রাহুল শর্মা, ঢাকা
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় অর্ধেকই ধুঁকছে সংকটে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ। অপর্যাপ্ত ও ছোট শ্রেণিকক্ষ, বিদ্যুৎ-সুবিধা না থাকা, সুপেয় পানির অভাব অনেক বিদ্যালয়ে। আছে টয়লেটেরও সমস্যা। এসবের ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
প্রাথমিকের শিক্ষার মানেও আছে দৈন্য। শিখন ফল অর্জনের হার মাত্র ৫০ শতাংশ। শিখন পদ্ধতি ও শিক্ষকদের দক্ষতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই দৈন্য ফুটে উঠেছে সরকারের প্রকল্প মনিটরিং প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৩) প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন সমীক্ষায়।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত সমস্যা এত দিনেও নিরসন না হওয়া দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি করোনার পর আরও বেড়েছে। এই ঘাটতি দূর করতে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও এর সঠিক বাস্তবায়ন।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। অবকাঠামোগত সব সমস্যা পর্যায়ক্রমে দূর হবে। প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৭ জন। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন।
পিইডিপি-৩ প্রকল্প ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই দফায় সংশোধনী প্রস্তাবের মাধ্যমে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর শুরু হয় পিইডিপি-৪ প্রকল্প। তবে পিইডিপি-৩ প্রকল্পের সমীক্ষা পরিচালনা করা হয় চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে। দেশের আট বিভাগের ১৬ জেলার ৩২টি উপজেলার ৬০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী, ১ হাজার ২০০ শিক্ষক ও সমানসংখ্যক অভিভাবক, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষের তথ্য নিয়ে এই সমীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গত ১০ জুন প্রতিবেদনটি আইএমইডিতে জমা দেওয়া হয়।
সমীক্ষার ফল বলছে, শিক্ষার্থীদের শিখন ফল অর্জন হয়েছে মাত্র ৫০ ভাগ। প্রাথমিক শিক্ষার মান কমার বিষয়টি এর আগেও কয়েকটি জরিপে এসেছে। এ জন্য প্রতিবেদনে শিখন পদ্ধতিকে আরও অংশগ্রহণমূলক এবং শিশুদের জন্য প্রয়োজনভিত্তিক হওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।
জরাজীর্ণ বিদ্যালয়
সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ১৭ হাজার ৪১৪টি জরাজীর্ণ। এসব বিদ্যালয়ের কোনোটির দেয়ালে ফাটল, পলেস্তারা খসে রড বের হওয়া ছাদ, কোনোটির মেঝেতে গর্ত, কোনোটির দরজা-জানালা ভাঙা ও মরচেধরা, রং নষ্ট, বৃষ্টি হলেই কোনোটির ছাদ দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে। আবার কিছু বিদ্যালয়ের বাতি ও পাখা নষ্ট ইত্যাদি।
অবশ্য ৬ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, বর্তমানে ৬ হাজার ৭০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে। ১২ জুলাই সারা দেশের ঝুঁকিপূর্ণ/জরাজীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন এবং অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের প্রয়োজন আছে—এমন বিদ্যালয়ের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
সমীক্ষা বলছে, বৃষ্টি হলে পানি পড়ে এবং ছাদে ফাটল আছে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ বা ১২ হাজার ৯১৬টি বিদ্যালয়ে। এসব বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। বেঞ্চের সংকট আছে ৪ হাজার ৯৪৩টি বিদ্যালয়ে (৭ দশমিক ৬ শতাংশ), শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতা আছে ২ হাজার ৯৮ বিদ্যালয়ে (৩ দশমিক ২ শতাংশ)।
বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জরাজীর্ণ দশার সত্যতা পাওয়া যায়। এরই একটি রংপুর নগরের গুপ্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে এসেছে। ঝুঁকি নিয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিশুদের পাঠদান চলে।
সমীক্ষা থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষ ছোট অথবা সবার বসার জায়গা হয় না—এমন বিদ্যালয় আছে ৪১ হাজার ৭৬৫টি (৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ)। যেমন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি কক্ষে চলছে ছয় শ্রেণির পাঠদান।
পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের অভাব রয়েছে ৫ হাজার ৪৪১টি (৮ দশমিক ৩ শতাংশ) বিদ্যালয়ে। বিদ্যুৎ নেই ৭ হাজার ৮১টি বিদ্যালয়ে (১০ দশমিক ৮ শতাংশ)। ফলে বৈদ্যুতিক বাতি ও পাখার সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পাখা নেই আরও ৯ হাজার ১৭৯টি (১৪ শতাংশ) বিদ্যালয়ে।
সমীক্ষা বলছে, ৯ হাজার ১৭৯টি বিদ্যালয়ের টয়লেট ভালো নয়। টয়লেটগুলোতে ট্যাংকের সমস্যা, দেয়ালে ফাটল, পলেস্তারা খসে যাওয়া, সেপটিক ট্যাংক না থাকা ও নির্মাণ ত্রুটিসহ নানা সমস্যা রয়েছে। ৮ হাজার ৬৫৪টি বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছে, বিদ্যালয়ে নলকূপ থাকলেও বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য নয়।
শেখানোর প্রক্রিয়া নিয়ে খুব সন্তুষ্টি কম
সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শেখানোর প্রক্রিয়া নিয়ে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী খুবই সন্তুষ্ট। বাকিদের কেউ শুধু সন্তুষ্ট, কেউবা মোটামুটি সন্তুষ্ট। শিক্ষকদের পড়ানোর দক্ষতা নিয়ে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, অনেক শিক্ষক প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেন। এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী গাইড বইয়ের সাহায্য নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে শিখন প্রক্রিয়াকে কার্যকর করতে শিক্ষকদের সংখ্যা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, উপবৃত্তির অর্থ বৃদ্ধি, বিদ্যালয়ে টিফিনের ব্যবস্থা করা, শিক্ষকদের জন্য নতুন নতুন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিখন দক্ষতা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন ছিল। এখন আরও বেড়েছে। এত দিনকার অর্জনগুলো করোনার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে কার্যকর পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়ন জরুরি। তিনি বলেন, এত দিনেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা থাকা দুঃখজনক। অবকাঠামোগত সমস্যা দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় অর্ধেকই ধুঁকছে সংকটে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ। অপর্যাপ্ত ও ছোট শ্রেণিকক্ষ, বিদ্যুৎ-সুবিধা না থাকা, সুপেয় পানির অভাব অনেক বিদ্যালয়ে। আছে টয়লেটেরও সমস্যা। এসবের ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
প্রাথমিকের শিক্ষার মানেও আছে দৈন্য। শিখন ফল অর্জনের হার মাত্র ৫০ শতাংশ। শিখন পদ্ধতি ও শিক্ষকদের দক্ষতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই দৈন্য ফুটে উঠেছে সরকারের প্রকল্প মনিটরিং প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৩) প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন সমীক্ষায়।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত সমস্যা এত দিনেও নিরসন না হওয়া দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি করোনার পর আরও বেড়েছে। এই ঘাটতি দূর করতে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও এর সঠিক বাস্তবায়ন।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। অবকাঠামোগত সব সমস্যা পর্যায়ক্রমে দূর হবে। প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৭ জন। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন।
পিইডিপি-৩ প্রকল্প ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই দফায় সংশোধনী প্রস্তাবের মাধ্যমে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর শুরু হয় পিইডিপি-৪ প্রকল্প। তবে পিইডিপি-৩ প্রকল্পের সমীক্ষা পরিচালনা করা হয় চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে। দেশের আট বিভাগের ১৬ জেলার ৩২টি উপজেলার ৬০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী, ১ হাজার ২০০ শিক্ষক ও সমানসংখ্যক অভিভাবক, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষের তথ্য নিয়ে এই সমীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গত ১০ জুন প্রতিবেদনটি আইএমইডিতে জমা দেওয়া হয়।
সমীক্ষার ফল বলছে, শিক্ষার্থীদের শিখন ফল অর্জন হয়েছে মাত্র ৫০ ভাগ। প্রাথমিক শিক্ষার মান কমার বিষয়টি এর আগেও কয়েকটি জরিপে এসেছে। এ জন্য প্রতিবেদনে শিখন পদ্ধতিকে আরও অংশগ্রহণমূলক এবং শিশুদের জন্য প্রয়োজনভিত্তিক হওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।
জরাজীর্ণ বিদ্যালয়
সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ১৭ হাজার ৪১৪টি জরাজীর্ণ। এসব বিদ্যালয়ের কোনোটির দেয়ালে ফাটল, পলেস্তারা খসে রড বের হওয়া ছাদ, কোনোটির মেঝেতে গর্ত, কোনোটির দরজা-জানালা ভাঙা ও মরচেধরা, রং নষ্ট, বৃষ্টি হলেই কোনোটির ছাদ দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে। আবার কিছু বিদ্যালয়ের বাতি ও পাখা নষ্ট ইত্যাদি।
অবশ্য ৬ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, বর্তমানে ৬ হাজার ৭০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে। ১২ জুলাই সারা দেশের ঝুঁকিপূর্ণ/জরাজীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন এবং অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের প্রয়োজন আছে—এমন বিদ্যালয়ের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
সমীক্ষা বলছে, বৃষ্টি হলে পানি পড়ে এবং ছাদে ফাটল আছে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ বা ১২ হাজার ৯১৬টি বিদ্যালয়ে। এসব বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। বেঞ্চের সংকট আছে ৪ হাজার ৯৪৩টি বিদ্যালয়ে (৭ দশমিক ৬ শতাংশ), শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতা আছে ২ হাজার ৯৮ বিদ্যালয়ে (৩ দশমিক ২ শতাংশ)।
বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জরাজীর্ণ দশার সত্যতা পাওয়া যায়। এরই একটি রংপুর নগরের গুপ্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে এসেছে। ঝুঁকি নিয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিশুদের পাঠদান চলে।
সমীক্ষা থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষ ছোট অথবা সবার বসার জায়গা হয় না—এমন বিদ্যালয় আছে ৪১ হাজার ৭৬৫টি (৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ)। যেমন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি কক্ষে চলছে ছয় শ্রেণির পাঠদান।
পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের অভাব রয়েছে ৫ হাজার ৪৪১টি (৮ দশমিক ৩ শতাংশ) বিদ্যালয়ে। বিদ্যুৎ নেই ৭ হাজার ৮১টি বিদ্যালয়ে (১০ দশমিক ৮ শতাংশ)। ফলে বৈদ্যুতিক বাতি ও পাখার সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পাখা নেই আরও ৯ হাজার ১৭৯টি (১৪ শতাংশ) বিদ্যালয়ে।
সমীক্ষা বলছে, ৯ হাজার ১৭৯টি বিদ্যালয়ের টয়লেট ভালো নয়। টয়লেটগুলোতে ট্যাংকের সমস্যা, দেয়ালে ফাটল, পলেস্তারা খসে যাওয়া, সেপটিক ট্যাংক না থাকা ও নির্মাণ ত্রুটিসহ নানা সমস্যা রয়েছে। ৮ হাজার ৬৫৪টি বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছে, বিদ্যালয়ে নলকূপ থাকলেও বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য নয়।
শেখানোর প্রক্রিয়া নিয়ে খুব সন্তুষ্টি কম
সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শেখানোর প্রক্রিয়া নিয়ে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী খুবই সন্তুষ্ট। বাকিদের কেউ শুধু সন্তুষ্ট, কেউবা মোটামুটি সন্তুষ্ট। শিক্ষকদের পড়ানোর দক্ষতা নিয়ে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, অনেক শিক্ষক প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেন। এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী গাইড বইয়ের সাহায্য নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে শিখন প্রক্রিয়াকে কার্যকর করতে শিক্ষকদের সংখ্যা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, উপবৃত্তির অর্থ বৃদ্ধি, বিদ্যালয়ে টিফিনের ব্যবস্থা করা, শিক্ষকদের জন্য নতুন নতুন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিখন দক্ষতা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন ছিল। এখন আরও বেড়েছে। এত দিনকার অর্জনগুলো করোনার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে কার্যকর পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়ন জরুরি। তিনি বলেন, এত দিনেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা থাকা দুঃখজনক। অবকাঠামোগত সমস্যা দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৯ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে