Ajker Patrika

গ্যাসের দাম এবং শিল্প-বাণিজ্য ও জনজীবন

অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১১: ৩৫
গ্যাসের দাম এবং শিল্প-বাণিজ্য ও জনজীবন

সরকার যে বেশ জোরেশোরে এবং দৃপ্ত পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তপূরণের পথে হাঁটছে, তা এখন সর্বসমক্ষে দৃশ্যমান ও নিশ্চিতভাবে প্রতীয়মান। বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি (সাড়ে চার বিলিয়ন) মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের অন্যতম প্রধান শর্ত বিভিন্ন খাত থেকে সরকারের ভর্তুকি প্রত্যাহার। ব্যয় কমানো।

এসব শর্তপূরণের বিষয়ে সরকার এত দিন রাখঢাক করে চলেছে। স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। কিন্তু মনে মনে সিদ্ধান্ত ছিল পাকা। সে জন্যই আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তির ছাড় নিশ্চিত করতে হঠাৎ করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণা আসে ১৩ জানুয়ারি। এর মাত্র পাঁচ দিন পর, আবারও হঠাৎ করেই আসে ১৮ জানুয়ারি গ্যাসের রেকর্ড পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধির আদেশ।

বিশেষভাবে লক্ষ করার বিষয় হলো, বিদ্যুৎ এবং গ্যাস দুটিরই দাম বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশে। এর মাধ্যমে প্রায় এক দশক ধরে চলে আসা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে গণশুনানির মাধ্যমে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সর্বজনগ্রাহ্য আইনি প্রক্রিয়াটি উপেক্ষা করা হলো। আসলে সব পরিস্থিতিতে আইনকানুন, নিয়ম-নীতি মেনে রাষ্ট্র পরিচালনা কঠিনই বটে!

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনও (বিইআরসি) কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় প্রতিষ্ঠিত একটি আধা বিচারিক (কোয়াসি জুডিশিয়াল) সংস্থা। মাত্র কিছুদিন আগে এই বিইআরসি আইন, ২০০১ সংশোধন করে নির্বাহী আদেশে সব ধরনের জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ানোর সমান্তরাল ব্যবস্থাটি করা হয়। কারণ, ওই যে বললাম, মনে মনে পাকা ছিল ভর্তুকি তুলে দেওয়ার আইএমএফের শর্ত মানার সিদ্ধান্ত!

গত বুধবার দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহারের পক্ষে জোরালো ও যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। সেই বক্তব্য থেকে স্পষ্টই অনুধাবন করা যায় যে সরকার ভর্তুকি দেওয়ার নীতি বা সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে চায়।

সরকারের এই চাওয়াকে বোধ হয় আমাদের খুব জোর সমর্থন করা উচিত। কেননা, ভর্তুকি শেষ বিচারে কোনো ভালো জিনিস নয়। ভর্তুকি একটি দেশের অর্থ-বাণিজ্যকে ভেতরে-ভেতরে পঙ্গু করে দেয়। সে ঘরকুনো হয়ে পড়ে। বিশ্ববাজারের উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে সে ভয় পায়। প্রণোদনা ছাড়া তার চলে না। আর এই ভর্তুকি নামের প্রণোদনা দিতে গিয়ে রাষ্ট্র পড়ে হীনবল হয়ে। তার ট্যাঁকের জোর যায় কমে। আমাদের মতো দেশে রাষ্ট্রের বা সরকারের ট্যাঁকের জোর তো এমনিতেই কম। জনকল্যাণমূলক প্রকল্প, জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এসব জরুরি খাতে সরকারের অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতা আরও কমিয়ে দেয় ভর্তুকি। তাই ভর্তুকি তুলে দেওয়ার আদর্শ ব্যবস্থা সমর্থনযোগ্য।

কিন্তু যখন দেখা যায় ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান এফবিসিসিআই বিবৃতি দিয়ে বলে যে গ্যাসের এই বর্ধিত দাম দেশের শিল্প-বাণিজ্য বহন করতে অক্ষম, তখন আমাদেরও পুনরায় সন্দেহ জাগে। আসলে মধ্যবিত্ত মানসিকতা আমাদের। কোনো কিছুতেই সহজে নিঃসংশয় হতে পারি না। সে যা-ই হোক। সরকার জ্বালানি-বিদ্যুতের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে দিলে দেশের শিল্প-বাণিজ্য যদি বসে পড়ে, তাহলেই বা কী হবে তার ফলাফল!

এর একটা সমাধানের ইঙ্গিত দিয়েছে আমাদের জ্বালানি বিভাগ। তারা বলেছে, দাম বাড়ানোর অর্থ দিয়ে শুধু ভর্তুকি সমন্বয় করা হবে না। গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহও নিশ্চিত করা হবে; অর্থাৎ দাম বেশি দিলে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাবে। কিন্তু এফবিসিসিআই তো বলছে, এতটা দামই তারা বহন করতে অক্ষম। গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ তো পরের কথা!

তা ছাড়া, এর আগে একবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় বিইআরসির কাছে দেওয়া প্রস্তাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর কথা সরকারপক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সেই পরিমাণে বাড়ানো হয়নি। ফলে বিদ্যুতের সরবরাহও প্রস্তাব অনুযায়ী পাওয়া যায়নি। এসব কথাও ব্যবসায়ীদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়।

তারও আগের কথা স্মরণ করলে বলা যায়, গত বছর জুলাই-আগস্টে বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের দাম ছিল নিম্নমুখী, তখন দেশে দাম বাড়ানো হলো রেকর্ড পরিমাণে। কেন দাম বাড়িয়েছিল! কারণ, সরকার অর্থসংকটে ছিল। সরকারের হাতে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ছিল না। তাই আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করতে জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি প্রায় পুরোটাই প্রত্যাহার করে নিয়ে তেল বিপণনকে মোটামুটি লাভজনকই করে ফেলা হয়।
এবার গ্যাসের ওপর থেকেও ভর্তুকি তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হলো। বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও একই নীতি কার্যকর হবে। তার প্রাথমিক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে প্রতি মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের ঘোষণায়। শোনা যাচ্ছে, জানুয়ারির শেষ কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরু নাগাদ বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ানো হবে এবং ভর্তুকি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত বিরতিতে দাম বাড়ানো হতেই থাকবে।

এভাবে দাম বাড়িয়ে সরকার একদিকে আইএমএফের ভর্তুকি প্রত্যাহারের শর্ত পূরণ করছে। ফলে ঋণ পাওয়া নিশ্চিত হচ্ছে। ভর্তুকির অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। অন্যদিকে জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ থেকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব আয়ের পথ পরিষ্কার হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জ্বালানি খাত সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় নির্ভরতার জায়গা। দেশের অদক্ষ কর ও রাজস্ব কর্তৃপক্ষ এই খাতের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়ানোর ফলে সরকারের অন্যতম প্রধান সমস্যা বাজেট ঘাটতি পূরণ, তথা চলতি ব্যয় সংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান বাড়ানোও সম্ভব হবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, অস্বাভাবিক রকম দাম বাড়ানোর ফলে যদি দেশের শিল্প-বাণিজ্য তেল-গ্যাস ব্যবহারই করতে না পারে, অর্থাৎ যদি তারা বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারে, তাহলে কী হবে! রপ্তানি আয় বাড়ানো সম্ভব হবে কি? না হলে ডলারের সংকট তো আরও বাড়বে। সেটা কি আইএমএফের দেওয়া ঋণ দিয়ে সমন্বয় হবে? হওয়ার কথা নয়। কারণ ওই ঋণের অর্থ তেমন কোনো বড় অঙ্কের নয়।

আরেকটি প্রশ্ন, আমজনতার কী হবে? গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। নিত্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম এবং জীবনযাত্রার সামগ্রিক ব্যয়ভার বাড়বে। আমজনতা সেটা সামলাবে কী করে! অবশ্য এই প্রশ্নের আলোচনা একটি ক্লিশে বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আমজনতার অবস্থা চিরদিন যা হয়েছে, এখনো তা-ই হবে। কখনো তারা জ্বলন্ত উনুন থেকে ফুটন্ত কড়াইয়ে পড়বে। কখনো ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে। সরকারের চেষ্টা থাকবে টিসিবি প্রভৃতির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার। তাতে আমজনতার কতটা কী সাশ্রয় হবে, তা দেখার বিষয়।

আসলে সরকারও পড়েছে এক মহা ফ্যাসাদে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বকে টালমাটাল করে তুলেছে। তার ঢেউ আছড়ে পড়েছে আমাদের ওপরও। জ্বালানির বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা আমাদের ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে আমাদের অবস্থা যথেষ্ট এলোমেলো হয়ে পড়েছে।

তবে এ কথা বলতেই হবে, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতেও আমাদের অবস্থা এতটা এলোমেলো না-ও হতে পারত। যদি আমাদের হাতে দৈনিক আর মাত্র এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বেশি গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা থাকত, তাহলেই আমাদের অবস্থা থাকত সম্পূর্ণ বিপরীত। সরকার বিশ্ববাজার থেকে এলএনজি আকারে গ্যাস আমদানির পাশাপাশি যদি দেশের গ্যাসসম্পদ অহরণ ও উত্তোলনের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজটি পরিকল্পিতভাবে করত, তাহলেই দৈনিক ওই এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বাড়তি গ্যাস উত্তোলনের সক্ষমতা আমাদের থাকতে পারত। এই দুর্দিনে সেটাই হতো আমাদের রক্ষাকবচ। অবশ্য আমরা সবাই জানি, এখন এ কথা বলে কোনো লাভ নেই। তবু বলা দরকার। কে বলতে পারে, যদি ভবিষ্যতে আবারও কখনো অতীতকে স্মরণ করার প্রয়োজন হয়!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত