ভৈরবের মিঠাই

নাজমুল হক নাঈম, ঢাকা
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯: ০৩

ভৈরব কমলপুর আমলাপাড়ার সুধন মিষ্টি ভান্ডার। সাইনবোর্ড, ব্যানারহীন এ দোকানটির নাম জানে শুধু এখানকার স্থানীয় মানুষজনই। বাইরের মানুষ চেনে স্টেশনের মিষ্টির দোকান হিসেবে। প্রায় ষাট বছর ধরে চলে আসা এই দোকানের ঝাঁপ বন্ধ থাকে দিনের বেশির ভাগ সময়। শুধু সকালের ট্রেনের যাত্রীদের জন্য অল্প কিছু মিষ্টি নিয়ে দোকানটি খোলা হয়। তারপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বন্ধ হয়ে যায়।তাহলে এই দোকানের এত খ্যাতি কিসের? সেই গল্প শোনার আগে জেনে নেওয়া যাক দোকানটির ইতিহাস।

পাকিস্তান আমলে, উনিশ শ বাষট্টি সালের দিকে স্থানীয় মিষ্টির কারিগর সুধন ভৈরব স্টেশনের কাছে গড়ে তুলেছিলেন একটি মিষ্টির দোকান। সেই দোকানে তিনি শুধু সাদা রসগোল্লাই বানাতেন। এই দোকানের মিষ্টির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পর সুধন মারা গেলে দোকানটির মালিকানায় বদল আসে। প্রথমে এর মালিকানা যায় সুধনের বড় ছেলের কাছে। তারপর আসে ছোট ছেলে মিন্টু দের হাতে। তিনি প্রায় বিশ বছর ধরে চালাচ্ছেন এই মিষ্টির দোকান।

প্রায় ছয় দশক ধরে সুধনের মিষ্টি ভৈরব শহরকে প্রতিনিধিত্ব করে চলেছে। কিন্তু এই দোকানের মিষ্টি তৈরির জন্য বাইরের কারিগর রাখা হয়নি কোনো দিন। এখন যেমন মিন্টু দের বাড়ির সদস্যরা মিলে মিষ্টি তৈরি করেন, আগেও তেমনি পরিবারের সদস্যরাই তৈরি করতেন মিষ্টি। তারপর দোকানে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হতো।

রাতের বেলা মিন্টু দের বাড়িতে রসগোল্লা বানানো হচ্ছেএই দোকানের বেশির ভাগ মিষ্টি সূর্য ওঠার আগেই শেষ হয়ে যায়। কারণ দোকানে যাওয়ার আগে স্থানীয় মানুষ ভোরবেলাতেই মিন্টু দের বাড়ি থেকে মিষ্টি কিনে নিয়ে যায়। আর অনুষ্ঠানের জন্য মিষ্টি কিনতে হলে আগেই অর্ডার করে রাখতে হয়। সুধনের মিষ্টি নিয়ে ভৈরব শহরের স্থানীয়দের রয়েছে অনেক আক্ষেপের স্মৃতি। জীবনে কতবার যে মিষ্টি না পেয়ে ফিরে গেছেন এলাকার লোকজন, তার হিসাব রাখেনিকেউ।

সুধন মিষ্টি ভান্ডার এখানকার মানুষকে মিষ্টি খাওয়া শিখিয়েছে। আবার একই সঙ্গে অনেকের মিষ্টি খাওয়ার আগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছ। একাধিক দিন ঘুরেও কখনো কখনো এখানে মিষ্টি কেনার সিরিয়াল পাওয়া যায় না! প্রতিদিন ২০০ কেজি মিষ্টির চাহিদা থাকলেও এর মান বজায় রাখতে ৭০ থেকে ৮০ কেজির বেশি উৎপাদন করেন না মিন্টু দে। 

দরদাম 
এখানে প্রতি কেজি মিষ্টি বিক্রি হয় ২৭০ টাকায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত