চবির শাটল ট্রেনে নতুন আতঙ্ক পাথর নিক্ষেপ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৪০
Thumbnail image

গত শনিবার শহর থেকে টিউশন শেষ করে রাতের শাটল ট্রেনে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নিলয় অপু। শাটল ট্রেন ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের কাছাকাছি আসতেই বাইরে থেকে এলোপাতাড়ি পাথর ছুড়তে থাকে দুর্বৃত্তরা। একটি পাথর এসে পড়ে তাঁর হাতে। প্রচণ্ড আঘাতে হাত ফুলে যায়। শুধু নিলয়ই নন, প্রায় প্রতিদিনই দুর্বৃত্তদের নিক্ষেপ করা পাথরের আঘাতে আহত হচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। আর এটি এখন শিক্ষার্থীদের কাছে রীতিমতো আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন। প্রতিদিন শাটল ট্রেনে করে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শহর থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করেন। সম্প্রতি শাটল ট্রেনে বাইরে থেকে পাথর নিক্ষেপ অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে বাইরে থেকে দুর্বৃত্তদের পাথর নিক্ষেপের ঘটনা। গত এক মাসে অন্তত ১৫ বার পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে মারাত্মকভাবে আহত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যদিও পাথর নিক্ষেপ বন্ধ করতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না রেলওয়ে বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমনকি বিষয়টি সম্পর্কে জানেনও তারা।

ষোলোশহর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার এস এম ফখরুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। পাথর নিক্ষেপ বন্ধ করতে রেলওয়ে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলব।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেঝে, ঝাউতলা, ক্যান্টনমেন্ট ও ষোলোশহর স্টেশনের আশপাশের এলাকাগুলোতে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। স্টেশনের পাশ ঘেঁষা গড়ে ওঠা বস্তি থেকে টোকাইরা পাথর নিক্ষেপ করে। রাত ও বিকেলের ট্রেনগুলোতেই মূলত পাথর নিক্ষেপ করা হয়। আর এর পেছনে অন্যতম কারণ শাটলের ছাদে যাতায়াতকারী টোকাইরা। তারা পাথর নিয়ে ছাদে উঠে নিচে টোকাই ও সাধারণ মানুষদের লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে। পরে নিচ থেকে তারাও পাল্টা পাথর নিক্ষেপ করে।

সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসাইন বলেন, ‘আমি দুইবার পাথর নিক্ষেপের শিকার হয়েছি। একবার পাথরের আঘাতে আমার এক বন্ধুর চশমা ভেঙে চোখের নিচে কাচ ঢুকে যায়। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের একটু আগে ও ঝাউতলা স্টেশনের পাশের বস্তি থেকে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। মূলত টোকাই ছেলেরা পাথর নিয়ে শাটলের ছাদে উঠে নিচের দিকে পাথর মারতে থাকে। পরে নিচ থেকে তারা পাল্টা পাথর নিক্ষেপ করলে আমাদের গায়ে এসে পড়ে। রেলওয়ে ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটু তদারক করলেই পাথর নিক্ষেপ বন্ধ করা সম্ভব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করে পাথর নিক্ষেপ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত