জুনাইদ আহমেদ পলক
যখন কোনো বিষয়ের সঙ্গে ব্যক্তির নাম যোগ করে একটি নিবন্ধের শিরোনাম দেওয়া হয়, তখন তা বিষয়ের সঙ্গে ব্যক্তির অনবদ্য অবদান বা নিবিড় সংশ্লিষ্টতারই প্রকাশ ঘটায়। তবে বিষয় এবং ব্যক্তির যোগসূত্রের গভীরতা জানা বা বোঝার জন্য এর বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শিরোনামের প্রথম অংশ ‘ডিজিটাল কৃষি’ শব্দ যুগলের মধ্যে নিহিত রয়েছে পরিবর্তন বা রূপান্তরের বার্তা; অর্থাৎ সনাতন পদ্ধতি থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর। ডিজিটাল রূপান্তরের এই প্রক্রিয়ায় দেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার আগের চেয়ে বেড়েছে। কৃষকেরাও দক্ষ হয়েছেন। ফলে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে কৃষির এই সাফল্য যিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করেছেন এবং গণমাধ্যমে তা তুলে ধরে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে কৃষির উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, তিনি খ্যাতিমান সাংবাদিক শাইখ সিরাজ। আশির দশক থেকেই বাংলাদেশের কৃষির বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। দেশের কৃষি খাত তথা ডিজিটাল কৃষি উন্নয়নের অন্যতম পথিকৃৎ, কৃষকের বন্ধু ও গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ ৬৯ পেরিয়ে ৭০-এ পা রাখছেন আজ ৭ সেপ্টেম্বর। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করেই আমার নিবন্ধের জন্য শিরোনামটি বেছে নিয়েছি।
প্রায় সাড়ে ১২ হাজার বছর আগে শিকারি সমাজ থেকে গ্রামীণ সমাজের উদ্ভবের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল প্রথম কৃষিবিপ্লবের। সময়ের পথপরিক্রমায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কৃষির উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা হলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রায় সব খাত এবং মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তিই উন্নয়নের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। এটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশে তিনি সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছিলেন কৃষির উন্নয়নে। তিনি সবুজবিপ্লব বা কৃষিবিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমাদের চাষিরা হলেন সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাঁদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাঁদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ ১৯৭২-৭৩ সালে বাজেটে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০১ কোটি টাকা ছিল শুধু কৃষির উন্নয়নের জন্য। বঙ্গবন্ধু সবুজবিপ্লব কর্মসূচি সফল করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের উদ্যোগ নেন। এ জন্য তাঁর সরকার উন্নত প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। তৎকালীন পূর্ব জার্মানি থেকে ৩৮ হাজার সেচযন্ত্র, সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেন থেকে ট্রাক্টর এবং ফিলিপাইন থেকে উচ্চফলনশীল জাতের আইআর-৮ আমদানি করে। পাশাপাশি কৃষিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি স্থায়ী ও টেকসই করায় সমন্বিত গবেষণা পরিচালিত করা হয়। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে দেশে বাম্পার ফলন হয়। এই সফলতা থেকে আমার কাছে যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় তা হলো, কৃষিবিপ্লবের ঘোষণা থেকে কৃষিতে প্রযুক্তি ও গবেষণার সন্নিবেশ ঘটিয়ে সনাতন থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে উত্তরণের পথ দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুই। তাঁর দেখানো পথেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হয় এবং ১৯৯৯ সালেই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির অভূতপূর্ব সম্প্রসারণের ফলে ডিজিটাল কৃষিই বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠি।
এই উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথমেই যাঁর নাম আসবে, তিনি শাইখ সিরাজ। তিনি বিশ্বের পাশাপাশি দেশের কৃষির ডিজিটাল রূপান্তরের সাফল্যের চিত্র গবেষণা, তথ্য এবং মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের মানুষের সামনে নিয়ে এসেছেন। কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা সবার কাছে তুলে ধরেছেন। কৃষি সম্প্রসারণের এমন সফল ডিজিটাল উদ্যোগ বিরল। ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের সুবাদে পৃথিবীর দেশে দেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাঙালিরা কৃষিতে মনোনিবেশ করেছেন। ছাদকৃষি অনুষ্ঠান দেখে প্রবাসীরা তাঁদের বাড়ির আঙিনায় মৌসুমি ফল-ফসল উৎপাদন করছেন। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও বাঙালিদের দেখাদেখি কৃষিতে মনোনিবেশ করছে। সামগ্রিক বিচারে এই সাফল্য বাংলাদেশের। দীর্ঘ ৪৫ বছর তিনি গণমাধ্যকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষি উৎপাদন-অর্থনৈতিক খাতকে গতিশীল করায় অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন।
সরকার চায় ২০৪১ সালনাগাদ অগ্রসর প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহনসহ সব খাতকে স্মার্ট খাতে পরিণত করতে। ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রায় ইতিমধ্যে দেশের বহুমুখী কৃষিপণ্য উৎপাদন ও কৃষির সাফল্যের জন্য বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। কৃষিপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ বহির্বিশ্বের জন্য একটি হাব হয়ে উঠতে পারে। ইতিমধ্যে সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ কার্যক্রমে অসংখ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন প্রথমত, গণমাধ্যমের সহযোগিতা এবং দ্বিতীয়ত, শাইখ সিরাজের মতো দেশপ্রেমিক গণমাধ্যমব্যক্তিত্বের মেধা ও প্রজ্ঞা। শাইখ সিরাজের মধ্যে অন্তত দুটি ক্ষমতা আমি দেখতে পাই, যা তাঁকে মাটি ও মানুষের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। একটি হচ্ছে তাঁর লেখনীর ক্ষমতা এবং দ্বিতীয়টি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করে তা সুন্দর ও সুললিত ভাষায় উপস্থাপনের ক্ষমতা। আমরা দেখেছি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কৃষিবিষয়ক তাঁর অসংখ্য লেখা। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছেন তিনি। তাঁর নিজস্ব পরিচালনাধীন টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’য়ে হৃদয়ে মাটি ও মানুষ নামে কৃষিভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে তা প্রচার করে যাচ্ছেন। গণমাধ্যমে তাঁর উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণায় আমূল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের কৃষিতে। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে কৃষি খামারের সাফল্যের সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরায় তা মানুষকে দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে। গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। একই সঙ্গে শহর-নগরের মানুষকে করেছেন কৃষিমুখী।
কৃষি অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মিডিয়াব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিনে দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করছি।
লেখক: এমপি, প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ
যখন কোনো বিষয়ের সঙ্গে ব্যক্তির নাম যোগ করে একটি নিবন্ধের শিরোনাম দেওয়া হয়, তখন তা বিষয়ের সঙ্গে ব্যক্তির অনবদ্য অবদান বা নিবিড় সংশ্লিষ্টতারই প্রকাশ ঘটায়। তবে বিষয় এবং ব্যক্তির যোগসূত্রের গভীরতা জানা বা বোঝার জন্য এর বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শিরোনামের প্রথম অংশ ‘ডিজিটাল কৃষি’ শব্দ যুগলের মধ্যে নিহিত রয়েছে পরিবর্তন বা রূপান্তরের বার্তা; অর্থাৎ সনাতন পদ্ধতি থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর। ডিজিটাল রূপান্তরের এই প্রক্রিয়ায় দেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার আগের চেয়ে বেড়েছে। কৃষকেরাও দক্ষ হয়েছেন। ফলে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে কৃষির এই সাফল্য যিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করেছেন এবং গণমাধ্যমে তা তুলে ধরে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে কৃষির উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, তিনি খ্যাতিমান সাংবাদিক শাইখ সিরাজ। আশির দশক থেকেই বাংলাদেশের কৃষির বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। দেশের কৃষি খাত তথা ডিজিটাল কৃষি উন্নয়নের অন্যতম পথিকৃৎ, কৃষকের বন্ধু ও গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ ৬৯ পেরিয়ে ৭০-এ পা রাখছেন আজ ৭ সেপ্টেম্বর। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করেই আমার নিবন্ধের জন্য শিরোনামটি বেছে নিয়েছি।
প্রায় সাড়ে ১২ হাজার বছর আগে শিকারি সমাজ থেকে গ্রামীণ সমাজের উদ্ভবের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল প্রথম কৃষিবিপ্লবের। সময়ের পথপরিক্রমায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কৃষির উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা হলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রায় সব খাত এবং মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তিই উন্নয়নের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। এটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশে তিনি সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছিলেন কৃষির উন্নয়নে। তিনি সবুজবিপ্লব বা কৃষিবিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমাদের চাষিরা হলেন সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাঁদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাঁদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ ১৯৭২-৭৩ সালে বাজেটে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০১ কোটি টাকা ছিল শুধু কৃষির উন্নয়নের জন্য। বঙ্গবন্ধু সবুজবিপ্লব কর্মসূচি সফল করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের উদ্যোগ নেন। এ জন্য তাঁর সরকার উন্নত প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। তৎকালীন পূর্ব জার্মানি থেকে ৩৮ হাজার সেচযন্ত্র, সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেন থেকে ট্রাক্টর এবং ফিলিপাইন থেকে উচ্চফলনশীল জাতের আইআর-৮ আমদানি করে। পাশাপাশি কৃষিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি স্থায়ী ও টেকসই করায় সমন্বিত গবেষণা পরিচালিত করা হয়। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে দেশে বাম্পার ফলন হয়। এই সফলতা থেকে আমার কাছে যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় তা হলো, কৃষিবিপ্লবের ঘোষণা থেকে কৃষিতে প্রযুক্তি ও গবেষণার সন্নিবেশ ঘটিয়ে সনাতন থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে উত্তরণের পথ দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুই। তাঁর দেখানো পথেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হয় এবং ১৯৯৯ সালেই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির অভূতপূর্ব সম্প্রসারণের ফলে ডিজিটাল কৃষিই বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠি।
এই উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথমেই যাঁর নাম আসবে, তিনি শাইখ সিরাজ। তিনি বিশ্বের পাশাপাশি দেশের কৃষির ডিজিটাল রূপান্তরের সাফল্যের চিত্র গবেষণা, তথ্য এবং মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের মানুষের সামনে নিয়ে এসেছেন। কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা সবার কাছে তুলে ধরেছেন। কৃষি সম্প্রসারণের এমন সফল ডিজিটাল উদ্যোগ বিরল। ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের সুবাদে পৃথিবীর দেশে দেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাঙালিরা কৃষিতে মনোনিবেশ করেছেন। ছাদকৃষি অনুষ্ঠান দেখে প্রবাসীরা তাঁদের বাড়ির আঙিনায় মৌসুমি ফল-ফসল উৎপাদন করছেন। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও বাঙালিদের দেখাদেখি কৃষিতে মনোনিবেশ করছে। সামগ্রিক বিচারে এই সাফল্য বাংলাদেশের। দীর্ঘ ৪৫ বছর তিনি গণমাধ্যকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষি উৎপাদন-অর্থনৈতিক খাতকে গতিশীল করায় অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন।
সরকার চায় ২০৪১ সালনাগাদ অগ্রসর প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহনসহ সব খাতকে স্মার্ট খাতে পরিণত করতে। ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রায় ইতিমধ্যে দেশের বহুমুখী কৃষিপণ্য উৎপাদন ও কৃষির সাফল্যের জন্য বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। কৃষিপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ বহির্বিশ্বের জন্য একটি হাব হয়ে উঠতে পারে। ইতিমধ্যে সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ কার্যক্রমে অসংখ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন প্রথমত, গণমাধ্যমের সহযোগিতা এবং দ্বিতীয়ত, শাইখ সিরাজের মতো দেশপ্রেমিক গণমাধ্যমব্যক্তিত্বের মেধা ও প্রজ্ঞা। শাইখ সিরাজের মধ্যে অন্তত দুটি ক্ষমতা আমি দেখতে পাই, যা তাঁকে মাটি ও মানুষের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। একটি হচ্ছে তাঁর লেখনীর ক্ষমতা এবং দ্বিতীয়টি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করে তা সুন্দর ও সুললিত ভাষায় উপস্থাপনের ক্ষমতা। আমরা দেখেছি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কৃষিবিষয়ক তাঁর অসংখ্য লেখা। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছেন তিনি। তাঁর নিজস্ব পরিচালনাধীন টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’য়ে হৃদয়ে মাটি ও মানুষ নামে কৃষিভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে তা প্রচার করে যাচ্ছেন। গণমাধ্যমে তাঁর উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণায় আমূল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের কৃষিতে। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে কৃষি খামারের সাফল্যের সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরায় তা মানুষকে দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে। গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। একই সঙ্গে শহর-নগরের মানুষকে করেছেন কৃষিমুখী।
কৃষি অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মিডিয়াব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিনে দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করছি।
লেখক: এমপি, প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে