দেশেই উৎপাদন হচ্ছে চিংড়ি পোনার খাদ্য মাইক্রোএলজি

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮: ১৯
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৩৫

দীর্ঘদিন বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো চিংড়ি পোনার খাদ্য মাইক্রোএলজি। ছিল ভোগান্তি। এখন এ খাদ্য দেশেই উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, চিংড়ি উৎপাদনকারী হ্যাচারি প্রতিষ্ঠানকে বিনা মূল্যে এ খাদ্য সরবরাহ করবে বিএফআরআই। এতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি দেশের সুনীল অর্থনীতি ত্বরান্বিত করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান। এর আগে কক্সবাজারের চিংড়ি হ্যাচারির সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ‘চিংড়ি হ্যাচারিতে ব্যবহৃত মাইক্রোএলজি চাষ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

কক্সবাজার বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চিংড়ি হ্যাচারি মালিকদের সংগঠন শ্রিম্প হ্যাচারি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (শেব) সভাপতি ও কক্সবাজার-২ আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক।

আলোচনায় অংশ নেন বিএফআরআইয়ের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল হক, জাকিয়া হাসান, শাহিনুর জাহিদুল হাসান ও আহমেদ ফজলে রাব্বি প্রমুখ।

বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল থেকে সংগৃহীত দেশীয় জাতের একটি মাইক্রোএলজি অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন বলে প্রমাণিত হয়েছে।

কক্সবাজার বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, চিংড়ির পোনা বা লার্ভি চাষে বহুল ব্যবহৃত মাইক্রোএলজি নিয়ে বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা ২০১৭ সালে গবেষণা শুরু করে। মাইক্রোএলজি একটি ফাইটো প্লাংকটন বা ক্ষুদ্র উদ্ভিজ্জ অণুজীব। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো স্কেলেটোনেমা কস্টাটুম নামের এক প্রকার মাইক্রোএলজি পৃথককরণে সাফল্য পান তাঁরা।

ড. শফিকুর রহমান জানান, কয়েক বছরের নিবিড় গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা ওই মাইক্রোএলজির বিশাল মজুত গড়ে তুলেছেন কক্সবাজারের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রে। এখান থেকে চিংড়ি পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারিগুলো বিনা মূল্যে এই জীবন্ত খাবারটি নিয়ে যেতে পারবেন।

বিএফআরআই কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের উপপরিচালক জাকিয়া হাসান বলেন, চিংড়ি উৎপাদনকারী হ্যাচারিগুলোতে দীর্ঘদিন আমেরিকা, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে এ খাদ্যটি আমদানি করা হতো। মাত্র ৫-১০ মিলিলিটার মাইক্রোএলজির দাম পড়ত ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

বিএফআরআই কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য প্রযুক্তি কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন, দেশীয় জাতের মাইক্রোএলজির ব্যাকটেরিয়াল দূষণ নেই। তাই উৎপাদনকারী হ্যাচারি শিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। দেশীয় মাইক্রোএলজি চাষের জন্য সরাসরি উৎস (কক্সবাজার উপকূল) থেকে সংগৃহীত পানি ব্যবহার করায় এর বৃদ্ধির হারও বেশি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত