তাপস মজুমদার
সম্প্রতি রেলের টিকিট নিয়ে আজকের পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের দেশটি এক আজব দেশ। নিয়ম না মানাটাই এখানে নিয়ম এবং আইন ভঙ্গ করাটাই যেন আইন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগরিকদের হয়রানির জন্যই যেন একশ্রেণির সরকারি কর্মচারীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।’ কথাগুলো প্রণিধানযোগ্য। সত্যিকার অর্থেই যাঁরা সরকারি চাকরি করেন, তাঁদের বড় একটি অংশ দায়িত্ব সম্পর্কে উদাসীন। তাঁরা মনে করেন আমি এখান থেকে টাকা পাচ্ছি; সেগুলো ব্যয় করে আমার সংসার-সন্তান নিয়ে ভালো থাকাটাই শেষ কথা।
বিনিময়ে তিনি কী দিচ্ছেন, সে হিসাবটি কষেন না। আর একটি মৌলিক বিষয় অজান্তেই এড়িয়ে যান। সেটা হলো এই, সমাজটি ভালো না থাকলে সংসার-সন্তান নিয়ে ভালো থাকা যায় না। এই সামাজিক উদাসীনতা আমাদের জন্য এখন এক বড় অভিশাপ।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়েছে, সেটা তো স্বীকৃত। তবু দুঃখের কথা হলো, দেশের অনেক সেক্টরের সঙ্গেই ওপরের কথাগুলো যায়।কিন্তু আজকের আলোচনা রেলওয়ে বিষয়ে। ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ট্রেনের টিকিট চা-বিড়ির দোকানে পাওয়া যায়।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুর ও সরারচর রেলস্টেশনের কাহিনি এটা। স্টেশনের দোকানগুলোতে দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কাউন্টারে টিকিট নেই।
আমরা খবরের কাগজে যেমন দেখতে পাই, তেমনি আমি নিজেও এর ভুক্তভোগী যে অনলাইনে টিকিট ছাড়া হয় সকাল ৮টায়; অথচ ৮টা বেজে ৫ মিনিটের মধ্যে ট্রেনের টিকিট শেষ হয়ে যায়। আমার পক্ষে প্রায় কোনো দিনই ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া সম্ভব হয়নি।কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, বেশি টাকা খরচ করলে অব্যর্থভাবে টিকিট পাওয়া যায়। ৭০০ টাকার টিকিট ১ হাজার ২০০ টাকা।
এবার আমার ব্যক্তিগত কিছু ভালো অভিজ্ঞতার সংবাদ জানাই। দীর্ঘ দুই যুগ পর সম্ভবত প্রথম এই ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম লাইনে ট্রেনে ভ্রমণ করলাম (সুবর্ণ এক্সপ্রেস)। আমি সাধারণত রাজশাহী-ঢাকা, রাজশাহী-খুলনা, রাজশাহী-সৈয়দপুর লাইনে, অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনে চলাফেরা করে থাকি। রাজশাহী লাইনের রেলভ্রমণকারী যাত্রীদের চেয়ার কোচে তিন-দুই বিন্যাসে বসার ব্যবস্থায় ভীষণ আপত্তি করতে দেখেছি। আমি নিজেও বিরক্ত বোধ করি।
চট্টগ্রাম লাইনে দেখলাম বসার ব্যবস্থা দুই-দুই বিন্যাসে; অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চলের মতো তিন-দুই নয়। তিন সিটের মাঝখানে অথবা জানালার কাছের সিটে বসার বিড়ম্বনা অনেক। গায়ে গা লেগে যায়। একজনকে বাইরে বেরোতে গেলে বাকিদের উঠতে হয়। পাশের যাত্রীর গায়ের সঙ্গে ছোঁয়া লেগে না যায়। সে জন্য খুব সতর্কতার সঙ্গে সটান বসে থাকতে হয়। পাশের যাত্রীটি নারী হলে দুজনেরই বিড়ম্বনা আরও বাড়ে।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে আরও দেখলাম, কামরাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সিটের মান উন্নত এবং ভেতরের সজ্জাটাও তুলনামূলকভাবে আধুনিক, সুন্দর। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর বগির মধ্যে বেশ কয়েকটি ময়লার বাস্কেট রেখে যাওয়া হলো। সবাই চা-কফি খাচ্ছে তার কাপ, নাশতা করছে তার প্যাকেট; অথবা কলা খাচ্ছে তার খোসা ইত্যাদি সেই বাস্কেটের মধ্যে ফেলতে পারছে। সেই সঙ্গে দেখে ভীষণ ভালো লাগল যে প্রতি ঘণ্টায় একজন লোক এসে ওই বাস্কেট থেকে ময়লাগুলো একটি বড় বালতিতে করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ফলে কামরার অভ্যন্তর ভাগ পরিচ্ছন্ন থাকছে। একটি ডিজিটাল ডিসপ্লে দেখতে পেলাম; যেখানে ট্রেন কোন স্টেশন অতিক্রম করছে, সেটা লেখা থাকার কথা। যদিও সেটা সম্ভবত ওই দিন কাজ করছিল না। লক্ষ করলাম, যাঁরা অ্যাটেনডেন্ট বা পরিচর্যক, তাঁরাও খুব আন্তরিক। পশ্চিমাঞ্চলে এসবের ঘাটতি চোখে পড়ার মতো।
প্রশ্ন হলো, একই দেশে একই প্রশাসনের আওতায় দুদিকে দুই রকম ব্যবস্থা বা অবস্থা কেন? আমরা জানি পূর্বাঞ্চলের ট্রেনলাইন মিটারগেজ। পশ্চিমাঞ্চলে অধিকাংশই ব্রডগেজ। তবু যাত্রার আরাম নিশ্চিত করা সমীচীন। শুধু বসার ব্যবস্থায় নয়, ট্রেনে আরেকটি জিনিস আমরা লক্ষ করি, খাবারের ধরন। সেই পুরোনো আমল থেকেই একটি প্যাকেজ দেখতে পাই—স্যান্ডউইচ, কাটলেট এবং চিকেন ফ্রাই। কেউ খেতে চাইলে এই গোটা প্যাকেটটাই নিতে হবে। প্রয়োজন অল্প হলেও আংশিক বা যেকোনো একটি আইটেম নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আরেকটি বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। সেটা হলো, ট্রেনের মধ্যে অথবা রেলস্টেশনে যে ঘোষণাগুলো মাইকে দেওয়া হয়, সেই ঘোষণা অনেক সময়ই শুদ্ধ থাকে না। উচ্চারণ, কথা বলার ধরন, শব্দের প্রক্ষেপণ প্রমিত নয়। বাংলাদেশে আবৃত্তিচর্চা কম হচ্ছে না। ভালো কণ্ঠের, ভালো উচ্চারণের মানুষ এখানে নগণ্য নয়। সেদিকেও নজর দেওয়াটা জাতীয় দায়িত্বের অংশ বটে। ভাষা গাম্ভীর্য হারালে জাতির দীনতা প্রকাশ পায়।
দ্রুত পূর্বাঞ্চলের মতো পশ্চিমেও রেলভ্রমণ সার্বিকভাবে আরামদায়ক করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত হবে। রাতারাতি কোনো কিছুই সম্ভব নয়। কিন্তু তবু কিসে যাত্রীদের আরাম নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে প্রতিনিয়ত ভাবতে হবে এবং সেভাবেই কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করতে হবে। কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই সুব্যবস্থা নিশ্চিত
করা সম্ভব।
পাশাপাশি ট্রেনে যাত্রীদের দায়িত্বও কম নয়। বিশ্বের বড় বড় স্টেশনে দেখেছি সহস্র মানুষ; তবু তাদের চলাফেরা একটা নির্দিষ্ট ডিরেকশনে; যেখানে কারও গতিরোধ হচ্ছে না। ট্রেনের মধ্যেও। অজস্র যাত্রী; তবু তারা একটি নির্দিষ্ট ডিরেকশনে দাঁড়াচ্ছে, স্টেশনে নামছে, আবার নতুন লোক উঠছে। কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে না, অথবা জটলা লাগছে না। এগুলো অতি সূক্ষ্ম পরিশীলন হয়তো। কিন্তু সে জায়গায়ও তো আমাদের পৌঁছাতে হবে। বিশ্বমান অর্জন করতে গেলে সূক্ষ্মতার চর্চাই তো আবশ্যক।
আমাদের শৃঙ্খলাবোধ ও সুশিক্ষা দরকার। আমরা অনেকেই অন্তত এটুকু জানি, এ দেশ এখন আর দুর্যোগ-দুর্বিপাকের দেশ নয়। এ দেশ ভিক্ষা বা শুধু ধারের টাকায় নির্ভর করে চলে না। দুর্বল অর্থনীতির দেশ নয়। ভুখানাঙ্গা মানুষেরও দেশ নয়। এখন এ দেশ সামাজিক, মানবিক অনেক কাজেই সমৃদ্ধ। আয়-আয়ু-শিক্ষা সব বেড়েছে। তাই তো আমাদের আকাঙ্ক্ষাও বেড়েছে। তবু আমাদের জিডিপির ২ শতাংশের বেশি শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ করা হয় না, অথবা করা সম্ভব হয় না। এ কারণে কি সুশিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে? জবাবদিহি অধরা থেকে যাচ্ছে? ভেবে দেখা দরকার। নিশ্চয়ই তার প্রভাব রেলসহ সব সেক্টরে পড়বে।
লেখক: সংস্কৃতিকর্মী
সম্প্রতি রেলের টিকিট নিয়ে আজকের পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের দেশটি এক আজব দেশ। নিয়ম না মানাটাই এখানে নিয়ম এবং আইন ভঙ্গ করাটাই যেন আইন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগরিকদের হয়রানির জন্যই যেন একশ্রেণির সরকারি কর্মচারীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।’ কথাগুলো প্রণিধানযোগ্য। সত্যিকার অর্থেই যাঁরা সরকারি চাকরি করেন, তাঁদের বড় একটি অংশ দায়িত্ব সম্পর্কে উদাসীন। তাঁরা মনে করেন আমি এখান থেকে টাকা পাচ্ছি; সেগুলো ব্যয় করে আমার সংসার-সন্তান নিয়ে ভালো থাকাটাই শেষ কথা।
বিনিময়ে তিনি কী দিচ্ছেন, সে হিসাবটি কষেন না। আর একটি মৌলিক বিষয় অজান্তেই এড়িয়ে যান। সেটা হলো এই, সমাজটি ভালো না থাকলে সংসার-সন্তান নিয়ে ভালো থাকা যায় না। এই সামাজিক উদাসীনতা আমাদের জন্য এখন এক বড় অভিশাপ।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়েছে, সেটা তো স্বীকৃত। তবু দুঃখের কথা হলো, দেশের অনেক সেক্টরের সঙ্গেই ওপরের কথাগুলো যায়।কিন্তু আজকের আলোচনা রেলওয়ে বিষয়ে। ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ট্রেনের টিকিট চা-বিড়ির দোকানে পাওয়া যায়।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুর ও সরারচর রেলস্টেশনের কাহিনি এটা। স্টেশনের দোকানগুলোতে দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কাউন্টারে টিকিট নেই।
আমরা খবরের কাগজে যেমন দেখতে পাই, তেমনি আমি নিজেও এর ভুক্তভোগী যে অনলাইনে টিকিট ছাড়া হয় সকাল ৮টায়; অথচ ৮টা বেজে ৫ মিনিটের মধ্যে ট্রেনের টিকিট শেষ হয়ে যায়। আমার পক্ষে প্রায় কোনো দিনই ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া সম্ভব হয়নি।কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, বেশি টাকা খরচ করলে অব্যর্থভাবে টিকিট পাওয়া যায়। ৭০০ টাকার টিকিট ১ হাজার ২০০ টাকা।
এবার আমার ব্যক্তিগত কিছু ভালো অভিজ্ঞতার সংবাদ জানাই। দীর্ঘ দুই যুগ পর সম্ভবত প্রথম এই ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম লাইনে ট্রেনে ভ্রমণ করলাম (সুবর্ণ এক্সপ্রেস)। আমি সাধারণত রাজশাহী-ঢাকা, রাজশাহী-খুলনা, রাজশাহী-সৈয়দপুর লাইনে, অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনে চলাফেরা করে থাকি। রাজশাহী লাইনের রেলভ্রমণকারী যাত্রীদের চেয়ার কোচে তিন-দুই বিন্যাসে বসার ব্যবস্থায় ভীষণ আপত্তি করতে দেখেছি। আমি নিজেও বিরক্ত বোধ করি।
চট্টগ্রাম লাইনে দেখলাম বসার ব্যবস্থা দুই-দুই বিন্যাসে; অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চলের মতো তিন-দুই নয়। তিন সিটের মাঝখানে অথবা জানালার কাছের সিটে বসার বিড়ম্বনা অনেক। গায়ে গা লেগে যায়। একজনকে বাইরে বেরোতে গেলে বাকিদের উঠতে হয়। পাশের যাত্রীর গায়ের সঙ্গে ছোঁয়া লেগে না যায়। সে জন্য খুব সতর্কতার সঙ্গে সটান বসে থাকতে হয়। পাশের যাত্রীটি নারী হলে দুজনেরই বিড়ম্বনা আরও বাড়ে।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে আরও দেখলাম, কামরাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সিটের মান উন্নত এবং ভেতরের সজ্জাটাও তুলনামূলকভাবে আধুনিক, সুন্দর। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর বগির মধ্যে বেশ কয়েকটি ময়লার বাস্কেট রেখে যাওয়া হলো। সবাই চা-কফি খাচ্ছে তার কাপ, নাশতা করছে তার প্যাকেট; অথবা কলা খাচ্ছে তার খোসা ইত্যাদি সেই বাস্কেটের মধ্যে ফেলতে পারছে। সেই সঙ্গে দেখে ভীষণ ভালো লাগল যে প্রতি ঘণ্টায় একজন লোক এসে ওই বাস্কেট থেকে ময়লাগুলো একটি বড় বালতিতে করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ফলে কামরার অভ্যন্তর ভাগ পরিচ্ছন্ন থাকছে। একটি ডিজিটাল ডিসপ্লে দেখতে পেলাম; যেখানে ট্রেন কোন স্টেশন অতিক্রম করছে, সেটা লেখা থাকার কথা। যদিও সেটা সম্ভবত ওই দিন কাজ করছিল না। লক্ষ করলাম, যাঁরা অ্যাটেনডেন্ট বা পরিচর্যক, তাঁরাও খুব আন্তরিক। পশ্চিমাঞ্চলে এসবের ঘাটতি চোখে পড়ার মতো।
প্রশ্ন হলো, একই দেশে একই প্রশাসনের আওতায় দুদিকে দুই রকম ব্যবস্থা বা অবস্থা কেন? আমরা জানি পূর্বাঞ্চলের ট্রেনলাইন মিটারগেজ। পশ্চিমাঞ্চলে অধিকাংশই ব্রডগেজ। তবু যাত্রার আরাম নিশ্চিত করা সমীচীন। শুধু বসার ব্যবস্থায় নয়, ট্রেনে আরেকটি জিনিস আমরা লক্ষ করি, খাবারের ধরন। সেই পুরোনো আমল থেকেই একটি প্যাকেজ দেখতে পাই—স্যান্ডউইচ, কাটলেট এবং চিকেন ফ্রাই। কেউ খেতে চাইলে এই গোটা প্যাকেটটাই নিতে হবে। প্রয়োজন অল্প হলেও আংশিক বা যেকোনো একটি আইটেম নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আরেকটি বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। সেটা হলো, ট্রেনের মধ্যে অথবা রেলস্টেশনে যে ঘোষণাগুলো মাইকে দেওয়া হয়, সেই ঘোষণা অনেক সময়ই শুদ্ধ থাকে না। উচ্চারণ, কথা বলার ধরন, শব্দের প্রক্ষেপণ প্রমিত নয়। বাংলাদেশে আবৃত্তিচর্চা কম হচ্ছে না। ভালো কণ্ঠের, ভালো উচ্চারণের মানুষ এখানে নগণ্য নয়। সেদিকেও নজর দেওয়াটা জাতীয় দায়িত্বের অংশ বটে। ভাষা গাম্ভীর্য হারালে জাতির দীনতা প্রকাশ পায়।
দ্রুত পূর্বাঞ্চলের মতো পশ্চিমেও রেলভ্রমণ সার্বিকভাবে আরামদায়ক করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত হবে। রাতারাতি কোনো কিছুই সম্ভব নয়। কিন্তু তবু কিসে যাত্রীদের আরাম নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে প্রতিনিয়ত ভাবতে হবে এবং সেভাবেই কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করতে হবে। কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই সুব্যবস্থা নিশ্চিত
করা সম্ভব।
পাশাপাশি ট্রেনে যাত্রীদের দায়িত্বও কম নয়। বিশ্বের বড় বড় স্টেশনে দেখেছি সহস্র মানুষ; তবু তাদের চলাফেরা একটা নির্দিষ্ট ডিরেকশনে; যেখানে কারও গতিরোধ হচ্ছে না। ট্রেনের মধ্যেও। অজস্র যাত্রী; তবু তারা একটি নির্দিষ্ট ডিরেকশনে দাঁড়াচ্ছে, স্টেশনে নামছে, আবার নতুন লোক উঠছে। কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে না, অথবা জটলা লাগছে না। এগুলো অতি সূক্ষ্ম পরিশীলন হয়তো। কিন্তু সে জায়গায়ও তো আমাদের পৌঁছাতে হবে। বিশ্বমান অর্জন করতে গেলে সূক্ষ্মতার চর্চাই তো আবশ্যক।
আমাদের শৃঙ্খলাবোধ ও সুশিক্ষা দরকার। আমরা অনেকেই অন্তত এটুকু জানি, এ দেশ এখন আর দুর্যোগ-দুর্বিপাকের দেশ নয়। এ দেশ ভিক্ষা বা শুধু ধারের টাকায় নির্ভর করে চলে না। দুর্বল অর্থনীতির দেশ নয়। ভুখানাঙ্গা মানুষেরও দেশ নয়। এখন এ দেশ সামাজিক, মানবিক অনেক কাজেই সমৃদ্ধ। আয়-আয়ু-শিক্ষা সব বেড়েছে। তাই তো আমাদের আকাঙ্ক্ষাও বেড়েছে। তবু আমাদের জিডিপির ২ শতাংশের বেশি শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ করা হয় না, অথবা করা সম্ভব হয় না। এ কারণে কি সুশিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে? জবাবদিহি অধরা থেকে যাচ্ছে? ভেবে দেখা দরকার। নিশ্চয়ই তার প্রভাব রেলসহ সব সেক্টরে পড়বে।
লেখক: সংস্কৃতিকর্মী
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৬ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে