দুই মাসের ব্যবধানে ৯ শতাংশ দাম বেড়েছে

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ১০: ৫৬
Thumbnail image

চট্টগ্রামে দুই মাসের ব্যবধানে সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কয়েক দিন বাদেই বিআরটিএ চট্টগ্রাম মহানগরীর নিবন্ধিত ১ হাজার ৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভেঙে তার বদলে নতুন গাড়ি প্রতিস্থাপন করার কাজ শুরু করবে। এতে নতুন গাড়ির চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাম বাড়ানো হয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমানে উত্তরা মোটরস লিমিটেডের শোরুমে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রির জন্য ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা দাম ধরা হয়েছে। দেড় মাস আগে যা ছিল ৪ লাখ ৭ হাজার টাকা। একদিনে বেড়েছে ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা।

দাম বাড়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে নিবন্ধিত ১ হাজার ৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিকেরা বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, নতুন গাড়ির চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে গাড়ির দাম বাড়িয়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বাজাজ অটো লিমিটেডের পরিবেশক প্রতিষ্ঠান উত্তরা মোটরস লিমিটেড।

২০২০ সালে ডিসেম্বরে সর্বশেষ সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ক্র্যাপ কার্যক্রমের সময় এই প্রতিষ্ঠানটির চট্টগ্রাম শোরুমে একটি গাড়ির দাম ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে ১ হাজার ৫টি নতুন গাড়ি বাবদ ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে তাঁদের। ইকোনমিক লাইফ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও দীর্ঘসময় স্ক্র্যাপ শুরু না হওয়ায় রাস্তায় বেশির ভাগ গাড়ি নামাতে পারেননি তাঁরা। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। নতুন করে আরও একটি আর্থিক ধাক্কার মুখে পড়ছেন। এ ছাড়া নতুন গাড়ির নিবন্ধন ফিসহ মোটা অঙ্কের টাকা তাঁদের বিআরটিএ কার্যালয়ে গুনতে হবে।

জানতে চাইলে আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান উত্তরা মোটরস লিমিটেডের কর্মকর্তা মো. রেজাউল দাবি করেন, প্রস্তুতকারক বাজাজ কোম্পানি থেকে মূলত দাম বাড়ানো হয়েছে। আমদানিমূল্য বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাম বেড়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে সামনে হয়তো আরও দাম বাড়তে পারে।

আরাকান রোডে উত্তরা মোটরস লিমিটেডের ডিলার মো. জাফর বলেন, বাজাজ কোম্পানি থেকে দেড় মাস আগে গাড়ির দাম বাড়ানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, পণ্য আমদানিতে কাস্টমসে ডিউটি বাড়লে স্বাভাবিকভাবে দেশের বাজারে পণ্যের দাম বাড়ে।

এই বিষয়ে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বাজাজ অটো লিমিটেডের কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২২ ফেব্রুয়ারি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে চট্টগ্রাম মহানগরের মেয়াদোত্তীর্ণ ১ হাজার ৫টি গাড়ি ভেঙে ও তার বদলে নতুন গাড়ি রাস্তায় নামানোর নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনায় ৩০ জুনের মধ্যে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়।

জানা গেছে, কয়েক দিনের মধ্যে স্ক্র্যাপ কার্যক্রম শুরু করতে পারে চট্টগ্রাম বিআরটিএ।

২০০১ সাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলের জন্য ১৩ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা অনুমোদন দেয় বিআরটিএ। এসব গাড়ির ইকোনমিক লাইফ ধরা হয়েছিল ১৫ বছর। পরিবেশগত ক্ষতির প্রভাবমুক্ত ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ইকোনমিক লাইফ ফুরিয়ে যাওয়া পুরোনো অটোরিকশার প্রতিস্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। এর ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগরের পাশাপাশি চট্টগ্রামেও ২০১৮ সালে ৭ অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তা থেকে তুলে ভেঙে ফেলা ও তার বদলে নতুন গাড়ি নামায় চট্টগ্রাম বিআরটিএ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত