হিনা ফাতিমা
গত জুলাই মাসে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হওয়ার পর রাজ্য সরকার মুসলমানদের মালিকানাধীন অনেক বাড়ি, দোকান ও অফিস কমপ্লেক্স বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ ঘটনার পর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ধ্বংসাত্মক অভিযানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আদালতের প্রশ্ন ছিল, এই বুলডোজার অভিযান কি রাজ্যের ‘জাতিগত নির্মূলের চর্চা’র জন্য?
গত ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল আয়োজিত একটি যাত্রার পর নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়। এতে দুজন হোমগার্ডসহ ছয়জন নিহত হন। হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ সংঘর্ষকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে অভিহিত করেন এবং এই অঞ্চলে ২০২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেছিলেন, অভিযুক্ত অপরাধীরা ‘বুলডোজার শাস্তি’ পাবে এবং ৩ আগস্ট থেকে অবৈধ স্থাপনা উল্লেখ করে নুহ জেলার মুসলমানদের সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি, অর্থনীতি
এমন এক সময়ে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়, যখন নুহ জেলার লোকেরা ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে আতঙ্কগ্রস্ত, যখন তাদের মুসলিম পরিচয়ের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বুলডোজার অভিযান তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
কোনো সতর্কতা বা আইনি নোটিশ ছাড়াই বুলডোজার চালানো হয়, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারায় নারী ও শিশুরা। হরিয়ানার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়, বিশেষ করে নারীদের। বাড়ির চার দেয়াল ঘিরে তাঁদের ভবিষ্যৎ আশা ও স্বপ্ন। সরকার যখন সেই বাড়িটি ধ্বংস করে ‘তাৎক্ষণিক বিচার’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তাঁদের সেই সব আশা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে কেন্দ্রে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা আমাদের সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু হরিয়ানা সরকারের বুলডোজারের শাস্তি সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায় এবং রাজ্যের অর্থনীতি–উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
নুহ জেলার সেই সব পরিবারকেই উৎখাত করা হয়েছে, যারা স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের জন্য লড়ছে। এসব পরিবারের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তিকে আরও পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে রাজ্য সরকারের বুলডোজার অভিযান মুসলিম সম্প্রদায়কে একঘরে করে ফেলার একটি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ।
বুলডোজার অ্যাকশন এবং গ্রেপ্তার শেষ পর্যন্ত নারীদের সবচেয়ে বেশি আঘাত করে। ঐতিহ্যগতভাবে পিতৃতান্ত্রিক পরিবারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়া থেকে নারীদের বাদ দেওয়া হয়, তাই অন্য যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টাকে তাঁরা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন। তাঁরা তাঁদের সব শক্তি বাড়ি পুনর্নির্মাণ এবং জীবিকা নির্বাহের পেছনে বিনিয়োগ করেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে এবং ন্যায়বিচার আশা করতে পারেন কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে নারীদের আসলেই বেশ বেগ পেতে হয়। আর এসব কারণে তাঁদের এবং তাঁদের সন্তানদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য–উভয়ই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই নারীরা এমন একটি কাজের জন্য শাস্তি পাচ্ছেন, যা তাঁরা করেননি। ফলে এসব নারীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ভয় ও আস্থার অভাব দেখা দেয় এবং সরকার ও সমাজের প্রতি নিরাপত্তাহীনতার বোধ বেড়ে যায়। বিচারপতি মদন বি লোকুর তাঁর প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘ধ্বংস একটি অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ, যা অপমান এবং মানসিক আঘাতের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘায়িত আর্থিক যন্ত্রণার কারণ হয়।’
বুলডোজার বিচার
যতবারই সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বুলডোজার বিচারের ব্যবস্থা নিয়েছে, ততবারই তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ নির্মাণ বা দখলের অভিযোগ এনেছে। নুহ জেলার মুসলমানদের বাড়িঘর, দোকানপাট যদি অবৈধ হতো, তাহলে জুলাই মাসে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের আগে রাষ্ট্র আইনি ব্যবস্থা নেয়নি কেন?
একাধিক রিপোর্ট অনুসারে, রাজ্য সরকার দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষদের বাড়িঘরও ভেঙে দিয়েছে। এ ধরনের দুটি পরিবার ইন্দিরা আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত একটি বাড়িতে বাস করছিল। কিন্তু তারপরও কর্তৃপক্ষ তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করে দেয়। গত এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রদেশের খারগোনে জেলায় রাম নবমি মিছিলের সময় সহিংস সংঘর্ষের পর জেলা প্রশাসন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত একটি মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকার বাড়িঘর ভেঙে দেয়।
এই যে রাজ্য সরকার মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দিল, এরপর কী হবে? হরিয়ানা সরকার কি নুহ জেলায় বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করবে বা পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করবে? ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এখনো এ বিষয়ে কোনো কিছু বলেনি।
বুলডোজারের রাজনীতির পেছনে উদ্দেশ্যটি মনে হচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতিকর ও সন্ত্রস্ত থাকার অনুভূতি জাগানো। বিজেপি সরকার মুসলিমদের ঘরবাড়ি ধ্বংসের ন্যায্যতা দিতে হরিয়ানার দাঙ্গাকে ব্যবহার করছে। রাজ্য সরকার হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের খুশি করতে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ‘বুলডোজার বিচার’কে অন্ধভাবে প্রয়োগ করছে। বেআইনি স্থাপনা ভাঙতে বুলডোজার সংস্কৃতি আমদানির কৃতিত্ব উত্তর প্রদেশের বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অপরাধ দমনের নামে তিনিই প্রথম বুলডোজার ব্যবহার শুরু করেন।
অবহেলার শিকার
নুহের ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অভিযোগ করেছে, তাদের বাড়িঘর ভাঙার আগে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি বা সতর্ক করা হয়নি। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের জন্য রাষ্ট্র যদি সত্যিই তাদের শাস্তি দেয়, তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরও তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া উচিত।
হরিয়ানায় স্বাভাবিক ন্যায়বিচার জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। কারণ, এটা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ন্যায়বিচারের ওপরে ‘শিক্ষা দেওয়ার’ বিষয়টিকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
নুহের মুসলমানরা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের দায়ে দোষী প্রমাণিত হলেও তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া কি ঠিক? অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অপরাধ প্রমাণের আগেই বুলডোজার নীতি প্রয়োগ করে নিরীহ মানুষের জীবন ধ্বংস করছে, বিশেষ করে শিশুদের; যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কিছুই বোঝে না। বুলডোজারের বিচার আইনের মূলনীতির বিরুদ্ধে যায়—যেখানে এক হাজার অপরাধী পালিয়ে যেতে পারে, কিন্তু একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকেও শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।
(ভারতের সংবাদ পোর্টাল দ্য প্রিন্ট-এ প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক
ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
গত জুলাই মাসে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হওয়ার পর রাজ্য সরকার মুসলমানদের মালিকানাধীন অনেক বাড়ি, দোকান ও অফিস কমপ্লেক্স বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ ঘটনার পর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ধ্বংসাত্মক অভিযানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আদালতের প্রশ্ন ছিল, এই বুলডোজার অভিযান কি রাজ্যের ‘জাতিগত নির্মূলের চর্চা’র জন্য?
গত ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল আয়োজিত একটি যাত্রার পর নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়। এতে দুজন হোমগার্ডসহ ছয়জন নিহত হন। হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ সংঘর্ষকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে অভিহিত করেন এবং এই অঞ্চলে ২০২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেছিলেন, অভিযুক্ত অপরাধীরা ‘বুলডোজার শাস্তি’ পাবে এবং ৩ আগস্ট থেকে অবৈধ স্থাপনা উল্লেখ করে নুহ জেলার মুসলমানদের সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি, অর্থনীতি
এমন এক সময়ে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়, যখন নুহ জেলার লোকেরা ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে আতঙ্কগ্রস্ত, যখন তাদের মুসলিম পরিচয়ের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বুলডোজার অভিযান তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
কোনো সতর্কতা বা আইনি নোটিশ ছাড়াই বুলডোজার চালানো হয়, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারায় নারী ও শিশুরা। হরিয়ানার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়, বিশেষ করে নারীদের। বাড়ির চার দেয়াল ঘিরে তাঁদের ভবিষ্যৎ আশা ও স্বপ্ন। সরকার যখন সেই বাড়িটি ধ্বংস করে ‘তাৎক্ষণিক বিচার’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তাঁদের সেই সব আশা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে কেন্দ্রে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা আমাদের সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু হরিয়ানা সরকারের বুলডোজারের শাস্তি সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায় এবং রাজ্যের অর্থনীতি–উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
নুহ জেলার সেই সব পরিবারকেই উৎখাত করা হয়েছে, যারা স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের জন্য লড়ছে। এসব পরিবারের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তিকে আরও পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে রাজ্য সরকারের বুলডোজার অভিযান মুসলিম সম্প্রদায়কে একঘরে করে ফেলার একটি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ।
বুলডোজার অ্যাকশন এবং গ্রেপ্তার শেষ পর্যন্ত নারীদের সবচেয়ে বেশি আঘাত করে। ঐতিহ্যগতভাবে পিতৃতান্ত্রিক পরিবারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়া থেকে নারীদের বাদ দেওয়া হয়, তাই অন্য যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টাকে তাঁরা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন। তাঁরা তাঁদের সব শক্তি বাড়ি পুনর্নির্মাণ এবং জীবিকা নির্বাহের পেছনে বিনিয়োগ করেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে এবং ন্যায়বিচার আশা করতে পারেন কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে নারীদের আসলেই বেশ বেগ পেতে হয়। আর এসব কারণে তাঁদের এবং তাঁদের সন্তানদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য–উভয়ই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই নারীরা এমন একটি কাজের জন্য শাস্তি পাচ্ছেন, যা তাঁরা করেননি। ফলে এসব নারীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ভয় ও আস্থার অভাব দেখা দেয় এবং সরকার ও সমাজের প্রতি নিরাপত্তাহীনতার বোধ বেড়ে যায়। বিচারপতি মদন বি লোকুর তাঁর প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘ধ্বংস একটি অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ, যা অপমান এবং মানসিক আঘাতের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘায়িত আর্থিক যন্ত্রণার কারণ হয়।’
বুলডোজার বিচার
যতবারই সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বুলডোজার বিচারের ব্যবস্থা নিয়েছে, ততবারই তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ নির্মাণ বা দখলের অভিযোগ এনেছে। নুহ জেলার মুসলমানদের বাড়িঘর, দোকানপাট যদি অবৈধ হতো, তাহলে জুলাই মাসে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের আগে রাষ্ট্র আইনি ব্যবস্থা নেয়নি কেন?
একাধিক রিপোর্ট অনুসারে, রাজ্য সরকার দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষদের বাড়িঘরও ভেঙে দিয়েছে। এ ধরনের দুটি পরিবার ইন্দিরা আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত একটি বাড়িতে বাস করছিল। কিন্তু তারপরও কর্তৃপক্ষ তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করে দেয়। গত এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রদেশের খারগোনে জেলায় রাম নবমি মিছিলের সময় সহিংস সংঘর্ষের পর জেলা প্রশাসন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত একটি মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকার বাড়িঘর ভেঙে দেয়।
এই যে রাজ্য সরকার মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দিল, এরপর কী হবে? হরিয়ানা সরকার কি নুহ জেলায় বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করবে বা পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করবে? ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এখনো এ বিষয়ে কোনো কিছু বলেনি।
বুলডোজারের রাজনীতির পেছনে উদ্দেশ্যটি মনে হচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতিকর ও সন্ত্রস্ত থাকার অনুভূতি জাগানো। বিজেপি সরকার মুসলিমদের ঘরবাড়ি ধ্বংসের ন্যায্যতা দিতে হরিয়ানার দাঙ্গাকে ব্যবহার করছে। রাজ্য সরকার হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের খুশি করতে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ‘বুলডোজার বিচার’কে অন্ধভাবে প্রয়োগ করছে। বেআইনি স্থাপনা ভাঙতে বুলডোজার সংস্কৃতি আমদানির কৃতিত্ব উত্তর প্রদেশের বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অপরাধ দমনের নামে তিনিই প্রথম বুলডোজার ব্যবহার শুরু করেন।
অবহেলার শিকার
নুহের ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অভিযোগ করেছে, তাদের বাড়িঘর ভাঙার আগে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি বা সতর্ক করা হয়নি। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের জন্য রাষ্ট্র যদি সত্যিই তাদের শাস্তি দেয়, তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরও তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া উচিত।
হরিয়ানায় স্বাভাবিক ন্যায়বিচার জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। কারণ, এটা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ন্যায়বিচারের ওপরে ‘শিক্ষা দেওয়ার’ বিষয়টিকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
নুহের মুসলমানরা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের দায়ে দোষী প্রমাণিত হলেও তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া কি ঠিক? অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অপরাধ প্রমাণের আগেই বুলডোজার নীতি প্রয়োগ করে নিরীহ মানুষের জীবন ধ্বংস করছে, বিশেষ করে শিশুদের; যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কিছুই বোঝে না। বুলডোজারের বিচার আইনের মূলনীতির বিরুদ্ধে যায়—যেখানে এক হাজার অপরাধী পালিয়ে যেতে পারে, কিন্তু একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকেও শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।
(ভারতের সংবাদ পোর্টাল দ্য প্রিন্ট-এ প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক
ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে