‘নিশ্চয়ই পার্ট চাইতে এসেছে!’

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ১১: ২১

ঘটনাটা ঘটেছিল সুচিত্রা সেনের সঙ্গে। পরে সুচিত্রা সেন মহানায়িকা হয়েছেন। এ ঘটনাটির কথা মনে রেখেছিলেন কি তিনি? সুচিত্রা তখন সিনেমার লাইনে নবীন। পরিচালকদের দিক থেকে খুব একটা ডাক পান না। ১৯৫৩ সাল ছিল সুচিত্রা সেনের জন্য সংগ্রামের কাল।

প্রেমেন্দ্র মিত্র তখন সাহিত্যজগৎ থেকে ক্রমে ক্রমে সরে এসেছেন চলচ্চিত্রজগতের দিকে। কৌতুকশিল্পী নবদ্বীপ হালদারের বাড়িতে চলচ্চিত্রসংক্রান্ত আড্ডা দিতেন তিনি। সঙ্গে থাকতেন ধীরাজ ভট্টাচার্য।

একদিন নবদ্বীপ হালদারের বাড়িতে ছবির পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুশীল চক্রবর্তীও আছেন সেখানে। কাজের লোক এসে খবর দিল, একজন ভদ্রমহিলা প্রেমেনবাবুকে খুঁজছেন।

কথাটা শুনে নবদ্বীপ বলে উঠলেন, ‘প্রেমেন, তুমি কি দুনিয়ার মেয়েকে আমার বাড়ির ঠিকানা দিয়ে এসেছ নাকি যে এখানে তোমাকে মেয়েরা খুঁজতে আসছে? এই সুশীল, দেখ্ তো কে এসেছে। তেমন বুঝলে হটিয়ে দিবি।’

সুশীলবাবু বাইরে এসে দেখেন সুচিত্রা সেন দাঁড়িয়ে আছেন। তখন অল্প কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। তাই চেহারাটা পরিচিত।

সুশীলবাবুকে দেখে সুচিত্রা সেন জিজ্ঞেস করলেন, ‘এখানে প্রেমেনবাবু আছেন?’

সুশীল বললেন, ‘হ্যাঁ আছেন, কিন্তু তিনি তো এখন ব্যস্ত।’

সুচিত্রা বললেন, ‘আমি ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে শুনলাম উনি এখানে এসেছেন। ওর সঙ্গে আমার একটু দেখা করা দরকার।’

সুশীল সুচিত্রাকে একটু বসতে বলে ভেতরে এসে কথাগুলো বললেন। নবদ্বীপ হালদার সব শুনে বললেন, ‘নিশ্চয়ই পার্ট চাইতে এসেছে। তুই গিয়ে বলে দেগা আমাদের সব পার্ট দেওয়া হয়ে গেছে, আপনি যেতে পারেন।’

প্রেমেন মিত্র বললেন, ‘না না, অত কড়া কথা বলার দরকার নেই। তুমি বরং গিয়ে বলগে যাও, উনি যেন পরে আমার বাড়িতে দেখা করেন। এখন আমি ব্যস্ত।’

সে কথা সুচিত্রাকে বলার পর সুচিত্রার মুখটা মলিন হয়ে গেল। ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছে বেরিয়ে গেলেন তিনি। 

সূত্র: আশিসতরু মুখোপাধ্যায়, মহানায়িকা সুচিত্রা, পৃষ্ঠা ২১-২২

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত