মোনায়েম সরকার

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। রাজশাহী ও খুলনার বর্তমান দুই মেয়রকে বহাল রেখে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন দুজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সিলেট সিটিতেও চমক সৃষ্টি করা হয়েছে কম আলোচিত প্রবাসী একজনকে মনোনয়ন দিয়ে। সেখানে কোন্দল এড়াতেই এমন ব্যবস্থা বলে জানা যাচ্ছে। এটা উপযুক্ত নেতা সৃষ্টি না হওয়ার কারণে কি না, সেই প্রশ্নও থেকে যায়।
দলের প্রার্থী মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন মুখ খুঁজে বের করার ঘটনা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, বরিশালে দলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন না পাওয়ায় তা বেশি আলোচনায় এসেছে। কারণ গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পতন ঘটেছিল আগেই। বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের শহীদদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে তিনি আগেই দল থেকে বহিষ্কৃত হন। মেয়র পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও সামনে এসেছিল। এর পরও তিনি নতুন করে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে ভুল স্বীকার করায় তাঁকে দলে ফেরত নেওয়া হলেও নেত্রী যে এ ধরনের লোকের বিষয়ে কঠোর, সেই বার্তা দিলেন তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে। এটাই প্রত্যাশিত ছিল। তবে বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ তাঁর যাবতীয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরও মনোনয়ন পেয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। পদ ও মনোনয়ন পাওয়ার বেলায় পারিবারিক যোগাযোগ আমাদের রাজনীতির একটি বড় নিয়ামক বলে মনে করা হয়। সে কারণেই সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সেটাকে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য বড় বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও বড় বিবাদে জড়িয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন ক্যাডার থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়। সরকার তখনই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না, সেই প্রশ্ন জেগেছিল। সেটা না হলেও নতুন করে তাঁর মেয়র হওয়ার সুযোগ যে কেড়ে নেওয়া হলো, এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। এ ঘটনা থেকে ক্ষমতা পেয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলা ব্যক্তিদের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের বেশি দিন বাকি নেই। নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যাপারে বিভিন্নভাবে খোঁজ নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী। সিটি নির্বাচনে বিতর্কিত প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায়, যাচাই-বাছাই করে অগ্রসর হওয়ার কাজটি তিনি এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। একই পরিবারের অপর ব্যক্তি সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচাকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় অবশ্য অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, পারিবারিক বৃত্তের বাইরের কাউকে তো বেছে নেওয়া হলো না! পারিবারিক যোগসূত্র থাকলেই কাউকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হবে, সেটাও কিন্তু স্বাভাবিক নয়। এ ঘটনাকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন, যেসব সিটিতে সাবেক মেয়র বা প্রভাবশালী নেতারা মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন কি না। তেমন সম্ভাবনা একেবারে নেই, তা বলা যায় না। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর সাহস না থাকলেও তাঁরা যে দলীয়ভাবে মনোনীতদের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলম কী করবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাঁর অর্থবিত্ত ও প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়। সেটা কাজে লাগিয়ে তিনি দলীয় প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলতে পারেন। বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ অবশ্য ইতিমধ্যে বলেছেন, তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে চাচাকে জেতানোর জন্য কাজ করবেন। সেটা করলেই ভালো। কেননা, বিএনপি এই নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জন করলেও স্থানীয় নেতারা তাতে কোনোভাবেই অংশ নেবেন না, তা বলা যায় না। এরই মধ্যে এ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বোঝা যায় তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। সিটির কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকের ব্যাপার না থাকায় তাদের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি এদের ঠেকাতে পারবে না। সেটা বোধ হয় তারা চাইবেও না। ইতিমধ্যে এটাও জানা গেল, কেউ ‘স্বতন্ত্রভাবে’ মেয়র পদে দাঁড়াতে চাইলে কেন্দ্রের আপত্তি নেই। দলের কোনো পদে না থাকা নেতারা নির্দেশনা না মেনে নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাও সহজ নয়। বিএনপি যেভাবে লাগাতার নির্বাচনের বাইরে থাকছে, তাতে দলের, বিশেষ করে তৃণমূলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলেই জানা যায়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা স্থানীয় নির্বাচনও বর্জন করে চলেছে কেন, সেটা দলের লোকদের কাছেও প্রশ্ন।
ইতিমধ্যে আমরা জানতে পারলাম, সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডনে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরেছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা ঈদের পরে জানাবেন। তিনি যে নির্বাচনে দাঁড়াতে চান, এটা স্পষ্ট। অন্যান্য সিটি করপোরেশন থেকেও বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তবে তাঁরা স্বভাবতই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার কথা প্রকাশ্যে বলছেন না। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বলে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে। এটা আত্মঘাতী কি না, সেটা ভেবে দেখার সুযোগও যেন তাঁদের নেই। তবে দলের মেয়র পদপ্রার্থীরা সরাসরি নির্বাচন করার হিম্মত না পেলেও ঘনিষ্ঠ বা পরিবারের কাউকে না কাউকে দাঁড় করিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীতদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে চাইবেন হয়তো।
এদিকে সিটি নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কী ভূমিকা রাখবে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা সব সিটিতে উপযুক্ত প্রার্থী পাচ্ছে না বলে খবরে জানা যায়। চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠন কিছু স্থানীয় নির্বাচনে এরই মধ্যে চমক দেখিয়েছে এবং কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়েরও কারণ হয়েছে। আওয়ামী লীগকে এটা মনে রাখতে হবে। দেশের সবখানেই এসব ধর্মীয় দলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট রয়েছে বলে মনে করা হয় এবং এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বরিশাল সিটি নির্বাচনে চরমোনাই পীরের দল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য সংকট তৈরি করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। জাতীয় পার্টিও তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারে বলে খবর রয়েছে। জাতীয় পার্টিতে অবশ্য দুই ধারা। কোন ধারা কখন দলে প্রাধান্য বিস্তার করে, তা আগে থেকে বলা যায় না। মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর সমর্থকেরা শেষ পর্যন্ত কী করবেন, সেটাই বা কে বলবে! স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিতে তারাই তো প্রভাবশালী। যে কারণে শুধু তাঁর নামেই কেন্দ্রের কাছে মেয়র পদে মনোনয়ন চাওয়া হয়েছিল। দলীয় সভাপতির দৃঢ় ভূমিকার কারণেই সেই আবদার এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্বাস করি।
এখন নির্বাচনের ময়দানে মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক ও জাহাঙ্গীররা যেন বড় কোনো নেতিবাচক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা পরাজিত হলে সরকারের পতন ঘটে যাবে, তা নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তা কখনো হয়ও না। তবু এই নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয় দেশে জনমত পরিস্থিতি কেমন, তা বোঝার জন্য। সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারব্যবস্থা এখনো সেভাবে শক্তিশালী হয়নি, এ কথা সত্য। তবে এই নির্বাচনে জনগণ বিশেষ আগ্রহের সঙ্গে অংশ নিয়ে থাকে এ জন্য যে, তারা মনে করে এটা তাদের ‘ঘরের কাছের সরকার’। সে জন্য অনেক সময় দলীয় বিবেচনার বাইরে গিয়েও মানুষ ভোট দিয়ে থাকে যোগ্য প্রার্থীকে। তবে বাংলাদেশে এখনো সব নির্বাচনে দলীয় বিবেচনাই মুখ্য। সামনেই জাতীয় নির্বাচন বলে এটা এখন আরও বেশি প্রাধান্য পাবে। সে জন্য গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এখন কাজ হলো নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা জোগানো এবং দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য সংগঠনের ঐক্য ধরে রেখে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। এই নির্বাচন ঘিরে যেন নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয় বা তেমন কোনো সুযোগ না পায় বিরোধী দল। শুধু মেয়র নয়, কাউন্সিলর পদেও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরা যেন নির্বাচনে অংশ নেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে আওয়ামী লীগকে। জাতীয় নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে এটা তাদের জন্য একটি পরীক্ষা বৈকি।
লেখক: রাজনীতিক, লেখক; মহাপরিচালক, বিএফডিআর

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। রাজশাহী ও খুলনার বর্তমান দুই মেয়রকে বহাল রেখে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন দুজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সিলেট সিটিতেও চমক সৃষ্টি করা হয়েছে কম আলোচিত প্রবাসী একজনকে মনোনয়ন দিয়ে। সেখানে কোন্দল এড়াতেই এমন ব্যবস্থা বলে জানা যাচ্ছে। এটা উপযুক্ত নেতা সৃষ্টি না হওয়ার কারণে কি না, সেই প্রশ্নও থেকে যায়।
দলের প্রার্থী মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন মুখ খুঁজে বের করার ঘটনা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, বরিশালে দলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন না পাওয়ায় তা বেশি আলোচনায় এসেছে। কারণ গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পতন ঘটেছিল আগেই। বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের শহীদদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে তিনি আগেই দল থেকে বহিষ্কৃত হন। মেয়র পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও সামনে এসেছিল। এর পরও তিনি নতুন করে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে ভুল স্বীকার করায় তাঁকে দলে ফেরত নেওয়া হলেও নেত্রী যে এ ধরনের লোকের বিষয়ে কঠোর, সেই বার্তা দিলেন তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে। এটাই প্রত্যাশিত ছিল। তবে বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ তাঁর যাবতীয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরও মনোনয়ন পেয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। পদ ও মনোনয়ন পাওয়ার বেলায় পারিবারিক যোগাযোগ আমাদের রাজনীতির একটি বড় নিয়ামক বলে মনে করা হয়। সে কারণেই সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সেটাকে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য বড় বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও বড় বিবাদে জড়িয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন ক্যাডার থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়। সরকার তখনই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না, সেই প্রশ্ন জেগেছিল। সেটা না হলেও নতুন করে তাঁর মেয়র হওয়ার সুযোগ যে কেড়ে নেওয়া হলো, এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। এ ঘটনা থেকে ক্ষমতা পেয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলা ব্যক্তিদের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের বেশি দিন বাকি নেই। নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যাপারে বিভিন্নভাবে খোঁজ নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী। সিটি নির্বাচনে বিতর্কিত প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায়, যাচাই-বাছাই করে অগ্রসর হওয়ার কাজটি তিনি এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। একই পরিবারের অপর ব্যক্তি সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচাকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় অবশ্য অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, পারিবারিক বৃত্তের বাইরের কাউকে তো বেছে নেওয়া হলো না! পারিবারিক যোগসূত্র থাকলেই কাউকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হবে, সেটাও কিন্তু স্বাভাবিক নয়। এ ঘটনাকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন, যেসব সিটিতে সাবেক মেয়র বা প্রভাবশালী নেতারা মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন কি না। তেমন সম্ভাবনা একেবারে নেই, তা বলা যায় না। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর সাহস না থাকলেও তাঁরা যে দলীয়ভাবে মনোনীতদের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলম কী করবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাঁর অর্থবিত্ত ও প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়। সেটা কাজে লাগিয়ে তিনি দলীয় প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলতে পারেন। বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ অবশ্য ইতিমধ্যে বলেছেন, তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে চাচাকে জেতানোর জন্য কাজ করবেন। সেটা করলেই ভালো। কেননা, বিএনপি এই নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জন করলেও স্থানীয় নেতারা তাতে কোনোভাবেই অংশ নেবেন না, তা বলা যায় না। এরই মধ্যে এ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বোঝা যায় তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। সিটির কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকের ব্যাপার না থাকায় তাদের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি এদের ঠেকাতে পারবে না। সেটা বোধ হয় তারা চাইবেও না। ইতিমধ্যে এটাও জানা গেল, কেউ ‘স্বতন্ত্রভাবে’ মেয়র পদে দাঁড়াতে চাইলে কেন্দ্রের আপত্তি নেই। দলের কোনো পদে না থাকা নেতারা নির্দেশনা না মেনে নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাও সহজ নয়। বিএনপি যেভাবে লাগাতার নির্বাচনের বাইরে থাকছে, তাতে দলের, বিশেষ করে তৃণমূলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলেই জানা যায়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা স্থানীয় নির্বাচনও বর্জন করে চলেছে কেন, সেটা দলের লোকদের কাছেও প্রশ্ন।
ইতিমধ্যে আমরা জানতে পারলাম, সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডনে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরেছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা ঈদের পরে জানাবেন। তিনি যে নির্বাচনে দাঁড়াতে চান, এটা স্পষ্ট। অন্যান্য সিটি করপোরেশন থেকেও বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তবে তাঁরা স্বভাবতই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার কথা প্রকাশ্যে বলছেন না। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বলে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে। এটা আত্মঘাতী কি না, সেটা ভেবে দেখার সুযোগও যেন তাঁদের নেই। তবে দলের মেয়র পদপ্রার্থীরা সরাসরি নির্বাচন করার হিম্মত না পেলেও ঘনিষ্ঠ বা পরিবারের কাউকে না কাউকে দাঁড় করিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীতদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে চাইবেন হয়তো।
এদিকে সিটি নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কী ভূমিকা রাখবে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা সব সিটিতে উপযুক্ত প্রার্থী পাচ্ছে না বলে খবরে জানা যায়। চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠন কিছু স্থানীয় নির্বাচনে এরই মধ্যে চমক দেখিয়েছে এবং কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়েরও কারণ হয়েছে। আওয়ামী লীগকে এটা মনে রাখতে হবে। দেশের সবখানেই এসব ধর্মীয় দলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট রয়েছে বলে মনে করা হয় এবং এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বরিশাল সিটি নির্বাচনে চরমোনাই পীরের দল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য সংকট তৈরি করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। জাতীয় পার্টিও তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারে বলে খবর রয়েছে। জাতীয় পার্টিতে অবশ্য দুই ধারা। কোন ধারা কখন দলে প্রাধান্য বিস্তার করে, তা আগে থেকে বলা যায় না। মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর সমর্থকেরা শেষ পর্যন্ত কী করবেন, সেটাই বা কে বলবে! স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিতে তারাই তো প্রভাবশালী। যে কারণে শুধু তাঁর নামেই কেন্দ্রের কাছে মেয়র পদে মনোনয়ন চাওয়া হয়েছিল। দলীয় সভাপতির দৃঢ় ভূমিকার কারণেই সেই আবদার এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্বাস করি।
এখন নির্বাচনের ময়দানে মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক ও জাহাঙ্গীররা যেন বড় কোনো নেতিবাচক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা পরাজিত হলে সরকারের পতন ঘটে যাবে, তা নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তা কখনো হয়ও না। তবু এই নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয় দেশে জনমত পরিস্থিতি কেমন, তা বোঝার জন্য। সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারব্যবস্থা এখনো সেভাবে শক্তিশালী হয়নি, এ কথা সত্য। তবে এই নির্বাচনে জনগণ বিশেষ আগ্রহের সঙ্গে অংশ নিয়ে থাকে এ জন্য যে, তারা মনে করে এটা তাদের ‘ঘরের কাছের সরকার’। সে জন্য অনেক সময় দলীয় বিবেচনার বাইরে গিয়েও মানুষ ভোট দিয়ে থাকে যোগ্য প্রার্থীকে। তবে বাংলাদেশে এখনো সব নির্বাচনে দলীয় বিবেচনাই মুখ্য। সামনেই জাতীয় নির্বাচন বলে এটা এখন আরও বেশি প্রাধান্য পাবে। সে জন্য গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এখন কাজ হলো নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা জোগানো এবং দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য সংগঠনের ঐক্য ধরে রেখে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। এই নির্বাচন ঘিরে যেন নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয় বা তেমন কোনো সুযোগ না পায় বিরোধী দল। শুধু মেয়র নয়, কাউন্সিলর পদেও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরা যেন নির্বাচনে অংশ নেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে আওয়ামী লীগকে। জাতীয় নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে এটা তাদের জন্য একটি পরীক্ষা বৈকি।
লেখক: রাজনীতিক, লেখক; মহাপরিচালক, বিএফডিআর
মোনায়েম সরকার

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। রাজশাহী ও খুলনার বর্তমান দুই মেয়রকে বহাল রেখে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন দুজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সিলেট সিটিতেও চমক সৃষ্টি করা হয়েছে কম আলোচিত প্রবাসী একজনকে মনোনয়ন দিয়ে। সেখানে কোন্দল এড়াতেই এমন ব্যবস্থা বলে জানা যাচ্ছে। এটা উপযুক্ত নেতা সৃষ্টি না হওয়ার কারণে কি না, সেই প্রশ্নও থেকে যায়।
দলের প্রার্থী মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন মুখ খুঁজে বের করার ঘটনা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, বরিশালে দলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন না পাওয়ায় তা বেশি আলোচনায় এসেছে। কারণ গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পতন ঘটেছিল আগেই। বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের শহীদদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে তিনি আগেই দল থেকে বহিষ্কৃত হন। মেয়র পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও সামনে এসেছিল। এর পরও তিনি নতুন করে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে ভুল স্বীকার করায় তাঁকে দলে ফেরত নেওয়া হলেও নেত্রী যে এ ধরনের লোকের বিষয়ে কঠোর, সেই বার্তা দিলেন তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে। এটাই প্রত্যাশিত ছিল। তবে বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ তাঁর যাবতীয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরও মনোনয়ন পেয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। পদ ও মনোনয়ন পাওয়ার বেলায় পারিবারিক যোগাযোগ আমাদের রাজনীতির একটি বড় নিয়ামক বলে মনে করা হয়। সে কারণেই সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সেটাকে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য বড় বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও বড় বিবাদে জড়িয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন ক্যাডার থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়। সরকার তখনই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না, সেই প্রশ্ন জেগেছিল। সেটা না হলেও নতুন করে তাঁর মেয়র হওয়ার সুযোগ যে কেড়ে নেওয়া হলো, এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। এ ঘটনা থেকে ক্ষমতা পেয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলা ব্যক্তিদের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের বেশি দিন বাকি নেই। নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যাপারে বিভিন্নভাবে খোঁজ নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী। সিটি নির্বাচনে বিতর্কিত প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায়, যাচাই-বাছাই করে অগ্রসর হওয়ার কাজটি তিনি এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। একই পরিবারের অপর ব্যক্তি সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচাকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় অবশ্য অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, পারিবারিক বৃত্তের বাইরের কাউকে তো বেছে নেওয়া হলো না! পারিবারিক যোগসূত্র থাকলেই কাউকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হবে, সেটাও কিন্তু স্বাভাবিক নয়। এ ঘটনাকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন, যেসব সিটিতে সাবেক মেয়র বা প্রভাবশালী নেতারা মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন কি না। তেমন সম্ভাবনা একেবারে নেই, তা বলা যায় না। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর সাহস না থাকলেও তাঁরা যে দলীয়ভাবে মনোনীতদের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলম কী করবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাঁর অর্থবিত্ত ও প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়। সেটা কাজে লাগিয়ে তিনি দলীয় প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলতে পারেন। বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ অবশ্য ইতিমধ্যে বলেছেন, তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে চাচাকে জেতানোর জন্য কাজ করবেন। সেটা করলেই ভালো। কেননা, বিএনপি এই নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জন করলেও স্থানীয় নেতারা তাতে কোনোভাবেই অংশ নেবেন না, তা বলা যায় না। এরই মধ্যে এ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বোঝা যায় তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। সিটির কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকের ব্যাপার না থাকায় তাদের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি এদের ঠেকাতে পারবে না। সেটা বোধ হয় তারা চাইবেও না। ইতিমধ্যে এটাও জানা গেল, কেউ ‘স্বতন্ত্রভাবে’ মেয়র পদে দাঁড়াতে চাইলে কেন্দ্রের আপত্তি নেই। দলের কোনো পদে না থাকা নেতারা নির্দেশনা না মেনে নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাও সহজ নয়। বিএনপি যেভাবে লাগাতার নির্বাচনের বাইরে থাকছে, তাতে দলের, বিশেষ করে তৃণমূলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলেই জানা যায়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা স্থানীয় নির্বাচনও বর্জন করে চলেছে কেন, সেটা দলের লোকদের কাছেও প্রশ্ন।
ইতিমধ্যে আমরা জানতে পারলাম, সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডনে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরেছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা ঈদের পরে জানাবেন। তিনি যে নির্বাচনে দাঁড়াতে চান, এটা স্পষ্ট। অন্যান্য সিটি করপোরেশন থেকেও বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তবে তাঁরা স্বভাবতই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার কথা প্রকাশ্যে বলছেন না। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বলে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে। এটা আত্মঘাতী কি না, সেটা ভেবে দেখার সুযোগও যেন তাঁদের নেই। তবে দলের মেয়র পদপ্রার্থীরা সরাসরি নির্বাচন করার হিম্মত না পেলেও ঘনিষ্ঠ বা পরিবারের কাউকে না কাউকে দাঁড় করিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীতদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে চাইবেন হয়তো।
এদিকে সিটি নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কী ভূমিকা রাখবে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা সব সিটিতে উপযুক্ত প্রার্থী পাচ্ছে না বলে খবরে জানা যায়। চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠন কিছু স্থানীয় নির্বাচনে এরই মধ্যে চমক দেখিয়েছে এবং কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়েরও কারণ হয়েছে। আওয়ামী লীগকে এটা মনে রাখতে হবে। দেশের সবখানেই এসব ধর্মীয় দলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট রয়েছে বলে মনে করা হয় এবং এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বরিশাল সিটি নির্বাচনে চরমোনাই পীরের দল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য সংকট তৈরি করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। জাতীয় পার্টিও তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারে বলে খবর রয়েছে। জাতীয় পার্টিতে অবশ্য দুই ধারা। কোন ধারা কখন দলে প্রাধান্য বিস্তার করে, তা আগে থেকে বলা যায় না। মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর সমর্থকেরা শেষ পর্যন্ত কী করবেন, সেটাই বা কে বলবে! স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিতে তারাই তো প্রভাবশালী। যে কারণে শুধু তাঁর নামেই কেন্দ্রের কাছে মেয়র পদে মনোনয়ন চাওয়া হয়েছিল। দলীয় সভাপতির দৃঢ় ভূমিকার কারণেই সেই আবদার এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্বাস করি।
এখন নির্বাচনের ময়দানে মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক ও জাহাঙ্গীররা যেন বড় কোনো নেতিবাচক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা পরাজিত হলে সরকারের পতন ঘটে যাবে, তা নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তা কখনো হয়ও না। তবু এই নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয় দেশে জনমত পরিস্থিতি কেমন, তা বোঝার জন্য। সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারব্যবস্থা এখনো সেভাবে শক্তিশালী হয়নি, এ কথা সত্য। তবে এই নির্বাচনে জনগণ বিশেষ আগ্রহের সঙ্গে অংশ নিয়ে থাকে এ জন্য যে, তারা মনে করে এটা তাদের ‘ঘরের কাছের সরকার’। সে জন্য অনেক সময় দলীয় বিবেচনার বাইরে গিয়েও মানুষ ভোট দিয়ে থাকে যোগ্য প্রার্থীকে। তবে বাংলাদেশে এখনো সব নির্বাচনে দলীয় বিবেচনাই মুখ্য। সামনেই জাতীয় নির্বাচন বলে এটা এখন আরও বেশি প্রাধান্য পাবে। সে জন্য গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এখন কাজ হলো নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা জোগানো এবং দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য সংগঠনের ঐক্য ধরে রেখে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। এই নির্বাচন ঘিরে যেন নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয় বা তেমন কোনো সুযোগ না পায় বিরোধী দল। শুধু মেয়র নয়, কাউন্সিলর পদেও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরা যেন নির্বাচনে অংশ নেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে আওয়ামী লীগকে। জাতীয় নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে এটা তাদের জন্য একটি পরীক্ষা বৈকি।
লেখক: রাজনীতিক, লেখক; মহাপরিচালক, বিএফডিআর

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। রাজশাহী ও খুলনার বর্তমান দুই মেয়রকে বহাল রেখে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন দুজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সিলেট সিটিতেও চমক সৃষ্টি করা হয়েছে কম আলোচিত প্রবাসী একজনকে মনোনয়ন দিয়ে। সেখানে কোন্দল এড়াতেই এমন ব্যবস্থা বলে জানা যাচ্ছে। এটা উপযুক্ত নেতা সৃষ্টি না হওয়ার কারণে কি না, সেই প্রশ্নও থেকে যায়।
দলের প্রার্থী মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে গাজীপুর ও বরিশালে নতুন মুখ খুঁজে বের করার ঘটনা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, বরিশালে দলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ মনোনয়ন না পাওয়ায় তা বেশি আলোচনায় এসেছে। কারণ গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পতন ঘটেছিল আগেই। বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের শহীদদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে তিনি আগেই দল থেকে বহিষ্কৃত হন। মেয়র পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও সামনে এসেছিল। এর পরও তিনি নতুন করে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে ভুল স্বীকার করায় তাঁকে দলে ফেরত নেওয়া হলেও নেত্রী যে এ ধরনের লোকের বিষয়ে কঠোর, সেই বার্তা দিলেন তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে। এটাই প্রত্যাশিত ছিল। তবে বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ তাঁর যাবতীয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরও মনোনয়ন পেয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। পদ ও মনোনয়ন পাওয়ার বেলায় পারিবারিক যোগাযোগ আমাদের রাজনীতির একটি বড় নিয়ামক বলে মনে করা হয়। সে কারণেই সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সেটাকে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য বড় বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও বড় বিবাদে জড়িয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন ক্যাডার থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়। সরকার তখনই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না, সেই প্রশ্ন জেগেছিল। সেটা না হলেও নতুন করে তাঁর মেয়র হওয়ার সুযোগ যে কেড়ে নেওয়া হলো, এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। এ ঘটনা থেকে ক্ষমতা পেয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলা ব্যক্তিদের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের বেশি দিন বাকি নেই। নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যাপারে বিভিন্নভাবে খোঁজ নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী। সিটি নির্বাচনে বিতর্কিত প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায়, যাচাই-বাছাই করে অগ্রসর হওয়ার কাজটি তিনি এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। একই পরিবারের অপর ব্যক্তি সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচাকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় অবশ্য অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, পারিবারিক বৃত্তের বাইরের কাউকে তো বেছে নেওয়া হলো না! পারিবারিক যোগসূত্র থাকলেই কাউকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হবে, সেটাও কিন্তু স্বাভাবিক নয়। এ ঘটনাকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন, যেসব সিটিতে সাবেক মেয়র বা প্রভাবশালী নেতারা মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন কি না। তেমন সম্ভাবনা একেবারে নেই, তা বলা যায় না। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর সাহস না থাকলেও তাঁরা যে দলীয়ভাবে মনোনীতদের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলম কী করবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাঁর অর্থবিত্ত ও প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়। সেটা কাজে লাগিয়ে তিনি দলীয় প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলতে পারেন। বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহ অবশ্য ইতিমধ্যে বলেছেন, তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে চাচাকে জেতানোর জন্য কাজ করবেন। সেটা করলেই ভালো। কেননা, বিএনপি এই নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জন করলেও স্থানীয় নেতারা তাতে কোনোভাবেই অংশ নেবেন না, তা বলা যায় না। এরই মধ্যে এ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বোঝা যায় তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। সিটির কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকের ব্যাপার না থাকায় তাদের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি এদের ঠেকাতে পারবে না। সেটা বোধ হয় তারা চাইবেও না। ইতিমধ্যে এটাও জানা গেল, কেউ ‘স্বতন্ত্রভাবে’ মেয়র পদে দাঁড়াতে চাইলে কেন্দ্রের আপত্তি নেই। দলের কোনো পদে না থাকা নেতারা নির্দেশনা না মেনে নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাও সহজ নয়। বিএনপি যেভাবে লাগাতার নির্বাচনের বাইরে থাকছে, তাতে দলের, বিশেষ করে তৃণমূলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলেই জানা যায়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা স্থানীয় নির্বাচনও বর্জন করে চলেছে কেন, সেটা দলের লোকদের কাছেও প্রশ্ন।
ইতিমধ্যে আমরা জানতে পারলাম, সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডনে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরেছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা ঈদের পরে জানাবেন। তিনি যে নির্বাচনে দাঁড়াতে চান, এটা স্পষ্ট। অন্যান্য সিটি করপোরেশন থেকেও বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তবে তাঁরা স্বভাবতই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার কথা প্রকাশ্যে বলছেন না। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বলে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে। এটা আত্মঘাতী কি না, সেটা ভেবে দেখার সুযোগও যেন তাঁদের নেই। তবে দলের মেয়র পদপ্রার্থীরা সরাসরি নির্বাচন করার হিম্মত না পেলেও ঘনিষ্ঠ বা পরিবারের কাউকে না কাউকে দাঁড় করিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীতদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে চাইবেন হয়তো।
এদিকে সিটি নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কী ভূমিকা রাখবে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা সব সিটিতে উপযুক্ত প্রার্থী পাচ্ছে না বলে খবরে জানা যায়। চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠন কিছু স্থানীয় নির্বাচনে এরই মধ্যে চমক দেখিয়েছে এবং কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়েরও কারণ হয়েছে। আওয়ামী লীগকে এটা মনে রাখতে হবে। দেশের সবখানেই এসব ধর্মীয় দলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট রয়েছে বলে মনে করা হয় এবং এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বরিশাল সিটি নির্বাচনে চরমোনাই পীরের দল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য সংকট তৈরি করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। জাতীয় পার্টিও তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারে বলে খবর রয়েছে। জাতীয় পার্টিতে অবশ্য দুই ধারা। কোন ধারা কখন দলে প্রাধান্য বিস্তার করে, তা আগে থেকে বলা যায় না। মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর সমর্থকেরা শেষ পর্যন্ত কী করবেন, সেটাই বা কে বলবে! স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিতে তারাই তো প্রভাবশালী। যে কারণে শুধু তাঁর নামেই কেন্দ্রের কাছে মেয়র পদে মনোনয়ন চাওয়া হয়েছিল। দলীয় সভাপতির দৃঢ় ভূমিকার কারণেই সেই আবদার এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্বাস করি।
এখন নির্বাচনের ময়দানে মনোনয়নবঞ্চিত সাদিক ও জাহাঙ্গীররা যেন বড় কোনো নেতিবাচক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা পরাজিত হলে সরকারের পতন ঘটে যাবে, তা নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তা কখনো হয়ও না। তবু এই নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয় দেশে জনমত পরিস্থিতি কেমন, তা বোঝার জন্য। সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারব্যবস্থা এখনো সেভাবে শক্তিশালী হয়নি, এ কথা সত্য। তবে এই নির্বাচনে জনগণ বিশেষ আগ্রহের সঙ্গে অংশ নিয়ে থাকে এ জন্য যে, তারা মনে করে এটা তাদের ‘ঘরের কাছের সরকার’। সে জন্য অনেক সময় দলীয় বিবেচনার বাইরে গিয়েও মানুষ ভোট দিয়ে থাকে যোগ্য প্রার্থীকে। তবে বাংলাদেশে এখনো সব নির্বাচনে দলীয় বিবেচনাই মুখ্য। সামনেই জাতীয় নির্বাচন বলে এটা এখন আরও বেশি প্রাধান্য পাবে। সে জন্য গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এখন কাজ হলো নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা জোগানো এবং দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য সংগঠনের ঐক্য ধরে রেখে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। এই নির্বাচন ঘিরে যেন নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয় বা তেমন কোনো সুযোগ না পায় বিরোধী দল। শুধু মেয়র নয়, কাউন্সিলর পদেও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরা যেন নির্বাচনে অংশ নেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে আওয়ামী লীগকে। জাতীয় নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে এটা তাদের জন্য একটি পরীক্ষা বৈকি।
লেখক: রাজনীতিক, লেখক; মহাপরিচালক, বিএফডিআর

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন
২১ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন
২১ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন
২১ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গাজীপুরসহ দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাসের শেষ দিক থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি পৃথক দিনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিটিতে হবে নির্বাচন। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচজন
২১ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫