বাগেরহাট প্রতিনিধি
আরিয়ান; পুরো নাম আরিয়ান রহমান আলিফ। বয়স সাত বছর। পড়াশোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে। এই বয়সেই পড়াশোনার পাশাপাশি অসুস্থ মা ও নিজের খাবারের জন্য মানুষের বাড়ি কাজ করে। যখন কাজ থাকে না, তখন গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে কলার মোচা ও শাক তুলে বাগেরহাট শহরে বিক্রি করে। যা পায়, তাই দিয়ে খেয়ে না-খেয়ে চলে মা-ছেলের সংসার।
অসহায় ছোট্ট শিশু আরিয়ান মা আমেনা আক্তার পিয়ার সঙ্গে বাগেরহাট সদর উপজেলার ভাটসালা গ্রামের নানা মো. সাইখুল ইসলামের বাড়িতে থাকে। আরিয়ান গর্ভে থাকার সময় আমেনা আক্তারকে ফেলে চলে গেছেন বাবা খলিলুর রহমান। মামলা, থানা-পুলিশ শেষে সরকারি হেফাজতখানায় দিন কাটিয়ে অবশেষে বছর পাঁচেক আগে ছেলেকে নিয়ে ফিরে আসেন বাবার বাড়ি ভাটসালায়।
বাবার ঘরে সৎমা থাকায় নানা লাঞ্ছনা-বঞ্চনা সহ্য করতে হয় আরিয়ানের মাকে। একপর্যায়ে মো. সাইখুল ইসলাম মেয়েকে আলাদা টিনের ঘর করে দেন। মানুষের বাড়ি কাজ করে ও চেয়েচিন্তে ছেলেকে নিয়ে খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটতে থাকে আমেনার। কিন্তু অযত্ন, অবহেলা, মানসিক-আর্থিক কষ্ট ও না খেয়ে থেকে আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পড়েন আরিয়ানের মা আমেনা আক্তার।
মা যখন আর বাইরে কাজ করতে পারেন না, তখন আরিয়ান স্থানীয় ডোবা থেকে শাক ও বিভিন্ন বাগান থেকে কলার মোচা নিয়ে বিক্রি করা শুরু করে শহরে। তাতেও প্রতিদিন একবেলা ভাত জোটে না অসহায় এই মা-ছেলের।
আরিয়ান বলে, ‘মা তেমন কাজ করতে পারে না। তাই আমি শাক তুলে এবং মোচা নিয়ে বিক্রি করতে যাই। এক আঁটি শাক ১০ টাকা বিক্রি করি। অনেক সময় কেউ পাঁচ টাকা দিয়েও এক আঁটি নিয়ে যায়। সব মিলিয়ে যে যা দেয়, তাতেই দিয়ে দিই। এর বাইরে এলাকার লোকজন ইট টানা, পানি নেওয়াসহ যেকোনো কাজে ডাকলে আমি যাই। অনেক সময় ২০-৫০ টাকা দেয়, আবার কিছু খেতে দিয়েই শেষ করে কেউ কেউ।’
এসব কাজ করে দুজনের খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো চলে কি না, এমন প্রশ্নে আরিয়ান বলে, ‘ওই যা পাই তাই দিয়ে চলে। যেদিন চাইল আনতে পারি ওই দিন খাই, যেদিন আনতে পারি না, ওই দিন খাই না। শুধু ভাত হলেই চলে আমাদের, লবণ দিয়ে খেতে পারি আমি।’ এই বলে হেসে দেয় আরিয়ান।
আরিয়ানের মা আমেনা আক্তার প্রিয়া বলেন, ‘বিয়ের পরে স্বামী ও দেবরেরা খুব মারধর করত। ঘরে সৎমা থাকায় বাবাও খোঁজ নেন না। আরিয়ান গর্ভে আসার এক মাস পরেই স্বামী ছেড়ে চলে যায়। মামলা করেছিলেন আদালতে, অভিভাবক না থাকায় আদালত থেকে আমাকে সরকারি হেফাজতখানায় দিয়ে দেয়। সেখানেই আরিয়ানের জন্ম হয়। পরে চলে আসি বাবার বাড়িতে। সেখানে প্রতিনিয়ত সৎমা ও প্রতিবেশীদের অত্যাচার সহ্য করতে হয়।’
আমেনা আক্তার আরও বলেন, নিজের জন্য তিনি কিছুই চান না। তিনি চান, তাঁর ছেলেটা লেখাপড়া শিখুক, তিনবেলা খেয়ে-পরে বাঁচুক। ওর জন্য একটি স্থায়ী ঘর চান; যেখান থেকে কেউ নেমে যেতে বলবে না।
এদিকে আরিয়ানের অসহায় জীবনের গল্প শুনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ। গতকাল শুক্রবার সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আরিয়ানের বাড়িতে যান। আরিয়ান ও তার মাকে নতুন পোশাক, জুতা, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মসলা, ফলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেন। আরিয়ানের মাকে নগদ অর্থও দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন।
ইউএনও মোহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা আরিয়ানের নামে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে দেবেন। আরিয়ানকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে ওই হিসাবের মাধ্যমে করবেন। এ ছাড়া আরিয়ানের লেখাপড়া ও মায়ের কর্মসংস্থানের জন্য তাঁরা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। আরিয়ান ও তার মা যেটা ভালো মনে করবে, তাঁরা সেভাবে সহযোগিতা করবেন।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন বলেন, বাগেরহাট-২ আসনের সাংসদ শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের নির্দেশে তাঁরা আরিয়ানের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। একটি সরকারি ঘর দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
আরিয়ান; পুরো নাম আরিয়ান রহমান আলিফ। বয়স সাত বছর। পড়াশোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে। এই বয়সেই পড়াশোনার পাশাপাশি অসুস্থ মা ও নিজের খাবারের জন্য মানুষের বাড়ি কাজ করে। যখন কাজ থাকে না, তখন গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে কলার মোচা ও শাক তুলে বাগেরহাট শহরে বিক্রি করে। যা পায়, তাই দিয়ে খেয়ে না-খেয়ে চলে মা-ছেলের সংসার।
অসহায় ছোট্ট শিশু আরিয়ান মা আমেনা আক্তার পিয়ার সঙ্গে বাগেরহাট সদর উপজেলার ভাটসালা গ্রামের নানা মো. সাইখুল ইসলামের বাড়িতে থাকে। আরিয়ান গর্ভে থাকার সময় আমেনা আক্তারকে ফেলে চলে গেছেন বাবা খলিলুর রহমান। মামলা, থানা-পুলিশ শেষে সরকারি হেফাজতখানায় দিন কাটিয়ে অবশেষে বছর পাঁচেক আগে ছেলেকে নিয়ে ফিরে আসেন বাবার বাড়ি ভাটসালায়।
বাবার ঘরে সৎমা থাকায় নানা লাঞ্ছনা-বঞ্চনা সহ্য করতে হয় আরিয়ানের মাকে। একপর্যায়ে মো. সাইখুল ইসলাম মেয়েকে আলাদা টিনের ঘর করে দেন। মানুষের বাড়ি কাজ করে ও চেয়েচিন্তে ছেলেকে নিয়ে খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটতে থাকে আমেনার। কিন্তু অযত্ন, অবহেলা, মানসিক-আর্থিক কষ্ট ও না খেয়ে থেকে আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পড়েন আরিয়ানের মা আমেনা আক্তার।
মা যখন আর বাইরে কাজ করতে পারেন না, তখন আরিয়ান স্থানীয় ডোবা থেকে শাক ও বিভিন্ন বাগান থেকে কলার মোচা নিয়ে বিক্রি করা শুরু করে শহরে। তাতেও প্রতিদিন একবেলা ভাত জোটে না অসহায় এই মা-ছেলের।
আরিয়ান বলে, ‘মা তেমন কাজ করতে পারে না। তাই আমি শাক তুলে এবং মোচা নিয়ে বিক্রি করতে যাই। এক আঁটি শাক ১০ টাকা বিক্রি করি। অনেক সময় কেউ পাঁচ টাকা দিয়েও এক আঁটি নিয়ে যায়। সব মিলিয়ে যে যা দেয়, তাতেই দিয়ে দিই। এর বাইরে এলাকার লোকজন ইট টানা, পানি নেওয়াসহ যেকোনো কাজে ডাকলে আমি যাই। অনেক সময় ২০-৫০ টাকা দেয়, আবার কিছু খেতে দিয়েই শেষ করে কেউ কেউ।’
এসব কাজ করে দুজনের খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো চলে কি না, এমন প্রশ্নে আরিয়ান বলে, ‘ওই যা পাই তাই দিয়ে চলে। যেদিন চাইল আনতে পারি ওই দিন খাই, যেদিন আনতে পারি না, ওই দিন খাই না। শুধু ভাত হলেই চলে আমাদের, লবণ দিয়ে খেতে পারি আমি।’ এই বলে হেসে দেয় আরিয়ান।
আরিয়ানের মা আমেনা আক্তার প্রিয়া বলেন, ‘বিয়ের পরে স্বামী ও দেবরেরা খুব মারধর করত। ঘরে সৎমা থাকায় বাবাও খোঁজ নেন না। আরিয়ান গর্ভে আসার এক মাস পরেই স্বামী ছেড়ে চলে যায়। মামলা করেছিলেন আদালতে, অভিভাবক না থাকায় আদালত থেকে আমাকে সরকারি হেফাজতখানায় দিয়ে দেয়। সেখানেই আরিয়ানের জন্ম হয়। পরে চলে আসি বাবার বাড়িতে। সেখানে প্রতিনিয়ত সৎমা ও প্রতিবেশীদের অত্যাচার সহ্য করতে হয়।’
আমেনা আক্তার আরও বলেন, নিজের জন্য তিনি কিছুই চান না। তিনি চান, তাঁর ছেলেটা লেখাপড়া শিখুক, তিনবেলা খেয়ে-পরে বাঁচুক। ওর জন্য একটি স্থায়ী ঘর চান; যেখান থেকে কেউ নেমে যেতে বলবে না।
এদিকে আরিয়ানের অসহায় জীবনের গল্প শুনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ। গতকাল শুক্রবার সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আরিয়ানের বাড়িতে যান। আরিয়ান ও তার মাকে নতুন পোশাক, জুতা, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মসলা, ফলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেন। আরিয়ানের মাকে নগদ অর্থও দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন।
ইউএনও মোহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা আরিয়ানের নামে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে দেবেন। আরিয়ানকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে ওই হিসাবের মাধ্যমে করবেন। এ ছাড়া আরিয়ানের লেখাপড়া ও মায়ের কর্মসংস্থানের জন্য তাঁরা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। আরিয়ান ও তার মা যেটা ভালো মনে করবে, তাঁরা সেভাবে সহযোগিতা করবেন।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাছির উদ্দিন বলেন, বাগেরহাট-২ আসনের সাংসদ শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের নির্দেশে তাঁরা আরিয়ানের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। একটি সরকারি ঘর দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
৫ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪