পেঁয়াজ নিয়ে হতাশ চাষি

মো. শামীম হোসেন, পাংশা (রাজবাড়ী)
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০৬: ৫৯
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১১: ০৭

দেশের মধ্যে পেঁয়াজ চাষে অন্যতম রাজবাড়ী। এ বছর জেলার পাংশা উপজেলায় পেঁয়াজের আশানুরূপ ফলন হয়নি। অন্যদিকে বাজারে দাম কম থাকয় হতাশায় পড়েছেন কৃষকেরা।

পাংশায় কয়েক দিন ধরে মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। গত শনিবার উপজেলার মৌরাট, পাট্টা, সরিষা, কসবামাজাই, কলিমহর ও মাছপাড়া ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় একই জমিতে এ বছর পেঁয়াজের ফলন অনেক কম হয়েছে। পেঁয়াজের চারা রোপণের পর পরই বৃষ্টি হওয়ায় ফলন কম হয়েছে। বিঘাপ্রতি জমিতে পেঁয়াজ চাষে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।

মৌরাট ইউনিয়নের মালঞ্চি মিয়াপাড়া মাঠে পেঁয়াজ তোলার সময় কৃষক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, এবার প্রতি বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৩৫-৪০ মণ পেঁয়াজ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম।

কৃষক মনছুর রহমান (মধু) বলেন, ‘এ বছর পেঁয়াজের ফলন অনুযায়ী প্রতি মণ পেঁয়াজে ১১-১২ শত টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম অনুযায়ী আমাদের যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হবে তা পুরোনো করার মতো না।’

মাছপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আবু বক্কর খান বলেন, দিনপ্রতি প্রতিজন দিনমজুরকে ৬-৭ শত টাকা দিতে হয়। পেঁয়াজ বিক্রয় করে দিনমজুরদের টাকা দিতে হয়। তাঁরা পেঁয়াজ মজুত রাখতে পারেন না।

গত শনিবার উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের বাগদুলী পেঁয়াজের হাটে গিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মণ ভালো মানের পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম ৭৫০ টাকা। লোকসান হলেও দিনমজুরদের টাকা দেওয়ার জন্য কৃষকদের পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।

পেঁয়াজ হাটের আড়তদার মকছেদ আলী বলেন, তাঁরা এখান থেকে পেঁয়াজ কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, গত বছর উপজেলায় ৮ হাজার ৮৮৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। তাতে ফলন হয়েছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৪৭ মেট্রিক টন। চলতি বছর ১০ হাজার ৩৮৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় পেঁয়াজ চাষে জমির পরিমাণ বেশি হলেও পেঁয়াজের ফলন সমপরিমাণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন।

তিনি আরও বলেন, এ বছর যে সব কৃষকেরা পেঁয়াজের চারা অগ্রিম রোপণ করেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাঁদের ফলন কম হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত