আজকের পত্রিকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনে কি আওয়ামী লীগ ঐতিহ্য হারাল?
আব্দুর রাজ্জাক: উত্তর দেওয়ার আগে আমি একটু অতীতে যেতে চাই। আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর আমরা পার্টির প্লাটিনাম জুবিলি পালন করছি। আমরা দাবি করি এবং বাস্তবেও আওয়ামী লীগ দেশের বড় রাজনৈতিক দল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে যুক্ত আছে। দেশের কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া সম্ভব হয়নি। একটা জাতি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেছে। সত্যিকার অর্থে পদ্মা-মেঘনা-যমুনার পাড়ে পাড়ে, লোকালয়, জনপদ— কোনোকালে স্বশাসিত ছিল না। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু ৭ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। একাত্তরে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে পেয়েছি। এই যুদ্ধে মাঝি, কৃষক, শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, কামার-কুমার, জেলে-তাঁতি এবং সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, ইপিআরসহ সবাই মিলে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে।
কাজেই এসব নিয়ে দল হিসেবে আমাদের গৌরব আছে। আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশের কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম হয়নি। এবারের কোটা সংস্কার আন্দোলনটা শুরু শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। এই আন্দোলনে তো আওয়ামী লীগের সরাসরি কোনো ভূমিকা ছিল না। তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে ঐতিহ্য হারাল?
আজকের পত্রিকা: আন্দোলন-সংগ্রামে পোড় খাওয়া দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে এই আন্দোলনে এত প্রাণহানির ঘটনা কি প্রত্যাশিত ছিল?
আব্দুর রাজ্জাক: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিনে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এটাকে অবশ্যই প্রত্যাশিত বলা যায় না। ২০১৮ সালেও কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। দেশের মানুষের মধ্যে কোটাবিরোধী একটা মনোভাব ছিল। একসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটাব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছিলেন। ২০২৪ সাল পর্যন্ত সেটা চলছিল। তবে নারী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কোটা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন ছিল। আর মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা দেওয়া হয়েছিল সম্মানের জায়গা থেকে। হঠাৎ করে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্ট একটা রায় দিলেন। সেটাতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্জীবিত করা হলো। ৩০ ভাগ কোটা অনেকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না। তবে চাকরির ক্ষেত্রে ৮-৯ ভাগের বেশি মুক্তিযুদ্ধের কোটা পাওয়া যায়নি। সরকার কিন্তু তিন দিনের প্রস্তুতি নিয়ে এর বিরুদ্ধে আপিল করল। আপিলে চার সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের রায় স্থগিত ঘোষণা করা হলো। ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন হয়। সরকার ওই সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দিলেও তারা সেটা মানেনি। সরকার আদালতের ওপর আস্থা রেখেছিল। শিক্ষার্থীরা যে ধৈর্যহারা হয়ে পড়বে, সেটা হয়তো সরকার বুঝতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েও শিক্ষার্থীদের আদালতের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, আদালত নিশ্চয়ই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীলই থাকবেন। কিন্তু তারপরও কেন আন্দোলন অব্যাহত থাকল এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ল, অনুসন্ধানের বিষয় সেটাই। সাংবাদিক হিসেবে আপনারাও এ বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান করলে আমরা স্বাগত জানাব।
আজকের পত্রিকা: কোথাও না কোথাও তো আপনাদের ঘাটতি ছিল, না হলে...
আব্দুর রাজ্জাক: কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে বা তাদের ওপর ভর করে সরকারবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তি এ রকম একটা নাশকতার দিকে যাবে, সেটা সত্যি আমরা কল্পনার মধ্যে আনতে পারিনি। আর ঘটনাগুলো সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে বিশ্লেষণ করা দরকার। আমি কোনো দিনই বিশ্বাস করি না, এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এবং আমাদের আগামী প্রজন্ম, যারা আগামী দিনে এ দেশটাকে গড়ে তুলবে এবং যাদের জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি—তারা এই ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হতে পারে। কাজেই আমি মনে করি, এটা আমাদের নিজেদের কোনো দুর্বল দিক না। আমাদের কিছুটা কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। জানমালের এত বড় ক্ষতির মধ্যে পড়তে হলো। দেশেরও অনেক ক্ষতি হলো।
আজকের পত্রিকা: আন্দোলন দমনে পুলিশের ব্যর্থতা বা বাড়াবাড়ি ছিল কি?
আব্দুর রাজ্জাক: পুলিশ আত্মরক্ষার জন্যই গুলি ছুড়েছে বলে আমার ধারণা। একদম যখন পারেনি, এ রকম বাধ্য অবস্থায় নিজেকে বাঁচানোর জন্য গুলি ছুড়েছে। সেভাবে কোনো ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। টঙ্গীতে আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে উলঙ্গ করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ রকম চরম নাশকতা ও বর্বরতার পর্যায়ে গিয়েছিল তারা। সেই মুহূর্তে পুলিশ গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের কর্মীও তো মারা গেছে।
ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোডের পূর্ব মাথায় গুজব উঠেছিল, গণভবন আক্রমণ করা হবে। আমরা তখন ধানমন্ডি অফিসে পার্টির সেক্রেটারিসহ কয়েকজন বসে ছিলাম। বারবার পার্টি অফিস আক্রমণ করা হচ্ছে। পুলিশ, বিজিবি ও আমাদের কর্মীরা যাচ্ছে, তখন তারা বিভিন্ন গলিতে লুকিয়েছে, আবার কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে আবার আক্রমণ করেছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত সশস্ত্র ক্যাডাররা বেপরোয়া গুলি ছুড়েই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। তদন্তে নিশ্চয়ই সেটা বেরিয়ে আসবে।
চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবন থেকে আমাদের কর্মীদের জামায়াতের লোকেরা ফেলে দিয়েছে। অনেকে আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে। যদি আর এক দিন এভাবে চলতে দেওয়া হতো, কারফিউ ঘোষণা না করা হতো, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। কারফিউ দেওয়ার পর আর গুলি চলেনি। পুলিশের প্রতি নির্দেশ ছিল, চরম পরিস্থিতি তৈরি না হলে গুলি চালানো যাবে না।
আজকের পত্রিকা: এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে?
আব্দুর রাজ্জাক: আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামী লীগের কিছু ভুলত্রুটি নেই, তা আমি বলব না। তবে দলটি জনবিচ্ছিন্ন নয়। জনগণই এই দলের মূল শক্তি। ক্ষমতায় কিংবা ক্ষমতার বাইরে—কোনো সময়ই আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন দল ছিল না। এখন দেখেন কয়জন সেনাবাহিনী রাস্তায় আছে? সেভাবে নেই তো। সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামানো হয়েছে মানুষের মধ্যে আস্থা ফেরানোর জন্য। এর বাইরে আর কোনো উদ্দেশ্য নেই। সহিংসতাকারীরা যে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করবে, তা কারোরই চিন্তার মধ্যে ছিল না।
তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের অসংখ্য সমর্থক আছে। দেশের এমন কোনো গ্রাম, পাড়া এবং বাড়ি নেই, যেখানে আওয়ামী লীগের একজন নেতা, কর্মী কিংবা সমর্থক পাওয়া যাবে না। আমি অনেক মানুষকে বলতে শুনেছি, আমরা তো জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বাইরে তাঁরা ভোট দেবেন, সেটা চিন্তা করতে পারেন না। এর বাইরে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের মধ্যেও আওয়ামী লীগের জনসমর্থন আছে।
আজকের পত্রিকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনে কি আওয়ামী লীগ ঐতিহ্য হারাল?
আব্দুর রাজ্জাক: উত্তর দেওয়ার আগে আমি একটু অতীতে যেতে চাই। আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর আমরা পার্টির প্লাটিনাম জুবিলি পালন করছি। আমরা দাবি করি এবং বাস্তবেও আওয়ামী লীগ দেশের বড় রাজনৈতিক দল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে যুক্ত আছে। দেশের কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া সম্ভব হয়নি। একটা জাতি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেছে। সত্যিকার অর্থে পদ্মা-মেঘনা-যমুনার পাড়ে পাড়ে, লোকালয়, জনপদ— কোনোকালে স্বশাসিত ছিল না। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু ৭ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। একাত্তরে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে পেয়েছি। এই যুদ্ধে মাঝি, কৃষক, শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, কামার-কুমার, জেলে-তাঁতি এবং সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, ইপিআরসহ সবাই মিলে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে।
কাজেই এসব নিয়ে দল হিসেবে আমাদের গৌরব আছে। আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশের কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম হয়নি। এবারের কোটা সংস্কার আন্দোলনটা শুরু শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। এই আন্দোলনে তো আওয়ামী লীগের সরাসরি কোনো ভূমিকা ছিল না। তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে ঐতিহ্য হারাল?
আজকের পত্রিকা: আন্দোলন-সংগ্রামে পোড় খাওয়া দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে এই আন্দোলনে এত প্রাণহানির ঘটনা কি প্রত্যাশিত ছিল?
আব্দুর রাজ্জাক: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিনে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এটাকে অবশ্যই প্রত্যাশিত বলা যায় না। ২০১৮ সালেও কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। দেশের মানুষের মধ্যে কোটাবিরোধী একটা মনোভাব ছিল। একসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটাব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছিলেন। ২০২৪ সাল পর্যন্ত সেটা চলছিল। তবে নারী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কোটা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন ছিল। আর মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা দেওয়া হয়েছিল সম্মানের জায়গা থেকে। হঠাৎ করে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্ট একটা রায় দিলেন। সেটাতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্জীবিত করা হলো। ৩০ ভাগ কোটা অনেকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না। তবে চাকরির ক্ষেত্রে ৮-৯ ভাগের বেশি মুক্তিযুদ্ধের কোটা পাওয়া যায়নি। সরকার কিন্তু তিন দিনের প্রস্তুতি নিয়ে এর বিরুদ্ধে আপিল করল। আপিলে চার সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের রায় স্থগিত ঘোষণা করা হলো। ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন হয়। সরকার ওই সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দিলেও তারা সেটা মানেনি। সরকার আদালতের ওপর আস্থা রেখেছিল। শিক্ষার্থীরা যে ধৈর্যহারা হয়ে পড়বে, সেটা হয়তো সরকার বুঝতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েও শিক্ষার্থীদের আদালতের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, আদালত নিশ্চয়ই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীলই থাকবেন। কিন্তু তারপরও কেন আন্দোলন অব্যাহত থাকল এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ল, অনুসন্ধানের বিষয় সেটাই। সাংবাদিক হিসেবে আপনারাও এ বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান করলে আমরা স্বাগত জানাব।
আজকের পত্রিকা: কোথাও না কোথাও তো আপনাদের ঘাটতি ছিল, না হলে...
আব্দুর রাজ্জাক: কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে বা তাদের ওপর ভর করে সরকারবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তি এ রকম একটা নাশকতার দিকে যাবে, সেটা সত্যি আমরা কল্পনার মধ্যে আনতে পারিনি। আর ঘটনাগুলো সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে বিশ্লেষণ করা দরকার। আমি কোনো দিনই বিশ্বাস করি না, এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এবং আমাদের আগামী প্রজন্ম, যারা আগামী দিনে এ দেশটাকে গড়ে তুলবে এবং যাদের জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি—তারা এই ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হতে পারে। কাজেই আমি মনে করি, এটা আমাদের নিজেদের কোনো দুর্বল দিক না। আমাদের কিছুটা কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। জানমালের এত বড় ক্ষতির মধ্যে পড়তে হলো। দেশেরও অনেক ক্ষতি হলো।
আজকের পত্রিকা: আন্দোলন দমনে পুলিশের ব্যর্থতা বা বাড়াবাড়ি ছিল কি?
আব্দুর রাজ্জাক: পুলিশ আত্মরক্ষার জন্যই গুলি ছুড়েছে বলে আমার ধারণা। একদম যখন পারেনি, এ রকম বাধ্য অবস্থায় নিজেকে বাঁচানোর জন্য গুলি ছুড়েছে। সেভাবে কোনো ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। টঙ্গীতে আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে উলঙ্গ করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ রকম চরম নাশকতা ও বর্বরতার পর্যায়ে গিয়েছিল তারা। সেই মুহূর্তে পুলিশ গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের কর্মীও তো মারা গেছে।
ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোডের পূর্ব মাথায় গুজব উঠেছিল, গণভবন আক্রমণ করা হবে। আমরা তখন ধানমন্ডি অফিসে পার্টির সেক্রেটারিসহ কয়েকজন বসে ছিলাম। বারবার পার্টি অফিস আক্রমণ করা হচ্ছে। পুলিশ, বিজিবি ও আমাদের কর্মীরা যাচ্ছে, তখন তারা বিভিন্ন গলিতে লুকিয়েছে, আবার কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে আবার আক্রমণ করেছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত সশস্ত্র ক্যাডাররা বেপরোয়া গুলি ছুড়েই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। তদন্তে নিশ্চয়ই সেটা বেরিয়ে আসবে।
চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবন থেকে আমাদের কর্মীদের জামায়াতের লোকেরা ফেলে দিয়েছে। অনেকে আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে। যদি আর এক দিন এভাবে চলতে দেওয়া হতো, কারফিউ ঘোষণা না করা হতো, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। কারফিউ দেওয়ার পর আর গুলি চলেনি। পুলিশের প্রতি নির্দেশ ছিল, চরম পরিস্থিতি তৈরি না হলে গুলি চালানো যাবে না।
আজকের পত্রিকা: এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে?
আব্দুর রাজ্জাক: আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামী লীগের কিছু ভুলত্রুটি নেই, তা আমি বলব না। তবে দলটি জনবিচ্ছিন্ন নয়। জনগণই এই দলের মূল শক্তি। ক্ষমতায় কিংবা ক্ষমতার বাইরে—কোনো সময়ই আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন দল ছিল না। এখন দেখেন কয়জন সেনাবাহিনী রাস্তায় আছে? সেভাবে নেই তো। সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামানো হয়েছে মানুষের মধ্যে আস্থা ফেরানোর জন্য। এর বাইরে আর কোনো উদ্দেশ্য নেই। সহিংসতাকারীরা যে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করবে, তা কারোরই চিন্তার মধ্যে ছিল না।
তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের অসংখ্য সমর্থক আছে। দেশের এমন কোনো গ্রাম, পাড়া এবং বাড়ি নেই, যেখানে আওয়ামী লীগের একজন নেতা, কর্মী কিংবা সমর্থক পাওয়া যাবে না। আমি অনেক মানুষকে বলতে শুনেছি, আমরা তো জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বাইরে তাঁরা ভোট দেবেন, সেটা চিন্তা করতে পারেন না। এর বাইরে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের মধ্যেও আওয়ামী লীগের জনসমর্থন আছে।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে