আনোয়ারুল হক
বৈষম্যবিরোধী সফল ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের তিন মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারেরও তিন মাস পূর্ণ হলো। এ কথা ঠিক, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ছিল মূলত মানুষের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আর বেদনার বহিঃপ্রকাশ। তবে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন, এটা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফল। তাঁরা বলার চেষ্টা করেন, আন্দোলনের সময় যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তাও ষড়যন্ত্রমূলক। যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার সবই সরকার বা সরকারি বাহিনী করেনি। কিন্তু ভিডিও ফুটেজ বা ছবি কি সে কথা বলে? সরকারের পুলিশ বাহিনী বা ওবায়দুল কাদেরের আহ্বানে জেগে ওঠা ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী কি আন্দোলনকারীদের ওপর পুষ্পবৃষ্টির অভ্যর্থনা করেছিল?
তর্কের খাতিরে যদি তাঁদের বক্তব্য মেনেও নিই, তাহলেও প্রশ্ন আসে গত সরকারের আমলে তিন-তিনটা নির্বাচন একতরফাভাবে করা কার ‘ষড়যন্ত্র’ ছিল? সালমান রহমান এবং এস আলম গংয়ের একের পর এক আর্থিক প্রতিষ্ঠান জবরদখল ও সীমাহীন লুণ্ঠন, বিদেশে ঢালাও অর্থ পাচারইবা কার ষড়যন্ত্র ছিল? দেশ ছেড়ে পালানো বেনজীর আহমেদের অপরাধমূলক থ্রিলার উপন্যাসের কাহিনি, পতিত প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠার কাহিনিও কি ষড়যন্ত্র? প্রতিদিন পত্রপত্রিকা পতিত সরকারের যে ‘সুগন্ধ স্প্রে’ করছে, তার সবই ষড়যন্ত্র? প্রকৃতপক্ষে গণ-অভ্যুত্থানটা অনিবার্য ছিল। জুলাই-আগস্টে না হলেও এটা একসময় হতোই।
কিন্তু অন্তর্বর্তী এ সরকারের সেভাবে কোনো বিরোধী পক্ষ না থাকা ও অভূতপূর্ব জনসমর্থন থাকার পরও তিন মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়ে বরং অবনতি হওয়ায়, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার পরিবেশ ফিরে না আসায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারায়, শ্রমজীবী মানুষের রুটিরুজি ও ন্যায্য পারিশ্রমিকের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হওয়ায় মানুষের মাঝে হতাশা দানা বাঁধছে।
ছাত্রসমাজসহ দেশবাসী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি যে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল, সেখানেও ভাটার টান পরিলক্ষিত হচ্ছে। নতুন ছাত্র নেতৃত্বের কোনো কোনো অংশের কতক পদক্ষেপে অনেকেই মনে করছেন, স্বৈরতন্ত্রের বদলে দেশে সমন্বয়কতন্ত্র কায়েম হলো কি না! সমন্বয়কদের সমন্বয়করাও বিবৃতি দিয়ে গণহারে বিতরণকৃত সমন্বয়ক পদ বাতিল করে মাত্র একজনকে সমন্বয়ক করে বলেছেন এ পদের অপব্যবহার চলছিল। তারপরেও বৈষম্যবিরোধী বা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা নাম বা সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিশেষ গোষ্ঠী বা উচ্চাভিলাষী কোনো মহলের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে কেউ কেউ ব্যবহৃত হয়ে চলেছেন কি না, সে প্রশ্নও উঠছে। আশার কথা, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছেন না। তাঁরা ক্লাসরুমে ফিরে গেছেন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাতারে একজোট হয়ে দাঁড়ানোর প্রধান কারণ ছিল, তাঁরা মনে করেছিলেন এই আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক দলের খবরদারি বা স্বার্থান্বেষী ইন্ধন নেই।
কিন্তু স্বৈরাচার পতনের পর রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের একাংশকে সামনে রেখে নাগরিক কমিটি গঠন এবং নাগরিক কমিটির সঙ্গে একত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণে এটা সুস্পষ্ট যে সরকার বা সরকারের একাংশের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সরকারি রাজনৈতিক দল ও তাদের ছাত্রসংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। রাজনীতি করার বা রাজনৈতিক দল গড়ার অধিকার সবার আছে। কিন্তু যখন একটা নির্দলীয় সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় সেটা গড়ে তোলার উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়, মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে আর অতীতের সঙ্গে পার্থক্য থাকল কোথায়?
লক্ষণীয় বিষয়, কোটাবিরোধী আন্দোলন বা পরে স্বৈরাচার পতনের এক দফা আন্দোলনে যে অকুতোভয় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা এবং ক্ষেত্রবিশেষে শ্রমজীবী তরুণেরা বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো রাজপথে নেমে এসেছিলেন, তাঁরা কিন্তু আজ আর সমন্বয়কদের সঙ্গে নেই। বরং কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া উগ্রবাদী ও ধর্মান্ধদের ভিড়ই চোখে পড়ছে তাদের রাজনৈতিক ও ভিন্নমত দমনের মতো কর্মসূচিগুলোতে। মনে করা হচ্ছে, পতিত সরকার মানুষ খুন করার কর্মসূচি নিয়েছিল, এরা রাজনৈতিক দল খুন করার কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। শিল্পকলা, নাটক, গান, সংস্কৃতি আক্রান্ত হওয়াও ভালো লক্ষণ নয়।
মনে রাখা প্রয়োজন, মাসব্যাপী জুলাই আন্দোলনে শামিল ছাত্র-ছাত্রীদের রণসজ্জা ছিল কপালে বাঁধা ‘সবুজ জমিনে লাল সূর্যের পতাকা’। রণসংগীত ছিল কখনো ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভােলাবাসি’, আবার কখনো ‘ধন ধান্য পুষ্পভরা...’। এ রণসংগীত গেয়েই ওরা বিজয় অর্জন করেছে। তাই জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ও দেশের সংবিধানের মর্মবস্তু পাল্টে দেওয়ার অশুভ শক্তি যতই নানা কৌশলে ও ক্যামোফ্লেজে আসুক না কেন, প্রতিরোধ হবে সর্বাত্মক।
দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ানো গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদের কিংবা ‘পানিওয়ালা মুগ্ধের’ ছবি যখন মনে ভেসে ওঠে অথবা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে শিশু হত্যার মতো নারকীয় ঘটনা যখন আমাদের কাঁদায়, আবার তখনই যখন ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে বা জমায়েতে ওদের কণ্ঠে শুনতাম ‘ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ...’, তখন আমার মনে হতো দ্বিজেন্দ্র লাল এত বড় মিথ্যা কথা লিখে গেছেন! আবার যখন টেলিভিশনের পর্দায় দেখতাম সবে কৈশোর উত্তীর্ণ তরুণী তারই মিছিলের সঙ্গী অচেনা এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে ওঠানোর পর একা পুলিশ ভ্যানের সামনে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে বলছে, ‘আমার ভাইকে নিয়ে যেতে হলে আমার লাশের ওপর দিয়ে নিয়ে যেতে হবে’, তখন আবেগে চোখ ভিজে উঠলেও নিজেই গুনগুন করে গেয়ে উঠতাম—‘ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ...’। এবারের আন্দোলনের এই সুর, ছন্দ আর বীরত্বের রসায়ন নৈরাজ্যবাদী ও ধর্মান্ধ উগ্রবাদীদের শেষ পর্যন্ত নিশ্চয়ই ব্যর্থ করে দেবে।
লেখক: আনোয়ারুল হক
সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
বৈষম্যবিরোধী সফল ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের তিন মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারেরও তিন মাস পূর্ণ হলো। এ কথা ঠিক, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ছিল মূলত মানুষের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আর বেদনার বহিঃপ্রকাশ। তবে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন, এটা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফল। তাঁরা বলার চেষ্টা করেন, আন্দোলনের সময় যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তাও ষড়যন্ত্রমূলক। যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার সবই সরকার বা সরকারি বাহিনী করেনি। কিন্তু ভিডিও ফুটেজ বা ছবি কি সে কথা বলে? সরকারের পুলিশ বাহিনী বা ওবায়দুল কাদেরের আহ্বানে জেগে ওঠা ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী কি আন্দোলনকারীদের ওপর পুষ্পবৃষ্টির অভ্যর্থনা করেছিল?
তর্কের খাতিরে যদি তাঁদের বক্তব্য মেনেও নিই, তাহলেও প্রশ্ন আসে গত সরকারের আমলে তিন-তিনটা নির্বাচন একতরফাভাবে করা কার ‘ষড়যন্ত্র’ ছিল? সালমান রহমান এবং এস আলম গংয়ের একের পর এক আর্থিক প্রতিষ্ঠান জবরদখল ও সীমাহীন লুণ্ঠন, বিদেশে ঢালাও অর্থ পাচারইবা কার ষড়যন্ত্র ছিল? দেশ ছেড়ে পালানো বেনজীর আহমেদের অপরাধমূলক থ্রিলার উপন্যাসের কাহিনি, পতিত প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠার কাহিনিও কি ষড়যন্ত্র? প্রতিদিন পত্রপত্রিকা পতিত সরকারের যে ‘সুগন্ধ স্প্রে’ করছে, তার সবই ষড়যন্ত্র? প্রকৃতপক্ষে গণ-অভ্যুত্থানটা অনিবার্য ছিল। জুলাই-আগস্টে না হলেও এটা একসময় হতোই।
কিন্তু অন্তর্বর্তী এ সরকারের সেভাবে কোনো বিরোধী পক্ষ না থাকা ও অভূতপূর্ব জনসমর্থন থাকার পরও তিন মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়ে বরং অবনতি হওয়ায়, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার পরিবেশ ফিরে না আসায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারায়, শ্রমজীবী মানুষের রুটিরুজি ও ন্যায্য পারিশ্রমিকের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হওয়ায় মানুষের মাঝে হতাশা দানা বাঁধছে।
ছাত্রসমাজসহ দেশবাসী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি যে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল, সেখানেও ভাটার টান পরিলক্ষিত হচ্ছে। নতুন ছাত্র নেতৃত্বের কোনো কোনো অংশের কতক পদক্ষেপে অনেকেই মনে করছেন, স্বৈরতন্ত্রের বদলে দেশে সমন্বয়কতন্ত্র কায়েম হলো কি না! সমন্বয়কদের সমন্বয়করাও বিবৃতি দিয়ে গণহারে বিতরণকৃত সমন্বয়ক পদ বাতিল করে মাত্র একজনকে সমন্বয়ক করে বলেছেন এ পদের অপব্যবহার চলছিল। তারপরেও বৈষম্যবিরোধী বা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা নাম বা সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিশেষ গোষ্ঠী বা উচ্চাভিলাষী কোনো মহলের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে কেউ কেউ ব্যবহৃত হয়ে চলেছেন কি না, সে প্রশ্নও উঠছে। আশার কথা, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছেন না। তাঁরা ক্লাসরুমে ফিরে গেছেন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাতারে একজোট হয়ে দাঁড়ানোর প্রধান কারণ ছিল, তাঁরা মনে করেছিলেন এই আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক দলের খবরদারি বা স্বার্থান্বেষী ইন্ধন নেই।
কিন্তু স্বৈরাচার পতনের পর রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের একাংশকে সামনে রেখে নাগরিক কমিটি গঠন এবং নাগরিক কমিটির সঙ্গে একত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণে এটা সুস্পষ্ট যে সরকার বা সরকারের একাংশের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সরকারি রাজনৈতিক দল ও তাদের ছাত্রসংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। রাজনীতি করার বা রাজনৈতিক দল গড়ার অধিকার সবার আছে। কিন্তু যখন একটা নির্দলীয় সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় সেটা গড়ে তোলার উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়, মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে আর অতীতের সঙ্গে পার্থক্য থাকল কোথায়?
লক্ষণীয় বিষয়, কোটাবিরোধী আন্দোলন বা পরে স্বৈরাচার পতনের এক দফা আন্দোলনে যে অকুতোভয় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা এবং ক্ষেত্রবিশেষে শ্রমজীবী তরুণেরা বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো রাজপথে নেমে এসেছিলেন, তাঁরা কিন্তু আজ আর সমন্বয়কদের সঙ্গে নেই। বরং কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া উগ্রবাদী ও ধর্মান্ধদের ভিড়ই চোখে পড়ছে তাদের রাজনৈতিক ও ভিন্নমত দমনের মতো কর্মসূচিগুলোতে। মনে করা হচ্ছে, পতিত সরকার মানুষ খুন করার কর্মসূচি নিয়েছিল, এরা রাজনৈতিক দল খুন করার কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। শিল্পকলা, নাটক, গান, সংস্কৃতি আক্রান্ত হওয়াও ভালো লক্ষণ নয়।
মনে রাখা প্রয়োজন, মাসব্যাপী জুলাই আন্দোলনে শামিল ছাত্র-ছাত্রীদের রণসজ্জা ছিল কপালে বাঁধা ‘সবুজ জমিনে লাল সূর্যের পতাকা’। রণসংগীত ছিল কখনো ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভােলাবাসি’, আবার কখনো ‘ধন ধান্য পুষ্পভরা...’। এ রণসংগীত গেয়েই ওরা বিজয় অর্জন করেছে। তাই জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ও দেশের সংবিধানের মর্মবস্তু পাল্টে দেওয়ার অশুভ শক্তি যতই নানা কৌশলে ও ক্যামোফ্লেজে আসুক না কেন, প্রতিরোধ হবে সর্বাত্মক।
দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ানো গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদের কিংবা ‘পানিওয়ালা মুগ্ধের’ ছবি যখন মনে ভেসে ওঠে অথবা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে শিশু হত্যার মতো নারকীয় ঘটনা যখন আমাদের কাঁদায়, আবার তখনই যখন ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে বা জমায়েতে ওদের কণ্ঠে শুনতাম ‘ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ...’, তখন আমার মনে হতো দ্বিজেন্দ্র লাল এত বড় মিথ্যা কথা লিখে গেছেন! আবার যখন টেলিভিশনের পর্দায় দেখতাম সবে কৈশোর উত্তীর্ণ তরুণী তারই মিছিলের সঙ্গী অচেনা এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে ওঠানোর পর একা পুলিশ ভ্যানের সামনে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে বলছে, ‘আমার ভাইকে নিয়ে যেতে হলে আমার লাশের ওপর দিয়ে নিয়ে যেতে হবে’, তখন আবেগে চোখ ভিজে উঠলেও নিজেই গুনগুন করে গেয়ে উঠতাম—‘ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ...’। এবারের আন্দোলনের এই সুর, ছন্দ আর বীরত্বের রসায়ন নৈরাজ্যবাদী ও ধর্মান্ধ উগ্রবাদীদের শেষ পর্যন্ত নিশ্চয়ই ব্যর্থ করে দেবে।
লেখক: আনোয়ারুল হক
সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৯ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
১৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
১৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
১৩ দিন আগে