দামি খেলোয়াড় মানেই সাফল্য নয়

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২২, ০৮: ৩১
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১০: ৩৮

ফুটবলের সৃষ্টিশীলতা যান্ত্রিকতার দিকে যেতে দেখে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন বিখ্যাত ক্রীড়া সাহিত্যিক এদোয়ার্দো গালেয়ানো। উরুগুইয়ান এই ফুটবল বিশ্লেষকের অবশ্য ক্লাব ফুটবলের দলবদলে এমন রমরমা অবস্থা দেখে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। নেইমারের ইতিহাস গড়া দলবদলের ২ বছর আগেই মারা যান ‘সকার ইন সান অ্যান্ড শ্যাডো’ বইয়ের এই লেখক। তবে সেটি ছিল কেবল শুরু। এরপর নেইমারের সমান না হলেও কাছাকাছি মূল্যের আরও অনেক দলবদলের ঘটনা ঘটেছে। তবে বড় অঙ্কের বেশির ভাগ দলবদলই সাফল্য নিয়ে আসতে পারেনি।

২০১৭ সালে ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে (২১৮৫ কোটি টাকা) বার্সেলোনা ছেড়ে নেইমারের প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) যাওয়ার ঘটনাই এখন পর্যন্ত ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দলবদল। নেইমার চেয়েছিলেন লিওনেল মেসির ছায়া থেকে বেরিয়ে পিএসজিতে নিজের আলাদা রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে। আর পিএসজির চাওয়া ছিল নেইমারকে দিয়ে ইউরোপে নিজেদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের চাওয়া যে পূরণ হয়নি, সে বলাই বাহুল্য।

ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে একবার ফাইনাল খেললেও পিএসজি এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। এই ব্যর্থতার জেরে নেইমারকে চলতি দলবদলে ছেড়ে দেওয়ার কথাও নাকি ভাবছে পিএসজি। শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলিয়ান তারকাকে ছেড়ে দিতে হলে সেটি ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যর্থ দলবদল হয়ে থাকবে।

একই কথা কিছুটা কিলিয়ান এমবাপ্পের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নেইমারের পর দ্বিতীয় দামি খেলোয়াড় এই ফরাসি তারকা। তাঁকে কিনতে পিএসজি খরচ করেছে ১৮০ মিলিয়ন ইউরো। ব্যক্তিগত সাফল্য দেখা গেলেও দলীয় সাফল্যে বাড়তি কিছু সংযোজন করতে পারেননি এমবাপ্পেও। ইউরোপীয় ট্রফির কেবিনেট এখনো শূন্যই থেকে গেছে। এরপরও অবশ্য এমবাপ্পের ওপর আস্থা হারাচ্ছে না পিএসজি। তাঁর রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়াটা ঠেকিয়ে দিয়েছে প্যারিসের জায়ান্ট। এখন সামনের দিনগুলোয় এমবাপ্পে এই অর্থের মূল্য দিতে পারেন কি না, সেটিই দেখার অপেক্ষা।

Captureনেইমার ও এমবাপ্পের ব্যর্থতার চিহ্ন মুছে দেওয়ার সুযোগ থাকলেও ফিলিপে কুতিনহোর সেটি আর নেই। এই মুহূর্তে ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ দলবদলের তালিকায় শীর্ষে আছেন কুতিনহো। লিভারপুল থেকে তাঁকে আনতে বার্সেলোনা খরচ করেছিল ১৪৫ মিলিয়ন ইউরো। তবে এই ব্রাজিলিয়ান বার্সায় নিজের কোনো অবস্থানই তৈরি করতে পারেননি। দলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে ধার হিসেবে বায়ার্ন মিউনিখ ও অ্যাস্টন ভিলায় খেলতে যান। পরে তাঁকে পাকাপাকিভাবেই কিনে নেয় ভিলা। তাঁর পেছনে এত অর্থ ঢেলেও কোনো সাফল্য পায়নি বার্সা।

জোয়াও ফেলিক্সকে নিয়েও শেষ কথা বলার সুযোগ আসেনি। তবে ২০১৯ সালে ১২৬ মিলিয়নে ইউরোতে বেনফিকা থেকে আনা ফেলিক্স আস্থার পুরোপুরি প্রতিদান দিতে পারেননি এখনো। মাঝে মধ্যে কিছু ঝলক দেখালেও সেটা আলাদা করার মতো কিছু নয়।

আঁতোয়াঁন গ্রিজমানের অবস্থাও কুতিনহোর মতোই। আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে দারুণ সাফল্য পেয়ে বার্সেলোনায় পাড়ি জমান এই ফরাসি। তাঁকে পেতে বার্সা খরচ করেছিল ১২০ মিলিয়ন ইউরো। বার্সার হয়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন গ্রিজমান। পরে যে আতলেতিকো থেকে এসেছিলেন, সেখানেই ধারে ফিরে গেছেন তিনি। এখনো সেখানেই আছেন।

এভাবে দামে সেরা দশে থাকা বাকিরাও খুব একটা সাফল্যের দেখা পাননি। তাই দামি খেলোয়াড় মানেই সাফল্য নয়

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত