Ajker Patrika

খেতেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান

নড়াইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২২, ১২: ৫৬
খেতেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান

নড়াইলে এ বছর বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে, কিন্তু ধান কাটা নিয়ে কৃষকেরা পড়েছেন বিপাকে। একদিকে শ্রমিকের সংকট অন্যদিকে প্রায় প্রতিদিন থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছে। এতে অনেক জমির ধান মাটিতে পড়ে গেছে। তিন বেলা খাবার এবং ৮০০ টাকা দিয়েও একজন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে জেলার ৫০ ভাগ কৃষক এখনো ধান কাটতে পারেননি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে থেকে জানা গেছে, নড়াইলে এ বছর ৪৯ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে এবং ৩ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন ধান ও ২ লাখ ১২ হাজার ৫৩৭ হেক্টর মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসেব অনুযায়ী ১ একর জমির ধান কেটে কৃষকের ঘরে তুলতে ২৫ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে জেলায় ১ লাখ ১২ হাজার ৩৫ জন বোরো চাষি রয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সরকারি ভর্তুকিকৃত ১৬টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর ও ৭১টি রিপার মেশিন ধান কাটায় ব্যবহৃত হলেও জেলায় ধান কাটার শ্রমিকের সংকট রয়েছে।

সদরের বাহিরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক অমিতোষ বিশ্বাস জানান, বোরো চাষে প্রতি মণ ধানে এক হাজার টাকার বেশি খরচ পড়ে। বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ধান ৯৫০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না। এবার কারেন্ট পোকায় অর্ধেক ধান চিটা হয়ে গেছে। বাহিরডাঙ্গা বিলের অর্ধেক ধান এখনো কাটা হয়নি। এর মধ্যে অনেক ধান কেটে বিলে রেখে দেওয়া হয়েছে। এখনো তা বাড়িতে আনা হয়নি।

এর মধ্যে বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হলো। কপালে কি আছে তা ভগবানই জানেন। মুলিয়া ইউনিয়নের বনগ্রামের কৃষক কবির হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রায় অর্ধেক শ্রমিকই বাইরের জেলা থেকে আনতে হয়। ১ একর জমির ধান কাটতে ৩০টি শ্রমিক প্রয়োজন। তাঁদের এক বেলা খাওয়া দিতে হয়। তাও এবার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’

জেলার সদর উপজেলার সিংগাশোলপুর গ্রামের কৃষক রেজাউল আলম বলেন, ‘অন্যান্যবার আমাদের এলাকায় সাতক্ষীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে অনেক শ্রমিক আসেন। কিন্তু এবার তাঁরা আসেনি। তিন বেলা খাবার এবং সকাল-সন্ধ্যা ১০ ঘণ্টা ৮০০ টাকা মজুরি দেওয়ার কথা বলেছি। তবুও তাঁরা ধান কাটতে আসছেন না। তাই এবার আমরা শ্রমিক সংকটে পড়েছি।’

রেজাউল আলম আরও বলেন, ‘শুধু ধান বিক্রি করে তেমন একটা লাভের দেখা মেলে না। আর বিছালীর ভালো দামও রয়েছে। তাই বিছালী বিক্রি করে কিছুটা লাভের দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু বিছালী সংরক্ষণের জন্য জমির ধান কাটতে একটু দেরি হয়ে যায়। ফলে আমরা অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬০ ভাগের বেশি ধান কাটা হয়েছে। প্রতি বছর সাতক্ষীরা, মাগুরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চল থেকে শ্রমিক আসলেও ঈদের কারণে আসতে দেরি হলেও কিছু এসেছে। অশনির প্রভাবে যদি একদিন বৃষ্টি হয় তাহলে সমস্যা হবে না, যদি টানা বর্ষণ হয় তাহলে কি হবে সেটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত