অজয় দাশগুপ্ত
আমি পরিবর্তনের পক্ষে। কারণ জীবন পরিবর্তনশীল। আমরা যারা মধ্য ষাটে, আমরা কত যে পরিবর্তন মেনে নিয়েছি, তার কোনো হিসাব নেই। আমাদের পিতারা সাতচল্লিশের অন্যায্য দেশভাগ মেনে নিয়েছিলেন। আমরা একাত্তরে যৌক্তিক মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিয়েছি। আমরা পঁচাত্তরের পটপরিবর্তন ও মিলিটারি শাসন মেনেছি। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এরশাদের পতন মেনেছি। মুক্তিযুদ্ধ মানা না-মানার সহাবস্থান মেনেছি। অতিসম্প্রতি জাঁকিয়ে বসা শেখ হাসিনার পলায়ন, দেশত্যাগও মেনেছি। কারণ রাজনীতি হচ্ছে মানা না-মানার একটা সমীকরণ। কবিগুরুর ভাষায়—‘ভালো মন্দ যাহাই আসুক, সত্যেরে লও সহজে।’
আজকে বাংলাদেশে তারুণ্যের যে জোয়ার, তার সঙ্গে দুনিয়ার অনেক দেশের জোয়ারের মিল আছে। যারা ভুলে গিয়েছিল এটি ডিজিটাল দুনিয়া, যাদের কথা শুনলে মানুষ মনে করত কাক করছে কা কা, তারা তারুণ্যের ভাষা বুঝতে পারেনি। ফলে পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়েছিল। কথায় বলে, হামবড়া ভাব পতনের মূল। অহংকার যে কত রাজা-বাদশাহর গদি কেড়ে নিয়েছে, তার প্রমাণ ইতিহাস। খোদ আমেরিকা হারানো ইংল্যান্ডের মনে ছিল না যে মানুষ বিদ্রোহপ্রিয়।
জর্জ ওয়াশিংটন নামের এক সেনাপতির কাছে যে মার খেয়ে আমেরিকাকে স্বাধীনতা দিতে হবে, এটা তারা ভাবতেও পারেনি। কিন্তু সেটাই ঘটেছিল। ১৭৭৬ সালেরই ২২ আগস্ট নিউইয়র্কের এক যুদ্ধে ব্রিটিশ সৈন্যদের হাতে আমেরিকানরা পরাজিত হয়। ব্রিটিশ সৈন্যরা নিউইয়র্ক দখল করে শুরু
করে অত্যাচার আর লুটতরাজ। এ সময় তারা ঘোষণা করল যে, যেসব বিদ্রোহী ষাট দিনের মধ্যে অস্ত্র পরিত্যাগ করবে, তাদের ক্ষমা করা হবে।
এই রকম চরম হতাশার মধ্যে আমেরিকানদের কাছে একমাত্র আশার প্রদীপ ছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। তাঁর অধীনস্থ স্বাধীনতাকামী আমেরিকান সৈন্যদের দুর্গতির শেষ ছিল না। তাদের পেটে খাবার, পায়ে জুতা পর্যন্ত ছিল না। ফ্রান্সের সঙ্গে ইংরেজদের শত্রুতা তখনো চলছে। কানাডা হারিয়ে ফরাসিরা ইংরেজদের ওপর ভীষণ চটে রয়েছে। ফলে আমেরিকানরা ফরাসিদের সাহায্য চাইতেই তারা রাজি হয়ে গেল, কিন্তু একই সঙ্গে তারা দাবি করল যে, তাদের সাহায্য নিতে হলে আমেরিকাকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে হবে। আমেরিকানরা সহজেই এই শর্ত মেনে নিল এবং ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই আমেরিকার পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলো। দুই দিক থেকে আক্রমণাত্মক যুদ্ধে অবশেষে হেরে গেল ইংল্যান্ড। এরপর ১৭৮৩ সালে ভার্সাই সন্ধির মাধ্যমে এই সংগ্রামের অবসান হলো। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকার করে নিল ইংল্যান্ড। আর ওভাবেই জর্জ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে সৃষ্টি হলো বিশ্বের বুকে একটি অন্যতম বৃহৎ রাষ্ট্রের।
এবার আসি চার্চিলের কথায়। তির্যক মন্তব্য চার্চিলের রাজনীতি বিষয়ে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, ভালো রাজনীতিবিদের যোগ্যতা কী হওয়া উচিত। চার্চিল বলেছিলেন, ‘বিশেষ কিছু নয়, শুধু তাকে দূরদর্শী হতে হবে; সে যেন ভবিষ্যতে কী ঘটবে সেটা ঠিকমতো বলতে পারে। আর যখন সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিলবে না, তখন যেন ব্যাখ্যা দিতে পারে, কেন মিলল না।’ এবার চার্চিল সম্পর্কে একটি পরিচিত গল্প বলি। চার্চিলের আশি বছরের জন্মদিনে এক তরুণ ফটোগ্রাফার তাঁর ফটো তুলতে গিয়েছিল। সে মাতব্বরি করে বলেছিল, ‘আমি আশা করি আপনার জন্মশতবর্ষেও এসে এমনিভাবে ছবি তুলে নিয়ে যেতে পারব।’ তরুণ ফটোগ্রাফারের উৎসাহে এক কলসি ঠান্ডা জল ঢেলে দিয়ে চার্চিল তার পিঠ চাপড়ে বললেন, ‘কেন নয় ছোকরা? তোমার স্বাস্থ্য তো বেশ ভালোই দেখছি। নিশ্চয়ই তত দিন বেঁচে থাকবে।’
দূরদর্শী না হলে রাজনীতি না করাই ভালো। কারণ এরপর যা থাকে তার নাম অপমান। আমাদের দেশে সদার্থক পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। এখন আশার পালা। একটা জাতি কেবল তোষামোদি বা তেলের ওপর চলতে পারে না। বলছিলাম, আমরা সত্যিকার অর্থে একটি সুশাসনের সমাজ চাই। সুশাসন ফিরে এলে জাতিকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। যেসব উপরি ঢেউ বা অপবিষয় মাথাচাড়া দিয়েছে, সেগুলো অচিরেই বন্ধ করা দরকার। যতকাল পানি ঘোলা থাকবে, ততকাল জাতি তার চেহারা ঠিকভাবে দেখতে পাবে না। ঠিকভাবে চেহারা দেখা না গেলে কিছু বোঝাও যাবে না।
পজিটিভ হওয়ার সময়কালে এই গল্প মনে পড়ছে: একবার একদল ব্যাঙ বনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় এই ব্যাঙের দল থেকে দুটি ব্যাঙ গভীর গর্তে পড়ে গেল। গর্তটি এতটা গভীর ছিল যে, সেটি থেকে উঠে আসা খুবই কঠিন। তবু ব্যাঙ দুটি তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছিল। দলের অন্য ব্যাঙগুলো বলাবলি করছিল যে, এদের এই গর্ত থেকে বের হয়ে আসার কোনো আশা নেই। কিন্তু অদম্য ব্যাঙ দুটি চেষ্টা করতেই থাকল, তারা প্রাণপণে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদটির ঢালু জায়গা পার করে শেষের দিকের খাড়া অংশের কাছে এসে আবার উল্টো নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছিল। তখন ওপরে থাকা বাকি ব্যাঙগুলো চিৎকার করে তাদের বলছিল যে, ‘তোমরা কিছুতেই ওপরে উঠতে পারবে না’, ‘এটি খুবই বড় গর্ত’, ‘এখান থেকে উঠে আসা কোনোভাবেই সম্ভব না’ ইত্যাদি।তাদের কথাগুলো এমন ছিল, যেন তারা বলতে চাইছিল, ‘শুধু কষ্ট করে লাভ নেই, আশা ছেড়ে দিয়ে মৃত্যুকে স্বীকার করে নাও, কষ্ট থেকে মুক্তি পাও।’
দুটি ব্যাঙের মধ্যে একটি তাদের কথায় কান দিল এবং গর্তের ওপরের দিকে ওঠা বাদ দিয়ে আরও গভীরের দিকে লাফিয়ে পড়ে মরে গেল। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যাঙটি আরও উদ্যম নিয়ে লাফাতে লাগল। আর ওপরে থাকা ব্যাঙেরা আরও জোরে চিৎকার করে বলতে লাগল, ‘এই বৃথা কষ্ট কোরো না, মৃত্যুকে সহজ করো।’ কিন্তু ব্যাঙটি অবশেষে ওপরে উঠে এল। ওপরে ওঠার পর ব্যাঙটি যা বলল, তাতে দলের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। ব্যাঙটি বলল, ‘ওপরে থেকে তোমাদের চিৎকার করে করে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার কারণেই আমি মনোবল পেয়ে ওপরে উঠে এলাম। তোমরা না থাকলে আমি হয়তো হাল ছেড়ে দিতাম। আমি কানে শুনতে পাই না, শুধু চোখে দেখেছি তোমরা গলা ফাটিয়ে আমাকে ওপরে উঠে আসতে বলছ।’
আশপাশের মানুষের একটু উৎসাহ, মানুষকে কঠিন বিপদেও সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। এবং নেতিবাচক কথায় কান না দিয়ে নিজ লক্ষ্যে অবিচল থাকলে সফলতা আসে। এভাবে সফল হয়ে দেশ ভালো থাকুক। ভালো থাকুক আমাদের মানুষজন।
লেখক: অজয় দাশগুপ্ত
অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
আমি পরিবর্তনের পক্ষে। কারণ জীবন পরিবর্তনশীল। আমরা যারা মধ্য ষাটে, আমরা কত যে পরিবর্তন মেনে নিয়েছি, তার কোনো হিসাব নেই। আমাদের পিতারা সাতচল্লিশের অন্যায্য দেশভাগ মেনে নিয়েছিলেন। আমরা একাত্তরে যৌক্তিক মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিয়েছি। আমরা পঁচাত্তরের পটপরিবর্তন ও মিলিটারি শাসন মেনেছি। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এরশাদের পতন মেনেছি। মুক্তিযুদ্ধ মানা না-মানার সহাবস্থান মেনেছি। অতিসম্প্রতি জাঁকিয়ে বসা শেখ হাসিনার পলায়ন, দেশত্যাগও মেনেছি। কারণ রাজনীতি হচ্ছে মানা না-মানার একটা সমীকরণ। কবিগুরুর ভাষায়—‘ভালো মন্দ যাহাই আসুক, সত্যেরে লও সহজে।’
আজকে বাংলাদেশে তারুণ্যের যে জোয়ার, তার সঙ্গে দুনিয়ার অনেক দেশের জোয়ারের মিল আছে। যারা ভুলে গিয়েছিল এটি ডিজিটাল দুনিয়া, যাদের কথা শুনলে মানুষ মনে করত কাক করছে কা কা, তারা তারুণ্যের ভাষা বুঝতে পারেনি। ফলে পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়েছিল। কথায় বলে, হামবড়া ভাব পতনের মূল। অহংকার যে কত রাজা-বাদশাহর গদি কেড়ে নিয়েছে, তার প্রমাণ ইতিহাস। খোদ আমেরিকা হারানো ইংল্যান্ডের মনে ছিল না যে মানুষ বিদ্রোহপ্রিয়।
জর্জ ওয়াশিংটন নামের এক সেনাপতির কাছে যে মার খেয়ে আমেরিকাকে স্বাধীনতা দিতে হবে, এটা তারা ভাবতেও পারেনি। কিন্তু সেটাই ঘটেছিল। ১৭৭৬ সালেরই ২২ আগস্ট নিউইয়র্কের এক যুদ্ধে ব্রিটিশ সৈন্যদের হাতে আমেরিকানরা পরাজিত হয়। ব্রিটিশ সৈন্যরা নিউইয়র্ক দখল করে শুরু
করে অত্যাচার আর লুটতরাজ। এ সময় তারা ঘোষণা করল যে, যেসব বিদ্রোহী ষাট দিনের মধ্যে অস্ত্র পরিত্যাগ করবে, তাদের ক্ষমা করা হবে।
এই রকম চরম হতাশার মধ্যে আমেরিকানদের কাছে একমাত্র আশার প্রদীপ ছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। তাঁর অধীনস্থ স্বাধীনতাকামী আমেরিকান সৈন্যদের দুর্গতির শেষ ছিল না। তাদের পেটে খাবার, পায়ে জুতা পর্যন্ত ছিল না। ফ্রান্সের সঙ্গে ইংরেজদের শত্রুতা তখনো চলছে। কানাডা হারিয়ে ফরাসিরা ইংরেজদের ওপর ভীষণ চটে রয়েছে। ফলে আমেরিকানরা ফরাসিদের সাহায্য চাইতেই তারা রাজি হয়ে গেল, কিন্তু একই সঙ্গে তারা দাবি করল যে, তাদের সাহায্য নিতে হলে আমেরিকাকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে হবে। আমেরিকানরা সহজেই এই শর্ত মেনে নিল এবং ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই আমেরিকার পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলো। দুই দিক থেকে আক্রমণাত্মক যুদ্ধে অবশেষে হেরে গেল ইংল্যান্ড। এরপর ১৭৮৩ সালে ভার্সাই সন্ধির মাধ্যমে এই সংগ্রামের অবসান হলো। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকার করে নিল ইংল্যান্ড। আর ওভাবেই জর্জ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে সৃষ্টি হলো বিশ্বের বুকে একটি অন্যতম বৃহৎ রাষ্ট্রের।
এবার আসি চার্চিলের কথায়। তির্যক মন্তব্য চার্চিলের রাজনীতি বিষয়ে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, ভালো রাজনীতিবিদের যোগ্যতা কী হওয়া উচিত। চার্চিল বলেছিলেন, ‘বিশেষ কিছু নয়, শুধু তাকে দূরদর্শী হতে হবে; সে যেন ভবিষ্যতে কী ঘটবে সেটা ঠিকমতো বলতে পারে। আর যখন সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিলবে না, তখন যেন ব্যাখ্যা দিতে পারে, কেন মিলল না।’ এবার চার্চিল সম্পর্কে একটি পরিচিত গল্প বলি। চার্চিলের আশি বছরের জন্মদিনে এক তরুণ ফটোগ্রাফার তাঁর ফটো তুলতে গিয়েছিল। সে মাতব্বরি করে বলেছিল, ‘আমি আশা করি আপনার জন্মশতবর্ষেও এসে এমনিভাবে ছবি তুলে নিয়ে যেতে পারব।’ তরুণ ফটোগ্রাফারের উৎসাহে এক কলসি ঠান্ডা জল ঢেলে দিয়ে চার্চিল তার পিঠ চাপড়ে বললেন, ‘কেন নয় ছোকরা? তোমার স্বাস্থ্য তো বেশ ভালোই দেখছি। নিশ্চয়ই তত দিন বেঁচে থাকবে।’
দূরদর্শী না হলে রাজনীতি না করাই ভালো। কারণ এরপর যা থাকে তার নাম অপমান। আমাদের দেশে সদার্থক পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। এখন আশার পালা। একটা জাতি কেবল তোষামোদি বা তেলের ওপর চলতে পারে না। বলছিলাম, আমরা সত্যিকার অর্থে একটি সুশাসনের সমাজ চাই। সুশাসন ফিরে এলে জাতিকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। যেসব উপরি ঢেউ বা অপবিষয় মাথাচাড়া দিয়েছে, সেগুলো অচিরেই বন্ধ করা দরকার। যতকাল পানি ঘোলা থাকবে, ততকাল জাতি তার চেহারা ঠিকভাবে দেখতে পাবে না। ঠিকভাবে চেহারা দেখা না গেলে কিছু বোঝাও যাবে না।
পজিটিভ হওয়ার সময়কালে এই গল্প মনে পড়ছে: একবার একদল ব্যাঙ বনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় এই ব্যাঙের দল থেকে দুটি ব্যাঙ গভীর গর্তে পড়ে গেল। গর্তটি এতটা গভীর ছিল যে, সেটি থেকে উঠে আসা খুবই কঠিন। তবু ব্যাঙ দুটি তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছিল। দলের অন্য ব্যাঙগুলো বলাবলি করছিল যে, এদের এই গর্ত থেকে বের হয়ে আসার কোনো আশা নেই। কিন্তু অদম্য ব্যাঙ দুটি চেষ্টা করতেই থাকল, তারা প্রাণপণে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদটির ঢালু জায়গা পার করে শেষের দিকের খাড়া অংশের কাছে এসে আবার উল্টো নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছিল। তখন ওপরে থাকা বাকি ব্যাঙগুলো চিৎকার করে তাদের বলছিল যে, ‘তোমরা কিছুতেই ওপরে উঠতে পারবে না’, ‘এটি খুবই বড় গর্ত’, ‘এখান থেকে উঠে আসা কোনোভাবেই সম্ভব না’ ইত্যাদি।তাদের কথাগুলো এমন ছিল, যেন তারা বলতে চাইছিল, ‘শুধু কষ্ট করে লাভ নেই, আশা ছেড়ে দিয়ে মৃত্যুকে স্বীকার করে নাও, কষ্ট থেকে মুক্তি পাও।’
দুটি ব্যাঙের মধ্যে একটি তাদের কথায় কান দিল এবং গর্তের ওপরের দিকে ওঠা বাদ দিয়ে আরও গভীরের দিকে লাফিয়ে পড়ে মরে গেল। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যাঙটি আরও উদ্যম নিয়ে লাফাতে লাগল। আর ওপরে থাকা ব্যাঙেরা আরও জোরে চিৎকার করে বলতে লাগল, ‘এই বৃথা কষ্ট কোরো না, মৃত্যুকে সহজ করো।’ কিন্তু ব্যাঙটি অবশেষে ওপরে উঠে এল। ওপরে ওঠার পর ব্যাঙটি যা বলল, তাতে দলের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। ব্যাঙটি বলল, ‘ওপরে থেকে তোমাদের চিৎকার করে করে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার কারণেই আমি মনোবল পেয়ে ওপরে উঠে এলাম। তোমরা না থাকলে আমি হয়তো হাল ছেড়ে দিতাম। আমি কানে শুনতে পাই না, শুধু চোখে দেখেছি তোমরা গলা ফাটিয়ে আমাকে ওপরে উঠে আসতে বলছ।’
আশপাশের মানুষের একটু উৎসাহ, মানুষকে কঠিন বিপদেও সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। এবং নেতিবাচক কথায় কান না দিয়ে নিজ লক্ষ্যে অবিচল থাকলে সফলতা আসে। এভাবে সফল হয়ে দেশ ভালো থাকুক। ভালো থাকুক আমাদের মানুষজন।
লেখক: অজয় দাশগুপ্ত
অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৭ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে