পিঠা উৎসবে হযবরল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ০১
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৪

পিঠা বাঙালির চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। চিরায়ত সেই ঐতিহ্য নগরজীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার পথে। এ ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছে পিঠা উৎসবের। গত বুধবার শিল্পকলা একাডেমির মাঠে ১০ দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

এদিকে আয়োজন ব্যাপক হলেও বিভিন্ন অসংগতির কারণে হযবরল অবস্থায় রূপ নিয়েছে এই উৎসব। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে অসংখ্য মানুষ এসেছিলেন উৎসবে, কিন্তু অধিকাংশেরই মুখে ছিল না মাস্ক। আবার উৎসব মাঠের ধুলো উড়ে মিশে যাচ্ছিল পিঠায়।

পিঠার সঙ্গে বালু মিশে যাওয়ার বিষয়ে বিক্রমপুর বাহারি পিঠাঘরের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা সব পিঠা পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখি। তারপরও মাঠে অতিরিক্ত বালু থাকায় ভাজার সময় কিছু বালু তেলে পড়ে। ফুটন্ত তেল তো ঢেকে রাখার সুযোগ নেই।’ এ সমস্যার সমাধান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম মেলার মাঠসহ পুরো জায়গাটি কার্পেটে মুড়িয়ে দিতে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা শোনেনি।’

এদিকে বাহারি নামে সাজানো পিঠাগুলো নামের কারণেই যেন বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়। উৎসব অঙ্গনে ঘুরতে আসা রাফিয়া আক্তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, এই অঙ্গনের বাইরে বিভিন্ন দোকানে যেসব পিঠা ১০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়, তা নাম পাল্টে এখানে ২০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নামের বাহারে দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে নোয়াখালী পিঠাঘরের কর্ণধার সোহাগ বাবুর্চি বলেন, ‘যে পিঠা বাইরে ১০ টাকায় বিক্রি করতাম, এখানে ২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। স্টলে লাইটিং, মেলার সময়ে কারিগরের মজুরি বৃদ্ধি এবং আনুষঙ্গিক খরচ মিটিয়ে লাভ করতে চাইলে দাম বেশি নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

দূরদূরান্ত থেকে পিঠা উৎসবে আসা দর্শনার্থীরা মেলার এত সব অব্যবস্থাপনা দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন। রামপুরা থেকে আসা জিয়াউল হক বলেন, এত ছোট জায়গায় অনেক মানুষ। এ ছাড়া ধুলার কারণে ১০ মিনিট অবস্থান করাই কষ্টকর।

এত সব অব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী সুখ দেব চন্দ্র দাস বলেন, মেলায় অনেক মানুষ আসে, সবাইকে তো ধরে ধরে মাস্ক পরানো যায় না। মাঠের বালু এবং মেলার অন্য অনিয়ম নিয়ে তিনি বলেন, মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাঝেমধ্যে পানি দেওয়া হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মানুষের চাপ থাকায় ধুলা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ধুলা নিয়ন্ত্রণে উৎসবে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের পরামর্শ বিষয়ে তিনি বলেন, সে পরিকল্পনা নেই।

এবারের মেলায় সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠাশিল্পীরা মোট ৫০টি স্টল নিয়ে হাজির হয়েছেন। ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এই পিঠা উৎসব।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত