চট্টগ্রামের আনোয়ারায় দেয়াং পাহাড় কেটে চলছে ঘর নির্মাণ

মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০: ২৩

সারা দিন সুনসান নীরবতা। রাত হলেই পাল্টে যায় দৃশ্য। শতাধিক শ্রমিক ব্যস্ত হয়ে পড়েন পাহাড় কাটতে। এভাবেই রাতের আঁধারে চট্টগ্রাম বন্দরের পুরোনো জাহাজ নিয়ন্ত্রণ অফিস দখল ও পাশের পাহাড় কেটে চলছে বসতি নির্মাণ। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ইতিমধ্যে পাহাড় কেটে গড়ে তুলছে অর্ধশতাধিক স্থাপনা। এতে যেমন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য, তেমনি বর্ষায় পাহাড়ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিগগির তারা জায়গাটি উদ্ধার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দেয়াং পাহাড়ের চূড়ায় ব্রিটিশ শাসনামলের বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন জাহাজ নিয়ন্ত্রণ অফিস। এটি দীর্ঘ দুই দশক ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এ সুযোগে সম্প্রতি শুরু হয়েছে পাহাড় কেটে দখল ও ঘর নির্মাণের মহোৎসব।

স্থানীয় লোকজন জানান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত নিরাপত্তাপ্রহরী আকতার কামাল, রাশেদ নুরসহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে গড়ে তুলেছে টিনশেড ঘর। পাহাড় কাটার আগে কেটেছে শত বছরের শতাধিক গাছও। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন কেউ কেউ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত নিরাপত্তাপ্রহরী আকতার কামাল বলেন, ‘আমি তিন বছর আগে সেখান থেকে বদলি হয়ে ১৫ নম্বর ঘাটে দায়িত্বে রয়েছি। এখানে বর্তমানে ওয়াহিদুল আলম আর আলী হোসেন প্রহরী হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তাঁরা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত কি না জানি না।’ এরপর জাহাজ নিয়ন্ত্রণ অফিসে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাপ্রহরী আলী হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ব্রিটিশ আমলের অফিসটি কালের সাক্ষী হয়ে জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে দেয়াং পাহাড়ে। সেখান থেকে এখনো কর্ণফুলী নদীতে জাহাজ প্রবেশ আর বের হওয়ার দৃশ্য পরিষ্কার দেখা যায়। ভবনটি দেখাশোনার জন্য রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তাপ্রহরীও। কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) নির্মাণকালে বন্দরের জায়গাটি দখলের বাইরে রাখা হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে শতাধিক শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থাপনা। এ কাজে নিরাপত্তাপ্রহরীসহ প্রভাবশালীরা জড়িত রয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।

চট্টগ্রাম বন্দরের স্টেট অফিসার শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘দেয়াং পাহাড়ে বন্দরের জায়গা দখল করে ৬০টি ঘর নির্মাণের খবর শুনেছি। কয়েক দিনের মধ্যে বন্দরের ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতায় জায়গাটি উদ্ধার এবং পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত