‘মাছ ধরা নিষেধ, ডাইল ছাড়া আর কি দিয়া ভাত খামু’

ভোলা সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০: ৩২

‘সরকার ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিছে। নদীতে মাছ ধরতে যাইতে পারি না। আজকেও ডাইল (ডাল) দিয়াই ভাত খাইছি। ডাইল (ডাল) ছাড়া আর কি দিয়া (দিয়ে) ভাত খামু।’

মেঘনা নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধে বসে জাল সেলাই করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন জেলে মো. সালাউদ্দিন (৩৩)। তিনি সদর উপজেলার ডুগী গ্রামের বাসিন্দা। ২২ বছর ধরে তিনি জেলে পেশায় আছেন।

এ জেলে আরও বলেন, ‘অনেক বার চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গেছি, একটা জেলে কার্ডের জন্য কিন্তু দেয় নাই। অভিযানে আমার সংসার চালাইতে অনেক কষ্ট হয়। এক কেজি মোটা ডাইল (ডাল) কিনতে ৮০ টাকা লাগে। ঘরে (পরিবারের) একমাত্র আয় করি আমি। আমার এক ছেলে আর দুই মেয়ে। তাদের পড়াশোনার খরচ আর সমিতির কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে এই অভিযানে আমার আরও ২০ হাজার টাকা ঋণ করতে হয়েছে। এ বছরের প্রথমে সমিতি থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নিছি।’

সালাউদ্দিনের মতো সরকারি সহায়তা (পুনর্বাসনের চাল) থেকে বঞ্চিত জেলার অনেক জেলে। আবার অনেকেই যে পরিমাণ চাল পাওয়ার কথা পাচ্ছেন তার চেয়ে কম। ২৫ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা পেয়েছেন ১৮ কেজি করে।

জেলে মো. সবুজ (২৬) ও মো. আরফজল (৫৫) বলেন, ‘১৮ কেজি সরকারি চাল পেয়েছি। শুধু চাল দিয়ে তো সংসার চলে না। এদিকে কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। অভিযানের আগেও নদীতে মাছ পাই নাই এখন তো অভিযানের কারণে নদীতে যাই না। ধারদেনা নিয়ে কষ্টে আছি এই অভিযানে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে আমরা কঠোর নজরদারি দিচ্ছি।’

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত—২২ দিন ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত