অরুণ কর্মকার
১. বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম যখন নিম্নমুখী, তখন সরকার তড়িঘড়ি করে দেশে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। গত শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তাঁর বাসায় কয়েকজন সংবাদকর্মীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন। রাতেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আর বাড়াল তো বাড়াল, একেবারে বৃদ্ধির বিশ্ব রেকর্ড করে ছেড়ে দিল। হ্যাঁ, আক্ষরিক অর্থেই বিশ্ব রেকর্ড। জ্বালানি তেলের মতো একটি অত্যাবশ্যকীয় ও কৌশলগত পণ্যের (স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি) দাম একবারে এতটা বৃদ্ধির ঘটনা দেশ-বিদেশের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
যদিও প্রতিমন্ত্রী মহোদয় সংবাদকর্মীদের বলেছিলেন, জনগণের কথা মাথায় রেখে সহনীয় পর্যায়ে দাম বাড়ানোর কথা সরকারের ভাবনায় আছে। কী জানি! হয়তো আছে। সরকারের মাথায় নিশ্চয়ই আছে আমাদের মাথাপিছু আয় এবং ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টিও।
২. প্রশ্ন হলো, বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও সরকার কেন এভাবে দাম বাড়াল! এর প্রধান কারণ, সরকার অর্থসংকটে আছে। সরকারের হাতে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা নেই। তাই আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে। আইএমএফের ঋণ সাধারণত ‘বাজেটারি সাপোর্ট’ হিসেবেই পাওয়া যায়।
ওই ঋণ নিতে হলে কিছু শর্ত মানতে হবে। এর মধ্যে প্রথমই হচ্ছে, ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে, ব্যয় কমাতে হবে। এ ছাড়া আছে কিছু সংস্কার কর্মসূচির বাস্তবায়ন, যা দেশের জন্য ভালো। কিন্তু অজনপ্রিয় বলে সরকার এগুলো করতে গড়িমসি করে। ফেলে রাখে। এখন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বিশ্ব রেকর্ড করে সরকার এই খাতের ভর্তুকি কার্যত তুলে দিয়েছে। উপরন্তু তেল বিপণনকে লাভজনক করে ফেলেছে।
এইভাবে সরকার এক ঢিলে দুই পাখি মারল। একদিকে আইএমএফের শর্ত পূরণ করে ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করল। অন্যদিকে জ্বালানি তেল থেকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব আয়ের পথ পরিষ্কার করে নিল। উল্লেখ্য, জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণন থেকে সরকার প্রায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক ও কর নেয়। কাজেই এই পণ্যের দাম যত বেশি রাখা যাবে বিপিসিরও তত বেশি লাভ হবে। সরকারের শুল্ক ও করের অঙ্কও ততই বড় হবে। ভর্তুকি দেওয়ারও প্রশ্ন থাকবে না।
এই দুই পাখি মারার পরও আরেকটি পাখি সরকারের ছোড়া ঢিলে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। সেই পাখির নাম আমজনতা। দেখার বিষয় হচ্ছে, এই তৃতীয় পাখি সরকারের ঢিলে কতটা পর্যুদস্ত হয় এবং সরকার এই পাখিটির পরিচর্যায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আদৌ নেয় কি না।
৩. সরকারি হিসাব অনুযায়ী বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৭৫ মার্কিন ডলার হলে বিপিসি ‘না-লাভ, না-লোকসানে’ চলতে পারে। বর্তমানে তেলের দাম ১০০ ডলারের কম। সে ক্ষেত্রে বিপিসির সর্বোচ্চ লোকসান হতে পারে ২৫ শতাংশ। তাহলে দেশে তেলের দাম ৪৫ থেকে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর কারণ কী? কারণ তেল বিপণনকে লাভজনক করা!
এখানে আরেকটি বিষয়ও বিবেচনা করার আছে। তা হলো পেট্রল ও অকটেনের দাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক দিন আগেও বলেছেন যে, আমাদের পেট্রল-অকটেন আমদানি করতে হয় না। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে কনডেনসেট নামক যে উপজাত সামগ্রী পাওয়া যায়, তা দিয়ে দেশেই সরকারের স্থাপিত ফ্রাকশনেশন প্ল্যান্টে পেট্রল-অকটেন তৈরি করা হয়। তা ছাড়া, ইস্টার্ন রিফাইনারিতে তেল শোধন প্রক্রিয়া থেকেও কিছুটা পেট্রল-অকটেন পাওয়া যায়। তাতে দেশের চাহিদা পূরণ হয়। কখনো কখনো কিছু পরিমাণে অকটেন আমদানি করতে হয়।
তাহলে যে পণ্যগুলো দেশেই উৎপাদন করা হয়, তার দাম বাড়ানো হলো কেন? আরও বড় কথা, সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে এই দুটি পণ্যের দাম। এবার দাম বাড়ানোর আগেও এই দুটি পণ্য বিক্রি করে বিপিসি লাভ করত। তাহলে এর অর্থ কী? অর্থ হলো জ্বালানি তেল বিক্রিকে লাভজনক করে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো। অর্থসংকট ঘোচানো।
৪. বিপিসির লাভ-লোকসান হলো আরেকটি জটিল ধাঁধা। গতকাল শনিবার জ্বালানি মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিপিসি ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। কিন্তু তার আগে সাত বছরে বিপিসি যে ৪২ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে, সে কথা কখনো ভুলেও সরকারের কেউ বলে না। অন্য কেউ সে প্রসঙ্গ তুললে বলা হয়, বিপিসি তো যুগ যুগ ধরে লোকসান দিয়ে এসেছে। সরকার সেই লোকসান পুষিয়েছে ভর্তুকি দিয়ে।
ঘটনা সত্য। কিন্তু কথা হলো, বিপিসির লোকসান পোষানোর জন্য সরকার যে ভর্তুকি দেয়, সে টাকার উৎস এবং বিপিসির লাভের টাকার উৎস তো অভিন্ন, এই দেশের মানুষ। তাদের ঘিরেই সরকারের সব আয়-ব্যয়। কাজেই বিপিসিকে দেওয়া ভর্তুকির হিসাব যুগ যুগ ধরে পেন্ডিং থাকবে, ২০-৩০ বছর পর বিপিসি মুনাফা করলেও সেই টাকা দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয় করা হবে, এটাকে তো ভর্তুকি বলে না। এটাকে বলা যায় জনগণের সঙ্গে জবরদস্তি। ভর্তুকির হিসাব-নিকাশ প্রতি অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় হয়ে যায়।
কাজেই বিপিসির ৪২ হাজার কোটি টাকা মুনাফার বিষয়টি বেমালুম চেপে গিয়ে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসানকে দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানোটা কোনো রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।
৫. জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় তখন কেন করলেন না, যখন কোভিড পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে দাম ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল! কারণ ওই একটাই। তখন দাম সমন্বয় করলে বিপিসির তথা সরকারের আয় কমে যেত। তখন যে প্রায় দুই বছর ধরে বাজারদরের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি দাম নেওয়া হলো, তার জবাব কী! ওই একই জবাব। সরকার তো অনেক বছর ধরে ভর্তুকি দিয়েছে।
আগেই বলেছি এটি আসলে জবাব নয়, জবরদস্তি। এই জবরদস্তি এবং মূল্যবৃদ্ধির ঢিল সামলে দেশবাসী কি কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে? বিশেষ করে সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরা? শেষ কথা হলো, সরকার এবার জ্বালানি তেলের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিক। সরকার এই খাতে অনেক তুঘলকি কাজকর্ম করেছে। দেশের মানুষ যদি এবারের মূল্যবৃদ্ধির এত বড় ধাক্কা সামলাতে পারে, তাহলে মনে হয় না যে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে ভবিষ্যতে সরকারের আর কোনো ভূমিকা রাখার দরকার আছে।
লেখক: অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
১. বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম যখন নিম্নমুখী, তখন সরকার তড়িঘড়ি করে দেশে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। গত শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তাঁর বাসায় কয়েকজন সংবাদকর্মীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন। রাতেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আর বাড়াল তো বাড়াল, একেবারে বৃদ্ধির বিশ্ব রেকর্ড করে ছেড়ে দিল। হ্যাঁ, আক্ষরিক অর্থেই বিশ্ব রেকর্ড। জ্বালানি তেলের মতো একটি অত্যাবশ্যকীয় ও কৌশলগত পণ্যের (স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি) দাম একবারে এতটা বৃদ্ধির ঘটনা দেশ-বিদেশের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
যদিও প্রতিমন্ত্রী মহোদয় সংবাদকর্মীদের বলেছিলেন, জনগণের কথা মাথায় রেখে সহনীয় পর্যায়ে দাম বাড়ানোর কথা সরকারের ভাবনায় আছে। কী জানি! হয়তো আছে। সরকারের মাথায় নিশ্চয়ই আছে আমাদের মাথাপিছু আয় এবং ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টিও।
২. প্রশ্ন হলো, বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও সরকার কেন এভাবে দাম বাড়াল! এর প্রধান কারণ, সরকার অর্থসংকটে আছে। সরকারের হাতে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা নেই। তাই আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে। আইএমএফের ঋণ সাধারণত ‘বাজেটারি সাপোর্ট’ হিসেবেই পাওয়া যায়।
ওই ঋণ নিতে হলে কিছু শর্ত মানতে হবে। এর মধ্যে প্রথমই হচ্ছে, ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে, ব্যয় কমাতে হবে। এ ছাড়া আছে কিছু সংস্কার কর্মসূচির বাস্তবায়ন, যা দেশের জন্য ভালো। কিন্তু অজনপ্রিয় বলে সরকার এগুলো করতে গড়িমসি করে। ফেলে রাখে। এখন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বিশ্ব রেকর্ড করে সরকার এই খাতের ভর্তুকি কার্যত তুলে দিয়েছে। উপরন্তু তেল বিপণনকে লাভজনক করে ফেলেছে।
এইভাবে সরকার এক ঢিলে দুই পাখি মারল। একদিকে আইএমএফের শর্ত পূরণ করে ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করল। অন্যদিকে জ্বালানি তেল থেকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব আয়ের পথ পরিষ্কার করে নিল। উল্লেখ্য, জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণন থেকে সরকার প্রায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক ও কর নেয়। কাজেই এই পণ্যের দাম যত বেশি রাখা যাবে বিপিসিরও তত বেশি লাভ হবে। সরকারের শুল্ক ও করের অঙ্কও ততই বড় হবে। ভর্তুকি দেওয়ারও প্রশ্ন থাকবে না।
এই দুই পাখি মারার পরও আরেকটি পাখি সরকারের ছোড়া ঢিলে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। সেই পাখির নাম আমজনতা। দেখার বিষয় হচ্ছে, এই তৃতীয় পাখি সরকারের ঢিলে কতটা পর্যুদস্ত হয় এবং সরকার এই পাখিটির পরিচর্যায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আদৌ নেয় কি না।
৩. সরকারি হিসাব অনুযায়ী বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৭৫ মার্কিন ডলার হলে বিপিসি ‘না-লাভ, না-লোকসানে’ চলতে পারে। বর্তমানে তেলের দাম ১০০ ডলারের কম। সে ক্ষেত্রে বিপিসির সর্বোচ্চ লোকসান হতে পারে ২৫ শতাংশ। তাহলে দেশে তেলের দাম ৪৫ থেকে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর কারণ কী? কারণ তেল বিপণনকে লাভজনক করা!
এখানে আরেকটি বিষয়ও বিবেচনা করার আছে। তা হলো পেট্রল ও অকটেনের দাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক দিন আগেও বলেছেন যে, আমাদের পেট্রল-অকটেন আমদানি করতে হয় না। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে কনডেনসেট নামক যে উপজাত সামগ্রী পাওয়া যায়, তা দিয়ে দেশেই সরকারের স্থাপিত ফ্রাকশনেশন প্ল্যান্টে পেট্রল-অকটেন তৈরি করা হয়। তা ছাড়া, ইস্টার্ন রিফাইনারিতে তেল শোধন প্রক্রিয়া থেকেও কিছুটা পেট্রল-অকটেন পাওয়া যায়। তাতে দেশের চাহিদা পূরণ হয়। কখনো কখনো কিছু পরিমাণে অকটেন আমদানি করতে হয়।
তাহলে যে পণ্যগুলো দেশেই উৎপাদন করা হয়, তার দাম বাড়ানো হলো কেন? আরও বড় কথা, সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে এই দুটি পণ্যের দাম। এবার দাম বাড়ানোর আগেও এই দুটি পণ্য বিক্রি করে বিপিসি লাভ করত। তাহলে এর অর্থ কী? অর্থ হলো জ্বালানি তেল বিক্রিকে লাভজনক করে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো। অর্থসংকট ঘোচানো।
৪. বিপিসির লাভ-লোকসান হলো আরেকটি জটিল ধাঁধা। গতকাল শনিবার জ্বালানি মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিপিসি ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। কিন্তু তার আগে সাত বছরে বিপিসি যে ৪২ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে, সে কথা কখনো ভুলেও সরকারের কেউ বলে না। অন্য কেউ সে প্রসঙ্গ তুললে বলা হয়, বিপিসি তো যুগ যুগ ধরে লোকসান দিয়ে এসেছে। সরকার সেই লোকসান পুষিয়েছে ভর্তুকি দিয়ে।
ঘটনা সত্য। কিন্তু কথা হলো, বিপিসির লোকসান পোষানোর জন্য সরকার যে ভর্তুকি দেয়, সে টাকার উৎস এবং বিপিসির লাভের টাকার উৎস তো অভিন্ন, এই দেশের মানুষ। তাদের ঘিরেই সরকারের সব আয়-ব্যয়। কাজেই বিপিসিকে দেওয়া ভর্তুকির হিসাব যুগ যুগ ধরে পেন্ডিং থাকবে, ২০-৩০ বছর পর বিপিসি মুনাফা করলেও সেই টাকা দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয় করা হবে, এটাকে তো ভর্তুকি বলে না। এটাকে বলা যায় জনগণের সঙ্গে জবরদস্তি। ভর্তুকির হিসাব-নিকাশ প্রতি অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় হয়ে যায়।
কাজেই বিপিসির ৪২ হাজার কোটি টাকা মুনাফার বিষয়টি বেমালুম চেপে গিয়ে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসানকে দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানোটা কোনো রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।
৫. জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় তখন কেন করলেন না, যখন কোভিড পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে দাম ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল! কারণ ওই একটাই। তখন দাম সমন্বয় করলে বিপিসির তথা সরকারের আয় কমে যেত। তখন যে প্রায় দুই বছর ধরে বাজারদরের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি দাম নেওয়া হলো, তার জবাব কী! ওই একই জবাব। সরকার তো অনেক বছর ধরে ভর্তুকি দিয়েছে।
আগেই বলেছি এটি আসলে জবাব নয়, জবরদস্তি। এই জবরদস্তি এবং মূল্যবৃদ্ধির ঢিল সামলে দেশবাসী কি কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে? বিশেষ করে সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরা? শেষ কথা হলো, সরকার এবার জ্বালানি তেলের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিক। সরকার এই খাতে অনেক তুঘলকি কাজকর্ম করেছে। দেশের মানুষ যদি এবারের মূল্যবৃদ্ধির এত বড় ধাক্কা সামলাতে পারে, তাহলে মনে হয় না যে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে ভবিষ্যতে সরকারের আর কোনো ভূমিকা রাখার দরকার আছে।
লেখক: অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে