসেবে এখন আছে হাজারটা মাধ্যম—মোবাইল, ল্যান্ডফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, আরও কত-কী! চিঠিপ্রেমী লোক এখন তার চিঠিপ্রেম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়, চিঠি লেখে না। লাঙল গেছে, ট্রাক্টর এসেছে; জমি কিন্তু অনাবাদি নেই। সিনেমা হল বা টেলিভিশনের জায়গা ক্রমেই নিয়ে নিচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো। প্রমত্তা পদ্মা পাড়ে বইঠার নৌকার বিকল্প হিসেবে এসেছে ইঞ্জিনের নৌকা, তাকে হটিয়ে লঞ্চ, ফেরি ইত্যাদি; আর সবশেষে পদ্মা সেতু তো চোখের সামনেই হলো। এখন তো জলে না ভেসেই পদ্মা পার হচ্ছে মানুষ। মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে বিকল্প কাকে বলে।
শ্রীলঙ্কার দিকেই তাকানো যাক। বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি। সেখানে যে মাহিন্দা রাজাপক্ষে ‘উন্নয়নের গালগল্পে’ নিজেকে প্রায় ‘অবিকল্প’ ঘোষণা করেছিলেন, সেই তিনি এখন বিক্ষোভের মুখে সাবেক বনে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী। যে রাজাপক্ষে পরিবার দেশটির ভাগ্যবিধাতা হয়ে বসে ছিল দীর্ঘদিন, তার শেষ সদস্য হিসেবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে বিক্ষোভের মুখেই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছাড়তে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মাহিন্দা রাজাপক্ষকে প্রতিস্থাপন করা রনিল বিক্রমাসিংহেও পদত্যাগের পথে। সুতরাং দেখাই যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় ‘বিকল্পহীন’ শব্দটি ছিল এক মিথ কেবল।
একই খেলা চলছে এখন আর্জেন্টিনায়। পরিস্থিতি বিচারে তা শ্রীলঙ্কার মতোই। মূল্যস্ফীতি, বিদ্যুৎ নেই, জ্বালানি নেই, চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ নেই, কারণ রিজার্ভ ঘাটতির কারণে আমদানি বাধাগ্রস্ত। সেখানেও বিক্ষোভ চলছে। তাদের লক্ষ্য শ্রীলঙ্কার মতোই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ। আগে বলা প্রবণতার কথা ধরে এই আশঙ্কা জাগা তাই খুব স্বাভাবিক যে—দেশে দেশে হালের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে রাষ্ট্রের শীর্ষ ক্ষমতাধর ব্যক্তির আবাসস্থল ঘেরাও কি তবে গণপ্রবণতায় রূপ নিচ্ছে! এ ধরনের প্রবণতা এর আগে দেখা দিয়েছিল ২০১০-এর পর আরব বসন্তের হাত ধরে। সে-ও ছিল মন্দাকাল। সে সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে নিজ নিজ দেশের চালু চত্বরগুলোয় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করত। এই প্রবণতার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী রাষ্ট্র এখন সিরিয়া।
সে যাক, প্রবণতার গল্পে ঢুকে লাভ নেই; বরং ‘বিকল্পহীন’ বিষয়টিতে ফেরা যাক আবার। কথায় কথায় ‘বিকল্পহীন’ ঘোষণা করাটা শুধু আমাদের আবেগময় জাতির মধ্যেই নেই। আরও অনেক জাতির মধ্যেই আছে। এটা মূলত ওপর থেকে নিচের দিকে গড়িয়ে পড়া এক ধারণা। কীভাবে? সে ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে ‘বিকল্প’ শব্দটি একটু বোঝা দরকার।
বাংলা শব্দ বুঝতে হলে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে না গিয়ে উপায় কী? ফলে তাঁরই শরণ নেওয়া যাক। তাঁর লেখা বঙ্গীয় শব্দকোষে বিকল্প শব্দের অর্থ হিসেবে লেখা হচ্ছে—সংশয়, দ্বৈধ, বিতর্ক, শঙ্কা, ভেদ, নানাত্ব, ভ্রান্তি, কল্পনা, বিবিধ সৃষ্টি, সংকল্পবিশেষ, বৈষম্য ইত্যাদি। এবার এই শব্দগুলোর শেষে ‘হীন’ জুড়ে দিলে কী দাঁড়ায় ভেবে দেখুন। একটু কি গা-শিউরে উঠছে না? বুঝিয়ে বলা যাক। কোনো কিছুকে ‘বিকল্পহীন’ বলা মানে তাকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে, ভ্রান্তিহীন, সংশয়হীন ঘোষণা করা। এমনকি যে বহুত্বের কথা বলা হয় আধুনিক উদার মতবাদে, সেই বহুত্বকেও অস্বীকার করা হয় একচেটিয়া ‘বিকল্পহীন’ শব্দের প্রয়োগে। কিন্তু দুনিয়ায় আদৌ কি এমন কিছু আছে, যা ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে? নিঃসংশয় হয়ে যাওয়া তো মূর্খতারই নামান্তর। ভেদ বাস্তব বলেই তো সাম্য সৃষ্টির জন্য এত প্রাণপাত।
বিকল্প শব্দ তো ‘কল্প’ থেকে আগত। ‘কল্প’ শব্দের সঙ্গে ‘বি’ উপসর্গ যুক্ত হয়ে একে বহুত্ব দিয়েছে, একে বিস্তৃত করেছে। এই কল্প শব্দের অর্থের দিকে তাকালে এই বিস্তার ও বহুত্বকে কিছুটা বোঝা যাবে। কল্প শব্দের অর্থ হিসেবে হরিচরণ বলছেন—যোগ্য, দক্ষ, সমর্থ, শক্ত, বিধি, ন্যায় ইত্যাদি। তাই কল্প থেকে বিকল্প হয়ে ওঠার পথ আসলে উত্তরণের পথই। যোগ্যতা যখন বিবিধ দিকে বিস্তার হয়, দক্ষতা যখন বহুমুখী হয়, কোনো ব্যক্তি বা জাতি যখন বহু কিছুতে সমর্থ হয়ে ওঠে, তখন তার সামনে বিকল্প থাকে। বিকল্প নেই, মানে সে একই পাকে ঘুরে মরছে। এমনকি তার সামনে আর কল্পনাও নেই। এ তো মৃতের বৈশিষ্ট্য।
তবু তাহলে দেশে দেশে এই ‘বিকল্পহীন’ শব্দটি কীভাবে ছড়ায়, কেন ছড়ায়, কে ছড়ায়? যেকোনো তর্কের টেবিলে ‘বিকল্প দেখাও’ বলে কে চেঁচিয়ে ওঠে তবে? প্রশ্নগুলো সহজ। এই ‘বিকল্পহীন’ তকমাটা আদতে তারাই সামনে আনে, যাদের হাড়ে-মজ্জায় ক্ষমতার তেলঝোল, যাদের মনে ও মগজে সামন্তের বাস। তাদের কাছ থেকেই এটা উঠে আসে। প্রশ্ন উঠতে পারে অনেক সংগীতশিল্পী কিংবা লেখক সম্পর্কেও এমন কথা বলা হয়। সেখানে ক্ষমতার সম্বন্ধটি কোথায়? আগে বলুন, ক্ষমতা কোথায় নেই? বড় লেখক বা শিল্পীর অনুসারীরা, অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের সম্মতি বা অসম্মতিতেই তাঁদের ‘বিকল্পহীন’ ঘোষণা করে বসেন। এ নিয়ে চলে মাঠ দখলের লড়াই। আর দখল যেখানে আছে, ক্ষমতা সেখানে না থেকে করবেটা কী? আর ক্ষমতা যখন রাষ্ট্রের হয়, তখন তো এই শব্দ গুটি গুটি পায়ে মসনদের তলা থেকেই বের হয়।
আধুনিক রাষ্ট্রক্ষমতাকে ‘রাজত্ব’ মনে করা ব্যক্তিরা এই ধারণাকে সৃষ্টি করেন এবং অতি অবশ্যই স্পনসরও করেন। তাঁরা মানুষের মনে একটা ভয় জাগিয়ে রাখতে চান যে তাঁরাই একমাত্র ত্রাতা এবং এ বিষয়ে সবাইকে নিঃসংশয় হতে বলেন। তাঁরা রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে লোক নিয়োগ করেন, অনুসারীদের ওপর বিনিয়োগ করেন, যাতে বহুত্বকে গলা টিপে হত্যা করে ‘একার কেত্তন’ চালানো যায়। কোনো রাজা তাঁর আশপাশে যোগ্যতায়, দক্ষতায় তাঁকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো কাউকে বা নিদেনপক্ষে সম্ভাবনাময় কাউকে সহ্য করেছেন? করেননি। এ যুগের রাজারাও তা সহ্য করেন না। তাঁরা তাই এক ‘বিকল্পহীন’ বাস্তবতার গল্প চাউর করেন। সাধারণ্যে তা ছড়িয়ে যায়। মানুষ বুঝে, না বুঝে সেই গল্প বলে যেতে থাকে। একজন একজন করে লোক এই দলে গা ভাসায়, আর রাজারা আয়েশে মুচকি হেসে বলেন, ‘বাহ, পাওয়া গেল, আরেকটি চমৎকার দাস।’ তাঁরা খুশি হন। তাঁরা বেশ বক্তৃতা করেই তখন হীরকরাজার মতো বলতে পারেন, ‘তোমরা যাদের আমি পুষি, তোমাদের কাজে আমি বেজায় খুশি।’ এতে পোষ্যরাও হয়তো খুশি হয়; যদিও তা তাদের শুধু মৃত হিসেবেই প্রমাণ করে। রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে বসে থাকা লোকেরা এই মৃতের দঙ্গলকে খুব ভালোবাসেন।
শ্রীলঙ্কার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে কোনো দূর-ভাবনা ছাড়াই রাষ্ট্রের কর্তাদের উৎখাত করে ভালো না মন্দ করল, সে প্রশ্নের উত্তর পরে মিলবে হয়তো। কিন্তু তারা যে জ্যান্ত এখনো, তার মীমাংসা তো হয়ে গেছে। শাসকদের দুর্নীতি, একচেটিয়া মনোভাব, স্বজনপ্রীতি, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের নামে চুরি ইত্যাদির বিরুদ্ধে তারা তো একটি শক্তিশালী ‘না’ বলতে পেরেছে। এত দিনের ‘বিকল্পহীন’ সরকারকে উৎখাত করে, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে চড়ুইভাতি করতে করতে তারা গোটা দুনিয়াকে জানিয়ে দিয়েছে, এমন ধারণা ভাঁওতা কেবল। জগতে ‘বিকল্পহীন’ বলতে কিছু নেই।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে