জামালপুরে করোনার টিকা নিতে এসে হুড়োহুড়িতে ষষ্ট শ্রেণির এক ছাত্রীর পা ভেঙেছে। আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে আরও চার স্কুলছাত্রী।

গতকাল জামালপুর মির্জা আজম অডিটোরিয়ামে এই ঘটনা ঘটে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা হলে এমন ঘটনা ঘটত না।

তবে সিভিল সার্জন বলছেন, এই টিকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছাড়া দেওয়া সম্ভব না বলেই এখানে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গত ২১ নভেম্বর থেকে জামালপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়। এখন ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল সকাল ৯টা থেকে জামালপুর সদর উপজেলার ৪ হাজার শিক্ষার্থী অভিভাবকদের নিয়ে টিকা দিতে জামালপুর মির্জা আজম অডিটোরিয়ামের সামনে চলে আসে। তখন ভিড় এবং হুড়োহুড়িতে এক স্কুলছাত্রীর পা ভেঙে যায়। এ সময় আরও ৪ জন আহত হয়। তাদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা বলছেন, সকাল থেকে মানুষের প্রচুর ভিড়। ভিড় সামলে হুড়োহুড়িতে পড়ে অনেকেই আহত হয়।

হুড়োহুড়ির খবর পেয়ে জামালপুর সদর থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। সকাল থেকেই সদর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা জামালপুর মির্জা আজম অডিটোরিয়ামের সামনে টিকা নিতে জড়ো হয়। এ সময় টিকা নিতে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। আহতদের মধ্যে সুরাইয়া আক্তার রিতার একটি পা ভেঙে যায়। তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে সদর উপজেলার নরুন্দি ছইয়াদানা নাজিবাগ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী।

মেয়েটির বাবা নরুন্দি গ্রামের গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমার মেয়ে সুরাইয়া আক্তার রিতাকে নিয়ে শনিবার সকাল ৭টায় জামালপুর শহরের এসেছি।

এসেই দেখি প্রচণ্ড ভিড়। মেয়ে নিয়েকে নিয়ে ঠেলাঠেলি করে অডিটোরিয়ামের মধ্যে আমি প্রবেশ করতে পারি নাই। অনেক কষ্ট করে মেয়েকে ভেতরে পাঠিয়েছি। সেখানে হুড়োহুড়িতে মেয়ের পা ভেঙেছে। এখন মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে।

নান্দিনার মোতালেব মিয়া বলেন, সকালে শহরে মির্জা আজম অডিটরিয়ামে ছেলেকে নিয়ে এসেছি করোনার টিতে দিতে। তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্টে টিকা নিয়েছি। এতো কষ্ট করে টিকা নিলাম ভাষায় বলতে পারবো না।

এতো জমায়েতের কোনো দরকার ছিল। তারা একত্রে এতো সংখ্যা শিক্ষার্থীকে জড়ো না করে কয়েক ভাগে ভাগ করে টিকা দিতে পারতো । তাহেল আমাদেরকে এই হয়রানির মধ্যে পড়তে হতো না।

শহরের কাচারীপাড়ার মর্জিনা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে মেয়েকে টিকা দিতে। পুলিশের ধাক্কায় কোলের বাচ্চা পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে।

ছেলে মেয়েদের আলাদা করলে এতো কষ্ট হতো না। স্কুল ছাত্রী নাসরিন বলেন, এভাবে টিকা দেওয়ার মানে কি ছিল। ছেলে মেয়েদের এক সঙ্গে করে সমস্যা বাঁড়িয়েছে। ছেলে মেয়েকে আলাদা করে করলে ভালো হতো।

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, সারা দেশের ন্যায় জামালপুরেও কার্যক্রম শুরু করেছি। ৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা দেওয়ার খুদে বার্তা দেওয়া হয়েছে। অনেক ছাত্র-ছাত্রী চলে এসেছে। শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে বসে সোমবার থেকে ২ হাজার করে টিকা দেওয়া হবে।