তরমুজে আশার আলো উপকূলের কৃষকদের

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ৪৬
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ০১

পটুয়াখালীতে তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। গত বছর বাম্পার ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে আবাদ করছেন তারা। ফলন ঠিকমতো হলে ও বাজারে ভালো দাম পেলে এবারও লাভের মুখ দেখার আশা করছেন কৃষকেরা।

উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে সাধারণত ডিসেম্বরে আমন ধান তোলার পর জানুয়ারি থেকে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফলন আসে এপ্রিলে। সারা দেশে যে পরিমাণ তরমুজের চাহিদা তার বড় একটি অংশ আসে এ জেলা থেকে। ভালো চাহিদা আর দাম পেয়ে উপকূলীয় এই জেলায় তরমুজের আবাদের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তাই এখন পুরো জেলায় কৃষকদের মাঠে কাজ করতে দম ফেলার ফুরসত নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর পটুয়াখালীতে ২০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। গত বছর ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল।

সরেজমিন জানা যায়, এ বছর জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় বেশি তরমুজের আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে এই উপজেলার তরমুজ সুনাম কুড়িয়েছে সারা দেশে। উপকূলীয় এ এলাকার মাটি তরমুজ চাষে উপযোগী। তাই ফলও হয় সুস্বাদু। ফলে ব্যবসায়ীরা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে তরমুজ সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়।

রাঙ্গাবালীর স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সাগরপারের জাহাজমারা, কলাগাছিয়ার চর ও তালুকদারের চরে ডিসেম্বরেই আগাম তরমুজের আবাদ শুরু হয়। এসব বালুচর আগে পতিত থাকত। আগে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জমিতে তরমুজ চাষ হতো। গত মৌসুম থেকে ব্যাপকভাবে আগাম তরমুজের চাষ শুরু হয়েছে। এদিকে গত বছরের তুলনায় এ বছর সার, বীজ, কীটনাশক এবং তেলের দাম বেশি হওয়ায় খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তবে সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগে নেওয়া হলে চরে বিস্তীর্ণ জমিতে চাষাবাদ সহজ হবে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা ছাড়াও জেলার গলাচিপা, কলাপাড়া, বাউফল এবং দশমিনা উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় তরমুজের আবাদ হয়েছে।

গলাচিপার উলানিয়া এলাকার কৃষক আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘গত বছর আমি ছয় জৈষ্ঠ জমিতে তরমুজ চাষ করে দুই লাখ আশি হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। এবার তাই বেশি জমিতে তরমুজ আবাদ করছি।’

একই এলাকার কৃষক কামরুল বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো হওয়ায় আমন ধান কাটা শেষ হতে না হতেই তরমুজ আবাদ করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে আমার সব গাছ নষ্ট করে ফেলছে। নদীর পারেতো তাই ভূইতে (জমি) পানি ওঠেছিলো। এখন পানি টানছে তাই আবার শুরু করছি, আগের যে গাছ বাচছে তাতে লতা বড় হইছে। প্রতিদিন গাছের পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত। আল্লাহ ভালো জানে কেমন ফল দেবেন।’

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত বছর ফলন বেশি হওয়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করেছে কৃষকেরা। তরমুজের চারা ও ফলন ভালো রাখতে মাঠ পর্যায়ে সার্বিক পরামর্শ দিতে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এ ছাড়া কোনো ডিলার সারের দাম বেশি নিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত