শামসুর রাহমান

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭: ৫৪

শামসুর রাহমানের কবিতায় প্রেম, সময়-সমাজ, রাজনীতি, নাগরিক ভাবনা এসেছে। তাঁর কবিতার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো প্রবহমান গতিময়তা ও সমসাময়িক অনুষঙ্গের যথাযথ প্রয়োগ।

পুরান ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন শামসুর রাহমান। কিন্তু ওই বিষয়টা আর পড়া হয়নি। তবে বিএ পাস করে ইংরেজিতে এমএ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ফলাফল—দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন।

জীবনের বেশির ভাগ সময় সাংবাদিকতা করেছেন দৈনিক মর্নিং নিউজ, রেডিও পাকিস্তান, দৈনিক পাকিস্তান (স্বাধীনতা-উত্তর দৈনিক বাংলা) পত্রিকায়। দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক ছিলেন। সামরিক সরকারের আমলে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। পাকিস্তান সরকার রবীন্দ্রসংগীত সম্প্রচার নিষিদ্ধ করলে, তিনি পেশাগত অনিশ্চয়তার তোয়াক্কা না করে এর পক্ষে অবস্থান নেন।সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নাগরিকের ভেতরের সুপ্ত বোধকে জাগিয়ে তুলতে তাঁর কবিতা সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছে।

এরশাদ আমলের প্রথম দিকে জনগণ যখন স্বৈরাচারীর শাসন দ্বারা পিষ্ট, স্থবির, তখন তিনি লেখেন ‘গুড মর্নিং বাংলাদেশ’ কবিতা। দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে তিনি লেখার পাশাপাশি প্রতিবাদী ভূমিকাও পালন করেছেন। ধর্মতন্ত্রীরা তাঁকে নিয়ে বিতর্ক তুলেছে। তাঁকে হত্যার জন্য হামলা করেছে। এত কিছুর পরেও তিনি তাঁর রাজনৈতিক ভাবনায় অনড় ছিলেন।

কবিতা, উপন্যাস, অনুবাদ, শিশুসাহিত্য, প্রবন্ধ ও আত্মজীবনী মিলিয়ে তাঁর অর্ধশত বই প্রকাশিত হয়েছে। স্বাধীনতা পদক, ১৯৬৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৭৭ সালে একুশে পদকসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।

আজীবন অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও গণতন্ত্রের পক্ষে, ধর্মতন্ত্রী মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে এবং জনমানুষের প্রতি ভালোবাসা তাঁর জীবনবোধে সক্রিয় ছিল। যিনি নাগরিক কবি হিসেবেও পরিচিত। জীবদ্দশাতেই তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবির মর্যাদা লাভ করেন।

১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলির নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর পৈতৃক বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী গ্রামে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত