অমর একুশে বইমেলা: শিশুপ্রহরের রেশ সন্ধ্যায়ও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮: ৩৭

ছুটির দিন, তাই সকাল থেকেই শুরু হয় ভিড়। বিকেলে দেখা যায়, শাহবাগ মোড় থেকে টিএসসি পর্যন্ত সড়ক যানজটে স্থবির। ফুটপাতেও বইমেলামুখী মানুষের ঢল। শিশু-কিশোর, যুবা-বৃদ্ধ—সবাই সেই দলে। মেলার প্রাঙ্গণেও বইপ্রেমী ও দর্শনার্থীর ঢল।

গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় মেলার মূল ফটক খুলতেই শিশুচত্বরে ঝাঁপিয়ে পড়ে কচিকাঁচারা। সঙ্গে তাদের অভিভাবকেরাও। এবারও তাদের আনন্দ দিতে উপস্থিত জনপ্রিয় কার্টুন সিরিজ সিসিমপুরের চরিত্রেরা। হালুম, টুকটুকি, শিকু, ইকরির সঙ্গে সময় কাটে ওদের। ছিল চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। কেউ কেউ কিনে নিয়েছে বইও। গল্প, কবিতা, ছড়া, কমিকসসহ নানা রকম বই কিনে মেলার মাঠেই পড়তে শুরু করে কেউ কেউ।

আজিমপুর থেকে মেয়েকে নিয়ে আসা আফজালুল হক বললেন, ছোটরা এমনিতেই সারা দিন পড়ার চাপে থাকে। তার মধ্যে ছুটির দিনটিতে একটু ছাড় পায়, তাই নিয়ে আসা। বড় হলেও যেন বইমেলার স্মৃতি মনে থাকে।

সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে হয় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। সকাল ১০টায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন হয়। পরে ১১টার দিকে শুরু হয় শিশুপ্রহর।

বিকেল থেকেই বইমেলার ফটক দিয়ে দর্শনার্থীর ঢল নামে। সন্ধ্যা নাগাদ তিলধারণের ঠাঁই থাকে না মেলাজুড়ে। প্রকাশকদের মুখেও হাসি।আগামী প্রকাশনীর কর্ণধার ওসমান গণি বললেন, ভালো বিক্রি হচ্ছে। পাঠক যত বেশি হবে, তত বেশি বিক্রি হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আফরা আনজুম রাকার হাতে বেশ কিছু বই। তিনি বললেন, ‘৩টার সময় মেলায় ঢুকেছি। এবার কোনো বিশেষ চাহিদা ছিল না। যেটা ভালো লেগেছে, সেটাই কিনেছি। এর মধ্যে আছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, হুমায়ূন আহমেদ, জীবনানন্দ দাশ। বাচ্চাদেরও কিছু বই কিনেছি।’ রাকার সঙ্গে ছিল পরিবারের সদস্যরাও।

দেখা হয়ে গেল লেখক মৌলি আজাদের সঙ্গে। এবার তাঁর নতুন কোনো বই প্রকাশিত হয়নি। মৌলি বললেন, ‘আজকে প্রথম এলাম। ভালো লাগছে। বই ভালো বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার, এ কারণে হয়তো ভিড় অনেক বেশি। সব মিলিয়ে মেলার সূচনাটা ভালো। আমার বই আসেনি। অন্য যাদের বই এসেছে, তাদের বই দেখছি, কিনছি।’

স্কুলপড়ুয়া নাঈমুর রহমান তূর্যের হাতে একটি পাপেট। ওর নাম ভুভু। সে মেলা থেকে কিনেছে ‘বুদ্ধি বিকাশের গল্প’। তূর্যও এসেছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। সকালে শিশুপ্রহর থাকায় বিকেলেও ছিল শিশুদের আনাগোনা।

গতকাল মেলায় দেখা মেলে কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিকের। ছিলেন আনিসুল হক, ইমদাদুল হক মিলন, আনু মুহাম্মদ, ইমতিয়ার শামীম প্রমুখ।

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, গতকাল নবম দিনে মেলায় ১৭০টির বেশি বই এসেছে। ৯ দিনে আসা মোট বইয়ের সংখ্যা ৬৭১। গতকাল মেলায় আসা বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত রায়হান রাইনের ‘আগুন ও ছায়া’, নয়নজুলি থেকে কবি অসীম সাহার ‘নির্বাচিত পঞ্চাশ’, অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে সুরমা জাহিদের ‘বীরাঙ্গনাদের ভয়াবহ স্মৃতি’।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত