জাহীদ রেজা নূর
ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব গ্রহণের স্মারক দিবস ছিল ২৩ মার্চ। কিন্তু চিরাচরিত আনুষ্ঠানিকতায় তা পালিত হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে এ দিনটি বাংলাদেশব্যাপী প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালিত হয়। ঢাকায় সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোতে, বাড়িঘরে, যানবাহনে কালো পতাকার পাশাপাশি সংগ্রাম পরিষদের পরিকল্পিত স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ানো হয়।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যবস্থাপনায় আউটার স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ছাত্রছাত্রীরা বীরোচিত কুচকাওয়াজ পরিবেশন করেন। এ দিন ভোরে প্রভাতফেরি, শহীদদের মাজার জিয়ারত, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাসভবন এবং প্রতিষ্ঠানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, আউটার স্টেডিয়ামে জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এবং স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেদিন সব মিছিলের লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাসভবন। বন্যার স্রোতের মতো আগত মানুষের উদ্দেশে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। যত দিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির সার্বিক মুক্তি অর্জিত না হবে, যত দিন একজন বাঙালি বেঁচে থাকবে, এই সংগ্রাম আমাদের চলতেই থাকবে। মনে রাখবেন, সর্বাপেক্ষা কম রক্তপাতের মাধ্যমে যিনি চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন, তিনি সেরা সিপাহসালার। তাই বাংলার জনগণের প্রতি আমার নির্দেশনা, সংগ্রাম চালিয়ে যান। শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। সংগ্রামের কর্মপন্থা নির্ধারণের ভার আমার ওপর ছেড়ে দেন।’
শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। কিন্তু যদি তা সম্ভব না হয়, সাড়ে সাত কোটি বাঙালির স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকার লক্ষ্য অর্জনের সংগ্রাম আমাদের চলতেই থাকবে। এই সংগ্রামের পন্থা কী হবে তা আমি ঠিক করে দেব। সে ভার আমার ওপর ছেড়ে দিন।’
এ দিন আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদের সঙ্গে দুই দফা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ড. কামাল হোসেন এবং প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা বিচারপতি এ আর কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা এম এম আহমদ ও কর্নেল হাসান যোগদান করেন।
বিকেলে ছয়জন পশ্চিম পাকিস্তানি নেতা আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাড়িতে বৈঠক করেন। বৈঠক ৯০ মিনিট স্থায়ী হয়। পশ্চিম পাকিস্তান নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন কাউন্সিল মুসলিম লীগের প্রধান মিয়া মমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা, জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টারি পার্টির প্রধান মাওলানা শাহ আহমদ নূরানী, ন্যাপের প্রধান খান আব্দুল ওয়ালী খান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মাহমুদ, পাঞ্জাব কাউন্সিল মুসলিম লীগের সভাপতি সরদার শওকত খান এবং বেলুচিস্তান ন্যাপের সভাপতি গাউস বক্স বেজেন্জো।
বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য আর কত দিন আলোচনা চলবে, এ রকম একটি প্রশ্নের জবাবে দৌলতানা বলেন, ‘দেশের মঙ্গলের জন্য সবকিছু কয়েক মিনিটের মধ্যে মিটে যাক, এটাই আমরা চাই।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সময় হাসতে হাসতে যোগ করেন, ‘আপনারা ভালো আশা করুন, কিন্তু খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
গ্রন্থনা: জাহীদ রেজা নূর
ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব গ্রহণের স্মারক দিবস ছিল ২৩ মার্চ। কিন্তু চিরাচরিত আনুষ্ঠানিকতায় তা পালিত হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে এ দিনটি বাংলাদেশব্যাপী প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালিত হয়। ঢাকায় সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোতে, বাড়িঘরে, যানবাহনে কালো পতাকার পাশাপাশি সংগ্রাম পরিষদের পরিকল্পিত স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ানো হয়।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যবস্থাপনায় আউটার স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ছাত্রছাত্রীরা বীরোচিত কুচকাওয়াজ পরিবেশন করেন। এ দিন ভোরে প্রভাতফেরি, শহীদদের মাজার জিয়ারত, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাসভবন এবং প্রতিষ্ঠানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, আউটার স্টেডিয়ামে জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এবং স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেদিন সব মিছিলের লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাসভবন। বন্যার স্রোতের মতো আগত মানুষের উদ্দেশে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। যত দিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির সার্বিক মুক্তি অর্জিত না হবে, যত দিন একজন বাঙালি বেঁচে থাকবে, এই সংগ্রাম আমাদের চলতেই থাকবে। মনে রাখবেন, সর্বাপেক্ষা কম রক্তপাতের মাধ্যমে যিনি চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন, তিনি সেরা সিপাহসালার। তাই বাংলার জনগণের প্রতি আমার নির্দেশনা, সংগ্রাম চালিয়ে যান। শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। সংগ্রামের কর্মপন্থা নির্ধারণের ভার আমার ওপর ছেড়ে দেন।’
শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। কিন্তু যদি তা সম্ভব না হয়, সাড়ে সাত কোটি বাঙালির স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকার লক্ষ্য অর্জনের সংগ্রাম আমাদের চলতেই থাকবে। এই সংগ্রামের পন্থা কী হবে তা আমি ঠিক করে দেব। সে ভার আমার ওপর ছেড়ে দিন।’
এ দিন আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদের সঙ্গে দুই দফা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ড. কামাল হোসেন এবং প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা বিচারপতি এ আর কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা এম এম আহমদ ও কর্নেল হাসান যোগদান করেন।
বিকেলে ছয়জন পশ্চিম পাকিস্তানি নেতা আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাড়িতে বৈঠক করেন। বৈঠক ৯০ মিনিট স্থায়ী হয়। পশ্চিম পাকিস্তান নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন কাউন্সিল মুসলিম লীগের প্রধান মিয়া মমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা, জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টারি পার্টির প্রধান মাওলানা শাহ আহমদ নূরানী, ন্যাপের প্রধান খান আব্দুল ওয়ালী খান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মাহমুদ, পাঞ্জাব কাউন্সিল মুসলিম লীগের সভাপতি সরদার শওকত খান এবং বেলুচিস্তান ন্যাপের সভাপতি গাউস বক্স বেজেন্জো।
বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য আর কত দিন আলোচনা চলবে, এ রকম একটি প্রশ্নের জবাবে দৌলতানা বলেন, ‘দেশের মঙ্গলের জন্য সবকিছু কয়েক মিনিটের মধ্যে মিটে যাক, এটাই আমরা চাই।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সময় হাসতে হাসতে যোগ করেন, ‘আপনারা ভালো আশা করুন, কিন্তু খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
গ্রন্থনা: জাহীদ রেজা নূর
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে