ডি কে সিং রাজনৈতিক সম্পাদক, দ্য প্রিন্ট
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি নতুন বাউন্সি পিচে ব্যাট করতে চলেছেন। তবে তিনি বোলারদের সম্পর্কে যতটা না চিন্তিত, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত দুই আম্পায়ার চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমারকে নিয়ে। দুজনের সিদ্ধান্তের পারদ যেমন ওঠানামা করে, তেমনি খেলার নিয়ম পরিবর্তনেও পারঙ্গম। বর্তমান পরিস্থিতিতে ধরে নেওয়া যায়, তাঁরা অন্তত ২০২৮ সাল পর্যন্ত মোটামুটিভাবে কাজ করে যাবেন—যতক্ষণ মোদি সংবেদনশীলভাবে খেলবেন এবং সব সময় টানাপোড়েন এড়িয়ে চলবেন।
না, আমি সরকারের পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করছি না। ২০২৮ সালের আগেও না, পরেও না। আমরা সবাই জানি, অমিত শাহ শিগগিরই এই দুজনের সম্ভাব্য আঘাত থেকে সরকারকে রক্ষা করার জন্য বালিশ কিনতে বের হবেন। যদিও নাইডু ও নীতীশের অদূরভবিষ্যতে আঙুল তোলার কোনো কারণ নেই।
নীতীশ, নাইডু, মোদি
প্রথমে ব্যাখ্যা করা যাক কেন মোদি এনডিএ বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন তার ওপর নির্ভর করতে পারেন যে তিনি সব সময় ‘পুরোপুরি’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডি (ইউ) প্রধানকে একটি নতুন জীবন দিয়েছে। বিজেপি বা মোদির ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত লোকসভা নির্বাচনের জন্য নীতীশের প্রয়োজন ছিল। তখন বিজেপির মধ্যে গুঞ্জন ছিল যে জেডি (ইউ) লোকসভায় খুব বেশি হলে ছয়টি আসনে জিতবে এবং এর পরে জেডি (ইউ) এমপিরা ভাগবেন। এটাই নীতীশ কুমারের জন্য শেষ খেলা হয়ে যেত এবং বিজেপি নেতারা সেই সম্ভাবনা উপভোগ করছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ভারত ও বিহারের জন্য বিজেপির পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে এসেছিল। সিএসডিএস-লোকনীতি নির্বাচন-পরবর্তী জরিপ দেখিয়েছে, মোদিসহ যাঁরা জেডির (ইউ) জন্য ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তাঁরা সত্যিই নীতীশের জনপ্রিয়তা ও ভাগ্যকে অবমূল্যায়ন করেছেন। সুতরাং মোদি বা নীতীশ—রাজ্য বা কেন্দ্র—এ বছর ভোট দেওয়ার সময় কোন সরকারের কাজ মানুষের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? উত্তরদাতাদের ২৪ শতাংশ নীতীশের নাম বলেছেন এবং ১৮ শতাংশ মোদিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।
এর সঙ্গে যোগ করুন, লোকসভা নির্বাচনে জেডির (ইউ) জয়ের হার বিজেপির চেয়ে ভালো, তা প্রতীকীভাবে যা-ই হোক না কেন। তারা বিহারে ১২টি আসন জিতেছে। যদিও বিজেপি জেডির (ইউ) চেয়ে একটি বেশি আসনে, অর্থাৎ ১৭টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। কেন্দ্রে স্থিতিশীলতার জন্য মোদির নীতীশ কুমারের সমর্থন প্রয়োজন। ২০২৫ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন—এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। যদি নীতীশ চান তাহলে বিজেপি তাঁকে ২০৩০ সালে বিহারে এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে। অতএব, তাঁর জন্য আর একটি জোট গঠনের এবং বিরোধী জোটে ফিরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে যখন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব দিনে দিনে শক্তিশালী হয়ে উঠছেন এবং সে ক্ষেত্রে চাচা ‘নীতীশ’কে মুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তবে এটা সত্য যে আপনি কখনোই নীতীশ কুমার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন না। চার্টার্ড ফ্লাইটে তেজস্বীর সঙ্গে তাঁর দিল্লি আসার সিদ্ধান্ত বিজেপিকে কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও ধাক্কা দিয়েছে। কিন্তু এনডিএ বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী মোদির সামনে ঝুঁকে পড়ার প্রয়াস নিশ্চিতভাবে তাঁদের অশান্ত স্নায়ুকে কিছুটা হলেও শান্ত করেছে।
চন্দ্রবাবু নাইডু অন্ধ্র প্রদেশের প্রথম ও সবচেয়ে সফল সিইও। তাঁর কাজ তিনি স্থির করে নিয়েছেন—অর্থনীতি ঠিক করা। কেননা, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা বিপর্যস্ত। এ ছাড়া তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াইএসআর কংগ্রেসের জগনমোহন রেড্ডিকে শেষ করার সুযোগ রয়েছে। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ১১ বছর ধরে জামিনে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলোর শুনানি খুব কম হয়েছে। ক্ষমতার বাইরে গিয়ে রেড্ডি অবশ্যই জেলে ফিরে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন। যদি এমনটা হয়, তাহলে ওয়ান ম্যান শোর পার্টি ওয়াইএসআর কংগ্রেস দখল হয়ে যাবে। নাইডুর কাছে এর চেয়ে মধুর কিছু হবে না। জগনমোহন দ্বারাও একটি কথিত কেলেঙ্কারিতে জেলে ছিলেন চন্দ্রবাবু।
তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান অবশ্যই রাজ্যে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীকে শেষ করার সম্ভাবনা উপভোগ করছেন। তাঁকে উত্তরসূরি হিসেবে ছেলে নারা লোকেশকেও উপযুক্ত করে তুলতে হবে। লোকেশ ইতিমধ্যে দারুণ রাজনৈতিক দক্ষতা এবং রাজপথে লড়াই করার শক্তি দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে গত বছর তিনি ৩ হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা করেছিলেন। তাঁকে উত্তরাধিকারী করা হলে তা দলীয় সহকর্মীদের দ্বারা গৃহীত হবে। আর গ্রহণের পথটাও মসৃণ হবে। নাইডু তাঁর লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রীয় সরকার থাকলেই খুশি হবেন।
আপনি এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবছেন, আমি যদি নীতীশ ও নাইডুকে বিজেপির সঙ্গে এই সুবিধার বিয়েতে সুখে থাকতে দেখি, তাহলে আমি কেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত একটি সময়সীমার কথা বলছি? আমি দেখছি বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত, নীতীশ ও নাইডু হয়তো ২০২৯ সালে বিজেপির তিন মেয়াদের অ্যান্টি-ইনকামবেন্সি বা সরকারবিরোধী মনোভাবের ভাগ করতে চাইবেন না। এই ফলাফল থেকে স্পষ্ট, এমনকি উত্তর প্রদেশেও প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তা কমেছে। সেখানে সিএসডিএস-লোকনীতি সমীক্ষায় যেখানে ৩৬ শতাংশ উত্তরদাতা রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পছন্দ করেছেন, সেখানে ৩২ শতাংশ বেছে নিয়েছেন মোদিকে।
নীতীশ ও নাইডু উভয়ের কাছে মোদিই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। যদি তাঁর জনপ্রিয়তা কমে থাকে, তবে তাঁরা দ্রুত বিজেপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। যদি তাঁদের এটি করতে হয়, আগামী লোকসভা নির্বাচনের ছয় মাস বা এক বছর আগে তাঁদের জন্য একটি উপযুক্ত সময় আসবে। নাইডুর জন্য ২০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের মধ্যে ১১ শতাংশ পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। কারণ সংখ্যালঘু ভোটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল। তবে এটা অভেদ্য এমন নয়।
মনে রাখবেন, অমিত শাহকে মন্ত্রিসভায় ধরে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি এর আগে নাইডু ও নীতীশকে খুব কম জায়গা ছেড়েছেন। তাঁরা শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান না। আর অমিত শাহ যদি গত মেয়াদের মতো সরকারের কাজ চালান, তাহলে তা মিত্রদের প্রস্থান ত্বরান্বিত করতে পারে।
নরেন্দ্র মোদি আপাতত তাঁর মিত্রদের কারণে সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়ে চিন্তায় থাকবেন না। তিনি ইতিমধ্যে ‘ঐকমত্য’-এর মতো সঠিক শব্দগুলো বলছেন। প্রতিটি বাক্যে ‘মোদি’ ব্যবহার করছেন না। শুরু হিসেবে এটা ভালো।
প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্য অন্যান্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আগামী সাত থেকে আট মাসের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যগুলোতে বিজেপির ফলাফল তাঁর জয়ের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশা জাগায় না।
বিজেপি যদি এই রাজ্যগুলোর বেশির ভাগে জিততে ব্যর্থ হয়, তবে এটি মোদির জনপ্রিয়তা কমার আরেকটি সূচক হিসেবে দেখা হবে। এসব নির্বাচনে বিজেপি ভালো না করলে তার উত্তরসূরি খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বর্তমান কানাঘুষা একটি কোলাহলে পরিণত হতে পারে। এটি বিজেপি এবং বৃহত্তর সংঘ পরিবারেও ৭৫ বছরের বয়সসীমা নিয়ে বিতর্ককে পুনরুজ্জীবিত করবে।
শুধু জানানোর জন্য, মোদি ২০২৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে ৭৫ বছর বয়সে পৌঁছাবেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত এর ছয় দিন আগে, ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ বছর বয়সী হবেন। আরএসএসে ভাগবতের সহকর্মীরা বলছেন, তিনি ৭৫ বছর বয়সে পদত্যাগ করতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে এখন কথা বলাটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
আগামী মাসগুলোতে মোদিকে তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে সন্দেহকারীদের চিন্তাভাবনাকে ভুল প্রমাণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কেউ অস্তগামী সূর্যের কাছে প্রার্থনা করে না—অন্তত রাজনীতিবিদেরা তো নয়ই।
(দ্য প্রিন্টে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি নতুন বাউন্সি পিচে ব্যাট করতে চলেছেন। তবে তিনি বোলারদের সম্পর্কে যতটা না চিন্তিত, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত দুই আম্পায়ার চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমারকে নিয়ে। দুজনের সিদ্ধান্তের পারদ যেমন ওঠানামা করে, তেমনি খেলার নিয়ম পরিবর্তনেও পারঙ্গম। বর্তমান পরিস্থিতিতে ধরে নেওয়া যায়, তাঁরা অন্তত ২০২৮ সাল পর্যন্ত মোটামুটিভাবে কাজ করে যাবেন—যতক্ষণ মোদি সংবেদনশীলভাবে খেলবেন এবং সব সময় টানাপোড়েন এড়িয়ে চলবেন।
না, আমি সরকারের পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করছি না। ২০২৮ সালের আগেও না, পরেও না। আমরা সবাই জানি, অমিত শাহ শিগগিরই এই দুজনের সম্ভাব্য আঘাত থেকে সরকারকে রক্ষা করার জন্য বালিশ কিনতে বের হবেন। যদিও নাইডু ও নীতীশের অদূরভবিষ্যতে আঙুল তোলার কোনো কারণ নেই।
নীতীশ, নাইডু, মোদি
প্রথমে ব্যাখ্যা করা যাক কেন মোদি এনডিএ বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন তার ওপর নির্ভর করতে পারেন যে তিনি সব সময় ‘পুরোপুরি’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডি (ইউ) প্রধানকে একটি নতুন জীবন দিয়েছে। বিজেপি বা মোদির ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত লোকসভা নির্বাচনের জন্য নীতীশের প্রয়োজন ছিল। তখন বিজেপির মধ্যে গুঞ্জন ছিল যে জেডি (ইউ) লোকসভায় খুব বেশি হলে ছয়টি আসনে জিতবে এবং এর পরে জেডি (ইউ) এমপিরা ভাগবেন। এটাই নীতীশ কুমারের জন্য শেষ খেলা হয়ে যেত এবং বিজেপি নেতারা সেই সম্ভাবনা উপভোগ করছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ভারত ও বিহারের জন্য বিজেপির পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে এসেছিল। সিএসডিএস-লোকনীতি নির্বাচন-পরবর্তী জরিপ দেখিয়েছে, মোদিসহ যাঁরা জেডির (ইউ) জন্য ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তাঁরা সত্যিই নীতীশের জনপ্রিয়তা ও ভাগ্যকে অবমূল্যায়ন করেছেন। সুতরাং মোদি বা নীতীশ—রাজ্য বা কেন্দ্র—এ বছর ভোট দেওয়ার সময় কোন সরকারের কাজ মানুষের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? উত্তরদাতাদের ২৪ শতাংশ নীতীশের নাম বলেছেন এবং ১৮ শতাংশ মোদিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।
এর সঙ্গে যোগ করুন, লোকসভা নির্বাচনে জেডির (ইউ) জয়ের হার বিজেপির চেয়ে ভালো, তা প্রতীকীভাবে যা-ই হোক না কেন। তারা বিহারে ১২টি আসন জিতেছে। যদিও বিজেপি জেডির (ইউ) চেয়ে একটি বেশি আসনে, অর্থাৎ ১৭টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। কেন্দ্রে স্থিতিশীলতার জন্য মোদির নীতীশ কুমারের সমর্থন প্রয়োজন। ২০২৫ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন—এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। যদি নীতীশ চান তাহলে বিজেপি তাঁকে ২০৩০ সালে বিহারে এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে। অতএব, তাঁর জন্য আর একটি জোট গঠনের এবং বিরোধী জোটে ফিরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে যখন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব দিনে দিনে শক্তিশালী হয়ে উঠছেন এবং সে ক্ষেত্রে চাচা ‘নীতীশ’কে মুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তবে এটা সত্য যে আপনি কখনোই নীতীশ কুমার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন না। চার্টার্ড ফ্লাইটে তেজস্বীর সঙ্গে তাঁর দিল্লি আসার সিদ্ধান্ত বিজেপিকে কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও ধাক্কা দিয়েছে। কিন্তু এনডিএ বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী মোদির সামনে ঝুঁকে পড়ার প্রয়াস নিশ্চিতভাবে তাঁদের অশান্ত স্নায়ুকে কিছুটা হলেও শান্ত করেছে।
চন্দ্রবাবু নাইডু অন্ধ্র প্রদেশের প্রথম ও সবচেয়ে সফল সিইও। তাঁর কাজ তিনি স্থির করে নিয়েছেন—অর্থনীতি ঠিক করা। কেননা, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা বিপর্যস্ত। এ ছাড়া তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াইএসআর কংগ্রেসের জগনমোহন রেড্ডিকে শেষ করার সুযোগ রয়েছে। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ১১ বছর ধরে জামিনে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলোর শুনানি খুব কম হয়েছে। ক্ষমতার বাইরে গিয়ে রেড্ডি অবশ্যই জেলে ফিরে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন। যদি এমনটা হয়, তাহলে ওয়ান ম্যান শোর পার্টি ওয়াইএসআর কংগ্রেস দখল হয়ে যাবে। নাইডুর কাছে এর চেয়ে মধুর কিছু হবে না। জগনমোহন দ্বারাও একটি কথিত কেলেঙ্কারিতে জেলে ছিলেন চন্দ্রবাবু।
তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান অবশ্যই রাজ্যে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীকে শেষ করার সম্ভাবনা উপভোগ করছেন। তাঁকে উত্তরসূরি হিসেবে ছেলে নারা লোকেশকেও উপযুক্ত করে তুলতে হবে। লোকেশ ইতিমধ্যে দারুণ রাজনৈতিক দক্ষতা এবং রাজপথে লড়াই করার শক্তি দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে গত বছর তিনি ৩ হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা করেছিলেন। তাঁকে উত্তরাধিকারী করা হলে তা দলীয় সহকর্মীদের দ্বারা গৃহীত হবে। আর গ্রহণের পথটাও মসৃণ হবে। নাইডু তাঁর লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রীয় সরকার থাকলেই খুশি হবেন।
আপনি এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবছেন, আমি যদি নীতীশ ও নাইডুকে বিজেপির সঙ্গে এই সুবিধার বিয়েতে সুখে থাকতে দেখি, তাহলে আমি কেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত একটি সময়সীমার কথা বলছি? আমি দেখছি বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত, নীতীশ ও নাইডু হয়তো ২০২৯ সালে বিজেপির তিন মেয়াদের অ্যান্টি-ইনকামবেন্সি বা সরকারবিরোধী মনোভাবের ভাগ করতে চাইবেন না। এই ফলাফল থেকে স্পষ্ট, এমনকি উত্তর প্রদেশেও প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তা কমেছে। সেখানে সিএসডিএস-লোকনীতি সমীক্ষায় যেখানে ৩৬ শতাংশ উত্তরদাতা রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পছন্দ করেছেন, সেখানে ৩২ শতাংশ বেছে নিয়েছেন মোদিকে।
নীতীশ ও নাইডু উভয়ের কাছে মোদিই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। যদি তাঁর জনপ্রিয়তা কমে থাকে, তবে তাঁরা দ্রুত বিজেপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। যদি তাঁদের এটি করতে হয়, আগামী লোকসভা নির্বাচনের ছয় মাস বা এক বছর আগে তাঁদের জন্য একটি উপযুক্ত সময় আসবে। নাইডুর জন্য ২০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের মধ্যে ১১ শতাংশ পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। কারণ সংখ্যালঘু ভোটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল। তবে এটা অভেদ্য এমন নয়।
মনে রাখবেন, অমিত শাহকে মন্ত্রিসভায় ধরে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি এর আগে নাইডু ও নীতীশকে খুব কম জায়গা ছেড়েছেন। তাঁরা শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান না। আর অমিত শাহ যদি গত মেয়াদের মতো সরকারের কাজ চালান, তাহলে তা মিত্রদের প্রস্থান ত্বরান্বিত করতে পারে।
নরেন্দ্র মোদি আপাতত তাঁর মিত্রদের কারণে সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়ে চিন্তায় থাকবেন না। তিনি ইতিমধ্যে ‘ঐকমত্য’-এর মতো সঠিক শব্দগুলো বলছেন। প্রতিটি বাক্যে ‘মোদি’ ব্যবহার করছেন না। শুরু হিসেবে এটা ভালো।
প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্য অন্যান্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আগামী সাত থেকে আট মাসের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যগুলোতে বিজেপির ফলাফল তাঁর জয়ের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশা জাগায় না।
বিজেপি যদি এই রাজ্যগুলোর বেশির ভাগে জিততে ব্যর্থ হয়, তবে এটি মোদির জনপ্রিয়তা কমার আরেকটি সূচক হিসেবে দেখা হবে। এসব নির্বাচনে বিজেপি ভালো না করলে তার উত্তরসূরি খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বর্তমান কানাঘুষা একটি কোলাহলে পরিণত হতে পারে। এটি বিজেপি এবং বৃহত্তর সংঘ পরিবারেও ৭৫ বছরের বয়সসীমা নিয়ে বিতর্ককে পুনরুজ্জীবিত করবে।
শুধু জানানোর জন্য, মোদি ২০২৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে ৭৫ বছর বয়সে পৌঁছাবেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত এর ছয় দিন আগে, ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ বছর বয়সী হবেন। আরএসএসে ভাগবতের সহকর্মীরা বলছেন, তিনি ৭৫ বছর বয়সে পদত্যাগ করতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে এখন কথা বলাটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
আগামী মাসগুলোতে মোদিকে তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে সন্দেহকারীদের চিন্তাভাবনাকে ভুল প্রমাণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কেউ অস্তগামী সূর্যের কাছে প্রার্থনা করে না—অন্তত রাজনীতিবিদেরা তো নয়ই।
(দ্য প্রিন্টে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে