রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
বুকে ব্যথার কারণে গত রোববার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন মো. আতিকুল ইসলাম। চিকিৎসক এক্স-রে করিয়ে আবার যেতে বলেন। হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগে গেলে বলা হয়, এখানে হবে না, হৃদরোগ থেকে করিয়ে আনেন। কিন্তু হৃদরোগ হাসপাতালে গেলে তাঁকে জানানো হয়, সেখানও বাইরের রোগী ও বহির্বিভাগের রোগীর এক্স-রে করা হচ্ছে না। ফিল্ম না থাকায় হচ্ছে না সিটি স্ক্যান ও এমআরআই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক হাসপাতালে এক্স-রে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। সীমিত পরিসরে চলছে এমআরআই ও সিটি স্ক্যান সেবা। চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে দ্বিগুণ, তিন গুণ ব্যয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। এতে হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেওয়া বিপুলসংখ্যক রোগী বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট, এলসি জটিলতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ফিল্মের দাম বাড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সংকট সারা দেশে
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে এক্স-রে সেবা বন্ধ রয়েছে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল), জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি রোগী ছাড়া এক্স-রে সুবিধা পাচ্ছে না। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে নির্দিষ্টসংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে সেবা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাইরে রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল মেডিকেল কলেজে এক্স-রে ফিল্মের সংকট রয়েছে।
তবে রংপুর ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সংকট নেই বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমার্জিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গত প্রায় এক সপ্তাহ এক্স-রে ফিল্মের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরা শুধু ভর্তি রোগীদের এক্স-রে করছেন। বহির্বিভাগের রোগীদের বাইরে থেকে এক্স-রে করিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
সংকটের কারণ জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বড় ফিল্মের কিছুটা সংকট রয়েছে। এত দিন ধার করে চালাতে হয়েছে। তবে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, আশা করছি দ্রুত ফিল্ম চলে আসবে। তখন সমস্যা হবে না।’
রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেখানে এক্স-রে ফিল্মের স্বল্পতা না থাকলেও এমআরআই ও সিটিস্ক্যান ফিল্মের স্বল্পতা রয়েছে। শুধু ভর্তি রোগীরাই এই সেবা পাচ্ছেন। তাও বিভাগীয় প্রধানের অনুমোদনক্রমে। এ কারণে প্রতিদিন মাত্র ১০ থেকে ১২টি ইকো, মাত্র ৫টি এমআরআই এবং ১০ থেকে ১২টা সিটিস্ক্যান করা হয়। শুধু ভর্তি রোগীরা এই সুবিধা পাবেন। তবে এই সংখ্যক ভর্তি রোগী না থাকলে বহির্বিভাগের রোগীরা সুযোগ পাবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালে ফিল্ম না থাকায় রোগীদের এক্স-রে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্ম না থাকায় সেবা সীমিত করা হলে রোগীরা ক্ষুব্ধ হন। পরিস্থিতি শান্ত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে ফিল্ম এনে সেবা পুনরায় চালু করে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের টানাটানি দেখা দিয়েছে। ফিল্মের অভাবে সম্প্রতি একটি এক্স-রে মেশিন বন্ধ থেকেছে কয়েক দিন। পরে ফিল্ম এলে মেশিনটি চালু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন হাতে যে ফিল্ম আছে, তা দিয়ে কিছুদিন চলবে। এর মধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফিল্ম সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘ফিল্মের জন্য সংকট বলতে যে কথা, সেটি এখনো হয়নি। তবে মাঝে একটু সমস্যা হয়েছিল। তারপর ৯৫ প্যাকেট ফিল্ম সংগ্রহ করেছি। আশা করি আরও ফিল্ম চলে আসবে।’
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট রয়েছে। তবে বিকল্প ফিল্ম দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন এক্স-রে ফিল্মের চাহিদা রয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০। এর মধ্যে ১৪/১৭ ইঞ্চি মাপের ফিল্মের সংকট চলছে গত তিন মাস ধরে।
শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ১৪/১৭ ইঞ্চি মাপের ফিল্ম অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চলে আসবে। সংকটের কারণে ৮/১০ ইঞ্চি মাপের ফিল্ম দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট নেই বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম।
ফিল্ম কীভাবে আসে
জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে একটা সময় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) থেকে এক্স-রে ফিল্ম কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এখন হাসপাতালগুলো নিজেরাই এটি কিনে থাকে। এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে কী পরিমাণ প্রয়োজন, তার পরিসংখ্যান করে সেই হিসেবে তিন বা ছয় মাসের ফিল্ম একবারে কিনে রাখেন। আবার কিছু হাসপাতাল প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহকারীদের কাছ থেকে নিয়মিত সংগ্রহ করে।
আমদানিকারকেরা যা বলছেন
এক্স-রে ফিল্ম আমদানিকারক মেসার্স স্বাধীন বাংলা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সুমন মুনশি জানান, হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক বাজারে এক্স-রে ফিল্মের দাম বাড়ায় এবং ডলার সংকটের কারণে এলসি জটিলতায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সুমন মুনশির দাবি, আগে ফুজি ব্র্যান্ডের ৮/১০ ইঞ্চি এক বক্স (১০০ পিস) ফিল্মের আমদানি খরচ পড়ত ৩ হাজার ৮০০ টাকার মতো। এখন সেটা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। একই ব্র্যান্ডের ১৪/১৭ ইঞ্চি ফিল্ম ৫ হাজার ৮০০ টাকার জায়গায় এখন পড়ছে প্রায় ৯ হাজার টাকা।
আমদানিকারকদের দাবি, বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করছে। কিন্তু সরবরাহকারীদের আগের দামেই সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে ফিল্ম সরবরাহ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এতেই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. শেখ দাউদ আদনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক্স-রে ফিল্ম না থাকার কোনো কারণ নেই। হয়তো রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালগুলো গুরুত্ব অনুসারে ফিল্ম ব্যবহার করছে। এ ছাড়া আমদানিকারকেরা সরবরাহ করতে দেরি করছে। কিন্তু সংকট হওয়ার কারণ নেই।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার বগুড়া প্রতিনিধি গণেশ দাস, রাজশাহী প্রতিনিধি রিমন রহমান, রংপুর প্রতিনিধি শিপুল ইসলাম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ইলিয়াস আহমেদ ও বরিশাল প্রতিনিধি খান রফিক]
বুকে ব্যথার কারণে গত রোববার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন মো. আতিকুল ইসলাম। চিকিৎসক এক্স-রে করিয়ে আবার যেতে বলেন। হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগে গেলে বলা হয়, এখানে হবে না, হৃদরোগ থেকে করিয়ে আনেন। কিন্তু হৃদরোগ হাসপাতালে গেলে তাঁকে জানানো হয়, সেখানও বাইরের রোগী ও বহির্বিভাগের রোগীর এক্স-রে করা হচ্ছে না। ফিল্ম না থাকায় হচ্ছে না সিটি স্ক্যান ও এমআরআই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক হাসপাতালে এক্স-রে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। সীমিত পরিসরে চলছে এমআরআই ও সিটি স্ক্যান সেবা। চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে দ্বিগুণ, তিন গুণ ব্যয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। এতে হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেওয়া বিপুলসংখ্যক রোগী বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট, এলসি জটিলতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ফিল্মের দাম বাড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সংকট সারা দেশে
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে এক্স-রে সেবা বন্ধ রয়েছে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল), জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি রোগী ছাড়া এক্স-রে সুবিধা পাচ্ছে না। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে নির্দিষ্টসংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে সেবা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাইরে রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল মেডিকেল কলেজে এক্স-রে ফিল্মের সংকট রয়েছে।
তবে রংপুর ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সংকট নেই বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমার্জিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গত প্রায় এক সপ্তাহ এক্স-রে ফিল্মের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরা শুধু ভর্তি রোগীদের এক্স-রে করছেন। বহির্বিভাগের রোগীদের বাইরে থেকে এক্স-রে করিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
সংকটের কারণ জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বড় ফিল্মের কিছুটা সংকট রয়েছে। এত দিন ধার করে চালাতে হয়েছে। তবে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, আশা করছি দ্রুত ফিল্ম চলে আসবে। তখন সমস্যা হবে না।’
রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেখানে এক্স-রে ফিল্মের স্বল্পতা না থাকলেও এমআরআই ও সিটিস্ক্যান ফিল্মের স্বল্পতা রয়েছে। শুধু ভর্তি রোগীরাই এই সেবা পাচ্ছেন। তাও বিভাগীয় প্রধানের অনুমোদনক্রমে। এ কারণে প্রতিদিন মাত্র ১০ থেকে ১২টি ইকো, মাত্র ৫টি এমআরআই এবং ১০ থেকে ১২টা সিটিস্ক্যান করা হয়। শুধু ভর্তি রোগীরা এই সুবিধা পাবেন। তবে এই সংখ্যক ভর্তি রোগী না থাকলে বহির্বিভাগের রোগীরা সুযোগ পাবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালে ফিল্ম না থাকায় রোগীদের এক্স-রে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্ম না থাকায় সেবা সীমিত করা হলে রোগীরা ক্ষুব্ধ হন। পরিস্থিতি শান্ত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে ফিল্ম এনে সেবা পুনরায় চালু করে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের টানাটানি দেখা দিয়েছে। ফিল্মের অভাবে সম্প্রতি একটি এক্স-রে মেশিন বন্ধ থেকেছে কয়েক দিন। পরে ফিল্ম এলে মেশিনটি চালু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন হাতে যে ফিল্ম আছে, তা দিয়ে কিছুদিন চলবে। এর মধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফিল্ম সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘ফিল্মের জন্য সংকট বলতে যে কথা, সেটি এখনো হয়নি। তবে মাঝে একটু সমস্যা হয়েছিল। তারপর ৯৫ প্যাকেট ফিল্ম সংগ্রহ করেছি। আশা করি আরও ফিল্ম চলে আসবে।’
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট রয়েছে। তবে বিকল্প ফিল্ম দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন এক্স-রে ফিল্মের চাহিদা রয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০। এর মধ্যে ১৪/১৭ ইঞ্চি মাপের ফিল্মের সংকট চলছে গত তিন মাস ধরে।
শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ১৪/১৭ ইঞ্চি মাপের ফিল্ম অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চলে আসবে। সংকটের কারণে ৮/১০ ইঞ্চি মাপের ফিল্ম দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট নেই বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম।
ফিল্ম কীভাবে আসে
জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে একটা সময় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) থেকে এক্স-রে ফিল্ম কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এখন হাসপাতালগুলো নিজেরাই এটি কিনে থাকে। এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে কী পরিমাণ প্রয়োজন, তার পরিসংখ্যান করে সেই হিসেবে তিন বা ছয় মাসের ফিল্ম একবারে কিনে রাখেন। আবার কিছু হাসপাতাল প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহকারীদের কাছ থেকে নিয়মিত সংগ্রহ করে।
আমদানিকারকেরা যা বলছেন
এক্স-রে ফিল্ম আমদানিকারক মেসার্স স্বাধীন বাংলা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সুমন মুনশি জানান, হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক বাজারে এক্স-রে ফিল্মের দাম বাড়ায় এবং ডলার সংকটের কারণে এলসি জটিলতায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সুমন মুনশির দাবি, আগে ফুজি ব্র্যান্ডের ৮/১০ ইঞ্চি এক বক্স (১০০ পিস) ফিল্মের আমদানি খরচ পড়ত ৩ হাজার ৮০০ টাকার মতো। এখন সেটা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। একই ব্র্যান্ডের ১৪/১৭ ইঞ্চি ফিল্ম ৫ হাজার ৮০০ টাকার জায়গায় এখন পড়ছে প্রায় ৯ হাজার টাকা।
আমদানিকারকদের দাবি, বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করছে। কিন্তু সরবরাহকারীদের আগের দামেই সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে ফিল্ম সরবরাহ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এতেই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. শেখ দাউদ আদনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক্স-রে ফিল্ম না থাকার কোনো কারণ নেই। হয়তো রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালগুলো গুরুত্ব অনুসারে ফিল্ম ব্যবহার করছে। এ ছাড়া আমদানিকারকেরা সরবরাহ করতে দেরি করছে। কিন্তু সংকট হওয়ার কারণ নেই।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার বগুড়া প্রতিনিধি গণেশ দাস, রাজশাহী প্রতিনিধি রিমন রহমান, রংপুর প্রতিনিধি শিপুল ইসলাম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ইলিয়াস আহমেদ ও বরিশাল প্রতিনিধি খান রফিক]
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে