মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনে পেট্রোবাংলার অর্থভান্ডারে টান পড়েছে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে গুরুত্ব না দিয়ে আগে যে ভুল করেছিল, এখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে সংস্থাটি। চুক্তির জন্য কয়েক মাস ধরে চারটি আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে পেট্রোবাংলার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল)। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম চড়া থাকায় এই উদ্যোগও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশ্ববাজারে এলএনজির সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধকে পুঁজি করে এখন পেট্রোবাংলার কাছে দ্বিগুণ দাম চাইছে সরবরাহকারীরা।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন-২০১০-এর অধীনে বিনা টেন্ডারে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি করতে গত বছরের অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি জায়ান্ট অ্যাক্সিলারেট এনার্জি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণাধীন এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (ইএনওসি), কাতারের রাসগ্যাস এবং বাংলাদেশি কোম্পানি সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করছে আরপিজিসিএল। এই তিনটি কোম্পানির মধ্যে সামিট ১৫ বছর মেয়াদি সরবরাহ চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাকি তিনটি ১০ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। সামিট বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন এবং বাকি তিন প্রতিষ্ঠান ১০ লাখ মেট্রিক টন করে এলএনজি সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আরপিজিসিলের একাধিক কর্মকর্তা।
নতুন করে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির সরবরাহ চুক্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান গত সোমবার আজকের পত্রিকা বলেন, ‘স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় কমাতে আমরা আরও বেশি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চাই। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করলেও এখন সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড এবং এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
দ্বিগুণ দাম হাঁকাচ্ছে দুই কোম্পানি
পেট্রোবাংলার একটি সূত্র জানিয়েছে, সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম পড়বে ২০ ডলারের ওপর। তারা চুক্তি হওয়ার তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে।
এ বিষয়ে সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মোহসেনা হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ করার জন্য সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড একটি প্রস্তাব পেট্রোবাংলার কাছে দিয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের গ্যাসের দাম পড়বে ১৫ ডলারের ওপর। আরব আমিরাতের কোম্পানিটি ২০২৩ সাল থেকে এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে।
কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, প্রতি ব্রিটিশ মিলিয়ন থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) গ্যাসের গড়ে দাম পড়বে ২০ মার্কিন ডলার। অথচ বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, কাতারের রাসগ্যাস ও ওমানের ওমান ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড প্রতি ইউনিট ৯ দশমিক ৩২ মার্কিন ডলারে (সঙ্গে তেলের দামের ১২ শতাংশ যুক্ত হবে) এলএনজি সরবরাহ করছে।
প্রতিষ্ঠান দুইটি বিদ্যমান সরবরাহ চুক্তির চেয়ে দ্বিগুণ দাম চাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বিষয়টি কোন দিকে যাচ্ছে—জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘তারা বেশি দাম চাইতেই পারে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যা করার করব।’
আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির দাম নির্ধারিত হয় জ্বালানি তেলের তিন মাসের গড় মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে। এই ক্ষেত্রে দুটি মানদণ্ড ধরে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির দাম নির্ধারণ করা হয়। একটি হচ্ছে ব্রেন্ট অন্যটি হচ্ছে হেনরি হাব। হেনরি হাব মানদণ্ড নির্ধারণ করে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি সরবরাহকারীরা। অন্যদিকে ব্রেন্ট হচ্ছে ইউরোপের মানদণ্ড। তেল ও গ্যাস ক্রয়ে বাংলাদেশসহ এশিয়ার অন্যতম বড় ক্রেতা চীন ও ভারত এই মানদণ্ড ব্যবহার করে।
আরপিজিসিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তেলের দাম বিশ্ববাজারে এখন অনেক বেশি। আমরা যখন কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে চুক্তি করি, তখন তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৬০-৭০ ডলার। আর এখন সেই তেল বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ ডলারে। এই জন্য মেয়াদি সরবরাহকারীরা বেশি দাম হাঁকাচ্ছে।’
উভয়সংকটে পেট্রোবাংলা
একদিকে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে বেশি দামে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহকারীদের সঙ্গে এখন বেশি দামে গ্যাস ক্রয়ের চুক্তি করলে তার খেসারত দিতে হবে দীর্ঘ মেয়াদে। এ অবস্থায় উভয়সংকটে পড়েছে পেট্রোবাংলা।
এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এলএনজির চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এখন চুক্তি করলেও একটা পর্যায়ে দাম পুনর্মূল্যায়নের জন্য বিশেষ ধারা সংযোজন করতে চাই। যাতে বিশ্ববাজারে দাম কমলে আমরা মূল্য হালনাগাদ করতে পারি। কারণ এলএনজির দাম এখন অস্বাভাবিক। দাম এখন যা আছে, সেটা ভবিষ্যতে থাকবে না।’
বিদ্যমান এলএনজির দাম বিবেচনায় পেট্রোবাংলাকে ৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করার পরামর্শ দিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, এই ৫ বছরের মধ্যে ইউরোপের অনেক দেশ জ্বালানি নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকবে। একই সঙ্গে বাজারে এলএনজির দামও কমে আসবে।
পেট্রোবাংলা কেন এখন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চায়
২০১৭-১৮ সালের দিকে স্পট মার্কেটের এলএনজির দাম অনেক কম থাকায় সে সময় কাতার রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তি করেনি পেট্রোবাংলা। তখন স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ৬ মার্কিন ডলারের নিচে। এর সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য যুক্ত করার পর দাম পড়ত প্রতি এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৩২ মার্কিন ডলার। কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৫৯ ডলারে গিয়ে ঠেকে।
স্পট মার্কেটে বাংলাদেশ ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে প্রতি ইউনিট এলএনজি কিনছে গড়ে ৩০-৩৭ ডলার দামে, যা ২০২১ সালের মে মাসের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। এলএনজির বাজারে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে এলএনজি নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ইউরোপের ক্রেতারা রাশিয়ার গ্যাসের পরিবর্তে এখন অন্যদিকে হাত বাড়াচ্ছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল চাহিদা, কিন্তু সে তুলনায় জোগান কম। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম থাকায় এলএনজির দাম বাড়াতে বাড়াতে একপর্যায়ে ৫৯ ডলার পর্যন্ত ওঠে। স্পট মার্কেটে এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এলএনজি ক্রয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চাইছে পেট্রোবাংলা।
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনে পেট্রোবাংলার অর্থভান্ডারে টান পড়েছে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে গুরুত্ব না দিয়ে আগে যে ভুল করেছিল, এখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে সংস্থাটি। চুক্তির জন্য কয়েক মাস ধরে চারটি আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে পেট্রোবাংলার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল)। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম চড়া থাকায় এই উদ্যোগও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশ্ববাজারে এলএনজির সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধকে পুঁজি করে এখন পেট্রোবাংলার কাছে দ্বিগুণ দাম চাইছে সরবরাহকারীরা।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন-২০১০-এর অধীনে বিনা টেন্ডারে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি করতে গত বছরের অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি জায়ান্ট অ্যাক্সিলারেট এনার্জি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণাধীন এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (ইএনওসি), কাতারের রাসগ্যাস এবং বাংলাদেশি কোম্পানি সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করছে আরপিজিসিএল। এই তিনটি কোম্পানির মধ্যে সামিট ১৫ বছর মেয়াদি সরবরাহ চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাকি তিনটি ১০ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। সামিট বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন এবং বাকি তিন প্রতিষ্ঠান ১০ লাখ মেট্রিক টন করে এলএনজি সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আরপিজিসিলের একাধিক কর্মকর্তা।
নতুন করে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির সরবরাহ চুক্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান গত সোমবার আজকের পত্রিকা বলেন, ‘স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় কমাতে আমরা আরও বেশি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চাই। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করলেও এখন সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড এবং এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
দ্বিগুণ দাম হাঁকাচ্ছে দুই কোম্পানি
পেট্রোবাংলার একটি সূত্র জানিয়েছে, সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম পড়বে ২০ ডলারের ওপর। তারা চুক্তি হওয়ার তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে।
এ বিষয়ে সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মোহসেনা হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ করার জন্য সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড একটি প্রস্তাব পেট্রোবাংলার কাছে দিয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের গ্যাসের দাম পড়বে ১৫ ডলারের ওপর। আরব আমিরাতের কোম্পানিটি ২০২৩ সাল থেকে এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে।
কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, প্রতি ব্রিটিশ মিলিয়ন থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) গ্যাসের গড়ে দাম পড়বে ২০ মার্কিন ডলার। অথচ বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, কাতারের রাসগ্যাস ও ওমানের ওমান ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড প্রতি ইউনিট ৯ দশমিক ৩২ মার্কিন ডলারে (সঙ্গে তেলের দামের ১২ শতাংশ যুক্ত হবে) এলএনজি সরবরাহ করছে।
প্রতিষ্ঠান দুইটি বিদ্যমান সরবরাহ চুক্তির চেয়ে দ্বিগুণ দাম চাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বিষয়টি কোন দিকে যাচ্ছে—জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘তারা বেশি দাম চাইতেই পারে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যা করার করব।’
আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির দাম নির্ধারিত হয় জ্বালানি তেলের তিন মাসের গড় মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে। এই ক্ষেত্রে দুটি মানদণ্ড ধরে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির দাম নির্ধারণ করা হয়। একটি হচ্ছে ব্রেন্ট অন্যটি হচ্ছে হেনরি হাব। হেনরি হাব মানদণ্ড নির্ধারণ করে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি সরবরাহকারীরা। অন্যদিকে ব্রেন্ট হচ্ছে ইউরোপের মানদণ্ড। তেল ও গ্যাস ক্রয়ে বাংলাদেশসহ এশিয়ার অন্যতম বড় ক্রেতা চীন ও ভারত এই মানদণ্ড ব্যবহার করে।
আরপিজিসিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তেলের দাম বিশ্ববাজারে এখন অনেক বেশি। আমরা যখন কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে চুক্তি করি, তখন তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৬০-৭০ ডলার। আর এখন সেই তেল বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ ডলারে। এই জন্য মেয়াদি সরবরাহকারীরা বেশি দাম হাঁকাচ্ছে।’
উভয়সংকটে পেট্রোবাংলা
একদিকে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে বেশি দামে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহকারীদের সঙ্গে এখন বেশি দামে গ্যাস ক্রয়ের চুক্তি করলে তার খেসারত দিতে হবে দীর্ঘ মেয়াদে। এ অবস্থায় উভয়সংকটে পড়েছে পেট্রোবাংলা।
এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এলএনজির চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এখন চুক্তি করলেও একটা পর্যায়ে দাম পুনর্মূল্যায়নের জন্য বিশেষ ধারা সংযোজন করতে চাই। যাতে বিশ্ববাজারে দাম কমলে আমরা মূল্য হালনাগাদ করতে পারি। কারণ এলএনজির দাম এখন অস্বাভাবিক। দাম এখন যা আছে, সেটা ভবিষ্যতে থাকবে না।’
বিদ্যমান এলএনজির দাম বিবেচনায় পেট্রোবাংলাকে ৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করার পরামর্শ দিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, এই ৫ বছরের মধ্যে ইউরোপের অনেক দেশ জ্বালানি নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকবে। একই সঙ্গে বাজারে এলএনজির দামও কমে আসবে।
পেট্রোবাংলা কেন এখন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চায়
২০১৭-১৮ সালের দিকে স্পট মার্কেটের এলএনজির দাম অনেক কম থাকায় সে সময় কাতার রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তি করেনি পেট্রোবাংলা। তখন স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ৬ মার্কিন ডলারের নিচে। এর সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য যুক্ত করার পর দাম পড়ত প্রতি এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৩২ মার্কিন ডলার। কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৫৯ ডলারে গিয়ে ঠেকে।
স্পট মার্কেটে বাংলাদেশ ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে প্রতি ইউনিট এলএনজি কিনছে গড়ে ৩০-৩৭ ডলার দামে, যা ২০২১ সালের মে মাসের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। এলএনজির বাজারে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে এলএনজি নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ইউরোপের ক্রেতারা রাশিয়ার গ্যাসের পরিবর্তে এখন অন্যদিকে হাত বাড়াচ্ছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল চাহিদা, কিন্তু সে তুলনায় জোগান কম। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম থাকায় এলএনজির দাম বাড়াতে বাড়াতে একপর্যায়ে ৫৯ ডলার পর্যন্ত ওঠে। স্পট মার্কেটে এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এলএনজি ক্রয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চাইছে পেট্রোবাংলা।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে